॥ আলহাজ্ব এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ ॥ রাঙ্গামাটি ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ অনেক দেরীতে হলেও শুরু হচ্ছে এটা রাঙ্গামাটি জেলাবাসীর জন্য অনেক বড় পাওয়া। এ জন্য রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ও জেলা প্রশাসককে জানাচ্ছি পার্বত্য রাঙ্গামাটি জেলাবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় সদর দপ্তর ছিলো। অর্থ্যাৎ পুরাতন জেলা সদর রাঙ্গামাটি। সে হিসাবে সব দিক দিয়ে পুরাতন জেলা হিসাবে উন্নয়নের শীর্ষে থাকার কথা থাকলেও কিন্তু পিছিয়ে আছে। কিন্তু ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ স্থাপনের ব্যাপারে সব চেয়ে পিছনে পড়ে আছে রাঙ্গামাটি জেলা।
খাগড়াছড়ি সর্বশেষ জেলা স্থাপিত হলেও সর্বপ্রথম খাগড়াছড়িতে ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়ে উন্নতির চরম শিখরে পৌছেছে। বান্দরবান ২য় হিসাবে অনেক উন্নতি হয়েছে। এমনকি রাঙ্গামাটি ছাত্র-ছাত্রীরা বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করছে।
স্থান সংকুলান সহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে রাঙ্গামাটিতে প্রতিষ্ঠা করা যায়নি ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ। বর্তমান রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ রিয়াজ মেহমুদ ও জেলা প্রশাসক এ,কে,এম মামুনুর রশীদ এর যৌথ প্রচেষ্টায় তা আলোর মুখ দেখছে। গত ১০ ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রাঙ্গামাটি ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের জন্য স্থান নির্ধারণ সম্পন্ন করে রিজিয়ন কমন্ডারের নিকট জায়গার কাগজ রেজিষ্ট্রি করে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে রিজিয়ন কমান্ডার তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হলে পার্বত্য এলাকায় শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রিজিয়ন কমান্ডার।
জেলা প্রশাসক বলেছেন সরকারের পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে সেনাবাহিনী। তিনি তার স্বল্পকালীন দায়িত্ব পালন কালে রাঙ্গামাটি ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের জন্য জায়গা হস্তান্তর করতে পেরে গর্বিত বোধ করছেন।
ক্যান্টঃ পাবরিক স্কুল কলেজটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু হলে এ অঞ্চলে শিক্ষার মান অনেক বেড়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তবে স্থানীয়রা যাতে অগ্রাধিকার পায় এবং গরীব ও মেধাবীদের বিনা বেতনে লেখাপড়ার করার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে এই এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।
যুব সমাজকে যুব শক্তিতে পরিণত করে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হবে। দেশে যে চলমান অর্থনৈতিক জোন হচ্ছে সেগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের বৃহৎ যুব গোষ্ঠির কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যুব সমাজ যখন দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। তখনই দেশ নির্দিষ্ট সময়ে আগে আগে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ১০০ বছরে ডেল্টাপ্ল্যান এর স্বপ্ন দেখছে। আগামী তিন প্রজন্মের জন্য নেতৃত্ব বাছায়ের কাজ চলছে শুধু সংগঠনের নেতৃত্বে নয় দেশকে এগিয়ে নেবার জন্যও তরুণ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রয়োজন। সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিরলস পরিশ্রমে নৌকার বিজয় আরো বেগবান হয়েছে। যুবলীগের নেতাকর্মীরা ধন্যাবাদ পেতেই পারে। বিশেষ করে যুবলীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে কেন্দ্র ভিত্তিক কমিটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আগামী দিনে যুবলীগের মধ্যে থেকে যোগ্য নেতাকর্মীরাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। উপরোক্ত বক্তব্যগুলো মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি গতকাল চশমা হিলস্থ নিজ বাসভবনে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথাগুলো বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো: মহিউদ্দিন বাচ্চু’র সভাপতিত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যাদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম দিদার, মাহবুবুল হক সুমন। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সদস্য এড. আনোয়ার হোসেন আজাদ, এড. আরশাদ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, একরাম হোসেন, আঞ্জুমান আরা আঞ্জু, মাহাবুব আলম আজাদ, সাখাওয়াত হোসেন স্বপন, মাসুদ রেজা, আবু সাঈদ জন, হেলাল উদ্দিন, হাবিব উল্ল্যাহ নাহিদ, নুরুল আনোয়ার, আব্দুর রাজ্জাক দুলাল, সাবের আহম্মদ, আহসাব রসুল জাহেদ, প্রবীর দাশ তপু, মঈনুল ইসলাম রাজু, খোকন চন্দ্র তাঁতী, আবু বক্কর চৌধুরী, রতন মল্লিক, শেখ নাছির আহাম্মদ, নাজমুল হাসান সাইফুল, সনত বড়–য়া, আবু বক্কর ছিদ্দিক, দেলোয়ার হোসেন দেলু, আজিজ উদ্দিন চৌধুরী, আলী হোসেন, সাহেদুল ইসলাম সাহেদ, আব্দুল হাই, কাজল প্রিয় বড়–য়া, আফতাব উদ্দিন রুবেল, আলাউদ্দিন আলো, হোসেন সরোয়ার্দী সরোয়ার, সাখাওয়াত হোসেন সাকু, নঈম উদ্দিন খান, আসিফ মাহমুদ, ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন বাবুল, তারেক ইমতিয়াজ ইমতু, মানিক বিশ্বাস, মঈনুলি ইসলাম, নজরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন, সাজু বিশ্বাস, শওকত আলী প্রমুখ।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সচিবালয়ে দায়িত্ব নিয়ে নিজ দপ্তরে আলাপকালে সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাইলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার দুপুরে তথ্যমন্ত্রী এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যে ভিশন নিয়ে আমরা আগাচ্ছি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বাস্তবায়ন করবো। আর সেজন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।’
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনার সময়ে গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটেছে। এছাড়া টেলিভিশন এবং অনলাইন গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে শেখ হাসিনা সময়েই। তবে আমরা জানি, অনেক ভুয়া অনলাইন কিছু উল্টা-পাল্টা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। অনেকের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে তারা। আমরা আপনাদের (সাংবাদিকদের) সহযোগিতা নিয়ে এগুলো মোকাবিলা করবো।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দিন বদল হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। এক সময় বাংলাদেশের নাম লেখা হতো অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসেবে। আজ সেই সুযোগ আর নেই। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ।’
মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের সন্তানদের বাংলা ভাষায় পড়াশোনা নিশ্চিত করতে ১০টি স্কুল নির্মাণ করবে সরকার। প্রাধনমন্ত্রীর নির্দেশে প্রথম ধাপে সৌদি আরব, বাহরাইন, জর্ডান, লেবানন, লিবিয়া, ইরাক ও ব্রুনাইয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্থাপিত হবে।
