
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ টানা ভারী বৃষ্টিপাতে কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ও এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র কাচালং সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এই কলেজের বিভিন্ন বিভাগের ৪৬৮ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ির নি¤œ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কলেজ ও আশপাশের এলাকার সব সড়কসহ কলেজের প্রধান সড়কটি ৫ ফুট গভীর পানির নিচে ডুবে রয়েছে। এছাড়া কলেজের নিচ তলার সবকটি পরীক্ষা কেন্দ্র পানিতে তলিয়ে গেছে।
শুধু এইচ এস সি পরীক্ষা নয় কলেজে শুরু হয়েছে ডিগ্রী ২য় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষাও অনিশ্চিত হয়ে পরেছে পরীক্ষার্থীদের। অনেক কষ্টে নৌকা যোগে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে পরীক্ষার্থীদের। অন্যদিকে মঙ্গলবার বিকেলে কৃতিত্ব চাকমা (১২) নামে এক স্কুল ছাত্র রাস্তা পার হতে গিয়ে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছে। এখনো তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
কাচালং সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা খুবই চিন্তিত বন্যার কারণে ৪৬৮ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা কিভাবে নিবো বুঝতে পারছি না। ইতোমধ্যে বন্যার বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা বন্ধের বিষয়ে কোন নির্দেশনা আসেনি এছাড়াও ডিগ্রী পরিক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে ১৭৪ জন। রাত পোহালে এইচ এস সি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় (ইংরেজি) পরীক্ষা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উৎকন্ঠায় রয়েছে এই পানি মাড়িয়ে কিভাবে কেন্দ্রে যাবে শিক্ষার্থীরা। যদি পরীক্ষার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না হয়, সেই ক্ষেত্রে আমাকে যেকোন ভাবে এই পানিতে বসেই পরীক্ষায় পরীক্ষা নিতে হবে। আমার নিজের বাসাও পানিতে ডুবে গেছে, ফলে আমি নিজেই কলেজের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয় নিয়েছি।
বুধবার স্নাতক পরীক্ষায় অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীরা কোমর পানিতে ভিজে ভিজে কলেজে আসে এবং দোতলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। অনেককেই নৌকা করে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে সরাসরি দোতলায় যেতে দেখা গেছে। এই উপজেলায় দুইটি পরীক্ষা কেন্দ্র, যার আরেকটি দুর্গম সিজক কলেজ,যেটি কাচালং কলেজ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে।
এবিষয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার বলেন, বাঘাইছড়ির যে অবস্থা, কোন ভাবেই এখানে পরীক্ষা পরিচালনা করা সম্ভব নয়, আমি কেন্দ্রসচিব (প্রিন্সিপাল)কে বলেছি বিষয়টি আমাকে লিখিতভাবে জানানোর জন্য। তিনি জানানোর পর আমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি বোর্ডকে অবহিত করেছি। আমরা মোটামুটি নীতিগতভাবে পরীক্ষা স্থগিত করার বিষয়টি বিবেচনা করছি।
এদিকে, বাঘাইছড়ির বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনো প্রায় কয়েক হাজার মানুষ এই প্লাবনে পানি বন্দী হয়ে আছে। আর প্রায় ২ হাজারের অধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে।
পানিতে তলিয়ে যাওয়া সম্ভাব্য সকল স্থান পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের শান্তনা প্রদানসহ পৌর এলাকায় পানিবন্দী ও আশ্রিত বর্ন্যার্তদের মাঝে খিচুড়ি বিতরন করছেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার, বাঘাইছড়ি পৌরসভার মেয়র জমির হোসেন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আলম ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পারভেজ আলীসহ সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা।