॥ রামগড় সংবাদদাতা ॥ বহুল প্রতিক্ষিত রামগড়-সাবরুম স্থল বন্দর স্থাপনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফেনী নদীর ওপর খাগড়াছড়ির রামগড় ও ত্রিপুরার সাবরুম অংশে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ এর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর গত কয়েক মাস রাত-দিন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা শ্রম দিয়েছেন এর পেছনে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনছেন দু-দেশের জনগন।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ভারতীয় হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র যৌথভাবে সেতু উদ্বোধনের কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে উভয় দেশের হাই অফিসিয়েলস’রা বেশ কয়েকবার ঘুরে গেছেন স্থলবন্দর এলাকা। চলতি মাসের ৬ জানুয়ারী একটি জাইকা (জাপানি উন্নয়ন সংস্থা) প্রতিনিধি দল আসেন। তাঁরা মৈত্রী সেতুসহ সড়কে নির্মিয়মাণ সেতু-কালভার্ট পরিদর্শন করেন। ৩০, ডিসেম্বর ২০২০ আসেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মো. জাবেদ হোসেন। তিনি ওই সময় সাংবাদিকদের বলেছেন, ফেব্রুয়ারী মাস নাগাদ সেতু উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রামগড় স্থলবন্দরকে ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষগুলোর মনে অর্থনৈতিক মুক্তির প্রত্যাশা জাগছে স্বাভাবিক ভাবেই। সমাজের খেঁটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আশা রামগড় স্থল বন্দরকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের অধিবাসীদের অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি সর্বত্র কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে, বৈদেশিক বানিজ্যে এগিয়ে যাবে দেশ, সফল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে যুক্ত হবে সমৃদ্ধির এক নতুন অধ্যায়। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় পাহাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। বড় কিংবা ছোট কোন ধরনেরই মিল ফ্যাক্টরি কল কারখানা না থাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অত্যন্ত কায়ক্লেশে বেকার জীবন যাপন করছেন। তাই এলাকাবাসীর প্রত্যাশা এই মৈত্রি সেতু ভারতের ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হলে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়, বানিজ্য পর্যটন এর প্রসার এবং মানুষে মানুষে সম্পর্কোন্নয়নে গোটা অঞ্চলের উপকার হবে। যে কারণে নতুন আশায় উজ্জীবিত এ সব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ বিনিয়োগকারী-ব্যবসায়ীরা। বিশ্লেষকদের মতে, বিপুল সংখ্যক মানব সম্পদ কাজে লাগবে অযুত সম্ভাবনার এই কর্মযজ্ঞে। ওই সময় চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বানিজ্যে সবার সামনেই খুলে যাবে নতুন এক স্বর্ণালী সময়, যেন বহুবছরের প্রত্যাশিত চাওয়া। বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ আয়োজিত বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড এক্সপোর্ট ফেয়ার (বিআইটিএফ) উদ্বোধন কালে গত বছরের ২৭, অক্টোবর রোববার এ প্রসঙ্গে বলেন “চট্টগ্রাম বন্দরকে পূর্ব ভারতের কমপক্ষে পাঁচ কোটি মানুষ ব্যবহার করলে প্রচুর রাজস্ব আয় হবে। বাংলাদেশের ব্যবসা-বানিজ্য সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়বে। উত্তর-পূর্ব ভারতের পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য কলকাতা বন্দরে যেতে ১২শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের দুরত্ব অনেক কম। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ‘নেইবারহুড ফাষ্ট’ ও ‘অ্যাক্ট ইষ্ট পলিসি’র প্রভার বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির বীজ নিহিত আছে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সহযোগিতার ওপরই। ‘সেভেন সিস্টার্স’ হিসাবে পরিচিত এই অঞ্চলের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ১ সেপ্টেম্বর ’২০ ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব স্থলবন্দর এলাকা পরিদর্শন করে কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের তাগাদা দিয়েছিলেন।
ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ ১৬ জুন’২০ রামগড়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, “চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মনিপুর মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুনাচল এই সাত রাজ্যের (সেভেন সিস্টার্স) সঙ্গে ব্যবসা বানিজ্য সম্প্রসারণ করতে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার বহু আগেই রামগড়-সাবরুম স্থল বন্দর স্থাপনে উদ্যোগী হয়”। আর এ বন্দর চালু হলে দুদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন দিগন্ত উম্মোচন হবে। অর্থনৈতিক ভাবে এ অঞ্চল হবে সমৃদ্ধ।”
যদিও রাজনৈতিক ও নানা আমলা তান্ত্রিক জটিলতায় এ প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন থমকে ছিল। বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমান সরকারের আন্তরিক উদ্যোগে চলতি বছরেই বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে বহুকাঙ্খিত রামগড়-সাবরুম স্থলবন্দরের দৃশ্যমান সম্পূর্ণ অবকাঠামো। এ জন্য ভারত সরকার ফেনী নদীর ওপর চার লেন বিশিষ্ট আর্ন্তজাতিক মানের একটি সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ করেছে। রামগড় পৌরসভার মহামুনি ও সাবরুমের আনন্দপাড়া এলাকায় এর অবস্থান। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০ কোটি রুপী। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার ইতিমধ্যে স্থলবন্দর কে ঘিরে বন্দর টার্মিনাল, গুদামঘর সহ অন্যান্য অবকাঠামো নিমার্ণে ভূমি অধিগ্রহণ কাজও চুড়ান্ত করেছে।
খাগড়াছড়ির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুদর্শন দত্ত ও অধ্যাপক দিলীপ চৌধুরী মনে করেন, অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে রামগড়-সাবরুম স্থল বন্দর অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে অবশ্যই তা একটি ইতিবাচক খবর। একটা সময় ধরেই নেওয়া হয়েছিল এটা বোধহয় আর হচ্ছে না। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আগ্রহ এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতায় সফলতার দিকে এগুচ্ছে রামগড় -সাবরুম স্থল বন্দরের অগ্রযাত্রা। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম স্থাপিত এই বন্দরের বিশাল কর্মযজ্ঞ এ সব দরিদ্র মানুষের মুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচন করবে বলে তাঁরা মনে করেন। এ বন্দর দুদেশের মানুষের জন্যই হবে আর্শীবাদ স্বরূপ। এই বিশ্বায়নের যুগে কোন দেশ কিংবা একই দেশের সব অঞ্চল কোন বিশেষ পণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ না-ও হতে পারে। প্রাকৃতিক ও বৈষয়িক সুবিধা, উৎপাদনে বিশেষজ্ঞতা ও শ্রম বিভাগের কারণে উৎপাদিত পণ্য পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে আদানÑপ্রদানের বিষয়টি স্বাভাবিক নিয়মেই হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো বহু আগেই বলেছেন, “পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার, সেথা হতে সবে আনে উপহার দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে-”
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রামগড় সফরকালে (জানুয়ারী ’১৮) সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, “রামগড় স্থল বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ সড়ক (রামগড়-বারৈয়ারহাট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার) উন্নয়নের কাজ বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা কর্তৃক বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য খরচ হবে ৩ হাজার কোটি টাকা এবং সড়কটি চার লেনে উন্নিত করা হবে।” পাশাপাশি চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে রামগড় স্থলবন্দর পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণের মহাপরিকল্পনার বিষয়টি সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন। অন্যদিকে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে সাবরুম পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া সাবরুম-উদয়পুর-আগরতলা সড়কগুলো এ মহকুমার সঙ্গে অন্য মহকুমা ও জেলার সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক পথে রামগড়-চট্টগ্রাম বন্দরের দুরত্ব ৭২ কিলোমিটার এবং সাবরুম-আগরতলা ১৩৩ কিলোমিটার।
রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারী ও রামগড় বাজারের ব্যবসায়ী তাপস বিশ্বাসের ভাষ্যমতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপনে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই সচেষ্ট ছিল। এটা সম্ভব হওয়ায় ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো (সেভেন সিস্টার্স) চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসা-বানিজ্যে গতি আনতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন দুদেশেরই ব্যবসায়ীরা। খাগড়াছড়িসহ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই রামগড় স্থল বন্দরের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছেন, সরেজমিন পরিদর্শনও করেছেন অনেকে। রামগড় স্থল বন্দর চালু হলে ব্যবসা-বানিজ্যসহ সব ক্ষেত্রেই অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটবে, পুরো এলাকার চেহারাটাই পাল্টে যাবে বলে মনে করেন তাঁরা।
বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রামগড় স্থলবন্দর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ২৩ তম। এ জন্য রামগড়ের মহামুনিতে ১০ একর জমি অধিগ্রহনের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। প্রয়োজনে পরে আরও নেওয়া হবে। ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪ দশমিক আট মিটার প্রস্থ সংযোগ সেতুটির নির্মাণ ভারত সরকার করবে। তবে মূল সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ১৫০ মিটার।
উল্লেখ্য, ৬ জুন ’১৫ ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেনী নদীর ওপর রামগড়- সাবরুম মৈত্রী সেতু -১ এর ভিত্তি প্রস্তুর উম্মোচন করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত ১৯২০ সালের সাবেক মহকুমা শহর খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় স্থলবন্দর স্থাপনের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ দেড় যুগের পর নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় নতুন ভাবে আলোচনায় আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রামগড়ে স্থলবন্দর স্থাপনের ঘোষণা দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৯৯৬ সালের ২৮ জুলাই স্থলপথ ও অভ্যন্তরীণ জলপথে ভারত ও মায়ানমার থেকে আমদানি-রপ্তানি বা খাদ্য ছাড়করণের উদ্দেশে দেশে ১৭৬টি শুল্ক ষ্টেশনের তালিকা ঘোষণা করে।
ওই তালিকায় ৪৮ নম্বর ক্রমিকে ছিল রামগড় স্থল শুল্কষ্টেশন। শুল্ক ও বর্ণিত পদ্বতি শর্তাবলী পালন করে পণ্যের গুনাগুন, পরিমাপ, মূল্য ও শুল্ক শ্রেণী বিন্যাস সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা যাবে।
প্রসঙ্গত, সরকার ঘোষিত ১৭৬টি স্থল বন্দরের বেশকিছু ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় রামগড় স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ দীর্ঘদিন ফাইল চাপা থাকলেও ২০১০ সালে স্থলবন্দর স্থাপনের কাজে পুনরায় গতি আসে।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী বলেন, রামগড়েই চালু হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন ধীরগতিতে কাজ চললেও স¤প্রতি ভারত-বাংলাদেশ উভয় পক্ষ ত্বরিত গতিতে স্থলবন্দর বাস্তবায়নের কাজ শুরু করায় ব্যবসায়ীসহ সকল মহল আশার আলো দেখছেন। সব মিলিয়ে রামগড় স্থল বন্দর পূর্নাঙ্গ ভাবে চালু হলে বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি বিপুল জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে যে, বিশাল ভূমিকা রাখবে নিশ্চিত ভাবেই তা বলা যায়। আর যোগাযোগের ক্ষেত্রে সূচিত হবে এক নতুন দিগন্তের। আঞ্চলিক গন্ডি ছাপিয়ে এ যেন বিশ্বব্যাপি সেতুবন্ধনের এক পূর্বাভাস।
রোববার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাদের এ সমাবেশ হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক ক্যাঞিং সমাবেশে বলেন, আরাকানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই তাণ্ডবে তিন শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ছয় শতাধিক মানুষ। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় আড়াই লাখ মানুষ উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছে।“মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সুকৌশলে এবং পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন গুলিবর্ষণসহ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞ ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।”
বাংলাদেশে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের এই নেতা বলেন, মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে রাখাইনে ঢুকতে না দেওয়ায় সেখানে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
