শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার কাছে ফলাফলের এই অনুলিপি হস্তান্তর করেন।
বেলা ১২টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী। দুপুর ২টা থেকে শিক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবে।
গত বছর এ পরীক্ষায় ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন।
সেই হিসাবে এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে পাঁচ হাজার।
ফলাফল হস্তান্তরের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাসের হার কমায় তিনি বিস্মিত নন।
“এবার শান্তিপূর্ণ, নকলমুক্ত পরিবেশে সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার পাসের হার অন্যান্য বছরের চেয়ে কম। এক্সামিনাররা খাতা নিয়ে যেত, কিন্তু ভালো করে দেখত না। এবার খাতা দেখার ক্ষেত্রে গাফলতি ছিল না।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খাতা দেখার পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়েছে, তা সময়োপযোগী।”
যারা এবারের পরীক্ষার কৃতকার্য হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাদের অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি ছেলেদের আরও মনোযোগী হতে বলেন।
হাওর, দ্বীপ ও পার্বত্য অঞ্চলে আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কেউ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকবে- সেটা চাই না।”
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত এবারের এসএসসির তত্ত্বীয় এবং ৪ থেকে ১১ মার্চ ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়।
দশ বোর্ডে এবার মোট ১৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৬২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন।
মন্ত্রী জানান, আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসিতে ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৭৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
আট বোর্ডে ৯৭ হাজার ৯৬৪ জন, দাখিলে ২ হাজার ৬১০ জন এবং কারিগরিতে ৪ হাজার ১৮৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
পাসের হারে এবারও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে। ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছাত্রের বিপরীতে ৮০ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিকে পাস করেছে।
এসএমএসে ফল
যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস করে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানা যাবে।
SSC/DAKHIL লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখতে হবে, এরপর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ফল জানা যাবে।
এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (http://www.educationboardresults.gov.bd) থেকেও পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (www.educationboardresults.gov.bd) ওয়েবসাইটে গিয়ে ফল ডাউনলোড করতে পারবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কোনো হার্ডকপি সরবারহ করা হবে না।
তবে বিশেষ প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।
ফল পুনঃনিরীক্ষা
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ৫ থেকে ১১ মে পর্যন্ত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেওয়া হবে।
আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে।
যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে, যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ২৫০ টাকা ফি কাটা হবে।
একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে।
চট্টগ্রাম বোর্ডের
গত বছর ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও এবার বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। এবছর সামগ্রিকভাবে পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।
এবছর চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৪১২ জন, ছেলেদের সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৪৮৫ জন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, মেয়েদের পাসের হার ৮৪ শতাংশ আর ছেলেদের ৮৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গত বছর ছিল যথাক্রমে ৮৯ দশমিক ৯৯ ও ৯০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
৮ হাজার ৩৪৪ জন জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ৪ হাজার ২৯১ জন ও ছাত্র সংখ্যা ৪ হাজার ৫৩ জন। গত বছর ৪ হাজার ১১৯ ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
বিভাগওয়ারি ফল বিশ্লেষণেও দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে ছেলেরা দশমিক ০৪ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেও মানবিকে মেয়েরা ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষায় ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে আছে।
বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও গত বছরের তুলনায় এবছর মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।
গত বছর বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ১৪২ জন এবং তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ জন।
মানবিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ছেলেদের মধ্যে ১০ জন আর মেয়েদের ৩৩ জন। আর ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৪৪ জন ছাত্রী এবং ২২৪ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বান্দরবনে |আলিকদমের মুরং কমপ্লেক্স
আফরিন জামান লিনা:অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই অঞ্চলে না গেলে বোঝাই যায় না কত অপরুপ সৌন্দর্যে সেজে আছে আমাদের জন্মভুমি।কবির ভাষায় সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি, এত টুকুন মিথ্যা কবি বলেন নাই। এই মাসের মাঝামাঝি আমি ছিলাম এই রুপ সম্রাজ্ঞের বিপুল ভান্ডারের রাজ্যে। হ্যা পার্বত্য চট্টগ্রামে। চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট সংক্ষেপে সি এইচ টি। এটা নিয়ে দ্বিতীয়বার আমার এই অঞ্চলে ভ্রমন করা। নিজের লেখালেখির উৎসাহ আর এই বাংলার রুপকে অতি নিকট থেকে দেখার লোভ আবারো নিয়ে গিয়েছিল আমাকে সি এইচ টি তে। বলতে পারেন নিজের গবেষনার খনি খোজার লোভেও চলে যাওয়া সমতল থেকে শত শত মাইল উঁচুতে।
গত ডিসেম্বরে সিএইচটি থেকে ফিরে এসে আমি লিখেছিলাম বান্দরবনে মুরং জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। তখনো আমি জানিনা বান্দরবন জেলার অন্তর্গত আলিকদম উপজেলাতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর করা মুরং কমপ্লেক্স। বান্দরবান ব্রিগেড এবং আলিকদম জোনের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে এখানে আবাসিক ভাবে রয়েছে ১১৭ জন শিক্ষার্থি। যার ভেতরে ৫০ জন মেয়ে এবং ৬৭ জন ছেলে। আমরা কথায় কথায় আমার দেশের এই অতন্দ্র প্রহরীদের ধিক্কার সহকারে কথা বলি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বলতেই আগেই এক ঘা দিয়ে গাল দিয়ে উঠে আমাদের সুশীল সমাজ। তাদের মতে ওখানে সেনাবাহিনী ঘাস কাটে। যদিও পাহাড়ি ঘাস কেটে সুপ্রশস্ত রাস্তা বা মনোহর স্থাপনা সবই এই গাল খাওয়া পার্টিদেরই করা। যা শুধু এই অঞ্চলে গিয়ে একটু সুনজরে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায়। মুরং কমপ্লেক্সের কথা জানার পর এবার আমি ছুটে যাই আলিকদমে।বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বান্দরবান জেলার অন্তর্গত আলিকদম একটি উপজেলা। এই উপজেলার দক্ষিনে রয়েছে মায়ানমার। উত্তরে লামা, পূর্বে থানচি,এবং পশ্চিমে নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলা।
পারতপক্ষে “আলোহক্যডং” থেকে আলীকদম নামের উৎপত্তি। বোমাং সার্কেল চীফের নথি পত্র ও১৯৬৩ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার কর্তৃক আকা মানচিত্রে আলোহক্যডং নামের সত্যতাপাওয়া যায়। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক আতিকুর রহমান এর মতে আলী পাহাড়ের সাথে সঙ্গতি শীলনাম হল আলীকদম। তাছাড়া কথিত আছে যে ৩৬০ আওলিয়া এ উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্যএসেছিলেন। তাদের মধ্যে আলী নামে কোন এক সাধক এতদঞ্চলে আসেন। উনার পদধুলিতে ধন্য হয়ে এএলাকার নাম করণ হয় আলীকদম। পূর্ববর্তী সময়ে এটি লামার একটি ইউনিয়ন ছিল। ১৯৮২সালেবাংলাদেশ সরকার প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের ফলে একে উপজেলায় অধিষ্ঠিত হয়।৬৩৬ টি গ্রাম বাপাড়ার সমন্বয়ে আলীকদম উপজেলায় আলীকদম সদর ও চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের আওতায় ৪ টি ইউনিয়নপরিষদ ।আলীকদম সদর,চৈক্ষ্যং,নয়াপাড়া,কুরুকপাতা। আর এই আলিকদম সদরেই রয়েছে মুরং কমপ্লেক্স। ২০০৮ সালের ১৫ই জুলাই ৩৫ জন শিক্ষার্থি নিয়ে আলিকদম জোনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদের হাত ধরে মুরং কপ্লেক্সের জন্ম।যেখানে এখন রয়েছে ১১৭ জন ছাত্রছাত্রী। এখান থেকে এস এস সি পাস করে মুরং ছেলেমেয়েরা চলে যাচ্ছে সমাজের নানা স্তরে। কেউ উচ্চতর পড়াশোনা কেউ চাকুরী কেউ ব্যাবসা। পার্বত্য অঞ্চলের মুরংদের শিক্ষার নিম্ন অবস্থানের জায়গা থেকে তুলে আনার এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত না জানানোর কোন কারন থাকতে পারে বলে মনে করা উচিৎ নয়। অথছ স্বাগত দূরে থাক এই অঞ্চলের একটা বড় অংশ এই কার্যক্রম সম্পর্কে জানেই না। জানবেই বা কি করে এখানে যে প্রচার করার কেউই নেই। যেসব সুশীল সমাজ এই অঞ্চল নিয়ে কাজ করছেন তারা এই সকল অবাঞ্ছিত মানুষদের জন্য না কথা বলে কথা বলছেন যাদের হয়ে বা যে বিষয়গুলি নিয়ে তা এই পাহাড়ের সরল মানুষগুলির কতখানি প্রয়োজনে আসছে এটাও একটু খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যারা খুব দর্পের সাথে বলছেন সেনাবাহিনীর এখানে কি কাজ? তাদের বলি আপনারা দয়া করা সেনাবাহিনীর এই মাছি মারার দায়িত্বটা নিন। যে ছেলেটা ২০/২১ বছরের তরুন ল্যাফটেন্যান্ট সে তার পরিবার,সমাজ,চাকচিক্যময় কর্মস্থল ছেড়ে এখানে এসে আসলে বসে কি করছে!!!!!!! এই অভিজ্ঞতাটা আপনাদেরো থাকা উচিৎ। যেই অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই,প্রযুক্তির ছোয়া নেই সেই ধরনের একটা পাহাড়ের উপরে একটা ক্যাম্প করে ওরা আসলে কেন থাকছে?? ঐ ক্যাম্পের পাস দিয়ে যেই সুপ্রশস্ত রাস্তা চলে গেছে আপনাদের পৌঁছানোর জন্য সেই রাস্তা করার দায় কি ওর???? যেই অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই সেখানে বিদ্যুতের খাম্বা বসানোর দায়িত্ব কি ওর??? যে এলাকায় মেডিকেল সেবা নেই সেই এলাকায় ঔষধ পৌছে দেবার দায়িত্ব কি শুধুই ওর??? আপনারা কেন রাজধানীর বুকে এসির হাওয়াতে বসে ওদের গাইল দিচ্ছেন??? আপনারাই তো এই পাহাড়ের সরল মানুষগুলির ভালবাসার গঙ্গা। আসুন না ওদের কাছে। থাকুন ওদের সাথে মিশে। আপনাদের কন্ঠগুলি কেন ওদের শিক্ষা নিয়ে হয়না??? কেন ওদের সামাজিক অবস্থান নিয়ে হয়না??? যখন একটা পাহাড়ি মেয়ে তার পৈত্রিক সম্পত্তিকে বেদখল হয়ে যাবার জন্য কেঁদে ফিরে কেন আপনাদের কন্ঠ তাদের জন্য কথা বলেনা??? কেন মুকুল চাকমা অপহৃত হবার পরে তার মেয়ে নমিশা চাকমা বা মনিশা চাকমার জন্য আপনারা কথা বলেন না? মুকুল চাকমা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সদস্য ছিল তাই????? কোথায় নমিশা??? কেন মানবাধিকার এখানে নিশ্চুপ??? কথা বলতে জানেন, প্রতিবাদ করতেও জানেন,আপনারাই এইগুলির অধিপতি, তাহলে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি এত পক্ষপাতিত্য কেন???? সেনাবাহিনীর কোন সদস্য ঐ অঞ্চল কিনে নিয়ে বসে নেই। ওরা মাসে সেই বেতনই পায় যেই বেতন সমতলের সৈন্যরা পায়।