পর্যায়ক্রমে ওমান, কুয়েত এবং সংযুক্ত আবর আমিরাতেও স্কুল নির্মাণ করা হবে। স্কুলগুলো পরবর্তীতে কলেজে রূপান্তর করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে অর্থের জোগান দেবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। ৪ সেপ্টেম্বর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে সৌদি আররে চারটি ও বাহরাইনে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। সৌদি আরবে তিনটি স্কুল নির্মাণে অর্থ ছাড় হয়েছে। সৌদিতে স্কুল স্থাপনে রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসকে এরই মধ্যে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। রিয়াদে দুটি, জেদ্দায় একটিসহ মোট তিনটি স্কুল নির্মাণে এরই মধ্যে পাঁচ কোটি ৭৭ লাখ টাকা গত অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি চার কোটি ২৩ লাখ টাকা চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সৌদির দাম্মামে স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে সেখানকার বাংলাদেশের দূতাবাসের চাহিদা অনুযায়ী আরও ১৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাহরাইনে স্কুল নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হবে।
চলতি বছর জুন মাসে মধ্যপ্রাচ্যে স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য ১০টি দেশের দূতাবাসের কাছে চাহিদাপত্র চাওয়া হয়। সেখানে স্কুলের জন্য জমির পরিমাণ, মূল্য, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সংখ্যা কত, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা, স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং স্কুলটি টেকসই হবে কী না ইত্যাদি বিষয় জানতে চাওয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ী সচিব ড. নমিতা হালদার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মধ্যপ্রাচ্যে স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে অর্থ ছাড় হয়েছে।
জুন ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফরকালে সৌদি আরবে স্থাপিত বাংলা স্কুলগুলোর জন্য নিজস্ব জমি কিনে স্কুল স্থাপনের জন্য নির্দেশ দেন। এর পরপরই সৌদি আরবের সাতটি স্থানে ৯টি স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য মোট ৬৩৬ কোটি ১২ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে একটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনা (ডিপিসি) মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটির বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আতিকুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নেলিল্লাহে —–রাজেউন)। ১৬ অক্টোবর মঙ্গরবার দুপুর ১টা ৫ মিনিটে তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
সিলেটে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে ,গত ৯ মাস ধরে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। সিলেটের উপশহর -১ এ তাঁর ছোট ছেলে ফয়েজুর রহমানের বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।
মঙ্গলবার বাদএশা সিলেটের হযরত শাহ জালালের ( রাঃ ) দরবার শরীফ প্রাঙ্গনে মরহুমের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দরবার শরীফের কবরস্থানে তাকে দায়ন করা হয়।
লেখক ও গবেষক আতিকুর রহমান সুদীর্ঘ বছর রাঙ্গামাটির তবলছড়ি ডি এস বি কলোনীতে বসবাস করেন। জীবনের শেষ বষসে তিনি সিলেটে ছেলে মেয়েদের কাছে চলে যান।
জীবদ্দশায় লেখক ও গবেষক আতিকুর রহমান পার্বত্য শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য প্রচুর লেখালেখি করে গেছেন। তিনি রাঙ্গামাটির সাপ্তাহিক বনভূমি ও দৈনিক গিরিদর্পণের একজন নিয়মিত কলাম লেখক ছিলেন। এছাড়া লেখক ও গবেষক আতিকুর রহমান একাধিক জাতীয় দৈনিকেও পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতির উপর অসংখ্য কলাম লিখেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি বই রয়েছে।
