নিশি পারভীন: বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নাম ‘গণরুম’। রুম নাম্বার ১০৯। ছোট্ট একটি রুম। ছোট ছোট বিছানা। তাতে কি! ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এই রুমটিই আমাদের কাছে একটি রাজ্য। যে রাজ্যে আমরা সবাই রাজা। যে রাজ্যে ‘আমার’ বলে কিছু নেই। রয়েছে নিজ নিজ স্বাধীনতা, নেই কোন বাঁধা। আমরা রুমে ৮ জন থাকি। যেন ছোট খাটো একটি পরিবার। আয়শা, সাদিয়া, অন্তরা, তানি, আফসানা, খুশি, মিম মিলে আমরা সকলেই একটি পরিবার। অগনিত স্মৃতি, খুনসুটি, ভালোবাসা জড়িয়ে আছে তা ছোট পরিসরে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়া, একসাথে ট্রুথ-ডেয়ার খেলা, একই রুমে থেকেও ভিডিও কলে কথা বলা, মাঝ-রাতে নাচ-গান করা, রাত জেগে আড্ডা দেওয়া। আহা! সব যেন আজ স্মৃতির পাতায় স্থান পেয়ে পেয়ে গেছে। সাদিয়া ছিল আমাদের নাচের গুরু। অনেক ভালো নাচ করে, যখনই ওর মন খারাপ হতো তখনই নাচতো, ওর ধারণা ছিল নাচলে মনের মধ্যে চাপা কষ্টগুলো দূর হয়। মিম ছিল রান্নায় সেরা, বাহারী রকমের নান্না জানতো সে। মিমের হাতের নুডুলস্ এখনও মুখে স্বাদ লেগে আছে। খুব ভালো করে অন্যকে হিজাব পরিয়ে দিত পারতো সে। আমরা সকলেই কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে ওর কাছ থেকে হিজাব পরিয়ে নিতাম। আয়শাটা সারাদিন বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করত। আমাদের ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়া বছরখানেক হলেও আজ পর্যন্ত কেউ মেয়েটিকে পড়তে বসতে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। রুমের ঘুম কুমারী ছিল খুশিমনি। সারা দিনরাত ঘুমালেও ক্লান্তি তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। একদম বাচ্চাদের মতো করে কথা বলতো সে, আর তার সাথে রুমে মাঝে মাঝেই পাঁচকড়ি খেলতাম। আমার বাসা পাবনা। আমাকে রাগিয়ে তোলার জন্য তানি একটু পর পরই বলতো এই নিশি, তোর বাসাটা যেন কোথায়? আমিও মজা করে তাকে উত্তর দিতাম। বলতাম পামপা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেছেন, কোরআন তেলাওয়াতে ফজিলত বেশি। রহমত বর্ষনের পবিত্র এই রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতের সুযোগ করে দেওয়া উত্তম কাজ। কোরআনের মধ্যে আছে রহমত ও বরকতের অফুরন্ত সম্ভার। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও সৌভাগ্য বৃদ্ধি হয়। আল্লাহ পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ করেছেন যেন তা নিয়ে গবেষণা করে বাস্তবে আমল করা হয়। এই কোরআন বিজ্ঞানেরও এক রহস্যময় ভান্ডার। একজন মানুষের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য এই কিতাব সর্বোত্তম বিধান দান করে। আজ যারা পবিত্র কোনআন শরীফ পেয়েছেন তারা কোরআন শরীফ তোলোয়াত ও আমলে নিজেদের পরিশুদ্ধ করবেন বলে মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় মেয়র নগরীর কোনো এতিমখানা কিংবা মাদ্রাসা পবিত্র কোরআন শরীফ পেতে আগ্রহী হলে, তাঁর সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান। আজ বাদ জুমা এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বেসরকারী সেবা সংস্থা আল মানাহিল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৫ হাজার মুসল্লীদের মাঝে পবিত্র কোরআন শরীফ বিতরণ কালে মেয়র এসব কথা বলেন, এসময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, মহানগর আওয়ামীলীগের মশিউর রহমান, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মোহাম্মদ নাছির মিয়া, সাংবাদিক মোহাম্মদ ফারুক, ক্রীড়া সাংবাদিক নজরুল ইসলাম, আল মানহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর চেয়াম্যান হেলাল উদ্দিন জমির জমির উদ্দিন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন জমির উদ্দিন, পরিচালক শিহাব উদ্দিন জমির উদ্দিন, প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
নিশি পারভীন ::
———————–
