বান্দরবানের প্রাণি সম্পদ সেবা সপ্তাহ
উপলক্ষে র্যালী ও আলোচনাসভা
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন,বান্দরবান ॥ “নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের প্রতিশ্রুতি-সুস্থ সবল মেধাবি জাতি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে বান্দরবানের উদযাপিত হয়েছে প্রাণী সপ্তাহ সেবা- ২০১৭। এ উপলক্ষ্যে সকালে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের আয়োজনে শোভাযাত্রা,আলোচনা সভা ও মেলার উদ্ভোধন করা হয়। গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পার্র্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রায় প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও পার্বত্য জেলা পরিষদের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পোলট্রি ও ডেইরি খামারের মালিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রা শেষে পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কনভেনার ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা জামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্য সা প্রু মারমা।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শহিদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিং ইয়ং ¤্রাে, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আলতাফ হোসেন, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, মৎস কর্মকর্তা মো.এনায়েত হোসেন, প্রেস ক্লাব সম্পাদক মিনারুল হক এবং বিভিন্ন এলাকার খামারীরা। আলোচনা সভায় বক্তারা নিরাপদ প্রানিজ আমিষের মাধ্যমে সুস্থ সবল মেধাবী জাতি গঠনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় বক্তারা বেশি বেশি প্রানি পালন করে নিজ নিজ অর্থনৌতিক অবস্থার আরো উন্নয়ন করার আহবান ও জানান।
থানচিতে নব নির্মিত ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও সমাবেশ
থানচিকে মডেল উপজেলা পরিণত করা হবে
——-বীর বাহাদুর এমপি
॥ অনুপম মারমা, থানচি ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি বলেছেন, বান্দরবান জেলা এক সময় থানচি ছিল পিছিয়ে পড়া অবহেলিত উপজেলা। ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাংগু সেতু উদ্বোধনের যোগাযোগে এক ধাব এগিয়ে নিয়েছে। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালে মধ্যে পার্বত্য মন্ত্রনালয় থানচিকে একটি মডেল উপজেলা পরিনত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিদ্যুতায়নসহ, উপজেলা পরিষদ ভবন, ইউপি ভবন, অভ্যন্তরীণ সংযোগ সড়ক, ব্রিজ কালভার্ট, অবকাঠামো ইত্যাদি নির্মাণ করেছে। অচিরে থানচি হবে পর্যটন শিল্পের প্রধান আকর্ষণীয় অঞ্চল হিসেবে বিশ্ব ব্যাপী সুপরিচিতি করবে। থানচি উপজেলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ২১টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ ঘোষনা করেছেন এবং বাস্তবায়ন কাজ চলছে। থানচি উপজেলা হত দরিদ্র জনসাধানের জন্য সরকারে উন্নয়নের পার্বত্য মন্ত্রনালয়, উন্নয়ন বোর্ড,জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কোটি কেটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে এবং উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বজায় রাখা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সার্বিক শান্তির শৃংখলা রক্ষায় পূনঃরায় আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকের রায় দিয়ে সহযোগীতা করার আহবান জানান।
তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯ টা নব নির্মিত ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে থানচি বাজার প্রাঙ্গঁনে স্থানীয় আওয়ামীলীগের আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
জনসভায় জেলা আঃ লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বান্দরবান পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, ফিলিপ্স ত্রিপুরা, মোজাম্মেল হক বাহাদুরসহ উপজেলার, ইউনিয়ন আঃ লীগের নেতৃবৃন্দ প্রমূখ। সভা শেষে হত দরিদ্রদের মাঝে সেলাই মেশিন, স্প্রে মেশিন, ভিজিডি কার্ডধারীদের চাউল, শীত বস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন। এর আগেই বিএনপি ও জনসংহতি সমিতি থেকে শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
