মিয়ানমার সেনা সমাবেশ বৃদ্ধি করায় নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবি’র কঠোর নজরদারী

॥ নাইক্ষ্যছড়ি প্রতিনিধি ॥ মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে সেনা সমাবেশ বৃদ্ধি করায় এ দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি নজরদারী বাড়িয়েছে। বিশেষ করে তুমরু সীমান্তের ওপারে বাইশফাঁড়ি এলাকায় মিয়ানমার সেনারা তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করায় কঠোর নজরদারি বাড়ান বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সীমান্তে নজরদারীর দায়িত্ব পালনকারী এমন এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেনা সমাবেশ ও তাদের সন্দেহজনক গতিবিধি উপস্থিতির বিষয়টি জেনেই সীমান্তে কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে তারা। ঘুমধুম ও তুমরু এলাকার একাধিক সচেতন ব্যক্তি সীমান্তে মিয়ানমারের এ ধরণের উস্কানিমূলক আচরণে নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানরত হাজার হাজার রোহিঙ্গা ও সীমান্তের এপারের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
অপরদিকে ১১ বিজিবি ও অপরাপর বিজিবি কর্তৃপক্ষসহ সূত্র জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশারতলী, ফুলতলী, জারুলিয়াছড়ি, চাকঢালা ও দৌছড়ি ইউনিয়নের লেবুছড়ি থেকে মিলন পাড়া পর্যন্ত দেড় শতাধিক কিলোমিটার স্থল সীমান্তে বিজিবি কঠোর নজরদারী ও টহল বাড়িয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তবাসীকে অভয় দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে বলেছেন সীমান্ত রক্ষী বিওপি।
সীমান্তরক্ষী ১১ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মোঃ আজিজ আহমেদ ও ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের টহলসহ কার্যক্রম আরও জোরদার করেছি। আর সীমান্তে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে রেখেছি। এ ব্যাপারে কোনোরকম নতুন অনুপ্রবেশসহ কোনো ঘটনা ঘটলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। ওদের এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধিসহ সেনাদের উপস্থিতি আছে, সেটি জেনেছি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) হঠাৎ করে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধির মধ্যে রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে সীমান্তে দেশটির সেনা টহলের বিষয়ে ঢাকার উদ্বেগের কথা জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, রাখাইনের আরাকান আর্মির সঙ্গে যে সংঘাত চলমান, তার অংশ হিসেবে সৈন্যদের আসা-যাওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরো চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। এরই মধ্যে গত শুক্রবার সকাল থেকে সেনা সমাবেশ শুরু করে রহস্যজনক কারণে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930