করোনার ভয়াল থাবায় থমকে গেছে পুরো পৃথিবী। পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে কারো জানা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে একমাত্র সচেতনতায় পারে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে আমাদের রক্ষা করতে। কিন্তু সমাজের কিছু মানুষ ধর্মের ভ্রান্ত দোহায় দিয়ে প্রতিনিয়ত ঘুরে বেড়াচ্ছে যেখানে সেখানে। করোনার মতো ভয়াবহ সংক্রামক ব্যাধিকে কোন পাত্তায় দিচ্ছে না কতিপয় ধর্মীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তিবর্গ। এতে করোনার ভয়াবহতা আরো মারাত্মক রূপ ধারণ করার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। তাদের অন্ধ বিশ্বাস, ভাগ্যে থাকলে মৃত্যু এমনিতেই হবে এবং আল্লাহ ছাড়া করোনা বা অন্য কোন কিছুকে ভয় করা হবে ধর্মীয় পরিপন্থী কাজ। এখানেই শেষ নয়। আবার অনেকে মনে করছেন, প্রকৃত মুসলমানেরা এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবে না। কেউবা আবার ভাবছেন, যারা পাপকর্মে নিমজ্জিত কেবলমাত্র তারাই এই সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হবে বা মারা যাবে।
অথচ ধর্মীয় বিধি-বিধান পর্যালোচনা করলে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম চিত্র পরিলক্ষিত হয়। তিরমিযী হাদীস গ্রন্থের ১০৬৫ নং হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, কোথাও মহামারী দেখা দিলে সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা ছেড়ে অন্যত্র তোমরা চলে যেও না। আবার কোন স্থানে মহামারী দেখা দিলে তোমরা যদি সে স্থানে অবস্থান না করে থেকো তবে সেখানে গমন করো না। এভাবেই আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে মহানবী (সঃ) সংক্রমণ প্রতিরোধে বিচ্ছিন্নকরণ (quarantine) ব্যবস্থা পদ্ধতি আমাদের শিখিয়েছেন এবং মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন।
আবার আমাদের সমাজে মহামারীতে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে পাপী বা জাহান্নামী মনে করা হয়ে থাকে। এরূপ ধারণা পোষণ করা সম্পূর্ণরূপে অনুচিত এবং গুনাহের কাজ। বুখারী হাদীস গ্রন্থের ২৮২৯ নং হাদীসে মহানবী (সাঃ) মহামারীতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শহিদ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্য আরেকটি হাদীসে মহামারীর কারণে মারা যাওয়া মুসলমানদের শাহাদাত লাভের কথা উল্লেখ রয়েছে। পবিত্র আল কোরআনের সূরা বাকারায় মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদিন স্বল্পতার মাধ্যমে। সূরা আম্বিয়াতেও আল্লাহ বলেন, ভালো এবং মন্দ দ্বারা আমি তোমাদের পরীক্ষা করে থাকি।
এ থেকে স্পষ্ট অনুধাবনীয় রোগ-ব্যাধি মহান আল্লাহর তায়ালার পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষামাত্র। আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রেখে সচেতনতার মাধ্যমে এর থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা করতে হবে। কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস এবং প্রকৃত ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে করোনা পরিস্থিতি আরো মারাত্মক ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। আমাদের সকলকে অতীব সচেতন থাকতে হবে। মহান আল্লাহতায়ালা শীঘ্রই আমাদের এমন দুর্যোগময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দান করুন। আমিন।
নিশি পারভীন
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
॥ শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন ॥ জাতির পিতার জন্ম শত বার্ষিকীতে জাতির পিতাকে নিয়ে বই প্রকাশ করে আরো একটি মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে কবি আরিফ বিল্লাহ সুফী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ। তিনি বলেন, আর্থিক দৈন্যতায় থেকেও জাতির পিতার প্রতি যে সম্মান কবি দেখিয়েছেন তা অবিস্মরনীয়। তিনি আগামী দিন গুলোতে আরো কিছু উপহার দেয়ার জন্য কবিকে অনুরোধ জানান।
গতকাল দৈনিক গিরিদর্পণ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে রাঙ্গামাটির কবি আরিফ বিল্লাহ সুফী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর লেখা পিতা তুমি বন্ধু তুমি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন কালে তিনি এই কথা বলেন।
এ সময় সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুদিন ও সাপ্তাহিক সিলেট টাইমস এর সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ বাদশা গাজী, রাঙ্গামাটির রোভার স্কাউট নুরুল আবছার, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্পণ বার্তা সম্পাদক নন্দন দেবনাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমেদ তালুকদার, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরাম সাধারণ সম্পাদক মিল্টন বাহাদুর, চ্যানেল আই প্রতিনিধি মনসুর আহম্মেদ, রাঙ্গামাটির লেখক, সাংবাদিক ইয়াছিন রানা সোহেল, সাংবাদিক শিশির দাশ, সাংবাদিক শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
