
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ তীব্র তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং আর সেই সাথে যোগ হয়েছে পানি সংকট। প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অব্যাহত তাপদাহ, লোডশেডিং আর পানি সংকট বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ের জনজীবন হয়ে উঠেছে বিপর্যস্ত। গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ দুঃসহ অবস্থানের মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বৃষ্টি না হলে এ পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রচন্ড গরম আর বিদ্যুৎ-পানি সংকটে নাভিশ্বাস উঠেছে এলাকার সর্বসাধারণের। এতে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। পানির অভাবে প্রত্যন্ত এলাকার পাহাড়ের কয়েকটি গ্রামের বসবাসকারীরা এলাকা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে নিচু ভূমিতে। এছাড়া প্রচন্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ।
জানা গেছে, গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগেই বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে নাকাল হয়ে পড়ে রাঙ্গামাটিবাসী। বর্তমানে সংকট চরমে। এরমধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে গেছে। হ্রদে পানির স্তর অস্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন, পানি সরবরাহ ও নৌ চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে, রাঙ্গামাটিতে সার্বক্ষণিক ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে। এতে বিদ্যুৎ বিপর্যস্ত শহরের স্বাভাবিক জনজীবন। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত কমছে। ফলে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন সংকট চলছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে পানি সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ।
অপর দিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের জন্য শিশু থেকে সব বয়সী নারী পুরুষ শিক্ষার্থী, অসুস্থ্য রোগীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে ২-৩ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসছে। বিদ্যুৎ শুধু দিনে রাতেই নয়, মধ্যরাতেও চলে যাচ্ছে। ফলে রাতের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে সেচ নিয়ে কৃষকদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
স্থানীয় লোকজন জানান, রাঙ্গামাটি সদর এলাকাসহ জেলার সবকটি উপজেলায় প্রায় টিউবওয়েল অকেজো। শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদসহ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় জেলার কয়েক হাজার রিংওয়েল ও টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সেসব রিংওয়েল ও টিউবওয়েল থেকে কোনো রকম পানি উঠছে না। শুকিয়ে গেছে ছড়া, ঝরণা ও ঝিরির পানি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কাপ্তাই হ্রদে অতিরিক্ত পানি কমে যাওয়ায় শহরের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট দিয়ে হ্রদ থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নিয়মিত পানি সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে।