॥রাহুল বড়–য়া ছোটন ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বিকেলে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হতে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার একই স্থানে এসে সমবেত হয়। এসময় শোভাযাত্রায় ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও দেশের পতাকা হাতে নিয়ে অংশ নেন বান্দরবানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয় এক আলোচনা অনুষ্ঠানের। বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.এ এফ ইমাম আলীর সভাপতিত্বে এসময় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
এসময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডীন প্রফেসর ড.মোলসে উদ্দিন আহম্মেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাসসহ বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও বিভিন্ন বিভাগের প্রভাষক ও সুধীজনেরা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেই বান্দরবানে একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় “বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়” অনুমোদন লাভ করে এবং অনুমোদন পাওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার কথা চিন্তা করে দেশের স্বনামধন্য শিক্ষকদের সমন্ধয়ে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করে। এসময় তিনি আরো বলেন, এক বছরের এই পথচলায় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী অর্র্নাসে ৪টি ও মাস্টাস কোর্র্সে ১টি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পার্বত্য এলাকার শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষার লক্ষ্যে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এই দিনটিকে স্মরণীয় করার লক্ষ্যে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে ঘোষনা করে প্রতিবছরই জাঁকজমক আয়োজনে এই বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন শুরু করে।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের মাঠে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফয়জুর রহমান। এসময় কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্লেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান পিটু উপস্থিত ছিলেন।
স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন হাউস ভিত্তিক দলের কুচকাওয়াজের পর ছোট ছোট সোনামনিদের দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে শুরু হয় ক্রীড়া প্রতিযোগতা। এছাড়াও ছাত্রীদের ভারসাম্য দৌড়, ছাত্র ও ছাত্রীদের রিলে দৌড় ছিল উপভোগ্য। এছাড়াও মহিলা অভিভাকদের বালিক খেলা ও শিক্ষক এবং পুুরুষ অভিভাবকদের রশি টানাটানীকে ঘিরে উৎসব মুখর হয়ে ওঠে পুরো মাঠ।
এছাড়াও কারাতে ডিসপ্লে, ফিজিক্যাল ডিসপ্লে এবং মিউজিকেল ডিসপ্লে ছিল অত্যান্ত উপভোগ্য।
বালকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদের হয়েছে মোঃ মারুফুজ্জামান (সামি) এবং বালিকাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হয়েছে পুষ্পিতা চাকমা। দিনভর খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন হয় জসিম উদ্দিন হাউস এবং রানার আপ হয় নজরুল ইসলাম হাউস। বিজয়ীদের মাঠে পুরস্কার বিতরণ করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফয়জুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফয়জুর রহমান বলেন, খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বসবাস। এ অঞ্চলের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতি ও সংস্কৃতির মধ্যে সেতু বন্ধনকে আরো এগিয়ে নিতে ২০০৫ সালে খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠান তার স্বতন্ত্র ও স্বগৌরবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে এর শিক্ষা, ক্রীড়া ও সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের উপর। শুরু থেকেই এ প্রতিষ্ঠান লেখাপড়ার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক শিক্ষা কার্যক্রমে সমান গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আজকের এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উপস্থাপনা তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
এই প্রতিষ্ঠানের রবীন্দ্র, নজরুল ও জসীম উদ্দীন এ ৩টি হাউসের অসাধারণ প্যারেড এবং আবহমান বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে গাঁথা সম্মিলিত ডিসপ্লে ছিল অত্যান্ত আকর্ষনীয়।
তিনি বলেন, খেলাধুলা মন ও শরীরকে সতেজ রাখে। আত্মা পরিতোষ্টি লাভ করে। মন ভাল থাকলে পড়াশোনাও ভাল লাগে। শুধু খেলাধুলা নয়, এর পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃত্তি, বিতর্ক, বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড প্রভৃতি নানা কর্মকা-ে তোমাদের অনেক দক্ষতা অত্যন্ত প্রসংশনীয়। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
॥ কাউখালী প্রতিনিধি ॥ পাহাড়ের উচ্চ শিক্ষিত যুব সমাজ তৈরী করতে সরকার মেডিকেল কলেজ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন করে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি। তিনি বলেন, পাহাড়ে যারা এই উচ্চ শিক্ষাকে এগিয়ে যাওয়াকে বাধা গ্রস্থ করছে তারা সমাজের কখনোই মঙ্গল চাইতে পাররে না। তিনি বলেন, প্রতিবছর এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শত শত শিক্ষিত যুব বের হবে। তাদের মধ্যে অনেকেই এই পার্বত্য অঞ্চলের ছাত্র ছাত্রী। তারা যদি নিজের দায়িত্ব মনে করে তাহলে পাহাড়ের মানুষ আলোকিত হতে আর বেশী সময় লাগবে না।
