গুইমারায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে,মেডিকেল টিম গঠন

॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥  খাগড়াছড়ির দেবতা পুকুরের আশা-পাশ গ্রামে অজ্ঞাতনামা রোগে শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু আক্রান্ত হয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৩০জন ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে বেড না থাকায় রোগীদের স্থান হয়েছে ফ্লোরে। হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছে। তবে চিকিৎসকরা বলছে, এটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এদিকে দুর্গত এলাকায় সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষেত্র মোহন রোয়াজা জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ির দেবতা পুকুরের আশ-পাশ দুর্গম তৈমাতাই  গ্রামে  এ অজ্ঞাত রোগটি দেখা দেয়। প্রথমে রোগী অস্বাভাবিক আচারণ করে অনেকটা হিংস্র আচারণ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
খাগড়াছড়ি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সকাল পর্যন্ত খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ৩০জন রোগী ভর্তি হয়েছে। তবে এলাকাটি দুর্গম হওয়ার কারণে অনেক রোগীকে আনা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়নময় ত্রিপুরা এই প্রতিবেদকে জানিয়েছে, এটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকায় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে তার নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে গেছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২০১৩ সালে ওই গ্রামে এমন রোগে শতাধিক এলাকার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল।
এদিকে, খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলা প্রত্যন্ত দূর্গম তৈমথাং গ্রামে  গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৭৫ নারী-পুরুষ অসুস্থ হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জনকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা হচ্ছে, কৃঞ বালা ত্রিপুরা (২২), কবিতা ত্রিপুরা (৩০), বহি বালা ত্রিপুরা(১৭), দীকা ত্রিপুরা (১৬), মায়া বালা ত্রিপুরা(২৬), খাজ বালা ত্রিপুরা (১৮), বানু বিথি ত্রিপুরা (৩০), দিনু ত্রিপুরা (২১), কলইমা ত্রিপুরা(১৭), সাগরিকা ত্রিপুরা(১০), টিপায়ন ত্রিপুরা (১১), মহন ত্রিপুরা (১৬), সনদি রাম ত্রিপুরা(৩৫), কলোইসা ত্রিপুরা (১৬) ও বহেন ত্রিপুরা (১৫)।
এলাকাবাসী দয়া কুমার ত্রিপুরা জানান, সোমবার সকাল থেকে ঐ গ্রামের মানুষগুলো হঠাৎ করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্না-কাটি ও পাগলামি শুরু করে এবং এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বিকাল পর্যন্ত অন্তত ৭৫ জন নারী পুরুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়ন ময় ত্রিপুরা আরো জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এটি একটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে উঠবে। এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খাগড়াছড়ির গুইমারা থেকে রোগী আসছে, হাসপাতালে ঠাই নাই। রোগীর আত্মীয়-স্বজনের ভিড় জমছে। সিভিল সার্জন বলেছে, কোন সমস্যা নাই সব ঠিক হয়ে যাবে। আতঙ্কের কোন অবকাশ নেই।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031