শততম টেস্টে স্মরণীয় করে রাখার কথা জানিয়েই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। ঐতিহাসিক এই টেস্টের প্রথম দিন মাঠে দেখা গেল অন্য বাংলাদেশকে। দিনেশ চান্দিমালের অপরাজিত ৮৬ রান বাদ দিলে ঐতিহাসিক এই টেস্টের প্রথম দিনের পুরোটাই শাসন করেছে স্বাগতিকরা।বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে ১৯৫ রান তুলতেই সাত উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত প্রথম দিন শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় সাত উইকেট ২৩৮ রান। লিটন দাসের হঠাৎ ইনজুরিতে একাদশে সুযোগ পাওয়া সাব্বির রহমানের মতে, চালকের আসনেই রয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, প্রথম দিনের মত টেস্টের বাকি চারদিনও নিজেদের করে নিয়ে শততম এই টেস্টে জয় তুলে নিতে চান সাব্বির।
ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট খেলতে নামা ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বললেন, ‘আমরা দলের সবাই শততম টেস্টের অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। সবাই চাই, যেভাবেই হোক এই ম্যাচটা জিততে। সব ম্যাচই জিততে চাই তবে এই ম্যাচটা জেতা দেশের জন্য, দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সব টেস্টেই আমাদের প্রস্তুতি এক রকম থাকে। কিন্তু এই টেস্ট বিশেষ। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি।’রঙ্গনা হেরাথকে সাথে নিয়ে অষ্টম উইকেটে অবিচ্ছিন্য ৪৩ রানের জুটি গড়েছেন চান্দিমাল। চান্দিমাল ৮৬ ও হেরাথ ১৮ রানে অপরাজিতদ্বিতীয় দিন সকালে এই জুটি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার আগেই লঙ্কানদের অলআউট করতে চান সাব্বির, ‘যত দ্রুত ওদের অলআউট করতে পারি তত ভালো। দিনের প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই যদি অলআউট করতে পারি তাহলে তিনশ রানের আগেই ওদের থামাতে পারবো।’বোলারদের প্রশংসায় ২৫ বছর বয়সী সাব্বির আরও বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল যত কম রান দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে ডট বল বেশি করা। কারণ, রান কম হলে ওরা চাপে থাকবে। মুস্তাফিজ-মিরাজ দু’জনই চমৎকার বোলিং করেছে। এছাড়া আমাদের বোলিং খুবই ভালো হয়েছে বলেই অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেগুলো আমরা কাজেও লাগিয়েছি।’
টানা ৭ সিরিজ জয়ে শীর্ষেই দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ ওয়ানডেতে অকল্যান্ডে নিউ জিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজ জিতে নিল ৩-২ ব্যবধানে। কিউইদের ১৪৯ রানে গুটিয়ে প্রোটিয়ারা ম্যাচ জিতে নেয় ১০৬ বল বাকি রেখে।
২০১৫ সালে বাংলাদেশে সিরিজ হারের পর এই নিয়ে টানা সাতটি সিরিজ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। ধরে রাখল আইসিসি ওয়ানডে র্যঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান। নিউ জিল্যান্ড দেশের মাটিতে হারল টানা আট সিরিজ পর। সবশেষ ২০১৪ সালে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেই।
আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তুলোধুনো করেছিলেন মার্টিন গাপটিল। এদিন সেই গাপটিলকে ফিরিয়েই প্রোটিয়া বোলারদের দাপট শুরু। আগের ম্যাচে অপরাজিত ১৮০ রান করা ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে দেন কাগিসো রাবাদা।
নতুন বলে অসাধারণ বোলিংয়ে সুর বেধে দেন রাবাদাই। ক্রিস মরিস ও আ্দিল ফিলুকওয়েয়ো দিয়েছেন যোগ্য সঙ্গ। ফিল্ডিংও ছিল দুর্দান্ত। ৭২ রানেই নিউ জিল্যান্ড হারায় ৫ উইকেট।
জেমস নিশাম চেষ্টা করেছেন পাল্টা আক্রমণের। মিচেল স্যান্টনার চেষ্টা করেছেন প্রতিরোধের। টিকতে পারেননি কেউই। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ৩২ রানে নিউ জিল্যান্ড যেতে পারে দেড়শর দোড়গোড়ায়।
শুরু, মাঝে আর শেষে তিনবার আঘাত রাবাদার, ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই ম্যাচ সেরা। ১০ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ২ উউইকেট নিয়েছেন তাহির। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে ও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কোনো স্পিনারের সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং এটিই।ছোট পুঁজি নিয়েই লড়াইয়ের চেষ্টা করেছেন কিউই বোলাররা। ৪৮ রানে তুলে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। কিন্তু এক পাশ আগলে দলকে এগিয়ে নেন ফাফ দু প্লেসি। ২১ বলে ২৩ রানের কার্যকরী ইনিংসে ফাঁস আলগা করেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