গতকাল শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঘাগড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২০ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায়, নবীণ বরণ ও কৃতিছাত্রীদের সংবর্ধনা অন্ষ্ঠুানে দীপংকর তালুকদার এ কথা বলেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুর্শে মারমার সঞ্চলনায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নব কুমার তনচংগ্যার সভাপতিত্বে উক্ত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ২৯৯ নং আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামশু দোহা চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী, সাবেক কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান অংচাপ্রু মারমা। উক্ত অনুষ্ঠানে কাউখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম চৌধুরীসহ বিদ্যালয়ের প্রধাণ শিক্ষক, অন্যান্য শিক্ষকগণ, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও গণ্যামান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শতভাগ পাশ করে অভিভাবক ও স্কুলের সুনাম বয়ে আনার আহ্বান জানান।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা জনগোষ্টীর গোরখালী ভাষা, সংস্কৃতি ও বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা এবং রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের আয়োজনে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) সকালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের পরিচালক রুনেল চাকমা, রাঙ্গামাটির বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক ও লেখক শিশির চাকমা, রাঙ্গামাটি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ম্যানাজার রনজিত বাহাদুর রায়, গুর্খা কালচারাল ফোরামের সদস্য সুজিত নেওয়ার, রুপশ্রী নেওয়ারসহ গুর্খা জনগোষ্টীর নের্তবৃন্দরা।
১৮৭১ সনে পার্বত্য চট্টগ্রামে গুর্খা জনগোষ্ঠির আগমন, গুর্খা রেজিমেন্ট, ভাষা, সংস্কৃতি কৃষ্টি কালচার ও পূর্ব ইতিহাস নিয়ে অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন, সাংস্কৃতিক সংগঠন সুর নিকেতন ও গুর্খা কালচারাল ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোজ বাহাদুর গুর্খা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রত্যেক জাতির নিজেদের ঐতিহ্য, ভাষা শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হবে। অন্য কেউ এসে সেগুলো টিকিয়ে রাখবেনা। আর এই সকল বিষয়গুলো বাঁচিয়ে রাখতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যেতে হবে। বক্তারা বলেন, অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর তুলানায় শিক্ষা-দীক্ষায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা জনগোষ্ঠীরা অনেক অনেক পিছিয়ে। তাই আমাদের নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। বক্তারা বলেন, গুর্খা জনগোষ্টীর যে সমস্ত ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি কর্মকান্ড রয়েছে সেগুলো উপস্থাপনের মাধ্যমেও জনপ্রীয়তা অর্জন ও পরিচিতি লাভ করা সম্ভব। তাই সংস্কৃতিগুলোকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সকল সম্প্রদায়ের প্রতি আন্তরিক। তাই অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির ন্যায় গুর্খা সম্প্রদায়কেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। তাই সরকার প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধাগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
উল্লেখ, বর্তমান সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ২৩ মার্চ ২০১৯ তারিখের প্রকাশিত গেজেটে বাংলাদেশের মোট ৫০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির তালিকায় গুর্খাদের ৩০ নম্বর ক্রমিকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। গুর্খা সম্প্রদায়ের কাছে এই স্বীকৃতি এক অনন্য আর্শিবাদ।
॥ মনসুর আহম্মেদ ॥ পার্বত্য চট্টগ্রামে ঝড়ে পড়া ও অনগ্রসর জাতিগোষ্টীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৭ বছর আগে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার দুর্গম মগবান ইউনিয়নে তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুল নির্মাণ করা হলে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পুরো হাইস্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, কর্মচারী। স্কুলের এমপিও ভূক্তকরাসহ সকল সমস্যা নিরসনে বারবার যোগাযোগ করার পরে ও মিলছে না কোন সমাধান।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নে রন্যাছড়ি, হাজাছড়ি, ডুলুছড়ি, মধ্যপাড়া, সোনারাম পাড়া, আমছড়ি, অগৈয়াছড়ি এ ৭টি গ্রামের হাজারো মানুষের বসবাস। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩টি। এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে মাধ্যমিক স্কুলে পড়তে হলে শহরে আসতে হয়, কিন্তু দারিদ্রপীড়িত পরিবারগুলোর শহরে ছেলে মেয়েদের রেখে পড়ানোর সামর্থ্য নেই। এসব শিক্ষার্থীদের একমাত্র শিক্ষা-বাতিঘর তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুল। প্রাথমিক স্তর শেষে একমাত্র হাইস্কুলে শিক্ষক না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারনে পিছিয়ে পড়ছে এখানকার শিশুরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় মগবান ইউপি সদস্য নিরোধ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের বারবার যোগাযোগের পরে ও স্কুলের সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছেনা। এজন্য শিক্ষা বিভাগের অসহযোগীতাকে দায়ী করছেন তিনি।