লেখক ও গবেষক আতিকুর রহমানের মৃত্যুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সর্বপ্রথম দৈনিক সংবাদপত্র দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক বনভূমির সম্পাদক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান॥ নিরাপদ সড়কের দাবিতে বান্দরবানের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান শহরের ট্রাফিক মোড়, প্রেসক্লাব চত্বর ও বাজার এলাকা, বাস ষ্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ মিছিল করে, পরে প্রেস ক্লাব চত্বরে জমায়েত হয়ে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা সারা দে শের মত বান্দরবা নেও লাই সেন্স ও ফিট নেস বিহীন গাড়ী চলাচল বন্ধ ক রার জন্য সরকা রের কা ছে দাবী জানাই, এসময় শিক্ষার্থীরা নৌ পরিবহন মন্ত্রীর ২৯ জুলাই দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে শির্ক্ষাথীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ জানান এবং ৯ দফা দাবি দেন। এদিকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করলে শহরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। উল্লেখ্য, রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় ঘটনা কে কেন্দ্র ক রে শিক্ষার্থীরা এ বি ক্ষোভ সমা বেশ ক রে ছে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্তরে পাহাড়ের প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষ ঠাই করে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু। তিনি বলেন, পাহাড়ের যে কোন সমস্যা তর দৃষ্টি গোচর হলেই তা সাথে সাথে সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন। পাহড়ের মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অকৃত্রিম ভালোবাসা আরো অটুট রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের হাতকে শক্তিশালী করার আহবান জানান তিনি।
গতকাল ২৬ জুলাই রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে রাঙ্গামাটি বিএম ইনস্টিটিউট এ ২০১৮-১৯ শিক্ষা বর্ষের একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতি ছিলেন, রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও বিএম এর প্রতিষ্টাতা সদস্য কাজী নজরুল ইসলাম, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য হাজী কামাল উদ্দিন, রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স সভাপতি হাজী বেলায়েত হোসেন বেলাল, রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক রনতোষ মল্লিক প্রমূখ।
অনুষ্টানে ফুল দিয়ে বর্তমান শিক্ষাবর্ষের ভর্তি হওয়া ১৪১জন ছাত্র/ছাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এ ছাড়া ২য় বর্ষের ১৫০জন ছাত্র/ছাত্রীরাও অনুষ্টানে অংশ গ্রহণ করে।
প্রধান অথিতির বক্তব্যে এমপি চিনু বলেন, শেখ হাসিনার ডিজিটাল, বাংলাদেশের জন্য আর্শিবাদ। পার্বত্যাঞ্চলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভালবাসা অকৃত্রিম, পাহাড়ের কল্যাণে কোন কিছু তাহার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি তাড়াতাড়ি তা সম্পাদন করে দেন।
পাহাড় তথা বাংলাদেশের উন্নয়ন,বহিঃবিশ্বে দেশকে অনন্য সম্মানের আসনে আসীন করা ও বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত করা এবং তার সৃষ্টিশীল কাজের জন্য এদেশের মানুষের হৃদয়ে তিনি অমর হয়ে থাকবেন চিরকাল।
