
মোবাইলে উপবৃত্তি বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বুধবার গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে ‘মায়ের হাসি’ নামে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “একটা আবেদন করব অভিভাবকদের প্রতি যে, নিজের ছেলেমেয়ে মন দিয়ে যাতে পড়াশোনা করে সেদিকে যেমন দৃষ্টি রাখবেন, আবার ছেলেমেয়ে যেন বিপথে না যায় ছোটবেলা থেকেই তাকে সেইভাবে গড়ে তুলবেন।
“যেন তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে। তারা যেন দেশকে ভালবাসতে পারে।”
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ‘মায়ের হাসি’ নামে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ করা হবে দেশের এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের হিসাবে। এতে দেশের নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে বলে সরকার মনে করছে।
আগে এই উপবৃত্তির অর্থ শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হত। এখন তা সরাসরি চলে যাবে তাদের মায়ের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে।
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল কোম্পানি টেলিটকের হিসাবে উপবৃত্তির টাকা পাঠানো হবে রূপালি ব্যাংকের শিওরক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং থেকে।
প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য মাসে ৬০০ টাকা হিসাবে বছরে এ উপবৃত্তিবাবদ ১৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে অনুষ্ঠানে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
শেখ হাসিনা বলেন, “শিক্ষার্থীদের মানসিকতা এমনভাবে গড়ে উঠবে যেন এ দেশটা তার নিজের এবং দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের কল্যাণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের মোবাইল ফোন নেই, টেলিটক বিনামূল্যে প্রায় ২০ লাখ সিম ও প্রত্যেক মাসে ২০ টাকা বিনামূল্যে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার একটা চুক্তি করেছে।শেখ হাসিনা জানান, তিনি ক্ষমতায় আসার আগে বিরোধীদলে থাকার সময় শিক্ষার্থীদের স্কুলে না আসা ও ঝরে পড়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বৃত্তি ও উপবৃত্তি দেওয়ার বিষয়টি মাথায় আসে।
“আমরা শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছে।”
এবছর বিনা পয়সায় ৪ কোটি ১৬ লাখ শিক্ষার্থীকে বই দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বই কেনার খরচ, এটাও কিন্তু বাবা-মাকে নিতে হচ্ছে না। এ দায়িত্বটা আওয়ামী লীগ সরকার নিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টুঙ্গীপাড়া, পীরগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলায় সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীকে বিজয় সরণীর যানজট নিরসনে ‘সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার’ ওপর একটি এনিমেটেড উপস্থাপনা দেখানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীকে উপস্থাপনাটি দেখান সেনাবাহিনীর প্রধান প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান সরকার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সেনা প্রধান আবু বেলাল মো. শফিউল হক, মুখ্যসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।