“বার্মিজ সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন আজ থেকে নয়। সেই ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে কুখ্যাত বার্মিজ সমন্বয়ক ওয়ানের নেতৃত্বে তৎকালীন রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী জনগণকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত করার উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, এমনকি কোনো ধর্মীয় স্থাপনা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। যা আজও চলমান।
“এ জঘন্য অপরাধ এবং মানবতা লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে আমরা যদি প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন না করি, তাহলে তারা এই অমানবিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে।”
সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্যাঞিং বলেন, এরপরও যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে রাখাইন জনগণ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
“মিয়ানমার রাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনী ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, গুলিবর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে। গ্রামে বসতবাড়ির ওপর বিমান হামলা হচ্ছে, জাহাজ থেকে ভারী বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটছে, যা আন্তর্জাতিক আইনে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের শামিল।”এই সমাবেশে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে গাম্বিয়া যখন অভিযোগ করেছে, তখন তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দাবি করছে। ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার- আইআইএমএম এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
অন্যদের মধ্যে রাখাইন কমিউনিটি অব বাংলাদেশের সভাপতি মাং শাইরি, মুখপাত্র থং ইউ, রাখাইন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু সে সমাবেশে বক্তব্য দেন।
॥ জগৎ দাশ ॥ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৩০ টি অত্যাধুনিক একে-৪৭ অস্ত্র ও ৮ হাজার গোলাবারুদ সহ ৩ জন কে আটক করেছে বর্ডার সিকোরিটি ফোর্স( বিএসএফ) ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে এই ভয়ানক অস্ত্রের চালান আটক করা হয়েছে বলে বিএসএফের বরাত দিয়ে দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স, বিএসএফ বাংলাদেশের ত্রিপুরা-মিজোরাম আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের কাছ থেকে এ বছর সবচেয়ে বড় অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে বলে জানায়। তাদের দাবী এসব অস্ত্রের গন্তব্য ছিলো বাংলাদেশের পাহাড়ী আঞ্চলিক সস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি গুলো। এর আগেও বহুবার পাহাড়ের আঞ্চলিক দলের অস্ত্রের চালান আটক করে বিএসএফ। বিএসএফ আজ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়, এই তিন ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অস্ত্র চোরাচালানের র্যাকেটের অংশ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিএসএফ তার গোয়েন্দা শাখার মিজোরামের ফুলদুঙ্গসেয় অঞ্চলে বড় অস্ত্র পাচারের বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট তথ্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে এইসব অস্ত্র জদ্ব করেছে – বাংলাদেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দুরে এই অস্ত্রের চালন আটক হলো। ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তের ফুলডুংগেসি ত্রিপুরার শেষ গ্রামে মিজোরামের নম্বর প্লেট বহনকারী দুটি গাড়ি আটক করে তল্লাশির মাধ্যমে ৩ যুবক ও এসব অস্ত্র গোলাবারুদ আটক করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাহাড়ের এক নেতার দাবী এসব অস্ত্র বাংলাদেশের সীমান্ত পথ হয়ে পাহাড়ের আঞ্চলিক সস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসিত) দলের হাতে পৌছার কথা ছিলো।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ মহাকাশে ইতিমধ্যে ডানা মিলেছে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। আসছে সাফল্য। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশ এখন ব্যবহার করছে স্যাটেলাইটটি। আশা করা যাচ্ছে আগামী ৯ বছরের মধ্যেই লাভের মুখ দেখতে শুরু করবে স্যাটেলাইটটি।
তবে এখানেই থেমে নেই বাংলাদেশের মহাকাশ যাত্রা। শুরু হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রক্রিয়া। আগামী ৬ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে চায় বাংলাদেশ সরকার। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার এর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড ২য় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সংক্রান্ত পরিকল্পনা এবং বাজেট নির্ণয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