বিভিন্ন জটিলতার কারনে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা যায়নি বলে স্বীকার করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার রতন চাকমা। তিনি বলেন স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি সমাধানের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে বিদ্যালয়টি চালু করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানালেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা। তিনি বলেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক নিয়োগসহ যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ঝড়ে পড়া রোধে সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিহীন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে ২০১১সালে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুলটি নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
২০১২ সালে স্কুলটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কাছে হস্তান্তর করা হলেও শিক্ষক সহ জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় থেমে যায় শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে ওই এলাকায় প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু।
প্রাথমিক স্তর শেষ করে পাহাড়ে দুর্গম ও দারিদ্রপীড়িত প্রত্যন্ত এই এলাকার শিক্ষার্থীদের একমাত্র বাতিঘর তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুলটির শিক্ষক নিয়োগসহ বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারে অত্যন্ত আন্তরিক। শিক্ষা প্রসারে সরকার নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ফলে শিক্ষার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসাধারণ স্বাবলম্বী হয়ে জনসম্পদে পরিণত হচ্ছে। সরকারের এই শিক্ষা প্রসারের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীও নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এখানে সেনাবাহিনীর সরাসরি অর্থায়ন ও উদ্যোগে বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়াও, সেনাসদস্যরা বিভিন্ন স্কুল, কলেজগুলোতে বিনামূল্যে চেয়ার-টেবিল, বই, খাতা, কলম, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করে থাকে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদেরকে আর্থিক সহায়তাও দিয়ে থাকে। পাশাপাশি দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাসদস্যরা পাঠশালা প্রোগ্রাম পরিচালনার মাধ্যমে স্থানীয় শিশুদেরকে স্কুলে যেতে উৎসাহিত করে থাকে। ডিজিটাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করে রাংগামাটির সাজেকের মত দূর্গম এলাকাতেও শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। সেই সাথে পিছিয়ে পড়া উপজাতি জনগোষ্ঠীর শিক্ষার মান উন্নয়নে তাদের জন্য আবাসিক হোস্টেল নির্মান করেও শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রাখছে সেনামাহিনী। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় মুরং কমপ্লেক্স, রুমা উপজেলার বম হোস্টেল এবং রাংগামাটির ঘাগড়াতে ত্রিপুরা মহিলা হোস্টেল যার প্রকৃত উদাহরণ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারে সেনাবাহিনীর এই অব্যাহত কর্মকান্ডে নতুন করে যুক্ত হলো বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার হ্যাপি হিল প্যারা স্কুল। হ্যাপি হিল প্যারা স্কুলটি ২০০৬ সালে ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশে (সিসিডিবি) দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। অবকাঠামোগত ও অর্থায়নের সমস্যার কারণে স্কুলটি ২০১৬ সাল থেকে বন্ধ ছিল। সেনাবাহিনীর রুমা জোনের সহায়তায় স্কুলটি আজ (১৪ জানুয়ারি ২০২০) সকাল ১১টায় পুনরায় চালু হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে রুমা সেনা জোন থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ সেট টেবিল এবং বেঞ্চ, ব্ল্যাকবোর্ড, বই, খাতা এবং শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদেরকে সমাজের একজন ভাল মানুষ হবার প্রেষণা দিয়ে তাদেরকে উচ্চশিক্ষা গ্রহনে উৎসাহ প্রদান করেন। এছাড়াও, সুশিক্ষিত নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলে ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী হয়ে দেশের জন্য ভাল কিছু করার জন্যও তাদেরকে প্রেষণা প্রদান করেন। শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন এবং তাদেরকে সমাজের একজন ভাল মানুষ হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন।