তেমনি শূন্য থেকে সৃষ্টি তোমাদের আজকের প্রিয় শিক্ষাঙ্গন রাঙ্গামাটি বিএম ইনষ্টিটিউট। এটি অত্রঞ্চালের ছেলেমেয়েদের কর্মমূখী শিক্ষার অর্জনের মাধ্যমে আত্বনির্ভশীল জীবন গঠনের প্রয়াসে প্রধানমন্ত্রি ভালবাসার একটি উপহার।
এছাড়া এ সরকার পাহাড়ের নারীদের উন্নয়নে নানাবিধ উদ্যেগ গ্রহন করেছেন যাতে নারীরাও আত্বনির্ভরশীল হয়ে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সম্পৃক্ত হতে পারে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সকল কর্মকান্ডে নারীদের অংশগ্রহণ অত্যাবশ্যক। শিক্ষাঙ্গনের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে নিয়মিত পাঠ সম্পন্ন করে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আত্বকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্টান শেষে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়।
৬ জুন ২০১৮ বুধবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা মোজাহের ভবন হলে বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস শীর্ষক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও সাহিত্য চর্চা পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মো: সালাহ্ উদ্দিন লিটন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদ এম. নুরুল হুদা চৌধুরী’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক কালাম চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, ১৪দল নেতা স্বপন সেন, শারদাঞ্জলি ফোরামের সভাপতি মাস্টার অজিত কুমার শীল, দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ নেতা মো: ইলিয়াছ, কালারপুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরী, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ডেন্টাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা: জামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম সাহিত্য পাঠচক্রের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল, জয় বাংলা শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি সজল দাশ, আনোয়ারা ক্লাবের সভাপতি কে.এইচ.এম তারেক, নারীনেত্রী সোমিয়া সালাম, রুমকি সেনগুপ্তা, শিক্ষক প্রভাত কান্তি দাশ, রতন ঘোষ, রুকুনুদ্দিন জয়, ব্যবসায়ী এজাজুল হক চৌধুরী, টেরিবাজার কাপড় ব্যবসায়ী নুরুল কবির, মো: ফকরুল ইসলাম শিমুল, রাশেদ মাহমুদ পিয়াস প্রমুখ। প্রধান অতিথি জননেতা মফিজুর রহমান বলেন, বাঙালি চেতনায় মুক্তির সনদ ৬ দফার মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব তরান্বিত হয়। ৪৭ সালের লাহোর চুক্তিতে দ্বৈতশাসন না থাকলেও শায়িত্ব শাসনের স্পষ্টতা ছিল। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানীরা পূর্ব পাকিস্তানীদের সবসময় নির্যাতন শোষণ আর শাসন করতে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা পেশ করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে ৬ দফা বাঙালি জাতির মুক্তির সনদে পরিগণিত হয়।
এ কথা চির সত্য যে, মুখ, কান ও নাক দিয়ে তরল ঔষধ পেটে বা মস্তিস্কে প্রবেশ করালে অথবা পেট ও মাথার ক্ষতস্থানে তরল ঔষধ লাগানোর ফলে তা পেটে বা মস্তিস্কে পৌঁছলে রোযা নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং যদি কোন খাদ্য জাতীয় তরল বস্তু বা তরল ঔষধ ইনজেকশন ও স্যালাইনের মাধ্যমে পেটে ও মস্তিস্কে পৌঁছানো হয়, তবে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে, পরে তা ক্বাযা করতে হবে। কিন্তু যে সমস্ত ইনজেকশন হাত-পায়ের রগ বা শরীরের মাংসে পুশ্ (ব্যবহার) করে রগে বা মাংসে ঔষধ ঢুকানো হয়, যা অধিকাংশ হাকিম ও পারদর্শী ডাক্তারের অভিমতানুযায়ী সরাসরি পেটে বা মস্তিস্কে পৌঁছে না; বরং তা শরীরের রক্তে মিশে যায়, এ ধরনের ইনজেকশন দ্বারা কোন