তাহলে আপনারাই বলুন কিসের লোভে ওরা ঐ দুর্গম অঞ্চলে পড়ে থাকে??? আমার লেখার উদ্দেশ্য কোন বাহিনীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া নয় কারন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিকে যারা কাঁদা ছুড়ে দিচ্ছেন তারা হয়ত নিজেরাই বুঝে না কাঁদাটা ঘুরে তাদের গায়েই এসে লাগছে কারন দেশটা আমাদের সবার। আমার দেশের অহংকার আমার দেশের সম্মানকে কাঁদা লেপন করার মহৎ উদ্দেশ্য গ্রহনকারীরা কতখানি দেশপ্রেমিক এটাও দেখার বিষয়। পার্বত্য অঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে পাহাড়ের সরল মানুষগুলির আচরন শুধু কাছেই টানেনা ওদেরকে নিয়ে ভাবায়। তবে বিষয়টা হচ্ছে সেই ভাবনাটাকে কে কোন ভাবে ব্যবহার করছে। আমরা কেন ওদের শিক্ষা নিয়ে লড়াই করিনা। আমি শুধু যদি এক আলিকদমের শিক্ষার সমিকরন দাড় করাই তাতেই বোঝা যাবে ঐ অঞ্চলের শিক্ষার হার সমতল থেকে কতখানি নিচেয় আছে। পার্বত্য আলীকদম উপজেলায় স্বাধীনতা পূর্ববর্তী কাল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সূচনা হয়। ১৯৬০ সালে ‘আলীকদম প্রাথমিক বিদ্যালয়’ বর্তমান আলীকদম আদর্শ সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়’টির গোড়াপত্তন ঘটেছিল। এ উপজেলা শিক্ষাক্ষেত্রে খুবই অনগ্রসর জনপদ। আধুনিকবিশ্বে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির চরম উৎকর্ষর এ যুগে শিক্ষিত সমাজ সৃষ্টি না হলে দারিদ্র বিমোচন থেকেশুরু করে কোন পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন বাস্তবায়ন, সংস্কৃতি ও শিল্প-সাহিত্য চর্চাকে এগিয়ে নেওয়াঅসম্ভব। অথচ এখানে একটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, একটি বেসরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও একটিদাখিল মাদরাসা রয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। বাস্তবতার নিরিখে বলতে হয়, এসবশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহের লেখাপড়ার মান ও পরিবেশ কাঙ্খিতমানের নয়। দু:খজনক হলেও সত্য যে,এতদাঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ না থাকায় দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা অধিকন্তু উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তবে আশার কথা যে, আলীকদম জোনের সাবেক অধিনায়ক লেঃ কর্ণেলআবুল কালাম আজাদ, পিএসসি, এলএসসি’র উৎসাহ-উদ্দীপনায় স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের দাবীর প্রেক্ষিতে‘আলীকদম মৈত্রী জুনিয়র হাইস্কুল (প্রস্তাবিত স্কুল এন্ড কলেজ)’ নামে আরো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরগোড়াপত্তন হয়েছে। আর সেখানেই যোগ হয়েছে মুরং কমপ্লেক্স। নিদৃষ্ট একটি পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীকে টেনে তুলে আনার একটা মহতী উদ্যোগ। যে জাতির শিক্ষার অবস্থা এমন তাদেরকে আপনারা শিক্ষার আলোর জন্য লড়াই করতে না শিখিয়ে কোন অধিকার আদায় করতে শেখাচ্ছেন??? আপনাদের অধিকার আদায়ের লড়াইকি পাহাড়ের সাধারন জনগোষ্ঠীর জন্য না নিদৃষ্ট গুটি সংখ্যক অস্ত্রধারীদের উস্কে দেবার জন্য??? আন্দোলনের ইস্যুগুলি একবার নিজেরাই খতিয়ে দেখুন। ৩০ লক্ষ প্রানের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা, এই বাংলাদেশ। একটি সোনার বাংলার গড়ার আশায় হায়েনাদের মুখ থেকে যে দেশকে আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম সেই স্বাধীন বাংলার সোনার রাজ্যের মানুষগুলিই অন্ধকারে পড়ে আছে। তাই বলছি নিদৃষ্ট একটি বাহিনীকে নিজেদের প্রতিহিংসার আগুনে পোড়ানোর চেষ্টা না করে আসুন সবাই মিলে ওদের শিক্ষার আলোতে আনার চেষ্টা করি। মুরং কমপ্লেক্সের মত আরো কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি, হোক সেটা সেনাবাহিনীর হোক ব্যাক্তিমালিকানার,হোক সরকারী, হোক আধা সরকারী। ঐ এলাকায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য লড়াই করুন দেখুন এই মহতি কাজে অন্তরায় কারা হয়ে দাঁড়ায়।
পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিটা উপজেলা প্রতিটা থানায় স্কুল হোক,আর কমপ্লেক্সই হোক ওদেরকে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাবস্থা করিয়ে দেবার জন্য সরকারের সূদৃষ্টি কামনা করছি। আর সুশিলদেরকে আবারো বলছি ওদেরকে আলোতে আসতে উৎসাহ দিন ওরা শিক্ষিত জাতি হয়ে উঠুক এরপর ওরাই সিদ্ধান্ত নিবে ওরা কি হতে চায় বাংলাদেশের সুনাগরিক না অন্য কিছু। আপনারা কতজন সাধারন পাহাড়িদের মতামত নিয়েছেন আমি জানিনা তবে এটা নিশ্চিত শতকারা ৯০ ভাগ সাধারন মানুষ চায় সুনাগরিক হতে। যারা ঘরে বসে সমালোচনায় বিভোর তাদেরকে আহ্বান করব একবার আলিকদম যান। দেখে আসুন মুরং কমপ্লেক্স। আমি যখন ওদের কাছে যাই ওদেরকে এক সারিতে দাড় করিয়ে গাওয়াই আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি,সে সুখের অনুভুতি বোঝাতে পারব না। শুধুই মনে হচ্ছিল এই সোনার বাংলাই তো আমার বাবা সহ আমার দেশের লাখো শহিদের রক্ত চেয়েছিল।আপনারা যারা আজ ঐ অঞ্চলের সরল মানুষ গুলিকে আলাদা করে দেখার কথা ভাবছেন তাদেরকে মনে করিয়ে দেই বঙ্গবন্ধু যেই সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠী কিন্তু তাদের বাইরে ছিলনা। ঐ অঞ্চলেও মুক্তি যুদ্ধ হয়েছে, ঐ জায়গাকেও এই দেশের মানুষ প্রানের বিনিময়ে স্বাধীন করেছে। যার জলন্ত প্রমান বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ। যার সমাধি ঐ অঞ্চলেই আছে। সুতারাং আমার দেশের একটা অংশকে নিয়ে কারোরই কোন অপরাজনীতি করার অধিকার নেই। ঐ অঞ্চলের প্রতিটা মানুষকে সেই অধিকারের জন্য লড়াই করতে শেখান উচিৎ যে অধিকার এদেশের সমতলের বাকি জনগোষ্ঠী গুলো পাচ্ছে।
॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥ বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মাকান্ডকে বিস্ময় উল্লেখ করে খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী একটি জনবান্ধব সরকার।
বিএনপির শাসনামলে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ সরকার পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার পাহাড়-সমতলে পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে। অবকাঠামো, সড়ক যোগাযোগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমানতালে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হল রুমের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এটিএম কাউছার হোসেন, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক, মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম তাজু ও মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাহাদাত হোসেন টিটো বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি সুচিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি পাহাড়ি-বাঙ্গালীর মধ্যে বিভেদ রেখা তৈরি না করে সকলকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সরকারের উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। তিনি বলেছেন, আমরা পাহাড়ি-বাঙ্গালী নয় বাংলাদেশী সরকারের উন্নয়নের সুফল পেতে চাই।
সুধী সমাবেশে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল হক, মাটিরাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মনছুর আলী, মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুবাস চাকমা, মাটিরাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুনুর রশীদ ফরাজি, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী, পৌর কাউন্সিলর মো. শহীদুল ইসলাম সোহাগ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ৩‘শ ২১ বর্গফুটের চার তলা ভবনের নির্মাণ কাজ করছে ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড কনসোর্টিয়াম লিমিটেড নামের একটি কোম্পানী। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের দিকে এ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম তাজু ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
॥ নন্দন দেবনাথ ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি)’র সর্বপ্রথম ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রচার বহুল দৈনিক সংবাদপত্র দৈনিক গিরিদর্পণের আজ ৩৪ বছর পূর্তি ও ৩৫ বছরে পদার্পন অনুষ্ঠান। এই উপলক্ষে দৈনিক গিরিদর্পণ পরিবার আজ এক আলোচনা সভা, কেক কাটা অনুষ্ঠান এবং সম্মাননা প্রদানের আয়োজন করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড মাইনী মিলনায়তনে বিকাল ৩ টায় এই অনুষ্ঠান মালা অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। গেস্ট অব অনার হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদ সদস্য, মহিলা আসন-৩৩ ফিরোজা বেগম চিনু, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, এনডিসি, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ বেতু চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী।
এছাড়া অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি জেলার কর্মরত সাংবাদিক ও সাংবাদিক সংগঠন গুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য অঞ্চলের ৬ জনকে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন, একশে পদক প্রাপ্ত কবি ও সাহিত্যক মংছেনচীন মংছিন্, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা। কাবি ও সাহিত্যিক শোভা রানী ত্রিপুরা, মরনোত্তর সাংবাদিক হিসাবে দৈনিক গিরিদর্পণ পত্রিকার প্রাক্তন বাতা সম্পাদক প্রয়াত শলেন দে, সাংবাদিকতায় দৈনিক গিরিদর্পন লংগদু উপজেলা প্রতিনিধি এখলাছ মিয়া খান, বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি দিলীপ কুমার দাশ।
এদিকে একটি লেখায় বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মোঃ জানে আলম দৈনিক গিরিদর্পণ পত্রিকার ৩৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে তার লেখায় বলেন ঃ সাধারণভাবে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশের প্রিন্ট মিডিয়াকে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা, পেশাগত ঝুঁকি, বিশ্বাসযোগ্যতার সংকট, সংবাদের বানিজ্যিকিকরণ, মালিক গোষ্ঠীর অযাচিত হস্তক্ষেপ, পেশাদারিত্বের অভাব ইত্যাদি। এর বাইরেও রাষ্ট্র ও সমাজ কাঠামোর দূর্বলতা যেমন- গণতান্ত্রিক চর্চাহীনতা, সুশাসনের অভাব, বিভিন্ন নীতি-আইন, সংবাদপত্র শিল্পকে হুমকীর মুখোমুখি করেছে।
অনলাইনে তাৎক্ষনিক খবরের প্রাপ্যতা দৈনিক সংবাদপত্রের জন্য নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে। ডেক্সটপ, ল্যাপটপ, নোটবুক, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি ডিজিটাল ডিভাইস এখন সাধারণের নাগালের মধ্যে। সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটের কাভারেজ বৃদ্ধি সংবাদকে আরও সহজলভ্য করেছে।
বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার প্রভাবে মিডিয়া এখন আগ্রাসী বানিজ্যের শিকার। কালো টাকার অনুপ্রবেশ ঘটেছে মিডিয়ায়। পুঁজি স্বভাবত:ই মুনাফামুখী। কর্পেরেট পুঁজির প্রভাবে সংবাদপত্র এখন বানিজ্যের উপাদান। এখানে লাভ লোকসান এখন প্রধান বিবেচ্যবিষয়। সমাজ বিবর্তন, রাজনীতির মেরুকরনে সংবাদপত্রের একদা যে অনুঘটকের ভূমিকা ছিল এখন তা প্রায়ই অনুপস্থিত। ব্যবসায়িক স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে যতটা সম্ভব ঠিক ততটা দায়িত্ব পালনকে সংবাদপত্রের কাজ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সাংবাদিকতা হলো সত্যের প্রকাশ। অন্যায় ও অন্যায়কারীর অসংকোচ প্রকাশ সত্যের স্বার্থে অপরিহার্য। এতে অবশ্যই ঝুঁকি বিদ্যমান, সমাজ ও রাষ্ট্রে অন্যায়, অনাচার বিশৃঙ্খলা যতটা প্রবল, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতায় ঝুঁকি ততটাই ব্যাপক। আর এ ঝুঁকি গ্রহণ করার প্রত্যয় সাংবাদিকতা পেশা গ্রহণের অন্যতম পূর্বশর্ত। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সংবাদ মাধ্যম স্বাধীন না হলে গণতন্ত্র পূর্নতা পায়না, আবার গণতন্ত্র না থাকলে সুশাসন সম্ভব হয়না, সুশাসন না থাকলে সংবাদ মাধ্যম কখনও কখনও স্বাধীন হতে পারে। গণতন্ত্র, সুশাসন ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পরষ্পর সর্ম্পকযুক্ত। অতএব গণতন্ত্র নির্মাণে ও সুশাসনের আবহ সৃজনে সংবাদপত্রের ভুমিকা অপরিসীম। পুঁজি নির্ভরতা থাকলেও এটি আদপে পুঁজিজাত মুনাফা অর্জনকারী পন্য নয়।
একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে প্রযুক্তি ও পুঁজির প্রভাবে নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। বিজ্ঞাপনের ভাষা ও রিপোর্ট এখন প্রায় সমার্থক। এ প্রক্রিয়ায় প্রতারিত হচ্ছেন পাঠক। প্রক্রিয়াটি মূলত: তথ্য ব্যবসা কোনভাবেই তা সাংবাদিকতা নয়। যারা এ জোয়ারে এখনও ভেসে যাননি তাদের টিকে থাকার উপরই নির্ভর করছে সাংবাদিকের মর্যাদা, সামাজিক দায়িত্ব পালনের অগ্রাধিকার।
গিরিদর্পনে বিম্বিত আমাদের পার্বত্য জীবন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নানা কারণে বাংলাদেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় এখনও অনেক কিছুতে পিছিয়ে আছে। কিন্তু এর মনোহর প্রকৃতি, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আর গৌরবোজ্জল নৃ-বৈচিত্রের সাথে মিশে আছে একটি উজ্জল নাম- ‘দৈনিক গিরিদর্পন’। শত প্রতিকুলতাকে ডিঙ্গিয়ে গত ৩৫ বছর যাবৎ নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত এই দৈনিকটি পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গিয়েছে। এই নিরন্তর সৃজন প্রক্রিয়ার সাথে যে নামটি জড়িয়ে আছে সেটি হলো দেশে বিদেশে নানা সম্মানে ভূষিত সংবাদ জগতের উজ্জল জ্যোতিষ্ক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ। মকছুদ আহমেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠা, সম্পাদকীয় নেতৃত্ব, ব্যক্তিগত করিশমা, নিলোর্ভ মানসিকতা, কুশলী ব্যবস্থাপনা আর সাংগঠনিক দক্ষতা ‘দৈনিক গিরিদর্পন’কে দীর্ঘমেয়াদে একটি বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় পত্রিকায় অধিষ্টিত রেখেছে। কোন পত্রিকা এত দীর্ঘসময় টিকতে পারেনা যদিনা তার সাথে অগনিত পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের সমর্থন ও শুভেচ্ছা থাকে। গিরিদর্পনের ৩৫ বছরে পদার্পন প্রমান করে পাঠক কখনও গিরিদর্পনের প্রতি বিমুখ হয়নি।
ঢাকা, চট্টগ্রামের বর্ণিল দৈনিক পত্রিকার সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করেই দৈনিক গিরিদর্পনকে টিকতে হয়েছে। একসময় ঢাকা-চট্টগ্রামের পত্রিকা অনেক বেলা করে রাঙ্গামাটিকে পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন বিশেষ ব্যবস্থায় ভোরেই ঢাকা-চট্টগ্রামের দৈনিক পত্রিকা পাওয়া যায় এখানে। দুপুরের মধ্যে উপজেলা শহরগুলোতেও ঢাকা-চট্টগ্রামের দৈনিক পত্রিকা পৌঁছে যায়। এ অবস্থায় স্থানীয় দৈনিকের পাঠক পাওয়া সত্যিই কঠিন। কিন্তু তা সত্বেও বিপুল সংখ্যক পাঠক নিয়মিত এ পত্রিকাটি পড়ে। এর একটিই কারণ দৈনিক গিরিদর্পন কখনই জাতীয় দৈনিক হতে চায়নি। বরঞ্চ পার্বত্য জনপদের প্রাত্যহিক জীবনের ছবি তুলে ধরতেই এটি সচেষ্ট রয়েছে। শুধু খবর পরিবেশনায় নয়, পার্বত্যাঞ্চলের সম্ভবাবনা, সংস্কৃতি ও নানা সৃজনশীল উদ্যোগের বিশ্বস্থ উপস্থাপনায় দৈনিক গিরিদর্পন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে।
গিরিদর্পনে বৈচিত্রময় নিবন্ধ, ফিচার ছবি ও কলাম যথেষ্ট সমৃদ্ধ। তাৎক্ষনিকতা দৈনিক গিরিদর্পনের অন্যতম বৈশিষ্ট। তবে দৈনিক গিরিদর্পনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা দিন দিন বাড়ছে। এখানে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আরও গভীর অনুসন্ধিৎসা নিয়ে উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত ও প্রাজ্ঞজনদের মতামত সন্নিবেশন করা বাঞ্চনীয়। শিক্ষা, ব্যবসা, শিল্প, বন, পরিবেশ, সাহিত্য, সংস্কৃতি, পর্যটন, রাজনীতি বিষয়ে আরও অনুসন্ধানী ও বৈচিত্রময় প্রতিবেদন, ফিচার ও সাক্ষাতকার পাঠের অপেক্ষায় আছি। বিশেষ সংখ্যা, ছবি বিন্যাস, প্রথম পৃষ্ঠার মেকআপ, সংবাদ টাইটেল তৈরীতে আরও মনোযোগ দাবী রাখে। খবর নির্বাচনেও কিছুটা সংযমী হওয়ার অবকাশ রয়েছে। ৩৫ বছরের প্রাজ্ঞ ও সমৃদ্ধ দৈনিক গিরিদর্পনকে আজও আগামীর প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সদা সর্বদা।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, নতুন করে কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস করার সুযোগ পাবে না। বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।২৯ মার্চ বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।সভায় মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নজরদারিতে রয়েছে আরও অনেকে। প্রমাণ পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিং করছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সভায় উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা সচিব মো. আলমগীর হোসেন ও বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা।সারাদেশে আগামী ২ এপ্রিল রোববার থেকে শুরু হচ্ছে ২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।সূচি অনুযায়ী আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে এ পরীক্ষা চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষে পরদিন ১৬ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