সেনাবাহিনীর এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ স্থানীয় সকল জনসাধারন। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার বিস্তারে সেনাবাহিনীর এধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে রুমা জোন কমান্ডার জানান।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সারাদেশের ন্যায় রাঙ্গামাটিতেও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। উৎসবের অংশ হিসেবে নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারী) সকালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়েছে।
সকাল রাঙ্গামাটি গোধুলী আমানতবাগ স্কুলে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। এ সময় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ত্রিদীপ কান্তি দাশ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ খোরশেদ আলম, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হোসেন, গোধুলী আমানতবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মোতাহার হোসেন’সহ জেলা শিক্ষা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা দুপুর ১২ টায় শুকরছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুপুর ১টায় নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়ি পূনর্বাসন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন।
বই বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়াম্যান বলেন, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশ ও জাতির সম্পদ। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রণয়নে নতুন প্রজন্মের মেধা বিকাশের ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজের পাশাপাশি খেলাধুলা, বইপড়া, সৃজনশীল শিক্ষা এবং নৈতিক শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে শিক্ষকদের পাশাপাশি মাতা-পিতাকে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, লেখাপড়ার মাননোন্নয়ন হলেই প্রকৃত উন্নয়ন সাধিত হবে। ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দরভাবে গড়তে হলে মানসম্মত শিক্ষার বিকল্প নেই। তেমনি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে হলে আগামী প্রজন্মকে সু শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। এ সময় তিনি ছেলে-মেয়েরা যাতে বিপথগামী না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি অভিভাবকদের উদ্দ্যেশে বলেন, শুধু ভাল ফলাফল করলে চলবেনা শিক্ষার্থীদের ভাল মানুষ করার পাশাপাশি সু নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাও আপনাদের দায়িত্ব।
এদিকে নতুন বই দেওয়ার এ আয়োজনকে শিক্ষার্থী আর শিক্ষকরা উৎসবের মতই পালন করছেন। নতুন বইগুলো হাতে পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সেকি বাঁধভাঙ্গা উল্লাস। বই হাতে পেয়েই শিক্ষার্থীরা আনন্দে আত্মহারা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টায় বছরের প্রথম দিন সারাদেশে একযোগে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া বিরাট সাফল্য। অতীতের কোন সরকার এ ধরনের উদ্যোগ নেননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় বিগত এক দশকে বই উৎসবে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বই পড়ে মানুষের মতো মানুষ হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন বই হাতে পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রামে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় ২ কোটি ৩ লাখ বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। ভালোভাবে বই পড়ে ও যতœ নিয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদেরকে দেশের মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি সম্পর্কে জানাতে পারলে দেশপ্রেম জাগবে এবং দেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আজ ১ জানুয়ারী ২০২০ ইং বুধবার সকাল ১১টায় নগরীর জামালখানস্থ ডাঃ খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত বই উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শাহেদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত বই বিতরণ উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন। শেষে প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের মাঝে সরকারি বিনামূল্যের বই তুলে দেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা বই উৎসবে অংশ নেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে (ইবতেদায়ী ও মাদ্রাসাসহ) জেলার মোট ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৩ শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে। মহানগরের ৬টি থানা ও ১৪টি উপজেলাসহ জেলার মোট ২ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক পর্যায়ের (মাদ্রাসাসহ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭১৬টি বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তবে তিনি বলেছেন, বহিরাগতদের সঙ্গী করে ভারতের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা তো ডাকসুর কাজ নয়।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ডাকসু ভিপি কেন বহিরাগতদের নিয়ে ডাকসু ভবনে গেলেন?
