॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না, তখন যারা নির্যাতন ও কষ্ট সহ্য করেছে, যারা ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে দল করেছে, সেই সব ত্যাগী নেতাদের দলে মূল্যায়ন করতে হবে। তবেই তৃণমূল পর্যায়ে দল সুসংগঠিত হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষের দল, এ দলে সুযোগ সন্ধানীদের কোন স্থান নেই। যারা দলের জন্য নিবেদিত তাঁরাই আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রাধান্য যেমন পাবেন, তেমনি দলীয় ভাবেও পদ পদবীতে স্থান পাবেন। আগামীতে কোন কাউয়ার স্থান আওয়ামী লীগে হবে না। অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বিতাড়িত করা হবে।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্নেল ফোরকান আহমদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা আহমেদ মোস্তাক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম।
তথ্য মন্ত্রী ড, হাছান মাহমুদ বলেন, এক শ্রেণীর লোক আওয়ামী লীগকে ‘নিরাপদ স্থান’ হিসেবে ব্যবহার করতে দলে ঢুকে পড়ছে। যারা অপকর্মে লিপ্ত, যারা অবৈধ আয়ের পথে রয়েছে, যারা অবৈধ আয়ের টাকা রক্ষা করতে মরিয়া মূলত তারাই দলে অনুপ্রবেশকারী। নৌকায় বেশী যাত্রী হলে ডুবে যাবার উপক্রম হয়, তাই আর কোন যাত্রীর দরকার নেই বলেন- তথ্যমন্ত্রী।
আগামী স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন বিষয়ে নেতাদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তৃণমূল থেকে নাম পাঠানোর সময় দলের জন্য ত্যাগী, বিশ্বস্তদের নাম পাঠাবেন। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
কক্সবাজার কেন্দ্রিক সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার চিত্র তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারের মানুষ ভাবেনি এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিমান বন্দর হবে। স্বপ্নকে হার মানিয়ে উন্নয়ন হচ্ছে। গৃহহীনকে ঘর দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও কক্সবাজারের এই চিত্র ছিল না। এখানে যেসব উন্নয়ন কাজ হচ্ছে তা অকল্পনীয়। দেড়শ বছর পর দেশের রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। আগামী বছর জুন মাস নাগাদ কক্সবাজারেও রেল যোগাযোগ শুরু হবে, সেটা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১২ বছরে দেশের প্রতিটি মানুষের চেহারার পরিবর্তন হয়েছে। রুচির পরিবর্তন ঘটেছে। এখন আর ছেঁড়া কাপড়, খালি পায়ে মানুষ দেখা যায়না। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। গ্রামে-গঞ্জেও ব্যাপক উন্নয়নের জোয়ার। তা আওয়ামী লীগের নেতাদের কারণে সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
মতবিনিময় সভায় বার বছর আগের উন্নয়ন এবং এখনকার উন্নয়ন চিত্র মানুষের মাঝে তুলে ধরতে তৃণমূলের দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সংঘাত নয়, হানাহানি নয়, রক্তপাত নয় মৈত্রী ভাবনিযে আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈংসিং এমপি। তিনি শান্তি সম্প্রতি ঐক্য থাকলে কোন সমস্যা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল শান্তি ও সম্প্রতির জায়গা বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব আরো একবার প্রমান করেছে। পার্বত্য অঞ্চলের অ্যাডভেঞ্চার যুক্ত টুরিজমকে বিকশিত করতে বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ভুমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারী) বিকেলে রাঙ্গামাটি চিংলা মং মারি ষ্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১১ থেকে ১৫ জানুয়ারি পাঁচদিন ব্যাপী বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসবের পুরষ্কার বিতরনী ও সমাপনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব একথা বলেন।
এর আগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি । পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিলো।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনে সভাপতি নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য কমিশনের সচিব সুদপ্ত চাকমা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংশুই প্রু চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম নিজামী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ,কে,এম মামুনুর রশিদ, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাডভেঞ্চার ফেস্টিভলে পর্বতারোহণ, নৌবিহার, কায়াকিং, হাইকিং ও ট্রেইল রান, টিম বিল্ডিং, ট্রেজার হান্ট, ট্রেকিং, ক্যানিওনিং, ট্রি ট্রেইল, রোপ কোর্সসহ বিভিন্ন ইভেন্ট অংশগ্রহণ করা প্রতিযোগিতায় তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় হতে ৫০ জন ও সমতল থেকে ৫০জন সর্বমোট ১০০জন যাদের বয়ন ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী অ্যাডভেঞ্চারার মাঝে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে অংশীজন ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ জানুয়ারী) দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি, চট্টগ্রাম এর আয়োজনে ও জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিস, রাঙ্গামাটি এর সহযোগিতায় এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়ক কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ১০টি উদ্যোগ সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক তথ্য অফিস।
