॥ রাজস্থলী প্রতিনিধি ॥ রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলার ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের মবই পাড়া এলাকায় সকাল বিকাল বন্যহাতির আক্রমণে কৃষকদের ফলজ বাগান, আদা, বেগুন, সীমের গাছ, হলুদ, মরিচ ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মবই পাড়া, হাজী পাড়া, তালুকদার পাড়ায় গত ২৭ ফেব্রয়ারী থেকে আদা, হলুদ, কলা, পেঁপে, সাজিনা, মরিচ, বরই, আম, ঝাড়ু ফুলের বাগান হাতির পাল ক্ষতি করছে। ৯টি বড় হাতি ও ২টি ছোট শাবক হাতি তা-ব চালিয়ে সব কিছু ল-ভ- করে দিয়েছে বলে জানান কৃষকেরা।
এলাকাবাসী জানান, তাঁরা সারা রাত আগুন জ¦ালিয়ে, বাঁশ ফুটিয়ে, আতশ বাজি ফুটিয়ে বাগান-ক্ষেত পাহারা দিচ্ছে। অনেক সময় রাস্তার পাশে জঙ্গলে হাতির পাল অবস্থান করে। তাই দিনের বেলায়ও রাস্তায় ভয়ে ভয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
তালুকদার পাড়া, হাজী পাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন, ইউসুফ মেম্বার, মামতলি, আলি আহম্মদ, রফিক, আবুল কাসেম, নাজের আহম্মদ, উমেচিং মারমা সহ কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৩০ জন রয়েছেন। প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়ছে বলে কৃষকরা জানান।
কৃষক সুমু মারমা জানান, কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কলাগাছ, মরিচ, বরই বাগান করেন। হাতির পাল সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। তাঁর দাবি, হাতির পাল বাগান ফসলের ক্ষেত নষ্ট না করলে এ বছর সব বিক্রি করে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা পেতেন। কৃষক কাসেম বলেন, আমি শেষ হয়েছি আমার কলাবাগান, আলু ক্ষেত ও পেলন বিচির ক্ষেত সম্পন্ন নষ্ট করে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, গত এক মাস ধরে ১১টি হাতির পাল গাইন্দ্যা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ফলদ বাগান ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করছে। রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার গহীন অভয়রণ্যে হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে বিভিন্ন এলাকায় হাতির পাল ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে রাজস্থলীর গাইন্দ্যা ইউনিয়নে ১১টি হাতি ঢুকে পড়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার বলেন, বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং তিনি নিজেও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দুর্দশার কথা অবহিত করবেন।
কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাজস্থলী সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা তুহিনুর ইসলাম বলেন, হাতির বিচরণ ক্ষেত্র হলো হাতি যেখানে বসবাস করে সেখান থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত। পানি ও খাবার থাকলে নিজেকে নিরাপদ মনে করলে হাতি সেখানে অবস্থান করে। তবে খাদ্যের অভাব হলে হাতি বাইরে চলে আসে। তাদের কে উত্তেজিত করা যাবে না।
প্রশংঙ্গ গত বৃহস্পতিবার বন্যহাতির আক্রমনে উসাচিং নামক এক কৃষক নিহত হয়। এ পর্যন্ত বন্য হাতির আক্রমনে ৪/৫ জন মানুষ আহত ও নিহত হয়। হাতির তান্ডবে পাড়াবাসীর ঘুম হারাম হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ ঘরবাড়ী হতে পালিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।