
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ শুক্রবার সকাল ৮টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ভোট গ্রহনের। কোনো প্রার্থী আর জনসভা, পথসভা, মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। তবে নির্বাচনি প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চালাতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরীফুল আলম জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) এর ৭৮ ধারায় নির্বাচনে প্রচারের সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা এবং ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় জনসভা আহ্বান, অন্য কারও জনসভায় অংশ নেয়া যাবে না। এমনকি মিছিল, শোভাযাত্রা বা এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন বা অংশ গ্রহণ কোনোটিই করা যাবে না।
তিনি জানান, ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। তার আগের ৪৮ ঘণ্টা হিসাবে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে সব ধরনের প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। এখন আর ভোট চেয়ে মাইকিংও করা যাবে না।
এদিকে প্রচারের শেষদিকে বৃহস্পতিবার দিনভর ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। এদিকে, নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোট বাতিল করেছে ইসি। ফলে দেশের ২৯৯ আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৯৯ আসনে ১ হাজার ৯৭০ প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন এবং তারা নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়াই করছেন ১ হাজার ৫৩৪ প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন।
ইতিমধ্যেই ভোটের দিন উপলক্ষে ওইদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শুক্রবার ও শনিবারও ব্যাংক খোলা রাখার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৬ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা হতে ৭ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক ইত্যাদি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
একইসঙ্গে ৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা হতে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
এই নিষেধাজ্ঞা নি¤œবর্ণিত ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য হবে-
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন এবং ঔষধ, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও অনুরূপ কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও সংবাদপত্র বহনকারী সকল ধরনের যানবাহন, আত্মীয়-স্বজনের জন্য বিমানবন্দরে যাওয়া, বিমানবন্দর হতে যাত্রী বা আত্মীয়-স্বজনসহ নিজ বাসস্থানে অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত যানবাহন (টিকেট বা অনুরূপ প্রমাণ প্রদর্শনপূর্বক) এবং দূরপাল্লার যাত্রী বহনকারী অথবা দূরপাল্লার যাত্রী হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য যেকোনো যানবাহন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীর জন্য ১টি, প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টের (যথাযথ নিয়োগপত্র/পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে) জন্য ১টি গাড়ি (জিপ, কার, মাইক্রোবাস ইত্যাদি ছোট আকৃতির যানবাহন) রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন ও গাড়িতে স্টিকার প্রদর্শন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি পাবে।
এছাড়া, সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক অথবা জরুরি কোনো কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি পাবে। নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী অথবা অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি থাকবে।
প্রতিবন্ধী ভোটারদের সহযোগিতায় নিয়োজিত যানবাহন, ঢাকা মহানগর থেকে বাহির বা প্রবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও প্রধান প্রধান রাস্তার সংযোগ বা উক্তরূপ সকল রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।