এসময় আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রাম এর উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মামুর (শিক্ষা ও আইসিটি)।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিল্পী রানী রায়, রাঙ্গামাটি ডেপুটি সিভিল সার্জন নিতিশ চাকমা, জেলা সমাজ সভা অফিসের উপ-পরিচালক ওমর ফারুক, শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোসনে আরা বেগম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা কৃপাময় চাকমা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়কারী মিঠুন দুপ্ত, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ কে এম মুকছুদ আহম্মেদ, প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ আজিজুল হক নিউটনসহ রাঙ্গামাটির কর্মরত পিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক, শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ মামুন বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা যদি জনগণ না জানে এবং সচেতন ও সম্পৃক্ত না হয়, তাহলে তা লক্ষ্যমাত্র অর্জন করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততা, জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ, সচেতনকরণ করতে গণমাধ্যমের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যমের সচেতনতার মাত্রার উপর নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের সফলতা ও ব্যর্থতা।
সভায় তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যম পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে। সমাজের অন্য কোনো সেক্টর পরিবর্তন নিয়ে এতো কাজ করে না। মিডিয়াই হচ্ছে পরিবর্তনের ক্যাটারিস্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগকে প্রচারের জন্য অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার উপযোগী করে ফিচার তৈরি করা হবে বলেও তিনি জানান।
তথ্য অধিদফতর আরও গতিশীল করার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, তথ্য অধিদফতর ও কার্যালয়কে আরও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তোলা হবে। দ্রুতই এ কাজ করা হবে। এ সময় সাংবাদিকদের কাছ থেকে পিআইডির বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে আসার পর দ্রুত সমাধান করার আশ্বাসও দেন তিনি।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে মীর হোসেন আহসানুল কবীর বলেন, সরকারের পক্ষে থেকে ‘১০টি খাত চিহ্নিত করা হয়েছে, এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারা যাবে। সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিবেশ, বৈষম্য, নারীর ক্ষমতায়ন, জ্বালানি নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা। ১০টি বিশেষ উদ্যোগ দারিদ্র্যমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, পরিবেশবান্ধক, টেকসই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখবে।
সভায় বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে বড় ধরনের ভূমিকা রাখার যেমন সুযোগ আছে তেমনী অনুসন্ধানী কাজেরও সুযোগ আছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। এর থেকে বের হতে হলে সব মহলের সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।
বক্তারা আরো বলেন, তথ্য অধিকার আইনটির মাধ্যমে অর্জিত তথ্য সাংবাদিকের পেশাদারিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করবে। পাশাপাশি তাকে তথ্য-প্রমাণ দিয়েও সুরক্ষিত করবে। আর জনগণের হয়ে সাংবাকিরাই পারেন তথ্য অধিকার আইনের শক্তিশালী দিকগুলো ব্যবহার করে দূর্নীতি-অনিয়ম, অন্যায়-অবহেলা ও বঞ্চনার খবর তুলে আনতে।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ (এবিএম) খুরশীদ আলম।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেড় কোটি মানুষের জন্য আমরা তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাব। ছয় মাসে পর্যায়ক্রমে সব ভ্যাকসিন দেশে আসবে। প্রথম দফায় ভারত থেকে ৫০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিন আসবে। এই ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে আমরা দ্বিতীয় ডোজের জন্য আট সপ্তাহ সময় পাব। তখন আমাদের পরবর্তী চালান চলে আসবে। সে সময় আমরা বেশি সংখ্যক লোককে ভ্যাকসিন দিতে পারব।
ডা. এবিএম খুরশীদ আলমের মতে, ভ্যাকসিনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোদমে কাজ করবে। তারা ঢাকার বাইরে দেশের যেকোনো অঞ্চলে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবে।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ৩ কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেশে আনা হবে। একজন মানুষের দুই ডোজ করে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে। একটি ডোজের ২৮ দিন পর আরেকটি ডোজ দিতে হবে। সরকার এই টিকা কিনবে।
স্লাপাইয়ারের কাছ থেকে আনার খরচসহ প্রতি ডোজের দাম পড়বে ৫ ডলার। নিয়মানুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকা, আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ সাতটি দেশ অনুমোদন দিলে সেটি যেকোনো দেশ ব্যবহার করতে পারবে। ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো কয়েকটি করোনার ভ্যাকসিন উৎপানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। যাতে দ্রুত চাহিদা মেটানো যায়।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিবাসনের সঙ্গে জড়িতদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৬ জানুয়ারী) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি অনুরোধ করব, শ্রমিক অভিবাসনের সঙ্গে যারা জড়িত, বিশেষ করে রিক্রুটিং এজেন্ট থেকে শুরু করে আমাদের মন্ত্রণালয়, এদেশের মানুষ কিন্তু মানুষ। সেইভাবে তাদের মর্যাদা দিতে হবে। তাদের যেন কোনো রকম সমস্যা না হয়।
“যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের কর্মসংস্থান ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, তাদের নিরাপত্তা ঠিকমতো আছে কিনা, বিশেষ করে আমাদের মেয়েরা যারা যায়, তাদের নিরাপত্তার বিষয়টা সকলকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। সেজন্য এক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যারা কর্মরত বা বিদেশে কর্মী প্রেরণে যে সমস্ত সংগঠনগুলো আছে, তাদেরকে আমি অনুরোধ করব আপনাদেরকে দায়িত্বশীলতার ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ দায়িত্বটা আপনাদের উপরে বর্তায়।”
বিদেশে গেলে অনেক অর্থ উপার্জন করা যাবে, কিছু মানুষের এমন প্রবণতার কথা উল্লেখ করে বিদেশ যাওয়ার সময় অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ে অন্ধকার পথে পা বাড়ায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “সেখানে আমি তাদেরকে বলব, আপনারা এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হবেন না। দালালদের খপ্পরে পড়বেন না। আমরা সমগ্র বাংলাদেশে যে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি তারই মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন করার সুযোগ আছে। আর এই নিবন্ধিত যারা যেখানেই কাজের সুযোগ হবে তাদেরকে সেখানে প্রেরণ করা হয়। কাজেই সেজন্য ধৈর্য ধরতে হবে।
“কিন্তু যদি আপনারা কারো প্ররোচনায় বিদেশে গিয়ে বিপদে পড়েন সেটা নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য খুবই কষ্টকর, খুবই ক্ষতিকর। কিছুদিন আগে আপনারা জানেন যে, লিবিয়ায় কতজনকে জীবন দিতে হল। এই পরিস্থিতির শিকার যেন আমার দেশের মানুষকে হতে না হয়।”
তিনি বলেন, “এখন আমাদের দেশে কাজেরও যেমন অভাব নেই, খাবারেরও অভাব নেই আল্লাহর রহমতে। কাজেই এখন আর সোনার হরিণের পেছনে কেউ দয়া করে অন্ধের মতো ছুটবেন না। আপনারা নিবন্ধন করে তার মাধ্যমে যান, সেটাই আমরা চাই।”
প্রবাসী কর্মীদের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকার প্রধান।
করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তাদের হতাশ না হয়ে নিজের দেশে কাজ করতে এবং প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানান তিনি।
প্রবাসীদের সবরকম সুযোগ-সুবিধা দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা ও রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রবাসীদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “যারা অভিবাসী রয়েছেন, দীর্ঘদিন বিদেশে আছেন, তারা দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন। বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগৃডিজিটাল ডিভাইস তৈরি করা বা ডিজিটাল যেকোনো ইকুইপমেন্টস তৈরি করা বা বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদেশিরা যেমন আসছেন, আমাদের প্রবাসীরাও কিন্তু আজকে দেশে এসে বিনিয়োগ করতে পারেন।”
প্রবাসীদের জন্য তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিভিন্নভাবে আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি।”
রেমিটেন্স পাঠানোর খরচ কমিয়ে দুই শতাংশ করে সেখানে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “ফলে বৈধ পথে পাঠালে টাকাটা সরাসরি আসবে।”
দেশে অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাঠানো সহজ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
“বিনিয়োগ যারা করবেন তাদেরও অর্থ আনা-নেওয়া এটাও সহজ করে দেওয়া হয়েছে,” বলেন শেখ হাসিনা।
সরকারের পক্ষ থেকে ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা বিদেশে যাবেন, প্রবাসে যাবেন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সমগ্র বাংলাদেশে ডিজিটাল সেন্টার। সেখানে তারা নিবন্ধন করতে পারেন।
“আর এই ব্যাংকের থেকে তাদের যখন একটা চাকরি হবে, তারা যাবেন। কোথায় চাকরি হচ্ছে, সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা, সঠিক বেতন পাবেন কিনা তাদের সেই নিরাপত্তার বিষয়টা দেখা। পাশপাশি তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবে। খুব স্বল্প সুদে তাদের ঋণ দেওয়া হয়। জমিজমা বিক্রি বা বন্ধক রাখা লাগবে না।”
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই বিশেষ ব্যাংকের জন্যও আলাদা ৫০০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে, ২০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ৫০০ কোটি টাকাসহ প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি, যাতে করে প্রবাসীরা কোনো রকম সমস্যায় না পড়ে।”
প্রবাসে যারা কাজ হারিয়েছেন তাদের আর্থিক সাহয্য দেওয়া হয়েছে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের ফেরত আনতেও সরকার বিশেষ বিমান পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