থানচিতে সকালে এসে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি ৩ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ের নব নির্মিত ও বাস্তবায়িত প্রকল্পের মধ্যে থানচি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন, সদর ইউপি ভবন, সেগুম ঝিড়ি সেতু, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার, হাইলমারা পাড়া রাস্তা,বাগান পাড়া রাস্তা, হিন্দু পাড়া রাস্তা, মংনাই পাড়া অভ্যন্তরীণ সংযোগ রাস্তা, দাকছৈ পাড়া বৌদ্ধ বিহারের উপাসকদের ভাবনা কেন্দ্র নির্মিত ভবন শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্ভোধনের সময় জেলা প্রশাসক দিলিপ কুমার বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমসহ সরকারি ১৭ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহন করেন।
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ বান্দরবানে পুন:নির্মিত জোন সদর জামে মসজিদের উদ্বোধন করা হযেছে। সোমবার বিকেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে মসজিদের উদ্বোধন করেন।
এসময় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গর্ভনর প্রফেসর ড:আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৬৯ পদাতিক ব্রিগ্রেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ যুবায়ের সালেহীন, এসইউপি, এনডিইউ, পিএসসি।
অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আল জাহরানি আবদুল্লাহ ফয়সাল, সদর জোন কমান্ডার লে:কর্ণেল মো:মশিউর রহমান জুয়েল পিএসসি, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো:হারুন-অর-রশীদ, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মো:শফিকুর রহমান, সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাস, মোজাম্মেল হক বাহাদুরসহ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদ মর্যাদার কর্মকর্তা -কর্মচারী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
এসময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে গিয়ে সদর জোন কমান্ডার লে:কর্ণেল মো:মশিউর রহমান জুয়েল পিএসসি জানান, আনুমানিক ১৯২০ সালে বান্দরবানের সাংগু নদীর পাড়ে চট্টগ্রাম সাতকানিয়ার আমিরাবাদ থেকে আগত ৪জন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মিলিত হয়ে একটি মাটির তৈরি মসজিদ নির্মাণ করে, পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে বান্দরবান সেনানিবাস প্রতিষ্টার সময়ে মাটির তৈরি মসজিদটি সেনাবাহিনীর আওতায় চলে আসে, এরপর ১৯৮৭ সালে তৎকালিন মাটির তৈরি মসজিদটিকে পূর্ণ সংস্কার করে টিনশেডের একটি মসজিদে রুপান্তর করা হয়। ১৯৮৭ সাল হতে ২০১৬সাল পর্যন্ত এই মসজিদটি একই অবস্থায় বিদ্যমান থাকলে ও পরবর্তীতে ১১জুন ২০১৬ ইং তারিখে বান্দরবান সদরের তত্বাবধানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এবং প্রফেসর ড:আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপির আন্তরিক প্রচেষ্টায় মসজিদটি পুন: নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আর এর মধ্য দিয়ে একবছরের মধ্যে ১তলা বিশিষ্ট মসজিদের কাজ শেষ হয়। অনুষ্টানে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গর্ভনর প্রফেসর ড:আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোয়া সর্বত্র লেগেছে। সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে পার্বত্য জেলার আনাচে কানাছে আজ মসজিদ, মন্দিরসহ নানান ধর্র্মীয় উপসনালয় প্রতিষ্টা হচ্ছে। এসময় তিনি সৌদি সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মসজিদ নির্মাণ করায় আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আল জাহরানি আবদুল্লাহ ফয়সালকে সৌদি বাদশাকে ধন্যবাদ প্রকাশ করেন।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়ন বান্ধব সরকার, সরকারের আন্তরিকতায় আমরা আজ পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে আরো বেশি ভুমিকা রাখতে পারছি। পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা, চিকিৎসার উন্নয়ন ও সর্বোপরি ধর্মীয় প্রতিষ্টানের নির্মাণে এলাকায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এসময় প্রতিমন্ত্রী আগামীতে এলাকার উন্নয়নে আরো বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করার ঘোষনার পাশাপাশি পুন:নির্মিত জোন সদর জামে মসজিদের বাকী অসমাপ্ত কাজ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে সমাপ্ত করে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। অনুষ্টানের শেষে ফিতা কেটে মসজিদের শুভ উদ্বোধন ও মসজিদের সম্মুখে বৃক্ষরোপন করার মধ্য দিয়ে অনুষ্টানের সমাপ্তি হয়।