খাগড়াছড়ি পৌরসভার উদ্যোগে পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ ও দুঃস্থদের জন্য নির্মিত হলো আশ্রয়ন

॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্থ, এতিম, বিধবা, নদী ভাঙনের শিকার অসহায়-গরিব ও দুঃস্থদের মাঝে নতুন আশার সৃষ্টি হয়েছে খাগড়াছড়ি পৌরসভার উদ্যোগে নির্মিত আশ্রয়নে। প্রথম পর্যায়ে ৩৪টি বাড়ির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের শুরুর দিকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ নির্মিত এসব ঘরে আশ্রয় পাবেন চিরদুঃখী লোকজন।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার সচিব পারভীন আক্তার খোন্দকার জানান, তারা প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে খাগড়াছড়ি শহরের ২ নং ওয়ার্ডের কুমিল্লাটিলা নামক এলাকায় পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈই চিং এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপনের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়। সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে।
জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয়ে এই পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ হবে বাকী কাজ। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই ৩৪ টি পরিবারকে বরাদ্দ দেওয়া হবে ৩৪টি বাড়ি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আবেদন পড়েছে ৫ শতাধিক। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত আশ্রায়নে অসহায় পরিবারগুলোকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দিতে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। নীতিমালার আলোকে আশ্রায়ন সংক্রান্ত কমিটি যাচাই-বাছাইয়ের পর বরাদ্দ দিবে বাড়িগুলো। এছাড়া আগামী অর্থবছরে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের শালবাগান এলাকায় প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হবে দ্বিতীয় আশ্রয়ন প্রকল্প। সেখানে ৪০ পরিবারকে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে বলে জানান পৌরসভার সচিব।
শহরের হরিনাথ পাড়া এলাকার মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি পাহাড় ধসের আশংকায় ৮ সদস্য বিশিষ্ট পরিবার নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তিনি শুনেছেন অসহায়দের জন্য আশ্রয়ন তৈরি হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি ঘর স্থায়ীভাবে বরাদ্ধ পেতে আবেদন করেছেন তিনি।
শহরের শালবাগান এলাকার বিধবা আমেনা বিবি বলেন, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি তার তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তার জমিজমা ও বাড়িঘর নেই। মেয়রের নিকট আবেদন করেছেন। একটি ঘর বরাদ্দ পেলে সবাইকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।
শহরের গঞ্জপাড়া এলাকার মংশি মারমা বলেন নদী ভাঙনে তার জমিজমা ও বাড়িঘর সবই গেছে। বর্তমানে তিনি খাগড়াছড়ি পৌরসভার ছিন্নমূল মানুষ।
খাগড়াছড়ি পৌরসভা মেয়র মো. রফিকুল আলম জানান, ছিন্নমূল মানুষদের আশ্রয়নে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেওয়ার পর কাজ শুরু করেছেন তিনি। আশ্রয়নে বরাদ্দ পাওয়া শিশুদের লেখাপড়া, খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধাসহ প্রতিটি পরিবার জীবন-ধারনের সকল নাগরিক সুবিধা পাবে। স্বপ্ন পূরণে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31