টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, তীব্র পানি সংকট

॥ বান্দরবান সংবাদদাতা ॥ বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্গত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চালু হলেও বুধবার (১৪ জুন) অব্দি বান্দরবান-রাঙ্গামাটি এবং রুমা উপজেলা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি। এদিকে, সকাল থেকেই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে শুরু করেছে।
প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা সদরের দুর্গত এলাকার প্রায় ৩ হাজার মানুষ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়াও বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার আশ্রয় নেয় প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজনের বাড়িঘরে। পাহাড় ধসে বান্দরবানের তিনটি স্থানে শিশুসহ মারা গেছেন ৬ জন। আহত হয়ে আরও ১১ জন নারী-পুরুষ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে পাহাড় ধসে আজও (বুধবার) বান্দরবান-রাঙামাটি এবং রুমা উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পাহাড় ধসে বান্দরবানে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানিও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদেরও আশ্রয় কেন্দ্রে ছেড়ে বসতবাড়িতে ফিরতে দেখা গেছে।
স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক আমীর হোসেন জানান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে। তবে, রাঙ্গামাটি এবং রুমা উপজেলা সড়কে পাহাড় ধসে এখনো যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ সব রুটেই সড়কে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচলও।
বন্যা দুর্গত ইসলামপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সোলায়মান ও মোহাম্মদ মোল্লা জানান, প্লাবিত ঘরবাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো থেকে কাদা মাটি আর ময়লা আর্বজনায় এখনো অপসারণ করা হয়নি। মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ত্রাণসামগ্রী না দিলেও দ্রুত দুর্গত এলাকাগুলোতে খাবার পানি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ‘বন্যা ও পাহাড় ধসে বিপর্যস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে বান্দরবান। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছে বন্যা দুর্গতরা। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া প্রায় আড়াই হাজার দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়েছে। দুর্গতদের মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031