কবি আরিফ বিল্লাহ সুফী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী পিতা তুমি বন্ধু তুমি এই বইটিতে ১০২ টি কবিতা স্থান পেয়েছে। বইটিতে পিতা তুমি বন্ধু তুমি, মুজিবের ডাক, বন্ধু তুমি বঙ্গবন্ধু, মুজিব, বঙ্গবন্ধুর এক নাম, মুজিবের রক্ত শহীদেও রক্ত, মুজিব আমার কবিতা, বাংলাদেশ ও শেখ মুজিব, সাহসী সোনার ছেলে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, মুজিব স্বাধীনতার ঢেউ, দেশ জনতার বন্ধু সহ বিভিন্ন কবিতা স্থান পেয়েছে।
বিশ্বজুড়ে মহা’মারী আকার ধারণ করেছে করো’না ভা’ইরাস। অন্যসব দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব’ন্ধ ঘোষণা করা হলেও বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করায় নানা আলোচনা-স’মালোচনা হচ্ছে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ক’রোনা ভা’ইরাস ছড়িয়ে পড়লে স্কুল ব’ন্ধ ঘোষণা করা হবে।রোববার (১৫ মার্চ) বিকেলে মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক জাতীয় স্কুল হকি প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি একথা বলেন।বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ ক’রোনা ভাই’রাসে আ’ক্রান্ত তিনজন এবং ১৪ মার্চ আরো দু’জন রো’গী পাওয়া যায়।প্রথম তিনজনের মধ্যে দু’জন বিদেশ থেকে আসায় তৃতীয় আরেক জনের শরীরে করো’না ছড়ায়। আর সবশেষ দু’জনের একজন ইতালি ও অপরজন জার্মানি থেকে দেশে ফিরেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে স্থানীয় পর্যায়ে কোনো সংক্র’মণই নেই। বিদেশ থেকে সংক্র’মণ বয়ে নিয়ে আসা, সেটি আমরা বন্ধ করার চেষ্টা করছি। সব জায়গায় খুব ভালো ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সব স্থলবন্দরও বন্ধ আছে।আর বিমানবন্দরগুলোতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা আসছেন তাদেরও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ‘কিন্তু যদি কখনো এমন অবস্থা দেখা যায় যে স্থানীয় পর্যায়ে সংক্র’মণ ছড়িয়ে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে তখন প্রয়োজন হলে স্কুল বন্ধ করবো। প্রয়োজন হলে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ করার মতো কোনো ধরনের কারণ ঘটেনি। ’করো’না ভা’ইরাসে আ’তঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবার কাছে বিনীত অনুরোধ জানাবো আ’তঙ্কিত হবেন না, আত’ঙ্ক ছড়াবেন না।‘আসুন আমরা সবাই ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে সতর্ক হই যেন এই ক’রোনা ভাই’রাস এখানে না আসে এবং কোনোভাবে ছড়িয়ে না পড়ে। যেন না আসে না ছড়ায়। আমরা যদি সর্তকতা অবলম্বন করি তাহলে পুরোটা ঠেকাতে পারবো। এ ব্যাপারে আমাদের সবার সচেষ্ট হতে হবে। অর্থাৎ, আত’ঙ্ক নয় সতর্ক হোন।’
রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত::
আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে বর্তমানের অন্ধকার,অজ্ঞানতা থেকে বের হয়ে আশার জন্য————— অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
পার্বত্য অঞ্চলে আগে কোন উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না,বর্তমানে আমরা সুযোগ-সুবিধা বেশী পাচ্ছি — নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা
॥ শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন ॥ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে বর্তমানের অন্ধকার, অজ্ঞানতা থেকে বের হয়ে আশার জন্য। আমাদের যুদ্ধ করতে হবে যাতে অন্ধকারকে পিছনে ফেলে আলোকে ছড়িয়ে দিতে পারি চারিপাশে। আজ যে তোমরা উপবৃত্তি পাচ্ছো এইযে সহযোগিতা পাচ্ছো এই সহযোগিতার সঠিক ব্যবহার করতে হবে তোমাদের । আর তোমরা যদি এর সঠিক ব্যবহার করতে পারো তাহলে আগামী ৩০ বছর পর এই পার্বত্য চট্রগ্রাম আলোকিত হয়ে উঠবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গতকাল রাঙ্গামাটি পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাইনি সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্দ্যোগে এ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই কথা বলেন।
শিক্ষাবৃত্তি প্রদান কালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, আমাদের পার্বত্য অঞ্চলে আগে কোন উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না, কিন্তু বর্তমানে আমরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, ১৯৭৬ সালে এই উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বৃত্তি প্রদান করে আসছে। এই বৃত্তি প্রদান শুরু হয়েছিল ৮১ হাজার টাকায় এবং বিভিন্ন অর্থবছরে এই পরিমান পর্যায়ক্রমে বেড়ে তা বর্তমানে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ কোটি টাকা করা হয়েছে। আগামীতেও এ বৃত্তি চালু থাকবে বলেও তিনি আশাব্যক্ত করেন।
পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসির সভাপতিত্বে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বোর্ডের সদস্য পরিকল্পনা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, রাঙ্গামাটি পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ তাছাদ্দিক হোসেন কবির, রাঙ্গামাটি সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, রাঙ্গামাটি সরকারী স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক নিরূপা দেওয়ান, দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক আলহাজ¦ এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডেও কর্মকর্তা ও সরকারী বেসরকারী সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্টানে প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে প্রান বাচানোর জন্য, আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে বর্তমানের অন্ধকার , অজ্ঞানতা থেকে বের হয়ে আশার জন্য।আমাদের যুদ্ধ করতে হবে যাতে অন্ধকারকে পিছনে ফেলে আলোকে ছড়িয়ে দিতে পারি চারিপাশে।আজ যে তোমরা উপবৃত্তি পাচ্ছো এইযে সহযোগিতা পাচ্ছো এই সহযোগিতার সঠিক ব্যবহার করতে হবে তোমাদের ।আর তোমরা যদি এর সঠিক ব্যবহার করতে পারো তাহলে আগামী ৩০ বছর পর এই পার্বত্য চট্রগ্রাম আলোকিত হয়ে উঠবে। শিক্ষার আলোয় জ্বলে উঠবে। তখন পার্বত্য চট্রগ্রামকে আর তখন পিছিয়ে পরা প্রান্তিক দুর্বল জায়গা বলে আর কেউ ব্যাখ্যা দিতে পারবে না।বাংলাদেশের যেকোন জাগয়া থেকে এই পার্বত্য চট্রগ্রামের স্থান উপরে চলে আসবে।
চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ সব কিছুতেই আমাদের সস্পৃক্ততা আছে। আমাদের তিন পার্বত্য জেলা মোট ২৬টি উপজেলা, ১২১টি ইউনিয়ন ৩৭৫টি মৌজা এবং ৫ হাজার গ্রাম’র মধ্যে এমন কোন এলাকা নাই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছায়নি। বর্তমানে উন্নয়ন বোর্ডে ১৪টি প্রকল্প চলমান এবং আগামী অর্থবছরে আরো প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ এই এলাকার জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন, প্রকল্পগুলোতে কোন প্রকার বৈষম্য থাকবে না বলেও জানান তিনি।
এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তিতে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম পর্যায়ে ৭২১ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়স্থ মাইনী মিলনায়তনে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করা হয়। শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ দেশবরেন্য অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, এনডিসি মহোদয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিন পার্বত্য জেলার মেধাবী, গরীব ও অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করে আসছে। ১৯৭৬-৭৭ অর্থ বছরের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছিল ৮১ হাজার মাত্র। ২০১২ সালে শিক্ষাবৃত্তির জন্য বরাদ্দ ছিলো ২৫ লক্ষ টাকা। ২০১৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষাবৃত্তির বরাদ্দ পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। প্রতিবছর ২কোটি টাকা শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করা হচেছ বলে জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, এনডিসি। সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ যাতে শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে না থাকে সেবিষয় বিবেচনা করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত মেধাবী, গরীব ও অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য আগামীতে শিক্ষাবৃত্তির অনুকলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বরাদ্দ প্রাপ্তির স্বাপেক্ষে শিক্ষাবৃত্তির প্রদান করা হবে বলে জানান।
২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের তিন পার্বত্য জেলা মোট ২,২০০ জনকে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। তম্মধ্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজ পর্যায়ের ৩১৪ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৪১৫ জনসহ মোট ৭২৯ জনকে শিক্ষাবৃত্তির অর্থসহ একটি করে শিক্ষাবৃত্তি বই প্রদান করা হয়। কলেজ পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের প্রতিজনকে ৭,০০০/- টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিজনকে ১০,০০০/- টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি অর্থ বিতরণ করা হয়।