॥ ছোটন বড়ুয়া রাহুল/ এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন ॥ জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হল লামা মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজের এযাবৎ কালে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান “অগ্রযাত্রার ৩০ বছর” পূর্তি উৎসব। ১৮ মার্চ শনিবার কলেজ মাঠে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। সকাল ১০টায় মাতামুহুরী কলেজের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র্যালী লামা বাজার প্রদর্ক্ষিণ করে মাতামুহুরী কলেজে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে শেষ হয়। কলেজের এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমগ্র লামা উপজেলায় সকল মানুষের মাঝে আনন্দ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। শুরুতে অতিথিদের আসন গ্রহণ, ফুল দিয়ে বরণ, ক্রেষ্ট প্রদান, কলেজের কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা স্মারক প্রদান, কলেজ সৃষ্টিতে অবদানকৃত মহান ব্যাক্তিদের সম্মাননা, ‘শৈল দ্যুতি’ নামক স্মরণিকা মোড়ক উম্মোচন ও স্মৃতিচারণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। বিশাল এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার ১ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোঃ ইলিয়াছ, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার যুবায়ের সালেহীন, লামা-আলীকদম সেনা জোনের জোন কমান্ডার সারোয়ার হোসেন পি.এস.সি, অগ্রযাত্রার ৩০ বছর’ পূর্তি উৎসব কমিটির আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোঃ মাকসুদ, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু সহ কলেজের প্রভাষক, সাংবাদিক, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক, প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, লামা উপজেলা প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়া এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আজ মাতামুহুরী কলেজ একটি সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে রুপ নিয়েছে। এসময় তিনি কলেজ প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী, বাস-জীপ মালিক সমিতি, বাশঁ ও গাছ ব্যবসায়ী সমিতির অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি ৩০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যারা শ্রম, মেধা ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছে তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য জন্য ১টি কলেজ বাস ও শিক্ষা সফরের জন্য নগদ ২লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। তাছাড়া কলেজের কনফারেন্স রুম নির্মাণ, সীমানা প্রচীর তৈরি, রাস্তা সংস্কার, একটি মিনি স্টেডিয়াম ও নতুন ভবন তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রশ্ন ফাঁস: ‘সব খুলে বলতে’ পারছেন না শিক্ষামন্ত্রী
তিনি বলেছেন, পরীক্ষার সকালে শিক্ষকদের হাতে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়ার পর তার ফেইসবুকে তা ফাঁস হচ্ছে।
“আমরা এমন একটি পরিবেশের মধ্যে আছি যা আমরা সব খুলে বলতেও পারি না, সহ্যও করতে পারি না। কিন্তু আমরা আর সহ্য করব না। সত্যিকার অর্থে আমাদের মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষক বেশি দরকার।”
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আয়োজনে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
চলতি বছর এসএসসিতে বিভিন্ন পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে, যা পরদিন পরীক্ষায় হুবহু মিলে গেছে। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তাতে কাজ হয়নি। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরও কোনো পরীক্ষা বাতিল বা স্থগিত করার নির্দেশ দেননি মন্ত্রী।
প্রশ্নপত্র ঠেকাতে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলে আসছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সরকার চাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো সম্ভব।
দুদকের মানববন্ধনে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, “এবার প্রশ্ন ফাঁসের কিছু ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। যখন বিভিন্ন জেলায় প্রশ্নপত্র পাঠানো হল তখন তা ফাঁস হয়নি, শেষরাত বা ভোররাত থেকে প্রশ্ন ফেইসবুক থেকে আসছে। সত্যি কিনা মিথ্যা তা পরের দিনের প্রশ্নের সঙ্গে মেলালেই বুঝতে পারবেন।”
মন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র শিক্ষকের হাতে পৌঁছে দিয়ে তারা যখন ‘চিন্তামুক্ত’ হচ্ছেন, তখনই পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে প্রশ্নপত্র ফেইসবুকে আসতে দেখা যাচ্ছে।
“আমরা দুই ঘণ্টা আগে প্রশ্ন দিতে বাধ্য, কারণ গ্রাম অঞ্চলে এই প্রশ্ন নিয়ে যেতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে প্রশ্ন রাখতে হয়, তার নিচে নয়। তাহলে কে প্রশ্ন বের করে দিচ্ছে?
পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন বিজি প্রেস ছাড়াও ছাপানো ‘সম্ভব’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, বিজি প্রেসেই কিছু দুর্নীতিবাজ লোক গেঁড়ে বসে ছিল, এরপর দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাদের কারও চাকরি চলে গেছে, আবার কেউ জেলে আছে।”
শিক্ষা মন্ত্রণালয় পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে- এমন দাবিও নুরুল ইসলাম নাহিদ করছেন না।
“দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স। আমার শিক্ষামন্ত্রণালয়ে হচ্ছে না তা বলছি না, সারাদেশজুড়ে এই মন্ত্রণালয়ের কাজ বিস্তৃত। তবে এইটুকু বলতে পারি, মন্ত্রণালয়ের যে পরিধি আছে সেখানে সরাসরি দুর্নীতি হয় না। অস্বীকারও করি না, তবে আগের মতো অবস্থা নেই।”
দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে দুদকের সহযোগিতা আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘কাজে লেগেছে’ এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন করতে না পারলে দুর্নীতি প্রতিরোধ ‘অসম্ভব’।“দেশটা গড়তে গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। দেশের উন্নয়নের অভিযাত্রাকে চলমান রাখতে হলে দুর্নীতির মাত্রা কমাতেই হবে।দুর্নীতির কারণে আমাদের দুই থেকে তিন ভাগ জিডিপি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।”
আর এ কারণে স্কুল থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির ওপর জোর দেন দুদক প্রধান।
গত বছর দুর্নীতির ৫৪ শতাংশ মামলায় সাজা হয়েছে জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “এটা আমাদের বড় অর্জন, এটা একটা মাইলফলক।আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ শাস্তি হবে বলে আমরা আশা করছি।”
তিনি বলেন, ব্যাংক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পাসপোর্ট ও ভূমি খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়।
“ওইসব ক্ষেত্রে আমরা বেশি ব্যবস্থা নিয়েছি, তবে আমরা পদ্ধতিগত পরিবর্তন চাই, মানুষকে ধরে বেঁধে সৎ বানানো যায় না।”
অন্যদের মধ্যে দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদ ও এএফএম আমিনুল ইসলাম, সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল এবং ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. সালাহ উদ্দিনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত একযোগে দেশের ৬৪ জেলায় দুদকের এই দুর্নীতিবিরোধী মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক মাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন। পুল ও প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্য থেকে এ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের (ডিপিইও) নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এ নিয়োগের পরও সহকারী শিক্ষকের অন্তত ১৭ হাজার পদ শূন্য থাকবে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি।
সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সরকারের এ সিদ্ধান্তে পুল-প্যানেলের এসব প্রার্থীর বিগত ৪ বছরের বেশি দিনের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন জেলা শিক্ষা অফিসে নিয়োগের বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে।
এ কারণে নিয়োগ প্রত্যাশীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই ‘ঘুষ’ দেয়া থেকে বাঁচতে প্রভাবশালীদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। বেনামে মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে (ডিপিই) অভিযোগও জমা পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান যুগান্তরকে বলেন, পুল-প্যানেলের অবশিষ্ট প্রার্থীদের ৩০ মার্চের মধ্যে নিয়োগ দিতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। আদালতের রায়ের আলোকে এই কাজটি করলেও একে (রায়) শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের উপায় হিসেবে আমরা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এ নিয়োগের নামে যদি কেউ কোথাও অর্থ নেন বা দাবি করেন- প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি লিখিতভাবে প্রমাণ দেয়ার জন্য ভুক্তভোগীদের অনুরোধ জানান।
বর্তমানে ৬৫ হাজার নতুন-পুরাতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় অর্ধ লাখ শিক্ষকের পদ খালি আছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার প্রধান শিক্ষকের, বাকিরা সহকারী শিক্ষক। এর মধ্যে গত আগস্টে ৩৪তম বিসিএস থেকে ৮৯৮ জনকে প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এখন সহকারী শিক্ষকের পদ পূরণের উদ্যোগ নেয়া হল।
ডিপিইওদের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে নিয়োগে পাঁচটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যানেলভুক্ত অবশিষ্ট ৭ হাজার ২১৮ জন এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলভুক্ত ১০ হাজার ২৫৫ জনকে নিয়োগের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।
এতে প্যানেলভুক্তদের বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় স্থাপিত নতুন ও জাতীয়করণকৃত স্কুলে এবং পুলভুক্তদের সরকারি স্কুলে নিয়োগ করতে বলা হয়। নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিজ এলাকা ও উপজেলা অগ্রাধিকার দিতে হবে। শূন্য পদ না থাকলে পর্যায়ক্রমে পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা বা বিভাগে দিতে হবে। প্যানেলের মেয়াদ গত বছরের ৯ এপ্রিল শেষ হওয়ায় ২ বছর (মেয়াদ) বাড়ানো হয়।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে মোবাইল ফোনে জানান, পুল ও প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের লক্ষ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে শূন্য পদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা তা পাঠিয়ে দিয়েছি। জেলা থেকে এখন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকার। তখন আবেদনকারীদের পরীক্ষা নিয়ে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। তাদের মধ্যে তখন ১০ হাজার ৫১৪ জন নিয়োগ পান। বাকি ২৮ সহস াধিকের নিয়োগ ঝুলে ছিল। পরে প্রার্থীদের মামলার কারণে গতবছর কিছু নিয়োগ পান। বাকি ৭ হাজার ২১৮ জন নিয়োগ পাচ্ছেন এখন।
অপরদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নেয়া পরীক্ষায় ২৭ হাজার ৭২০ জন উত্তীর্ণ হন। তাদের মধ্য থেকে তখন ১২ হাজার ৭০১ জনকে শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকি ১৫ হাজার ১৯ জনকে এক নীতিমালার আলোকে পুলভুক্ত করে রাখা হয়। কথা ছিল, পুলের শিক্ষকরা উপজেলায় সংযুক্ত থাকবেন।
যখন যে স্কুলে শিক্ষকের সংকট দেখা দেবে- সেখানে সাময়িকভাবে পদায়ন করা হবে। কিন্তু এক সময়ে এসব প্রার্থীর প্রত্যাশা বেড়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সরকার সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলে পুলভুক্তরা মামলা করেন।
স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় এর (বিজ্ঞপ্তি) বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয় এতে। এরপর আরও একাধিক মামলা হয়। এসব মামলার রায়ের আলোকেই এখন নিয়োগ পাচ্ছেন পুলভুক্তরা।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল যুগান্তরকে বলেন, স্কুলে শিক্ষকের অনেক শূন্যপদ আছে। এবার পুল-প্যানেলের কোনো প্রার্থী আর নিয়োগবঞ্চিত থাকবেন না।
পার্বত্য অঞ্চলের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী কোটার বিধিমালা মেনে
