বেঁচে থাকাটাই গাজাবাসীর ঈদ আনন্দ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::   দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। তবে আর সব দেশের মতো ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারে না ফিলিস্তিন।

এবারও দেশটির নাগরিকরা স্বজনদের লাশ কাঁধে বয়েই ঈদ উদ্‌যাপন করবে। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচারে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের মনে ঈদের আনন্দ কতটুকু রেখেছে, সেই প্রশ্ন তোলাও বাড়াবাড়ি।

ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে, ঈদের জন্য কোনো যুদ্ধবিরতি নেই।

ইহুদিরা গাজায় সমস্ত খাদ্য সরবরাহ এবং সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানকার ফিলিস্তিনিরা এই ঈদে প্রীতিভোজ নিয়ে ভাবছেন না। তারা দিনটিতে ঠিকমতো খেতে পাবেন কি না, তাই নিয়েই দুশ্চিন্তা। তাদের দিনটি কাটবে প্রিয়জনদের হারানোর শোক প্রকাশ করে, তাদের কবর জিয়ারত করে। তাদের জন্য এবারের ঈদে আনন্দ আর ভোজ নেই। এবার বেঁচে থাকাটাই তাদের জন্য ঈদের বোনাস।

ফিলিস্তিনিদের শায়েস্তা করতে ইসরায়েলিরা গাজার খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে সক্রিয়ভাবে ধ্বংস করেছে। ঈদকে সামনে রেখে ফিলিস্তিনিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো তৈরিতে যেসব খাদ্য উপকরণ ব্যবহার করে, সেগুলো এবার নেই।

ঈদের সকালে ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে সুম্মাকিয়া রান্না হয়। ঝোল জাতীয় খাবারটি ভেড়ার মাংস বা গরুর মাংসের সঙ্গে ভাজা তিল, ছোলা, চার্ড শাক এবং সুমাক-পানি দিয়ে তৈরি করা হয়। ফিলিস্তিনি ঐতিহ্য হিসেবে পরিচিত খাবারটি ঈদের সকালে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে খাওয়া হয়। কাছের মানুষ এবং প্রতিবেশী বাড়িতেও এ খাবার বিলানো হয়।

যখন ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের মাতৃভূমি থেকেই নির্মূল করার চেষ্টা চলছে, তখন নিজস্ব এই সংস্কৃতিকে ধারণ করা তাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিমুহূর্তে তারা নিজেদের স্বজনদেরকে গণহত্যার শিকার হতে দেখছে।

কিন্তু সহজ এই খাবারটি তৈরির সাধারণ উপকরণগুলো গাজার বাজারে নেই। সেখানে কোনো টাটকা খাবারই পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানকার কৃষিব্যবস্থার ৬০ শতাংশ ইসরায়েলি বোমা হামলায় ধ্বংস হয়েছে। খাদ্য উপকরণ মিললেও সেগুলো রান্না করার সুযোগ নেই। গাজায় খাদ্য সংকটের পাশাপাশি জ্বালানি সংকটও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলিরা সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে। যাদের কপালে সেহেরি-ইফতার জুটেছে, তাদেরকে অন্ধকারে বসে খেতে হয়েছে। তাদের মনে ভয় থাকে যে, রান্নার আগুনের আলো বা ঘরের আলো দেখে ইসরায়েলি সামরিক ড্রোন ছুটে আসবে।

এর মাঝেও ফিলিস্তিনি মা-বাবারা তাদের ছোট ছোট সন্তানদের জন্য ঈদের আনন্দ নিশ্চিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। গোটা রমজান মাসের মতো ঈদের দিনেও খুব সম্ভবত এক বেলা খেয়েই অনেক শিশুকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031