প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ’মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’ স্বপ্ন মানুষকে তার গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে সাহায্য করে। স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বড় কিছু করতে পারে না। তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে যেভাবে আর্থিক সহযোগিতা করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বোর্ডের সদস্য পরিকল্পনা ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নির্দশন চাকমা (কলেজ পর্যায়) আর সুমা দে (বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়) দুইজনই তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বোর্ডের সদস্য-বাস্তবায়ন জনাব মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপসচিব), অধ্যক্ষ, রাঙ্গামাটি মেডিক্যাল কলেজ, অধ্যক্ষ রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজ, অধ্যক্ষ, রাঙ্গামাটি পাবলিক কলেজ, মেয়র রাঙ্গামাটি পৌরসভা, মিজ্ নিরূপা দেওয়ান, দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক জনাব এ. কে. এম মকছুদ আহমদ, রাঙ্গামাটি ইউনিট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রত্যন্ত এলাকায় মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম,পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব মোঃ জানে আলম, সাংবাদিকবৃন্দ, শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দসহ বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলা চট্টগ্রাম’র ১৩ তম দিনে “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভা, ইতিহাসের খসড়া সম্পাদক সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক রচিত “চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীরা” এবং মুহাম্মদ মামুন চৌধুরী রচিত “বিপ্লবই আমার জীবন” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় জিমনেশিয়ামস্থ অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার, দেশের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক সুমন বড়–য়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক এলেক্স আলিম। মোড়ক উন্মোচন পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অমর একুশে বই মেলার অনুষ্ঠান ও আলোচনা উপ কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক সুভাষ দে, দৈনিক পূর্বকোণের সাহিত্য সম্পাদক কবি এজাজ ইউসুফী, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক ছড়া সাহিত্যিক রাশেদ রউফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক শওকত বাঙালি, মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-সচিব মো: বেলাল হোসেন প্রমুখ। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সিইউ ফ্রেন্ডস ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের শিল্পীরা। সভায় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ ইতিহাসের একটি অনন্য অংশ হয়ে থাকবে। যতদিন বাংলাদেশ এবং বাঙালি থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস চির সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস কখনই রচনা করা সম্ভব নয়। ২০২০ সাল বাঙালি জাতির একটি অসাধারণ ও গৌরবের ইতিহাস। কেননা এ বছরই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। যে জন্ম বার্ষিকী ঘিরে সারা বিশ্ববাসী আজ স্বগৌরবে পালন করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। পৃথিবীর ইতিহাসে একজন সফল রাষ্ট্র নায়ক ও জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সম্মানের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। বিশ্ব বাঙালি আজ গৌরব এবং শ্রদ্ধার সহিত বঙ্গবন্ধুকে তার শততম জন্মবার্ষিকীর সম্মান জানাতে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালকে মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা ১৯৭৫ সালে কালো রাত্রিতে স্বপরিবারে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল। কিন্তু ইতিহাস তার সত্যের পথে চিরঞ্জীব। নানা ষড়যন্ত্র আর অপরাজনীতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ দেশপ্রেমের ইতিহাসকে স্বাধীনতা বিরোধীরা বারে বারে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসের অনন্য উচ্চতায় আজ বঙ্গবন্ধু স্বগৌরবে, স্বমহিমায় পৃথিবীর কালজয়ী নেতা হিসেবে সমগ্র বিশ্ববাসীর মানুষের কাছে চির স্মরণীয় ব্যক্তি হয়ে আছেন। তিনি বর্তমান প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চর্চায় মনোযোগী হয়ে দেশপ্রেমের শিক্ষাগ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক রচিত “চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীরা” এবং মুহাম্মদ মামুন চৌধুরী রচিত “বিপ্লবই আমার জীবন” গ্রন্থ দুটির সফলতা কামনা করেন। সভার সভাপতি বলেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ের চির প্রেরণার একটি নাম। বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়া সম্ভব ছিলনা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে আমরা যত বেশি সম্মান করতে পারব তত বেশি আমরাই আলোকিত হব। তিনি বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ার আহ্বান জানান। তিনি নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর মহান দেশপ্রেম ও ত্যাগের শিক্ষা নিয়ে নিজেদেরকে মানবিক মানুষ হওয়ার অনুরোধ করেন। আজ ২৩ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামে অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে কলম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বই ও সাহিত্য প্রেমি সকলকে উপস্থিত থাকার বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর দিনভর জনস্রোত হয় বইমেলায়।
শুক্রবার সকাল ৮টায় বইমেলার দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের ঢল নামে।
বইমেলার শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশ নয়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেও দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। বইমেলার বাইরে দোয়েল চত্বর-টিএসসি থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে জনস্রোত। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে বেড়েই চলে লেখক-প্রকাশক ও পাঠকের এই সমাগম।
প্রকাশক-বিক্রেতারা বলছেন, বইমেলায় একুশে ফেব্রুয়ারির দিন স্বাভাবিকভাবেই পাঠক-দর্শনার্থীদের স্রোত তৈরি হয়।
“সেই সঙ্গে দিনটি শুক্রবার হওয়ায় ভিড় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। সকাল ১০টা থেকে বিক্রিও শুরু হয় জোরেশোরে।”
একুশের দিন শুক্রবার থাকায় বইমেলায় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। এই সময় শিশুদের উচ্ছ্বাসে মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। মেলার শিশু চত্বরে সিসিমপুরের চরিত্র হালুম, ইকরি আর টুকটুকির সাথে মেতে ওঠে শিশুরা।
এদিন বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, সবাই সাজে ও পোশাকেও ধারণ করেছেন একুশ। অনেকের হাতে-মুখে একুশের আলপনা, অনেকেই আবার মাথায় পরেছেন ‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারি’ লেখা কাপড়ের ব্যান্ডানা। সাদা-কালো পোশাক তো ছিলই, অনেকের শাড়ি আর পাঞ্জাবিতে লেখা ছিল ‘অ আ ক খ’ বর্ণমালা।
বইপ্রেমীদের অনেকেই স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন লেখকদের সাথে। দলবেঁধে বইমেলার বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দিতে দেখা যায় পাঠক-লেখকদেরও। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের জলাধারের পাশে বসে প্রিয়জনের সাথে সময় পার করেন অনেক যুগল।
উদ্যান অংশে দুপুরে কথা হয় ধানমণ্ডি থেকে আসা দম্পতি সনি সারোয়ার ও শাহরিয়ার হোসেনের সাথে। তারা দুজন পরেছিলেন বাংলা বর্ণমালা ছাপা শাড়ি ও পাঞ্জাবি।
এই যুগল জানান, শহীদ মিনার ঘুরে বইমেলায় একটু দেরিতে এসে সারা দিন থাকছেন এখানে। পছন্দের বইগুলো কিনে তারপর বাড়ি ফিরবেন।
কেরানীগঞ্জ থেকে কয়েকজন বন্ধুর সাথে খালি পায়ে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন শিহাব উদ্দিন। ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তারা ঘুরে দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস; এরপর বইমেলাতে ঢোকেন।
শিহাব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি বছর খুব সকালে এসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেই। এরপর অপেক্ষায় থাকি কখন বইমেলার দরজা খুলবে। তারপর সারা দিন বইমেলায় বই দেখি, পছন্দের বই কিনি, এরপর পরিচিত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে ঘুরে আবার সন্ধ্যায় বাসার উদ্দেশে চলে যাই।”