পরে ৩৫ বলে ৪৫ রানের ঝড়ে জয় ত্বরান্বিত করেন ডেভিড মিলার। ৯০ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থেকে যান দু প্লেসি।
দুর্দন্ত বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা রাবাদা। সিরিজ সেরার পুরস্কার নেই। থাকলে নিশ্চিত ভাবেই পেতেন ডি ভিলিয়ার্স। ৮৭.৩৩ গড়ে ও ১০৭.৮১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৬২ রান।
সেটি নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ থাকার কথা নয় তার। সিরিজ জয়ে ট্রফি হাতে হাসিটা চওড়াই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৪১.১ ওভারে ১৪৯ (গাপটিল ৪, ব্রাউনলি ২৪, উইলিয়ামসন ৯, টেলর ৮, রনকি ৮, নিশাম ২৪, স্যান্টনার ২৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩২, সাউদি ৬, প্যাটেল ০, বোল্ট ০*; রাবাদা ৩/২৫, মরিস ১/৩৪, তাহির ২/১৪, ফিলুরকওয়েয়ো ২/৩৫, প্রিটোরিয়াস ০/৩৬)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩২.২ ওভারে ১৫০/৪ (ডি কক ৬, আমলা ৮, দু প্লেসি ৫১*, দুমিনি ৩, ডি ভিলিয়ার্স ২৩, মিলার ৪৫*; প্যাটেল ২/২৬, বোল্ট ০/৪৪, সাউদি ০/৪০, ডি গ্র্যান্ডহোম ১/১৬, স্যান্টনার ০/৯, নিশাম ১/১০)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজ দক্ষিণ আফ্রিকা ৩-২ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কাগিসো রাবাদা
২০১৩ সালে সান্তোস থেকে নেইমারকে কিনতে ৫ কোটি ৭১ লাখ ইউরো খরচ হওয়ার কথা প্রথমে জানিয়েছিলেন বার্সেলোনার তখনকার সভাপতি সান্দ্রো রোসেল। কিন্তু পরে ক্লাব স্বীকার করে যে, খেলোয়াড় ও তার বাবার সঙ্গে অন্যান্য চুক্তির কারণে ট্রান্সফার ফি বেড়ে ১০ কোটি ইউরোর কাছাকাছি হয়ে যায়।
নেইমার আর বার্সেলোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে ব্রাজিলের একটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিআইএস যাদের কাছে নেইমারের ক্রীড়া স্বত্বের ৪০ শতাংশ ছিল। নেইমারের বার্সেলোনার যোগ দেওয়ার মূল ট্রান্সফার ফি গোপন করায় তাদেরকে ঠকানো হয়েছে বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি।
নেইমার ও বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ অবশ্য শুরু থেকেই সজ্ঞানে কোনোরকম কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
কিন্তু স্পেনের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা গত নভেম্বরে সান্তোস থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার সময় দুর্নীতি করার অভিযোগে তারকা ফরোয়ার্ড নেইমারের দুই বছরের কারাদণ্ড চেয়ে আবেদন করে। এছাড়া বার্সেলোনার সাবেক সভাপতি রোসেলের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও কাতালান ক্লাবটিকে ৮৪ লাখ ইউরো জরিমানার শাস্তি চায়।
পরে নেইমার ও বার্সেলোনা তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চালানোর বিরুদ্ধে আপিল করে। সোমবার হাই কোর্ট সেই আপিলই খারিজ করে দেন।
সান্তোস, নেইমারের মা ও ২৫ বছর বয়সী তারকার বাবার পরিচালিত কোম্পানিকেও মামলা লড়তে হবে।
তারা কেউই আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে না।
নেইমারের দুই বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও প্রায় ৯৩ লাখ ইউরো জরিমানার শাস্তি চাওয়া হয়েছে।
অবশ্য দোষী প্রমাণিত হলেও নেইমারকে হয়তো জেলে জেতে হবে না। স্পেনের আইন অনুযায়ী, সহিংস অপরাধ না করলে সাধারণত দুই বছরের নীচে সাজার ক্ষেত্রে কারাবাস হয় না।
প্রসিকিউটররা বার্সেলোনারও প্রায় ৮৫ লাখ ইউরো ও সান্তোসকে ৬৫ লাখ ইউরো জরিমানার শাস্তি চেয়েছে।
বার্সেলোনা অবশ্য গত জুন মাসে নেইমারের কর ফাঁকি সংক্রান্ত ঝামেলা চুকিয়ে ফেলার জন্য ৫৫ লাখ ইউরো জরিমানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই মাসেই বিচারক হোসে দে লা মাতা মামলাটি বন্ধ করে দিলে এই বিষয়ে সব ঝামেলা চুকে গেছে বলেই ভেবেছিল বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ। তবে সেপ্টেম্বরে মামলাটি আবার পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।
গত জুলাইয়ে স্পেনের একটি আদালত ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪১ লাখ ইউরো কর ফাঁকির জন্য লিওনেল মেসি ও তার বাবা হোর্হে মেসিকেও ২১ মাসের কারাদণ্ড দেয়।