শুধু বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইটটিই নয়, ২০২৯ সালের মধ্যে আরো ২টি স্যাটেলাইট প্রেরণের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ধারাবাহিক ভাবে ২০২৩ সালে ২য়, ২০২৭ সালে ৩য় এবং ২০২৯ সালে পাঠানো হবে ৪র্থ স্যাটেলাইটটি।
এদিকে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইটের ডিজাইন এবং উৎক্ষেপণসহ কারিগরি সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জেইন মেরিন সূক্ষ্ম। ২০২০ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকার প্রধান এর সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকারে এই প্রস্তাবনা দেন।
অপরদিকে বাংলাদেশের ২য় স্যাটেলাইট তৈরি রক্ষণাবেক্ষণ এবং উৎক্ষেপণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে রাশিয়া ভিত্তিক স্পেস রিসার্চ সংস্থা গ্লাভকস্মস কোম্পানি। এই লক্ষ্যে ২০১৯ সালের অক্টোবরে গ্লাভকস্মস কোম্পানির ডেপুটি ডিরেক্টর ভিতালি সেভেনভ ৬ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়ার দল বাংলাদেশে আসে এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের সাথে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন।
এ সময় বাংলাদেশ এ নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ এর ২য় স্যাটেলাইট প্রেরণের ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, রাশিয়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে তাদের একটি স্লট ভাড়া দিয়েছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় রাশিয়া আরও স্লট দিতে প্রস্তুত সেই সাথে বাংলাদেশকে চাহিদা অনুসারে যেকোনো ধরনের স্যাটেলাইট প্রেরণ করতে সক্ষম রাশিয়া। এ সময় রাশিয়ার স্যাটেলাইট বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশকে ভবিষ্যৎ স্যাটেলাইট তৈরিতে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো সহায়তা প্রদান, জনবল প্রশিক্ষণ, স্যাটেলাইট এর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করন এবং স্যাটেলাইট তৈরি এবং উৎক্ষেপণ খরচ নিরূপণে পরামর্শক হিসাবেও কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সংসদের এক প্রশ্ন উত্তর পর্বে বলেন, বাংলাদেশ সরকার তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসাবে ২০২৩ সাল নাগাদ ২য় স্যাটেলাইট প্রেরণে বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশে থেকে ২য় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ব্যাপারে প্রস্তাব পেয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটটি সরাসরি বাংলাদেশের উপর অবস্থান না করে কৌণিক ভাবে অবস্থান করছে তাই আমরা চাই আমাদের পরবর্তী স্যাটেলাইটটি জেনো অবশ্যই আমাদের ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী কাছাকাছি থাকে। বাংলাদেশ চায় তার ২য় স্যাটেলাইট যেন অবশ্যই নিজস্ব কক্ষপথে থাকে যার মালিকানা বাংলাদেশ এর হাতে থাকবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ এর প্রথম স্যাটেলাইট ফ্রান্সের থালাস এলেনিয়া স্পেস নির্মাণ করলেও ফ্রান্স চায় বাংলাদেশ ২য় স্যাটেলাইট ফ্রান্স ভিত্তিক বৃহৎ স্যাটেলাইট উন্নয়ন এবং উৎক্ষেপণ সংস্থা এরিয়ানস্পেস নির্মাণ করুক। এরিয়ানস্পেস ইউরোপের অন্যতম বড় স্যাটেলাইট নির্মাণ সংস্থা যারা স্যাটেলাইট নির্মাণ এর পাশাপাশি উৎক্ষেপণ করে থাকে। তারা মূলত গবফরঁস ঞড় ঐবধাু স্যাটেলাইট নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য পরিচিত।
স্পোর্টস ডেস্ক :: পাকিস্তানে আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে ক্রিকেট। একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল পণ্ড হয়ে গেছে প্রবল গোলাগুলিতে।
পাকিস্তানের দা নিউজ পত্রিকার খবর, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহাত বিভাগের ওরাকজাই জেলার দ্রাদার মামাজাই এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সেখানে একটি টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিল বৃহস্পতিবার। এই ঘটনায় হতাহতের খবর অবশ্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রত্রিকাটি জানিয়েছে, ম্যাচ দেখতে বিপুল সংখ্যক দর্শক, অনেক রাজনৈতিক কর্মী ও সংবাদ কর্মী ছিলেন মাঠে। জামায়েত উলামায়ে-ই-ইসলামের স্থানীয় এক নেতা ছিলেন প্রধান অতিথি। খেলা শুরু হতে না হতেই কাছেই এক পাহাড় থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবষর্ণ শুরু হয়। ক্রিকেটার, দর্শক সবাই দ্রুত পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন।
