॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, লিটন ভট্টাচার্য্য রানা, খাগড়াছড়ি ॥ পার্বত্য জেলায় শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করতে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শান্তিু চুক্তি করে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি স্থাপন করেছেন, সেই লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জোয়ার বইছে এ এলাকায় বলে মন্তব্য করেন শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম পূর্নমিলনী উৎসবে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে শিক্ষা মন্ত্রী এইসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এই সরকার সারাদেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে সরকারি স্কুল, কলেজ করনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করন করেছে। তাছাড়া পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে এবং চলমান রয়েছে। এই সরকার মানুষের ভাগ্য পরির্বতনের লক্ষ্যে কাজ করছে সেই ধারা বাহিকতায় বর্তমান সরকারের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামীতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সরকার গঠনে পাশে থাকতে হবে। মন্ত্রী এ স্কুলে চারতলা একটি ভবন এবং মহিলা কলেজে একটি হোস্টেল নিমার্ণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. সুধীন কুমার চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, সাবেক সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো: আলী আহমদ খান, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো: রফিকুল আলম, প্রমূখ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি তার বক্তব্যে খাগড়াছড়িতে শিক্ষকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি অডিটরিয়াম নির্মানের ঘোষনা দিয়েছেন এবং এলাকার উন্নয়নে সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশের মতন তিন পার্বত্য অঞ্চলে সরকার উন্নয়ন করে যাচ্ছে। পার্বত্য জেলায় জন সংহতি সমিতি সরকারের সাথে শান্তি চুক্তি করেছে। আগেকার মানুষ খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম যেতে অন্তত ৯ ঘন্টা সময় লাগত। আর বর্তমান সরকার যেই দায়িত্ব নিয়েছে সেই দায়িত্ব পালন করেছে। এখন চট্টগ্রাম থেকে দিনে আসা-যাওয়া করা যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়েছে। তাতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রাস্তা ঘাট উন্নয়ন হয়েছে। এখানে হাসপাতাল হয়েছে। মহিলা কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন আনাচে কানাচে উন্নয়নের জোয়াড় চলছে। আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সরকারের উন্নয়ন দেখে আবারও ক্ষমতায় আসা সুযোগ দিতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অপরদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, এই সরকার উন্নয়ন করছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান সকল পাহাড়ী-বাঙ্গালী বর্তমান শান্তিতে আছে। আওয়ামীলীগ সরকার ২০১০ সালে ১০ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তির স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত সকল জনগণ সুশৃঙ্খল এবং শান্তিতে বসবাস করছে। তবে কিছু কিছু দূর্ঘটনা হয়ে থাকলে এগুলো দুস্কৃতিকারীরা শান্তি শৃঙ্খলাকে বিঘœ সৃষ্টি করে থাকে। এখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে, গোয়েন্দা বাহিনী রয়েছে, সেনাবাহিনী ও পুলিশ রয়েছে, কোন উশৃঙ্খল ব্যক্তি পার্বত্য অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার নজরে রাখবে। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের স্বার্থে সুন্দর, সুষ্ঠভাবে লেখাপড়া করে উচ্চ শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে সকালে খাগড়াছড়ি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কয়েক হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে বর্ণিল এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী মো: নুরুল ইসলাম নাহিদ।পরে বিদ্যালয় মাঠ থেকে এক শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় স্কুলের পুরাতন ও নতুন ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন সাজে অংশগ্রহন করেন।