রেড ক্রিসেন্ট রাঙ্গামাটি ইউনিটের দরিদ্রদের টাকা শপিং মলের ৩ তিন দোকান মালিক ও বিত্তবান পরিবার হাতে

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙ্গামাটি জেলা ইউনিটের নগদ অর্থ বিতরণে অনিয়ম ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ উঠেছে। দরিদ্রদের টাকা পেয়েছে শপিং মলের ৩ তিন দোকান মালিক ও বিত্তবান পরিবার হাতে। রেড ক্রিসেন্টের ইকোসেফ প্রজেক্টের ১৫০০ পরিবার টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ না উঠলেও রাঙ্গামাটির হত দরিদ্র এবং কর্মহীন ৫০০ পরিবারের জন্য আসা দরিদ্রদের জন্য আসা টাকা বিতরণে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে রাঙ্গামাটি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কর্মকর্তাদের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
রাঙ্গামাটির মোঃ আমিন এক পান দোকানী জানান, আসলে আমরা দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। সরকার আমাদেরকে ত্রাণ দিচ্ছে ঠিক আছে। আমাদের এই পান দোকান থেকেই আমার ৪ ছেলে মেয়ে লেখাপড়া, খাবার সহ সব কিছুই নির্ভর করে। কিন্তু দীর্ঘ ২ মাস দোকান বন্ধ থাকার কারণে সরকার আমি পরিবার পরিজন নিয়ে দারুন কষ্টে আছি। পৌরসভার পক্ষ থেকে ২ বার ১০ কেজি করে বিশ কেজি চাল পেয়েছি। পরে কাউন্সিলারের মাধ্যমে ত্রাণের চাল কার্ড করে দেয়া হয়েছে। তা দিয়ে আমার সংসার কি ভাবে চলে। এছাড়া শপিং মলের ৩ দোকানের মালিকের হাতে রেড ক্রিসেন্টের সাড়ে ৪ হাজার টাকা এটা খুবই দুঃখ জনক। তিনি ৬ মাস কেন ২ বছর বসে ঘরে খেলেও তিনি আর্থিক কষ্টে ভুগবেন না। হয়তো তার একটি দোকান বন্ধ করে দিতে হতে পারে। তার আরো দুটি দোকান থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি ঘুরে দাঁড়তে পারবে। কিন্তু আমার অবস্থা কি হবে। এ টাকা যদি আমি পেতাম তাহলে আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে আমি ঈদ করতে পারতাম। এই স্বজনপ্রীতি আর কতোদিন চলবে।
রাঙ্গামাটি সমাজ সেবক ও রোবার স্কাউটের কমিশনার নুরুল আবছার জানান, আসলে বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক। শহরের শপিং মলের ব্যবসায়ী ও ধনী শ্রেণীর মানুষের হাতে দরিদ্রদের জন্য দেয়া এই টাকা উঠেছে তাদের হাতে। রাঙ্গামাটি প্রতিবন্ধী স্কুলে অসংখ্য হত দরিদ্র পরিবার আছে যারা দিনে এনে দিনে খায়। যাদের জন্য আমরা ত্রাণ খুঁজে বেড়াচ্ছি দ্বারে দ্বারে। কিন্তু দরিদ্রদেও জন্য আসা টাকা যায় কোটিপতির ঘরে।
এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙ্গামাটি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ সোলায়মানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রেড ক্রিসেন্ট রাঙ্গামাটি ইউনিটের যে সকল ত্রাণ সহায়তা আসেছে সব গুলো কোন একটুক সমস্যা হলেও আমরা এই বিষয়ে গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় অফিসেই সমাধান করে ফেলি। রেড ক্রিসেন্টের যে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে তার অনিয়ম হয়েছে। তার মধ্যে আমি এক জনের নাম দিয়েছি। তার নাম আরো একজন সদস্য দিয়েছে। একই নাম দুই জনের পক্ষ থেকে যাওয়ায় টাকা বিতরণের সময় ১ জনের টাকা বেঁচে যাওয়ার কথা কিন্তু বলা হচ্ছে তা নিয়ে গেছে। ঐ মহিলা টাকা পেয়েছে একবার তাহলে এ টাকা কে নিয়েছে। শপিং মলের ৩ দোকানের মালিকের টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। তাহলে কী করবো। আমি ঢাকার উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানাবো।
এদিকে আরেক সদস্য রেজাউল করিম রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নানিয়ারচর উপজেলায় যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আসলে আমাদের কোন হাত ছিলো না। আমাদের দুই ভাবে অনুদান এসেছে একটি হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা, আরেকিট হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা। উপজেলার যুব রেড উপজেলার রেড ক্রিসেন্ট ও জনপ্রতিনিধিরা লিষ্ট করেছে। এতে আমাদের করার কিছুই নেই। তারা যাদের দিতে বলেছে ঢাকার প্রতিনিধি সহ তাদেরকেই বিতরণ করেছি। অবশ্যই একটি ভুল হয়েছে একটি দিনেই দুই রকম ত্রাণ আমরা বিতরণ করেছি। তার জন্য বৈষম্যেও বিষয়টি সকলের নজরে এসেছে।
রাঙ্গামাটির শপিং মলের তিন দোকানের মালিককে টাকা দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে সকল সদস্য সমান নায় আমরা যাদের দিয়েছি তারা সকলেই দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। তারা আসলেই ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। যে বিষয়টি আপনি বলেছেন সেটা আমরা বলেছি। আসলে আমরা যার যার তালিকা প্রনয়ন করেছি আগেই তালিকা গুলো ঢাকায় চলে গেছে অনেক আগে। টাকা যখন দিচ্ছে তখনই আমাদের নজরে আসে কারা টাকা পাচ্ছে। তিনি বলেন, আগামীতে আশা করছি এরকম হবে না।
রাঙ্গামাটি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙ্গামাটি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর জানান, আমার দায়িত্ব পড়েছে বাঘাইছড়ি উপজেলায়। আপনারা জেনে নিতে পারেন আমি কাকে কাকে দিয়েছি। সব গুলো দরিদ্র শ্রেণীর মানুষেরা এই টাকা পেয়েছে। যাদের পরিবারের সকলেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, রাঙ্গামাটি সদরে বিতরণ করলে আমাদেও কাছেও কিছু অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। বিষয়টি আমরা আগামী মিটিংএ ধরবো।
রাঙ্গামাটি জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহফুজুল হক মাহফুজ জানান, আসলে বিষয়টি আমার নজরে ছিলো না। আমাদের দেয়ার কথা ছিলো হত দরিদ্রদের এই টাকা। প্রতিটি কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্যকের আমরা ২০ জন করে দরিদ্র মানুষের নাম দেয়ার জন্য বলেছি। তাদের আইডি কার্ড দিয়েই আমরা তাদের হাতে টাকা দিয়েছি। দু এক জনের বিষয়ে একজনের বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। যে সদস্য আমাদেরকে এই তালিকা দিয়েছে তাকে আমরা কোয়ারি করবো এবং ব্যবস্থা নিবো।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031