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে
* তিন জেলার ৯২ জন ও অন্যান্য জেলার ৯৩ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক কর্মচারীর ক্ষেত্রে উপজাতি ৩২ জন ও অ-উপজাতি ১৯ জন
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালে। বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে এবং ৯ নভেম্বর ২০১৫ ইং তারিখ হতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় একটি নতুন বিশ^বিদ্যালয় বিধায় স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য নবপ্রতিষ্ঠিত বিশ^বিদ্যালয়ের ন্যায় ভাড়াকৃত বাসায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয় সূচনালগ্নে দেশের প্রায় প্রত্যেকটি বিশ^বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাস অথবা ভাড়া করা স্থাপনায় শিক্ষা কার্যক্রমসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে রাবিপ্রবি কর্তৃক রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রয়োজনীয় অর্থ হস্তান্তর করা হয়েছে। কিছু আইনগত ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বিলম্বিত হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক আগামী মার্চ, ২০১৭ -এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রাবিপ্রবির নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের তথ্য কর্মকর্তার দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে বিশ^বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ব্যবস্থাপনা- এই দুইটি বিভাগের ০২ (দুইটি) ব্যাচে ১৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। যারমধ্যে তিন পার্বত্য জেলার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯২ জন ও অন্যান্য জেলার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৩ জন। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে অ-উপজাতি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৭ জন অর্থাৎ ৬১.৯৬% এবং উপজাতি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ জন অর্থাৎ ৩৮.০৪%।
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় একটি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদনের ব্যাপারে সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করে থাকে। সরকারি বিধানমতে, কিছু সংখ্যক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা বাধ্যতামূলক নয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে যথাযথ বিধি মেনে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ে দুটি ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর থেকে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের সেশনজটে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী কোটার যে বিধিমালা রয়েছে তা অনুসরণ করে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। বর্তমানে রাঙ্গামাটি জেলা থেকে ২৩ জন, খাগড়াছড়ি জেলা থেকে ১৭ জন এবং অন্যান্য জেলা থেকে ১১ জনসহ সর্বমোট ৫১ জন (উপজাতি ৩২ জন ও অ-উপজাতি ১৯ জন) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিশ^বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।
বিশ^বিদ্যালয়ে ¯œাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রথম ব্যাচের তুলনায় দ্বিতীয় ব্যাচে আরো অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে এবং ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। যেমন, ভর্তি পরীক্ষায় কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ব্যবস্থাপনা দুটি বিভাগে ৫০টি করে সর্বমোট ১০০টি আসনের বিপরীতে প্রথম ব্যাচে ৩০১ জন শিক্ষার্থী ও দ্বিতীয় ব্যাচে ১০১২ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছিলেন এবং তৃতীয় ব্যাচে (২০১৬-১৭) ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া ২৮/০২/২০১৭ পর্যন্ত চলমান থাকবে। প্রথম ব্যাচের (২০১৪-১৫) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক সমকাল ও ঞযব ওহফবঢ়বহফবহঃ, দ্বিতীয় ব্যাচের (২০১৫-১৬) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক পূর্বকোণ, দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম, ঞযব ইধহমষধফবংয ঞড়ফধু এবং তৃতীয় ব্যাচের (২০১৬-১৭) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক জনকন্ঠ ও ঞযব ইধহমষধফবংয ঞড়ফধু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দুটি জাতীয় দৈনিকে (দৈনিক জনকন্ঠ ও ঞযব ইধহমষধফবংয ঞড়ফধু) প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রিকায় পাঠানো হয়েছে এবং সংবাদ আকারে দুইটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় (দৈনিক প্রথম আলো ও ঞযব উধরষু ঝঃধৎ) প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও এ যাবতকালের সকল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
তিন পার্বত্য জেলায় ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের
২১০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ
॥ সুমন্ত চাকমা, জুরাছড়ি ॥ তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের প্রকল্পের সহায়তায় স্থাপিত ২১০টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণ করেছে সরকার। গত কাল (সোমবার) প্রাথমি ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় শাখা-১ এর উপ-সচিব মুহম্মদ হিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় অধিগ্রহন আইন ১৯৭৪ এর ৩ (১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আওয়াতায় তিনটি শর্তে আদেশ জারীর সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনায়ন করা হয়েছে। শর্তে মধ্যে (ক) অধিগ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয় সমূহ জমি, গৃহ, নগদ তহবিলসহ যাবতীয় সম্পদ সরকারে অনুকুলে হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। (খ) বিদ্যালয় সমূহের বর্তমান পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত হইবে এবং তদস্থলে বিধি মোতাবেক নতুন পরিচালনা গঠন করিতে হইবে। (গ) বিদ্যালয়সমূহের তথ্যাদি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক/শিক্ষিকার পদ সৃষ্টি করা হইবে। পদ সৃষ্টির আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ বিধি মোতাবেক সরকারীকরণ করা হইবে।
২০০৯ সালে তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের মৌলিক শিক্ষা সহায়তা প্রকল্পের বান্দরবান জেলার ৮০টি, রাঙ্গামাটি জেলার-৮১টি এবং খাগড়াছড়ি জেলার ৪৯টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এ সব বিদ্যালয়ে প্রকল্পের আওয়াতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১ জন করে শিক্ষক সহায়তা দিলেও পাড়াবাসীর অর্থায়নে ৩ জন শিক্ষক পদায়ন করা হয়।
জুরাছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশিষ কুমার ধর জানান সংশ্লিষ্ট্য বিদ্যালয় গুলো জাতীয় করণের বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওয়েভসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে তবে এখনো আমাদের হতে চিঠি পায়নি।
উল্লেখ্য তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের মৌলিক শিক্ষা সহায়তায় প্রকল্পের আওয়াতায় পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় ২১০টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।