কোন বিজ্ঞ গবেষক ওলামা-ই কেরামের মতে রোযা নষ্ট হবে না। যেহেতু তরল ঔষধ ব্যবহারে রোযা নষ্ট হবে তখনই, যখন উক্ত ঔষধ পেট বা মস্তিস্কে পৌঁছে যায়। নতুবা রোযা নষ্ট হবে না, যেমন শরীরের যে কোন ক্ষতস্থানে তরল ঔষধ লাগালে রোযা নষ্ট হবে না, যদি তা পেটে বা মস্তিস্কে না পৌঁছে, এমনকি অধিকাংশ ওলামা-ই কেরাম বিশেষতঃ ইমাম-ই আ’যম আবূ হানীফা রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ও ইমাম মুহাম্মদ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি’র মতে পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় তরল ঔষধ, পানি বা তৈল প্রবেশ করালে রোযা নষ্ট হবে না; যেহেতু পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় তৈল বা পানি বা তরল ঔষধ দিলে তা অভিজ্ঞ ডাক্তার ও হাকিমগণের মতে পেট বা মস্তিস্কে পৌঁছে না, তবে মহিলার লজ্জাস্থান বা প্রস্রাবের ছিদ্রে তৈল বা পানি বা তরল ঔষধ প্রবেশ করালে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ তখন তা পেটে পৌঁছে যায়।
(জরুরী মাসায়েল, কৃতঃ মুফতী জালাল উদ্দিন আহমদ আমজাদী)
এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ্য ও স্মর্তব্য যে, রোযা অবস্থায় ইনজেকশান ব্যবহার করলে রোযা নষ্ট হবে কিনা, তার জবাবে বর্তমান বিশ্বের মুফতীগণের ভিন্ন ভিন্ন মত দেখা যায়। মতান্তরে, রোযা অবস্থায় ইনজেকশান ব্যবহার না করাই নিরাপদ। এতে রোযা নষ্ট হবার আশঙ্গা থেকে মুক্ত থাকা যায়। তদুপরি, ইনজেকশান ইফতারের পর রাতের বেলায়ও প্রয়োজনে নেওয়া যায়।
অনুরূপ, যে সমস্ত রোগী ইনহেলার ব্যবহার ব্যতীত রোযা পালন করতে অক্ষম হয়, তারা রমযানের পর সুস্থ হলে ইনহেলার ব্যবহারকৃত দিনগুলো রোযা ক্বাযা করে দেবেন। আর সুস্থ না হলে রমযানের ওই প্রতিটি রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে রোযার ফিদিয়া স্বরূপ দু’বেলা খাবার কিংবা এর মূল্য প্রদান করবে।
ইনস্যুলিন সাধারণত: ডায়াবেটিসের রোগীরা আহারের কিছুক্ষণ পূর্বে ব্যবহার করে থাকেন, যা রোযা অবস্থায় ব্যবহার করলে রোযা নষ্ট হবার আশঙ্কাই বেশী থাকে। তাই ইনস্যুলিন ইফতারের ঠিক সময়ে গ্রহণ করে কিছুক্ষণ পর ইফতার সামগ্রী আহার করবে।
পায়খানার রাস্তায় ডোজ ব্যবহার, নাক, কান ও চোখের ড্রপ ব্যবহারে রোযা নষ্ট হবার আশঙ্কা বেশী। যেমন, সম্মানিত ফক্বীহগণ রোযারত অবস্থায় নশ্ টানতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং রোযারত অবস্থায় ডোজ ব্যবহার, নাক, কান ও চোখের ড্রপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ। অতএব, এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।
রোযার মাকরুহ সমুহের বর্ণনা
——————————————
★ মাসআলাঃ গীবত, চুগলী, গালি-গালাজ, বেহুদা কথাবার্তা বলা, কারো অন্তরে কষ্ট দেওয়া, আল্লাহর বান্দাগণের উপর জুলুম করা, অশ্লীল কথাবার্তা, বেহায়াপনা ও ইচ্ছাকৃত মিথ্যা বলা হারাম ও গুনাহ। রোযা অবস্থায় এ সমস্ত নিষিদ্ধকাজ সমূহ করা আরো বেশী গুনাহ। সুতরাং এসবের কারণে রোযা মাকরূহ হয়ে যায়। তবে ক্বাযাও কাফফারা ওয়াজিব হয় না। কিন্তু রোযাদার অবশ্যই গুনাহগার হবে এবং রোযার সওয়াব অনেক কমে যাবে। (বাহারে শরীয়ত, ৫ম খন্ড ৩৩ পৃ ঃ)।
★ মাসআলাঃ বিনা প্রয়োজনে রোযাদার কোন খাদ্য জাতীয় বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা বা কোন শক্ত খাদ্য দ্রব্য চিবানো মকরূহ। শিশু যদি এত ছোট হয় যে, তাকে দেয়ার মত অন্য কোন নরম খাদ্য নেই। এমতাবস্থায় তাকে রুটি চিবিয়ে নরম করে দেওয়া মাকরূহ নয়।
★ মাসআলাঃ এমন কোন জিনিষ ক্রয় করলো, যার স্বাদ দেখা প্রয়োজন- অন্যথায় ক্ষতি হতে পারে, তাহলে স্বাদ দেখা কোন ক্ষতি নেই। (দুরুল মুখতার)।
