সংবাদিকতার পথিকৃৎ এ,কে,এম মকছুদ আহমেদের জীবনী নিয়ে গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব : পার্বত্য এলাকার শিক্ষায় ও সাংবাদিকতার মহাগুরু এ কে এম মকছুদ আহমেদ—-বীর বাহাদুর এমপি

॥ মিল্টন বাহাদুর/নন্দন দেবনাথ ॥ সময়ের সাহসি সৈনিক এই পার্বত্য অঞ্চলের দূরসময়ের যিনি জীবন বাজি রেখে মানুষের মনে কথা জানানো এবং অনেক ঝড় ঝাপড়াটাকে তোয়াক্কা না করে নিজের জীবনকে বাজি রেখে কলম সৈনিক হিসেবে কাজ করেছে গেছেন তিনি হলেন এ কে এম মকছুদ আহমেদ।
এ কে এম মকছুদ আহমেদ একজন ব্যক্তিনয় একটি প্রতিষ্ঠান। যার সৃষ্টি কারণে পার্বত্য এলাকায় সাংবাদিকতার সৃষ্টি। তিনি হলেন পার্বত্য এলাকার শিক্ষায় ও সাংবাদিকতার মহা গুরু। যার অবদান চির অস্বীকার্য।
শনিবার (২৮ জুলাই) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মইনী হল রুমে রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরামের সহযোগিতায় ও রাঙ্গামাটি কর্মরত সংবাদকর্মীদের আয়োজনে ইয়াছিন রানা সোহেল সম্পাদিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ এ,কে,এম মকছুদ আহমেদের জীবনী নিয়ে গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেন।
সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩৩৩, জাতীয় সংসদের এমপি ফিরোজা বেগম চিনু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ এ,কে,এম মকছুদ আহমেদের জীবনী নিয়ে গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে গেষ্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ, ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক, রাঙ্গামাটি জোন কমান্ডার মোহাম্মদ রেদাওয়ানুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম শফি কামাল, ইয়াছিন রানা সোহেল।
অনুষ্ঠানে গ্রস্থ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী ও রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আরো বলেন, আজকে একটি বীচ যদি রোপন না হতো তা হলে ধানের ছড়াটা বের হতো কেমন করে। একটি বীচ বা চারা যদি রোপন না করতাম তা হলে হাজারো আম ধরতো কিভাবে। কিন্তু সেই জায়গায় আমরা লক্ষ্য রাখি না। আর ইয়াছিন রানা সেই কাজটি করেছে। আমার যেখানে সৃষ্টি যেমন নদী, সাগর, মহা সাগর। কিন্তু নদীর সৃষ্টিটাকে আমরা কিন্তু মনে রাখি না। আর সেই বিন্দু থেকেই সিন্দু হয়ে যায়। তেমনী আজকে মকছুদ আহমেদ সেই দূর সময়ে যেভাবে সংবাদপত্র প্রকাশ ও সংবাদ সংগ্রহ শুরুটা করেছিল তা অত্যন্ত দূর্রহ ও অকল্পনীয়।
তিনি বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন, চট্টগ্রামের লোকজন পত্রিকার সংবাদগুলো পড়ে শেষ হয়ে যখন পোটলা বানানোর সময় হয়ে হয়ে যায় এবং প্রায় একমাস পরে ঐসমস্ত পত্রিকাগুলো আমাদের কাছে আসতো। এই সময় হয়তো দেখা গেলো পত্রিকাগুলো পাশে ছিড়া অথবা মাঝখানে অংশ নেই কিংবা পত্রিকার কোণা নেই এই ধরনের একমাসের পুরোনো পত্রিকাগুলো আসতো তাও কয়েক কপি। আর এইসব গুটি কয়েকজন হয়তো সেই পত্রিকাগুলো পড়তো। যেটি এখনো সকালে ঘুম থেকে উঠেই একবার চোখ না বুলালে ভাতের হজম হয়না। আর সেই সময় পত্রিকা কি আর সংবাদিক কি এগুলোতো ভাবাই জায়না। এখানো পর্যন্ত সাংবাদিকতা করবো কি করবো না যেখানে ভাবনা সাংবাদিকতা করলে অথবা পেশা হিসেবে নিলে আমার কি পেট চলবে কিনা আমার ভবিষ্যত চলবে কিনা যেখানে এখনো এই যুগে এসে চিন্তা করি তা হলে আজ থেকে ৩৫/৩৬ বছর আগে সাংবাদিকতা করবো এইতো ভুলে কারোর মাথায় ঢুকে না। তাইও গুটি কয়েক গুরুজনরাই নিজে কাজ করতে গিয়ে যাদেরকে ¯েœহ করে কাছে টেনে টেনে একদিন আসেতো দুই দিন আসে না দুইদিন আসে তো একদিন আসে না এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে এই পত্রিকাগুলো এভাবে চালাতে হয়েছে।
