অজ্ঞত রোগে বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় গরু শুকরের মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা বান্দরবান ও থানছি ঃ অজ্ঞাত রোগে বান্দরবানের থানছিতে গরু ও শুকর মারা যাচ্ছে। গত তিন দিনে শুধু মাত্র উপজেলা সদরেই মারা গেছে ২৫টির বেশি গরু ও শুকর। আক্রান্ত হয়েছে অনেক। এতে করে খামারী ও কৃষকরা আতংকের মধ্যে রয়েছে। উপজেলাায় প্রাণি সম্পদ বিভাগের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী না থাকায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানিয়রা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলায় গরু শুকরের মধ্যে এই অজ্ঞত রোগ দেখা দেয়। রোগাক্রান্তের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মারা যাচ্ছে প্রাণিগুলো। গত তিন দিনে উপজেলা সদরের বেশ কয়েকটি পাড়ায় আক্রান্ত ২৫টি গরু মারা গেছে। এছাড়া বেশ কিছু শুকরও ইতিমধ্যে মারা গেছে এই রোগে। স্থানিয়দের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেডম্যান পাড়া, বই অং হেডম্যান পাড়া, ছানদাক পাড়া, বাজার পাড়া, ছাইঅং পাড়াসহ বেশ কয়েকটি পাড়ায় খামারী ও কৃষকদের ২৫টি গরু অজ্ঞাত রোগে মারা গেছে। আশে পাশের আরো পাড়াগুলোতে একই রোগে শুকরও মারা গেছে। আক্রান্ত পশুগুলোকে মাটি চাপা দিয়েছে কৃষকরা। রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকায় স্থানিয়রা আতংকিত হয়ে পরেছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, থানছি সদরের সামসু সওদাগরে দুটি গরু, পুপখ্যং মারমার ১টি গরু, নুরুল আমিনের ১টি গরুসহ এলাকার ২৫টি গরু গত বৃহস্পতিবার থেকে অজ্ঞাত রোগে মারা গেছে। সদর ইউপি চেয়ারম্যা ,মাংছার ¤্রাে জানান, হঠাৎ করে অজ্ঞত রোগে গরু শুকর মারা যাওয়ায় সবাই আতংকের মধ্যে রয়েছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের অফিসটিও বন্ধ রয়েছে। কোন কর্মকর্তা কর্মচারী নেই। কৃষক ও খামারীরা তাদের আক্রান্ত গরু শুকরগুলো বাঁচাতে কোন চিকিৎসাই পাচ্ছেন না। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান চসা থোয়াই মারমা জানান, শুধু থানছি সদরেই নয় তিন্দু, রোমাক্রী ইউনিয়নের দুর্গম এলাকার বিভিন্ন পাড়া গ্রামেও অজ্ঞাত রোগ দেখা দিয়েছে। রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক গরু, ছাগল ও শুকরের মৃত্যু হয়েছে। কৃষক খামারীরা সর্বশান্ত হয়ে পরছে। প্রাণি বিভাগের লোকজনদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা টিকা দেয়ার কাজ শুরু করবে বলে তাদের জানিয়েছে। এলাকার লোকজন অভিযোগ করে বলেছেন থানছি উপজেলার প্রাণি সম্পদ বিভাগের অফিসটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। কর্মকর্তা কর্মচারীরা এলাকায় থাকেন না। উপজেলা কর্মকর্তা মাসে একবার এসে বেতন ভাতা তুলে নেন। এলাকায় গবাদি পশু প্রাণির মধ্যে রোগ দেখা দিলে কিছুই করার থাকেনা। ফলে বাধ্য হয়ে নিজেদেরই চিকিৎসা করতে হয়। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান। তবে তিনি জানান, এলাকায় অজ্ঞাত রোগে গরু শুকরের মৃত্যুর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে এটি তরকা রোগ। অথবা প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক বা খাবারে বিষক্রিয়ার কারনেও মৃত্যু হতে পারে। রবিবার থেকে প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ে তরকা রোগের টিকা দেয়ার কাজ শুরু করবে বলে তিনি জানান।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31