বাংলা একাডেমি অংশে কথা হয় লালবাগ থেকে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কবির শয়নের সাথে।
স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বইমেলায় এসে বেশ কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেছেন বলে জানালেন তিনি।
এম আর আখতার মুকুলের লেখা ‘আমি বিজয় দেখেছি’ বইটি দেখিয়ে কবির শয়ন বলেন, “একুশের এই দিনে বইমেলা কখনও মিস করি না। বইমেলায় আসলেই ভাষা সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে লেখা বইগুলো খুঁজতে থাকি। অন্যান্য জনপ্রিয় বইগুলোও কেনা হয়।”
দুপুর গড়িয়ে আড়াইটায় কথা হয় লালবাগ থেকে আসা সাইফুল ইসলামের সাথে। বইমেলা ঘুরে দেখলেও কী বই কিনবেন তা সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারছিলেন না তিনি।
সাইফুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেলায় এসেছি ঘুরতে ও বই কেনার উদ্দেশে। অনেকগুলো স্টল দেখা হল; একটা বই কিনব, তবে কি যে বই কিনব…।”
সকাল থেকেই বইপ্রেমীদের পদচারণায় জমজমাট মেলায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন বলে জানালেন চারুলিপির বিক্রয় প্রতিনিধি মো. হৃদয় হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেলার প্রবেশমুখ খোলার সাথে সাথেই ব্যাপক মানুষের আনাগোনা শুরু হয়। তবে সকাল ১০টার পর থেকেই বেচাবিক্রি পুরোদমে চলছে।”
পাঠকরা কী ধরনের বই নিচ্ছেন তা জানতে চাইলে হৃদয় বলেন, “অনেকেই স্টলে আসছেন। কেউ নির্দিষ্ট কোনো ধরনের বই নিচ্ছে না। অনেকেই স্টলে এসেই বই পছন্দ করে বই নিচ্ছেন।”
ছুটির এ দিনে বই বিক্রি বেশি বলে বিকালের দিকে জানালেন তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কাজল রায়।
॥ ॥ শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন ॥ ঋতুরাজ বসন্ত শুরু। আর প্রকৃতি সেঁজেছে অপরূপ সাঁজে। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সারাদেশের ন্যায় বসন্ত বরণ উৎসবের আয়োজন করেছে ঐহিত্যবাহী রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজ। বাসন্তি সাঁজে সেঁজে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে বসন্ত বরণ করেছে রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে কলেজ প্রাজ্ঞন হতে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বর্ণিল সাঁজে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পদক্ষিন করে আবার কলেজ প্রাজ্ঞনে এসে সমবেত হয়। এসময় বসন্ত উৎসবের শোভাযাত্রায় ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ও নানান সাজে সেজে কলেজ শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
পরে কলেজ প্রাঙ্গণের বটমূলে বসন্ত উৎসবের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন, রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মঈন উদ্দীন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কলেজের সহকারী অধ্যাপক বাংলা বিভাগের প্রধান মোঃ মহিউদ্দিন, সরকারী কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম খলিল, কলেজের উপাধ্যক তুষার কান্তি বড়ুয়াসহ কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে কলেজ প্রাজ্ঞনে শিক্ষার্থীরা স্টল প্রদর্শনের মাধ্যমে পিঠা আর পুলির আয়োজন করে। শিক্ষার্থীরা মুখরোচক পিঠা ও পুলি পেয়ে দারুন খুশী। পরে কলেজ প্রাঙ্গণে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কবিতা আবৃত্তি। আর বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্বজনদের উপস্থিতিতে নেচে গেয়ে মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে আগতরা বসন্তের রঙে মনটাকে রাঙিয়ে আগামী দিনে পথ চলতে চায়। তারা বাসন্তি রঙে জীবনটাকে রঙ্গিন করতে চায়।
রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজের অধ্যাপক প্রফেসার মঈন উদ্দীন জানান, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে করতে এক ঘেয়ে হয়ে যায়। তাদের বিনোদনের জন্য সরকারী মহিলা কলেজে বসন্ত উৎসব আয়োজন একটি ঐহিত্য। মূলত এই আয়োজনের মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের মনটাকে রাঙিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। তারা আগামী দিনে পড়াশোনায় আরও মনযোগী হওয়ার পাশাপাশি সু-মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেতে পারে সেজন্যই এই আয়োজন।