হত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে হরতাল ডেকেছে জেলা যুবলীগ পাহাড়ের অস্ত্রের ঝনঝনানি,১ দিনে ২ জনকে হত্যা, ১জন আহত

॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ পাহড়ের শান্ত পরিস্থিতি আবারো অশান্ত হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো অস্ত্রের ঝনঝনানিতে মেতে উঠেছে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন গুলো। ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের পাশাপাশি আমাগী নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করতে মাঠে নেমে আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস এমনটাই দাবী করেছেন আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় সদস্য দীপংকর তালুকদার।
শান্তি চুক্তির ২ দশক পূর্তির অনুষ্ঠানের দুই দিন পর আবারো রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে রাঙ্গামাটির পাহাড়। সাধারণ মানুষের মনে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। এদিকে জুরাছড়িতে দলীয় নেতার হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটিতে জেলায় সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জেলা যুবলীগ। বুধবার রাঙ্গামাটি শহরের নিউ কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ হরতালের ডাক দেয়া হয়।
৫ জুন গেল মঙ্গলবার একই দিনে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর ও জুরাছড়ি উপজেলায় দুই জনকে গুলিতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আর বিলাইছড়িতে অপর এক জনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।
নিহতরা হলেন নানিয়ারচরের সাবেক চেয়ারম্যান অনাদি রঞ্জন চাকমা, জুরাছড়ি আওয়ামীলীগ নেতা অরবিন্দ চাকমা। আর কুপিয়ে আহত করা হয় বলাইছড়ির আওয়ামীলীগ নেতা রাসেল মারমাকে। বুধবার নিহতদের ময়না তদন্ত শেষে আত্ময়ি স্বজনকে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। আহত রাসেল চাকমাকে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত রাসেল চাকমা ও নিহত অরবিন্দ চাকমার ভাই সত্য প্রিয় চাকমা ঘটনার জন্য দায়ী করেন স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এ সব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবী দানিয়েছেন তিনি। দীপংকর তালুকদার বলেন, পাহাড়কে অশান্ত করতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গুলো উঠে পড়ে লেগেছে। পাহাড়ের আঞ্চলিক দল গুলো আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করার যে ষড়যন্ত্র তারা মেতেছে তা কখনোই সফল হবে না। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ ছোট দল নয় যে নিশ্চিহ্ন হবে। তিনি বলেন, এভাবে আওয়ামীলীগের মানুষদেরকে হত্যা করে তার আদর্শকে মুছে ফেলা যাবে না। তিনি পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন গুলোকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সঠিক ভাবে রাজনীতি করেন দেখা যাবে কে কতটুকু জনপ্রিয়। অস্ত্র নিয়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ভয় দেখালে কখনোই আওয়ামীলীগ ধ্বংস হবে না। বরংচ আওয়ামীলীগ আরো উজ্জীবিত হয়ে অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে।
বিকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশে আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হাজী কামাল উদ্দিন, আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মুছা মাতব্বর, রাঙ্গামাটি জেলা যুবলীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা প্রমুখ।
হত্যাকান্ড দুটিকে টার্গেট কিলিং বলে ধারণা পুলিশের। তবে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাগুলো আইন শৃংখলা পরিস্থিতিকে বিঘœ করবেনা বলে জানান রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার সাইদ তারিকুল হাসান।
এদিে ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার জুরাছড়ি উপজেলায় পালন করা হয় সকাল- সন্ধ্যা হরতাল। পাহাড়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপর হামলা শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31