আর আজকে এ কে এম মকছুদ আহমেদের এই বই প্রকাশনা উৎসবের কারণে তিনি মনে মনে ভাবছেন আমার এই প্রতিষ্ঠানটিকে আরো কিভাবে গড়ে তুলতে পারি, আমার সাংবাদিক ভাইদের আরো কিভাবে উপকার করতে পারি, তার যে ভাবে আমার কথা বলছে আমার ভাল মন্দ নিয়ে আলোচনা করছে। আজকে আমি বেঁচে না থাকতাম এইসব কথাগুলো কে শুনতো। এই যে উনাকে উৎসাহিত করা হলো, উনার গতিটাকে যে বাড়ানো হলো। তার কর্মকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে আজকে এগুলো লোকের সমাগম হলো শুধু উনার প্রতি মানুষের ভালবাসা। তাই আমি মনে করি সম্মান যে দিতে জানে সম্মান সে পাই। আর আগামী দিনেও তরুন প্রজন্মের সাংবাদিকের প্রতিকৃত ইয়াছিন রানা সোহেলের নাম এখানে উঠবে আবার। কারণ সে সম্মান দিয়েছে তাই এই সম্মান সে পাবে। আর এই ভাবে আমরা বেঁচে থাকবো।
ফিরোজা বেগম চিনু এমপি বলেন, এ কে এম মকছুদ আহমেদ ছিলেন সাংবাদিকতার জগতের একজন সিংহ পুরুষ। তিনি পাহাড়ের সাংবাদিকতার জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তেমনী তার লেখনীতে উঠে এসেছিল এখানকার পিছিয়ে পড়া মানুষের সুখ, দুঃখ ও এলাকার উন্নয়নের কথা। যা এখানকার মানুষ চিরদিন মনে রাখবে। আমি আশা করি পার্বত্য অঞ্চলের যারা গুণি ব্যক্তিরা আছেন তাদের জীবনী যদি আমরা এভাবে প্রকাশ করতে পারি তা হলে ছোটরা আমাদের কাছ থেকে শিখে তারাও একদিন আমাদের মুল্যায়ন দিতে শিখবে।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, গুণি জনদের সম্মান যদি আমরা ধরে রাখতে না পারি তা হলে ভবিষ্যতে এই ধারা বাহিকতা বজায় থাকবেনা। তাই এই ধারা বাহিকতা বজায় রাখতে সবাইকে সম্মেলিত ভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তা হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারবে এবং গুণিজনদের সম্মান করবে।
রাঙ্গামাটি উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় সবচেয়ে গুণিজন ও সবচেয়ে বিজ্ঞ সাংবাদিক এ কে এম মকছুদ আহমেদ। যিনি সারা জীবন অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাংবাদিকতার জগতকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং সাংবাদিক সৃষ্টি করে চলেছেন। আর তার এই সম্মাননার কারণে ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারবে বুঝতে পারবে।
দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক ও সাংবাদিকদের পথিকৃৎ এ কে এম মকছুদ আহমেদ বলেন, আমার এই বই প্রকাশ করে ইয়াছিন রানা যে কাজটি করেছেন তা অত্যন্ত কঠিন ও দূরূহ কাজ। কারণ নিজেও অনেক লেখা লেখি করেছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত নিচের লেখা বই ছাপাতে পারেনি। তবে এই সাংবাদিকতা করতে গিয়ে কত চোখ রাঙ্গানী, কতো মৃত্যুর পরোয়ানা জারি করা হয়েছে আমাকে তা বলে বোঝাতে পারবো না। কিন্তু তাদের এই চোখ রাঙ্গানী আর মৃত্যুর পরোয়ানাকে ভয় না পেয়ে মাথা নত না করে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছি। আমার কাজের দাড়ায় অনেকে খুসি হয়েছে আবারো দুঃখ পেয়েছে। তার পরেও আমি চেষ্টা করেছি সাংবাদিকতার নীতিমালা বজায় রেখে সঠিক সংবাদ প্রকাশ করে যাওয়া। তাই আমি এখনো বলি সঠিক তথ্য ও সাংবাদিকতার নীতিমালা বজায় রেখে সংবাদ প্রকাশ করতে।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031