★ মাসআলাঃ রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেয়া, জড়িয়ে ধরা ও শরীর স্পর্শ করা মাকরূহ, যদি বীর্যপাত হওয়ার বা সহবাসে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা হয়। তবে স্ত্রীর মুখ বা ঠোটে চুমু দেওয়া রোযা অবস্থায় এমনিতেই মাকরূহ। (রদ্দুল মুহতার, বাহার)।
★মাসআলাঃ গোলাপ বা মেশক ইত্যাদির ঘ্রাণ লওয়া। দাঁড়ি, গোঁফে তেল লাগানো এবং সুরমা লাগানো মাকরূহ নয়।
★মাসআলাঃ রোযাদারের জন্য গোসল ও অযুতে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত করা মাকরূহ। কুলির ব্যাপারে ব্যাপারে অতিরিক্ত করার অর্থ মুখ ভরে পানি নেওয়া।
★ মাসআলাঃ পুকুরে গোসল করার সময় পানির ভিতরে বায়ু ছাড়া রোযাদারের জন্য মাকরূহ। যেহেতু ইহাতে পানি প্রবেশের আশংকা থাকে। (গুলজারে শরীয়ত, ১২৩ পৃঃ)।
★মাসআলাঃ মুখে থুথু জমিয়ে গিলে ফেলা মাকরূহ। (আলমগীরী, বাহার)।
★মাসআলাঃ অযু ও গোসল ব্যতীত ঠান্ডা লাগানোর উদ্দেশ্য কুলি করা, নাকে পানি দেওয়া বা ঠান্ডার জন্য গোসল করা বরং শরীরে ভিজা কাপড় জড়ানো মাকরূহ নয়। (আলমগীরী, রদ্দুল মুহতার, বাহার)।
★ মাসআলাঃ রোযাতে মিসওয়াক করা মাকরূহ নয় বরং অন্যান্য সময়ের মতই সুন্নাত। (কানুনে শরীয়ত)।
যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং ক্বাযা ও কাফ্আরা উভয়ই ওয়াজিব হয় ঃ
রমযানের রোযা ইচ্ছোকৃতভাবে ভেঙ্গে ফেললে কাফ্ফারা প্রয়োজন হয়। এক বা একাধিক রোযা ভঙ্গের কাফ্ফারা হচ্ছে একজন গোলাম বা বাদী আযাদ করা (এ সুযোগ বর্তমানে আমাদের দেশে নাই)। এটা সম্ভব না হলে ষাট জন মিসকিনকে পেটভরে দু’বেলা আহার করানো। কাফ্ফারার রোযা যদি মাঝখানে থেকে একদিন বাদ পড়ে, তাহলে পুনরায় লাগাতার ষাট রোযা রাখতে হবে। আগের গুলোর কোন হিসেব হবেনা। অবশ্য মহিলার যদি হায়েয হয়, তাহলে হায়েযের কারণে যে কয়েক দিন বাদ গেছে সেটা বাদ দিয়ে আগে পরে মিলে মোট ষাট রোযা হলে কাফ্ফারা হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার, বাহারে শরীয়ত, ৫ম খন্ড, ৬১ পৃঃ)।
★মাসআলাঃ রোযাদার ইচ্ছেকৃতভাবে কোন ঔষধ বা খাবার গ্রহণ করলে বা কোন পানিয় পান করলে অথবা কোন জিনিষ স্বাদের জন্য খেলে বা পান করলে বা যৌন সম্ভোগ উপযোগী কোন মানুষের সাথে (পুরুষ ও মহিলা) সামনের বা পিছনের রাস্তা দিয়ে সংগম করলে বীর্যপাত হোক বা না হোক, এসব ক্ষেত্রে কাযা ও কাফ্ফারা উভয়টা ফরয।
মাহে নমযানের ফরজ রোযা বিনা কারণে ইচ্ছাকৃত ভঙ্গ করলে কাযা ও কাফ্ফারা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হল যে, রাত থেকেই রমযানের রোযার নিয়ত কর
(জাওহারা,বাহারে শরীয়ত,৫ম খন্ড,৬১ পৃঃ)
মোহাম্মদ সাইদুল হক
সহকারি শিক্ষক
পোয়াপাড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
কাউখালী,রাংগামাটি পার্বত্য জেলা।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ রমজান বরকতময় মাস। এ মাসে শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ মাসে এমন একটি মহিমান্বিত রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
রসুলে পাক (সা.)-এর রোজাগুলো কেমন ছিল? তিনি সাহরিতে কী খেতেন, ইফতার করতেন কোন ফলটি দিয়ে? আর তাঁর সাহাবিরাই বা রোজা করতেন কোন নিয়মে? সব মুসলমানের মধ্যেই এ সম্পর্কে আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক। রমজানের প্রস্তুতির জন্য শাবান থেকেই নফল রোজা শুরু করতেন নবীজী (সা.)। হজরত আয়শা (রা.) বলেন, ‘আমি রসুল (সা.)-কে শাবান মাস ছাড়া আর কোনো মাসেই এত বেশি নফল রোজা রাখতে দেখিনি। (বুখারি) তিনি (সা.) সাহাবিদেরও রোজার প্রস্তুতির জন্য উৎসাহ দিতেন।
হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) কোনো একজনকে বলছিলেন, হে অমুকের পিতা! তুমি কি শাবান মাসের শেষ দিকে রোজা রাখনি? তিনি বললেন, না। রসুল (সা.) বললেন, তাহলে তুমি রমজানের পরে দুটি রোজা পূর্ণ কর। (বুখারি)
