বনানী কবরস্থানে : মা ও ছেলের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত মেয়র আনিসুল হক

শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। শনিবার বিকেলে বনানী কবরস্থানে তার তার মা ও ছোট ছেলে শারাফের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

 

এর আগে বিকেল ৩টার পর বনানীর বাসা থেকে বের হয়ে আনিসুল হকের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি বিকেল সাড়ে ৩টায় আর্মি স্টেডিয়ামে পৌঁছায়।  সেখানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সরোয়ার হোসেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন, স্পিকার শিরীন শারমিনের পক্ষে ক্যাপ্টেন মোশতাক আহমেদ, আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া বিজিএমইএ, এফবিসিসিআই, বিকেএমইএসহ সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

 

পরে বিকেল সোয়া ৪টায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। গত শুক্রবার বাদ জুমা আনিসুল হকের প্রথম নামাজে জানাজা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক সেন্ট্রাল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুনবার দুপুর পৌঁনে ২টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের বনানীর বাসভবনে যান। তিনি মরহুম আনিসুল হকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  শেখ হাসিনা সেখানে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় মরহুমের স্ত্রী,পুত্র ও কন্যারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। প্রধানমন্ত্রী এরপর মআনিসুল হকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। তিনি মেয়রের বাসভবনে প্রায় ৩০ মিনিট অবস্থান করেন।

 

এর আগে দুপুর ১টার দিকে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে (বিজি ০০২) আনিসুল হকের মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার বনানীর বাসায়। এ সময় সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীসহ মেয়রের ছোট ভাই সেনাপ্রধান আবু বেলাল মো. শফিউল হকও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মেয়র আনিসুল হক নাতির জন্ম উপলক্ষে গত ২৯ জুলাই সপরিবারে লন্ডনে যান। গত ১৪ আগস্ট দেশে ফেরার কথা থাকলেও আগের দিন রাতে হঠাৎ করেই অসুস্থ হন তিনি।  পরিবারের সদস্যরা তাকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অধীনেই পরীক্ষা চলার সময় জ্ঞান হারান তিনি। এ সময় চিকিৎসকরা তার মস্তিস্কের রক্তনালীতে প্রদাহজনিত (সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস) হয়েছে বলে জানান এবং সেখানেই তার দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা চলতে থাকে।

 

তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে গত ৩১ অক্টোবর তাকে আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশনে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে গত ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার হঠাৎ করেই তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমান্বয়ে আবারও অবনতি হতে থাকে। ৩০ নভেম্বর লন্ডন সময় ৪টা ২৩ মিনিটে তিনি লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আনিসুল হকের বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। মৃত্যুর সময় স্ত্রী রুবানা হক ও সন্তানরা তার পাশে ছিলেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31