॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ৭২ এর সংবিধানে দেশের সকল জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, পাহাড়ে জাতীয়তাবাদের নামে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মধ্যে বিভেদ তৈরী করা হয়েছে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামে নানা বিভাজন ও অশান্তি জিইয়ে রেখে অন্য পক্ষকে সুবিধা নিয়েছে। তাই সকল জনগোষ্ঠীকে সমমর্যদা দিয়ে নতুন সংবিধান রচনা করতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে রাঙ্গামাটির বনরুপায় আয়োজিত এক পথ সভায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। এর আগে তিনি কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া, ঘাগড়া ও রাঙ্গুনীয়ার রানীরহাট বাজার এলাকায় পথ সভায় বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, আমরা সকল বিভেদের উর্ধে রেখে সকল জনগোষ্ঠীর মর্যাদা দিয়ে নতুন সংবিধান তৈরী করতে চাই। আমরা চাই মুজিববাদী সংবিধানকে বাতিল করে নতুন একটি গনতান্ত্রিক সংবিধান তৈরীর জন্য সকলে মিলে নতুন একটি চুক্তিতে উপনীত হই যাতে পাহাড় ও সমতলের অধিকার নিশ্চিত হবে।
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, এনসিপি এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়, যে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বহু জাতিগোষ্ঠী, ভাষা ও সংস্কৃতির সম্মিলন থাকবে। সেখানে সব নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদার কোনো বৈষম্য থাকবে না। সে জন্য একটি নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে।
এনসিপির নেতারা রবিবার দুপুরে রাঙ্গামাটি শহরে এসে পৌঁছান। এরপর জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বর থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। শহরের প্রধান সড়ক হয়ে বনরুপা সিএনজি চত্বরে এসে পদযাত্রা শেষ হয়। পরে সেখানে শুরু হয় পথসভা। এই পদযাত্রা ও পথসভাকে ঘিরে রাঙ্গামাটি জেলার প্রবেশপথ কাউখালীর বেতবুনিয়া থেকে শুরু করে পুরো রাঙ্গামাটি শহরে নজীরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানের মধ্য দিয়ে ঘন্টাব্যাপী পথ সভা অনুষ্টিত হয়।
নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে আরো বলেন, আমরা নিজেরা বা কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে কোন সমস্যা থাকলে তা আমরা নিজেরাই বসে সমাধান করবো। এনসিপি জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখন্ডতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ জন্য সব বিভাজন দূর করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সবার অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা হবে।
পথ সভায় স্বাগত বক্তব্য এনসিপির রাঙ্গামাটি জেলার প্রধান সমন্বয়ক বিপিন জ্যোতি চাকমা। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক সামান্তা শারমিন, ডা. তাসনীম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজীস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এতে উপস্থিত ছিলেন, এনসিপি নেতা নাছির উদ্দীন পাটোয়ারী, এস এম সুজা উদ্দিন, রুবাইয়া শ্রেষ্ট্রা তংচংগ্যা প্রমুখ।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ অতীতে পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন জাতিসত্তাকে স্বীকৃতি না দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মুজিববাদী সংবিধানে জাতিসত্তার স্বীকৃতি না দিয়ে সবাইকে জোর করে বাঙালি করা হয়েছিল। এনসিপি সেই ব্যবস্থা দূর করতে চায়। বর্তমানে দেশে বিচার ও সংষ্কার শেষ করে পরবর্তী বাংলাদেশ গঠন করতে হবে। তিনি বলেছেন পাহাড় থেকে সমতলে সবজায়গায় ভুলভ্রান্তির উর্ধে থেকে এ এলাকায় বসবাসরত বিভিন্ন জাতী গোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
এনসিপির উত্তারাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, দেশের কোন অপরাধী, দূর্নীতিবাজদের পানিসমেন্ট পোষ্টিং পার্বত্যঞ্চল বা উত্তরাঞ্চল,দক্ষিনাঞ্চল এটা অপরাধীর শাস্তি হতে পারেনা। যে দূর্নীতিবাজ তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পার্বত্য এলাকায় কোন চাদাবাজ ধান্ধাবাজদের জায়গা হবেনা। আমাদের কথায় কোন প্রকার ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে তা আমরা সংশোধন করে নিবো। এখানের মানুষের অধিকার প্রতিষ্টা এবং জীব- বৈচিত্র রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।