হাছান মাহমুদ বলেন, ছাত্রদের সম্পৃক্ত বিষয় বাদ দিয়ে ভারতের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা তো ডাকসুর কাজ নয়। ডাকসুর কাজ হচ্ছে ছাত্রদের বিষয় নিয়ে কথা বলা।
তিনি বলেন, সেটি না করে ভারতের বিষয় নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা এবং বহিরাগতদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়ার ঘটনা এই হামলা ঘটানোর জন্য ইন্ধন কিনা তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য দেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র আছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিনা এবং উসকানি ছিল কিনা? কারণ, অতীতে দেখা গেছে, ডাকসু ভিপি নুরুল হক এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে আলোচনায় থাকতে চান।’
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে ডাকসু ভবনে হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে ভিপি নুরসহ তার সংগঠনের অন্তত ২৪ জন আহত হন।
হামলার প্রায় ৫০ মিনিট পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহতদের মধ্যে তুহিন ফারাবিকে (২৫) আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ভিপি নুর ও সোহেল নামে এক শিক্ষার্থী কেবিনে রয়েছেন। আরেক শিক্ষার্থী আমিনুরকে রাখা হয়েছে ওএসইতে (ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি)।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বলছে, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ব্যানারে ছাত্রলীগ এ হামলা চালিয়েছে।
তবে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ বলছে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘দুর্নীতিবাজ’ ভিপিকে প্রতিহত করেছে।
সুপ্রিয় চাকমা শুভ, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে চাকমা ভাষার অক্ষরে স্বাক্ষরতা অভিযান। এ ছাড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা ও নৃত্য-সঙ্গীতানুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার সকালে ‘নাটঘর একাডেমি’ নামক রাঙ্গামাটির স্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এসব কর্মসূচির আয়োজন করে।
প্রতিষ্ঠানটির সম্মেলন কক্ষে নাটঘর একাডেমির অধ্যক্ষ সচিব চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক, নাট্যকার ও সাহিত্যিক মৃত্তিকা রঞ্জনন চাকমা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা পরিণয় চাকমা, চাকমা ভাষা ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক শান্তি চাকমা, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন হিলর ভালেদী ও হিলর প্রোডাকশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, সংবাদকর্মী সুপ্রিয় চাকমা শুভ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, বাংলা ও ইরেজী ভাষার পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার চাকমা বর্ণমালায় পড়ালেখার চর্চা করতে হবে। তবে শুধু শিখলেই হবে না। তা ব্যবহার ও প্রচলন রাখতে হবে। বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিশুদের প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। চারটি ভাষায় পাঠদান চালু হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
পরে চাকমা ভাষায় স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য-সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এরপর নিজ মাতৃভাষা চাকমা বর্ণমালা দিয়ে স্বাক্ষরতা অভিযান পরিচালনা করেন, নাটঘর একাডেমির অধ্যক্ষ সচিব চাকমা ও শান্তি চাকমা।