রমজানের ঠিক আগে আগেই রসুল (সা.) রমজানের ফজিলত এবং বরকত সম্পর্কে সাহাবিদের জানিয়ে দিতেন। এ সম্পর্কে অনেক হাদিসের মধ্যে একটি হাদিস উল্লেখ করছি। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজান বরকতময় মাস। এ মাসে শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ মাসে এমন একটি মহিমান্বিত রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।’ (মুসলিম) বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় রসুল (সা.) চাঁদ দেখে রোজা শুরু করতেন। হাদিসের বর্ণনা থেকে পাওয়া কেউ এসে তাকে সংবাদ দিত তিনি তা ঘোষণা করার অনুমতি দিতেন। তিনি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখেই রোজা ছাড়।’ (বুখারি)
জাঁকজমকহীন অনাড়ম্বর রোজা পালন করতেন রসুল (সা.)। নবীজী (সা.)-এর সাহরি ও ইফতার ছিল সাধারণের চেয়েও সাধারণ। হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘রসুল (সা.) কয়েকটি ভিজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ভিজা খেজুর না থাকলে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ভিজা কিংবা শুকনো খেজুর কোনোটাই না পেলে পানিই হতো তার ইফতার।’ (তিরমিজি) রসুল (সা.) সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে পছন্দ করতেন। ইফতারে দেরি করা তিনি পছন্দ করতেন না। তেমনিভাবে রসুল (সা.)-এর সাহরিও ছিল খুব সাধারণ। তিনি (সা.) দেরি করে একেবারে শেষ সময়ে সাহরি খেতেন। সাহরিতে তিনি দুধ ও খেজুর পছন্দ করতেন। এ সম্পর্কে সময়োপযোগী একটি হাদিস উল্লেখ করতে হয়। আহলে সুফফার অন্যতম সদস্য, সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন আজান শুনে, আর এ সময় তার হাতে খাবারের পাত্র থাকে, সে যেন আজানের কারণে খাবার বন্ধ না করে, যতক্ষণ না সে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ না করে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, মুয়াজ্জিন এ আজান দিতেন ফজর উদ্ভাসিত হওয়ার পরই। (সুনানে আবু দাউদ, সাওম অধ্যায়, হাদিস নং ২৩৪২; মুসনাদে আহমাদ; ২য় খন্ড, হাদিস নং ৫১০, সনদ হাসান।)
অন্যান্য সময়ের চেয়ে রমজানে রসুল (সা.)-এর ইবাদতের পরিমাণ বেড়ে যেত। বুখারির বর্ণনা অনুযায়ী তিনি (সা.) প্রবাহিত বাতাসের মতো দান করতেন। রমজানে রসুল (সা.) জিবরাইল (আ.)-কে কোরআন শুনাতেন। আবার জিবরাইল (আ.) হজরত (সা.)-কে কোরআন শুনাতেন। রমজানের রাতে তিনি (সা.) খুব কম সময় বিশ্রাম নিয়ে বাকি সময় নফল নামাজে কাটিয়ে দিতেন। নির্ভরযোগ্য হাদিস থেকে জানা যায়, রসুল (সা.) তিন দিন সাহাবিদের নিয়ে তারাবি পড়েছেন। চতুর্থ দিন থেকে তিনি ঘরে আর সাহাবিরা বাইরে নিজেদের মতো নামাজ পড়তেন। খলিফা ওমর (রা.)-এর সময় জামাতে তারাবি পড়ার প্রচলন হয়। আমাদের দেশে রমজান এলেই তারাবি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। যা মোটেই কাম্য নয়। তারাবি সুন্নত নামাজ। আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হারাম। আমাদের সুবিধামতো আমরা নামাজ পড়ব, অসুবিধা থাকলে না পড়ব। কিন্তু সমাজে ফেতনা সৃষ্টি করার অধিকার আমাদের কারও নেই।
শেষ দশ দিন ইতিকাফ করা রসুল (সা.)-এর নিয়মিত সুন্নত ছিল। ইতিকাফে কদরের রাত তালাশ করাই মূল উদ্দেশ্য। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য! শেষ দশকে আমাদের মসজিদগুলো মুসল্লিশূন্য থাকে। রসুল (সা.) শাওয়ালের চাঁদ দেখে রোজা ছাড়তেন। (লেখক-মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী, মুফাসসিরে কোরআন এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব)। (লেখা-সংগৃহিত)।