পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ীদের বৈসাবী উৎসব উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে আনন্দ শোভাযাত্রা

॥ ফাতেমা জান্নাত মুমু ॥ দীর্ঘ বছর ধরে দাবি থাকলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। তাই সংরক্ষণের অভাবে বিলুপ্ত প্রায় পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি বলে মন্তব্য করেছেন, সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার এমপি।
তিনি বলেন, অপসংস্কৃতির কারণের ঐতিহ্য হারাচ্ছে পাহাড়ের মানুষ। এছাড়া বাস্তবায়ন করা হয়নি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিও। চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব সফলতা পাচ্ছেনা। কারণ পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব পালন করার মতো এখনো স্বাভাবিক পরিস্থিতি গড়ে উঠেনি। তাই তো উৎসবে পাহাড়ের মানুষের মনে আনন্দ উল্লাস নেই।
রবিবার (৯এপ্রিল) সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা চত্বরে বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিহু, বিষু (বৈসাবি) চারদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ঊষাতন তালুকদার এমপি এসব কথা বলেন।
এসময় বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসু, বিহু, বিষু  উযাপন কমিটির আহবায়ক ও আদিবাসি ফোরামের পার্বত্য চট্টগ্রাম ক অঞ্চলের আহবায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. মানিক লাল দেওয়ান প্রমুখ।
এ সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলো এখনো সাংবিধানিক স্বীকৃতি পায়নি। প্রতিটি সম্প্রদায় নিজস্ব জাতি হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু শাসক গোষ্ঠি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিচয় চাপিয়ে দিয়ে তাদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করার প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছে। পার্বত্যাঞ্চলের বুকে উৎসব আনন্দ ও সংস্কৃতির লালন, বিকাশ এবং পাহাড়ি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প কিছুই নেই। তিনি জুম্মজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চুক্তি বাস্তবায়নের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহবান জানান।
এ আগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠেিদর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি উৎসব পৌরসভা প্রাঙ্গনে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। পরে  রাঙামাটি শহরে একটি বিশাল র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীতে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী চাকমা, মারমা, খুমী, ম্রো ও চাক, বম, খিয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা, অহমিয়া, পাংখোয়া ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় র‌্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে গিয়ে শেষ।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930