ওরাকজাই জেলার পুলিশ কর্মকর্তা নিসার আহমেদ খান জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির খবর তাদের কাছে আছে এবং শিগগিরই কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযান ওই অঞ্চলে শুরু হবে।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে দীর্ঘদিন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল। গত কয়েক বছরে দলগুলি টুকটাক সফর করা শুরু করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি এখনও।
শামীম আহমেদ :: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের ৩১টি দুর্গম দ্বীপে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিয়ে পৌঁছে দেবে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, যেসব স্থানে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ খুবই জটিল বা ফাইবার অপটিক কেবল নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, সেসব দ্বীপে যাচ্ছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট।
কোম্পানির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানান, ৩১টি দ্বীপ বা চরের মধ্যে ইতিমধ্যে ২০টিতে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযুক্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় এ বছরের মধ্যে বাকি দ্বীপগুলোতে ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে।
২০১৮ সালে ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ প্রবেশ করে মহাকাশ যুগে।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দ্বীপ এলাকায় নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক হামেদ হাসান মুহাম্মদ
মহিউদ্দিন বলেন, ভি-স্যাট প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বীপগুলোতে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার কাজ চলছে।
পটুয়াখালীর চর কাজল, চর বিশ্বাস, বাহের চর, চর বোরহান ও চন্দ্রদ্বীপে ইতিমধ্যে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, পটুয়াখালীর সাতটি চর বা দ্বীপে এ সেবা দেওয়া হবে।
এছাড়া চাঁদপুরে আটটি, পিরোজপুর, বরিশাল নোয়াখালির একটি করে এবং ভোলার ১১টি দ্বীপে এ ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
সেইন্টমার্টিন দ্বীপে মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা থাকলেও জরুরি যোগাযোগের জন্য সেখানে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে বলে জানান মহিউদ্দিন। ইতিমধ্যে ২০টি দ্বীপে বা চরে সেবা শুরু করা হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, বাকী দ্বীপগুলোতে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সংযোগ নিশ্চিত করা যাবে।
প্রতিটি চর বা দ্বীপে পাঁচটি করে ভিস্যাট স্থাপন করে এ সেবা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, “দ্বীপ বা চরের আয়তন বুঝে এগুলো স্থাপন করা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে কমবেশিও হচ্ছে। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবায় ডাউনলোড স্পিড ১০ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ৪ এমবিপিএস সরবরাহ করা হবে। উচ্চগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্বীপবাসীরা সব সুবিধাই নিতে পারবেন।”
এসব দ্বীপের স্কুল বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের হিসাবে প্রকল্পে শেষে এসব এলাকার তিন লাখের বেশি জনগণ এ সেবার আওতায় আসবেন।”
স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন ও শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, “ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পরীক্ষামূলক কাজ করে সফলতাও পাওয়া গেছে।”
২০১৯ সালের মার্চে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে প্রায় ৪০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এ মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি কেইউ-ব্যান্ড ও ১৪টি সি-ব্যান্ডের।
ইতিমধ্যে ৩৫টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার করছে। আরও কয়েকটি টিভি চ্যানেল সম্প্রচার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম) সেবাও দেওয়া হচ্ছে।
বেক্সিমকো কমিউনিকেশন্স গত বছর ১৬ মে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম) প্রযুক্তির সেবা চালু করে, যার মাধ্যমে কেবল সংযোগ ছাড়াই স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখা যাচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর বাণিজ্যিক যাত্রাও এর মধ্য দিয়েই শুরু হয়।
এরপর গত ১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর বাণিজ্যিক সম্প্রচারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের দুই বছরের মাথায় নিজস্ব আয়ে চলা শুরু করেছে বিসিএসসিএল।
মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণে বৈরুত শহরের অর্ধেক অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকে আটকে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা মারওয়ানের।
বিস্ফোরণে লেবাননের মজুদ খাদ্যশস্যের ৮৫ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে বুধবার জানা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি আমদানি করা খাদ্যশস্যের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
খাদ্যশস্যের এখন যা মজুদ আছে তা দিয়ে দেশটি বড় জোর আর এক মাস চলতে পারবে বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ এ সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বুধবারও বৈরুত বন্দরের একাংশ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। শহরটির অসংখ্য বাসিন্দা নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্তত ১৩৫ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া বিস্ফোরণে আহতের সংখ্যাও প্রায় ৫ হাজার, বলছে গার্ডিয়ান। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে দেখা যাচ্ছে আহতদের উপচে পড়া ভিড়।
লেবাননের সরকার জানিয়েছে, মঙ্গলবারের বিস্ফোরণ নিয়ে চলমান তদন্তের মধ্যেই বৈরুত বন্দরের দায়িত্বে থাকা বেশকিছু কর্মকর্তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
কীভাবে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলেও লেবানন সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরের গুদামে কয়েক বছর ধরে পড়ে থাকা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণেই বিস্ফোরণটি হয়েছে।
ছয় বছর আগে একটি কার্গো জাহাজ থেকে জব্দ করা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এতদিন বন্দরের গুদামে কেন পড়ে ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
লেবাননের কাস্টমস প্রধান বাদ্রি দাহের বলেছেন, তার সংস্থা গুদাম থেকে ওই রাসায়নিক পদার্থগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য তাগাদা দিলেও ‘কাজ হয়নি’।
সার বানানোর অন্যতম প্রধান উপকরণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়
মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পর যে কমলা রংয়ের ধোঁয়ার মেঘ বৈরুতজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেটি নাইট্রেটের বিস্ফোরণের কারণে হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। বিস্ফোরণের কারণে বাতাসে বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড ছড়িয়ে পড়েছিল বলেও ধারণা তাদের।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মঙ্গলবারের মতো ভয়াবহ বিস্ফোরণ লেবানন এর আগে দেখেনি।
ব্রিটেনের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের ধারণা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার শক্তির দশভাগের এক ভাগ বৈরুতের বিস্ফোরণে দেখা গেছে।
“সন্দেহাতীতভাবেই এটি ইতিহাসের অন্যতম বড় অ-পারমাণবিক বিস্ফোরণ,” বলেছেন তারা।
বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণে তিন দিনের শোক পালন করছে লেবানন। দুই সপ্তাহের জন্য জারি হয়েছে জরুরি অবস্থাও।
নেদারল্যান্ডসের জাতিসংঘ সমর্থিত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলার রায় ঘোষণা স্থগিত করেছে। শুক্রবার এ রায় দেয়ার কথা ছিল।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইরান, ইসরায়েল ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে লেবাননকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
ঈদের দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। শুভেচ্ছা বার্তায় মমতা বলেন, “শ্রদ্ধেয়া শেখ হাসিনা জী, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং আপনার মাধ্যমে সকল বাংলাদেশিকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”ভারতজুড়ে ও পশ্চিমবঙ্গেও এই উৎসব ‘যথোপযুক্ত মর্যাদায়’ পালন করা হচ্ছে বলেও শুভেচ্ছা বার্তায় জানিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন, “ভৌগলিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ ভিন্ন হলেও আমরা পরস্পরের একান্ত আপন। “দুই বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি এক হওয়ায় আমরা একে-অপরে বিভিন্ন উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে থাকি।” শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ‘শ্রী বৃদ্ধি‘ হওয়ার প্রত্যাশাও ছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তায়।
এবার নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, নিজেকে ঢাকতে মিথ্যা বলছেন মোদি। সেইসঙ্গে মনমোহন সিং বলেন, মোদির উচিৎ নিজের শব্দচয়ন নিয়ে সতর্ক হওয়া। চীনের অবস্থান নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি ছড়ানো প্রধানমন্ত্রীর উচিত নয়। কংগ্রেস এই নেতা আরও বলেন, এই মুহুর্তে, আমরা ঐতিহাসিক মোড়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের সরকারের সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপই ঠিক করে দেবে যে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের সম্বন্ধে কী উপলব্ধি করবে। যারা আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদেরই একান্তভাবে এই দায়িত্বের ভার বহন করতে হবে এবং আমাদের গণতন্ত্রে এই দায়িত্বটি থাকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উপর। তাই প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই তিনি কী বলছেন এবং আমাদের জাতির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যে যে ঘোষণাগুলি করছেন তার প্রভাব সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। বলেন ভারতের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠকের পর নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারতীয় ভূ-খণ্ডে কোনও চীনের আগ্রাসন হয়নি। দেশের সীমান্ত কেউ লঙ্ঘন করতে পারেনি। কোনও পোস্টও দখল করেনি চীন। মোদির এ মন্তব্যের পরই তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, কেউ যদি সীমান্ত পেরিয়ে না-ই এসে থাকে, তবে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হল কীভাবে? জি নিউজ, এনডিটিভি।
মহামারী আকারে ছড়য়িে পড়া নতুন করোনাভাইরাসে একদনিইে র্সবোচ্চ আক্রান্ত শনাক্তরে পাশাপাশি সবচয়েে বশেি মৃত্যু দখেল ভারত।
শনবিার সকালে ভারতরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়রে দয়ো তথ্যে ২৪ ঘণ্টায় দশেটতিে ৭ হাজার ৯৬৪ জন কোভডি-১৯ রোগী শনাক্ত ও ২৬৫ জনরে মৃত্যু হয়ছেে বলে জানানো হয়ছে।ে
কবেল আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাতইে নয়, একদনিে র্সবোচ্চ ১১ হাজার ২৬৪ জন সুস্থ হয়ছেে বলওে জানয়িছেে তারা।
শনবিার সকাল র্পযন্ত ভারতে মোট এক লাখ ৭৩ হাজার ৭৬৩ জনরে দহেে নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়ছেে বলে জানয়িছেে এনডটিভি।ি
দশেটতিে সরকারি হসিাবইে কোভডি-১৯ এ মৃত্যু ৫ হাজাররে কাছাকাছি পৌঁছে গছে;ে আক্রান্তদরে মধ্যে ৮০ হাজাররে বশেইি ইতমিধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ওি ফরিছেনে বলে র্কমর্কতারা জানয়িছেনে।
সংক্রমণ মোকাবলোয় ভারত র্মাচরে শষে সপ্তাহ থকেইে দশেজুড়ে লকডাউন দয়িছেলি। চর্তুথ ধাপরে লকডাউনে বধিনিষিধে শথিলি হওয়ার পর থকেে দশেটতিে আক্রান্ত ও মৃত্যু প্রতদিনিই হু হু করে বাড়ছ।ে
শুক্রবার সকালওে ভারতরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগরে ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজাররে বশেি আক্রান্ত শনাক্তরে খবর দয়িছেলি।
মহারাষ্ট্র, তামলি নাডু, তলেঙ্গোনা ও আসামওে শুক্রবার র্সবোচ্চ সংখ্যক কোভডি-১৯ রোগী শনাক্ত হয়ছে।ে
পশ্চমিাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে শনাক্ত কোভডি-১৯ রোগীর সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়য়িে গছে।ে
পশ্চমিাঞ্চলীয় এ রাজ্যটতিে শুক্রবার ভাইরাস আক্রান্ত ১১৬ জনরে মৃত্যু হয়ছেে বলওে এনডটিভিরি প্রতবিদেনে জানানো হয়ছে।ে সব মলিয়িে নতুন করোনাভাইরাস মহারাষ্ট্রইে দুই হাজার ৯৮ জনরে প্রাণ কড়েে নয়িছেে বলে সরকারি হসিাবে দখো যাচ্ছ।ে
তামলি নাডুতে একদনিে শনাক্ত হয়ছেে ৮৭৪ জন; সবমলিয়িে দক্ষণিরে এ রাজ্যটতিে কোভডি-১৯ রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়য়িে গলে।
তলেঙ্গোনায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৬৯ জনরে দহেে ভাইরাসরে উপস্থতিি মলিছে;ে আসামে মলিছেে ১৭৭ জনরে দহে।ে