যারা বিদেশে যাবেন তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে সরকার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সবাই যদি একটু ট্রেনিং নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে বিদেশে যান, তাহলে অর্থ বেশি উপার্জন করতে পারবেন আবার নিজেদের চাকরির নিরাপত্তাটাও থাকবে। সেই দিকটায় আপেনাদের বিশেষ করে দৃষ্টি দিতে হবে।”
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে এই সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খাঁন এমপি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গড়ার মাধ্যমে তাঁরা বীরের পরিচয় দিয়েছেন। এজন্য সকল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নামের পূর্বে “বীর ” লিখতে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। একইসাথে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বত্র রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্, পিস ও পাকিস্তানী মুজাহিদ বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিতসহ তালিকা তৈরী করে অবিলম্বে মন্ত্রনালয়ে জমা দিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সকল ইউনিট নেতৃবৃন্দকে কাজ করতে হবে। এছাড়া এলাকা ভিত্তিক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও তৈরী করে জমা দিলে তা পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে। প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় কোন অমুক্তিযোদ্ধা থাকতে পারবেনা। এ বিষয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী জানুষারী মাসে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন অনুষ্টানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত বিভাগীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি সভার আয়োজন করে।
শাজাহান খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্টা করা। ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জ্বতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা নস্যাৎ করার জন্য স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। এ চক্র মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। অনেকের বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন সহ্য করতে না পেরে বিএনপি-জামাতচক্র ২০১৫ সালে হরতাল-অবরোধের নামে দেশে অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়েছে, গাড়ি জ্বালিয়ে ও মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে অগ্রিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির শত কোটি টাকার উপরে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। যারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছে তারা কখনো মুসলমান জাতি হিসেবে পরিচয় দিতে পারেনা। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও জাতির পিতার স্বপ্ন্রে সোনার বাংলা বিনির্মাণে বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য আগামীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়ক, কার্লভাট ও সেতুর নামকরণ করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি করে ২০ হাজায় উন্নীত করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে তা বাস্তবায়ন হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক কল্যাণে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ লক্ষ্যে সরকার তাঁদের জন্য আলাদা মন্ত্রনালয় করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে আরো সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে। ১ ডিসেম্বরকে সরকারীভাবে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ও ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষনা ও জয় বাংলা’কে জাতীয় ধ্বনি করার বিষয়ে মতপ্রকাশ করেন তিনি।
প্রধান বক্তা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন, ১৯৭১ সালে সেনাপতিদের প্রতিষ্টা বা কোন ধর্মীয় কারণে যুদ্ধ হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত অমুক্তিযোদ্ধা থাকার অত্যন্ত দুঃখজনক। জিয়াউর রহমানের আমলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদেন সৃষ্টি। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও তার দোসরদের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের কোন চেতনায় ছিলনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী গেজেটভূক্ত অনেক দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা আছেন যারা সরকারের ভাতা দিয়ে চলছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যতদিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন বীর মুক্তিযোদ্ধারা গৌরবের সাথে থাকবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘গার্ড অব অনার’ পাওয়া এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদান। এ অর্জন ধরে রাখতে প্রত্যেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদেরকে আন্তরিকভাকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে জেলা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার একেএম সরোয়ার কামাল দুলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মোঃ ওসমান আলী ও যুগ্ম সদস্য সচিব এবিএম সুলতান আহমেদ। বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাহাবউদ্দিন, খাগড়াছড়ি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রইছ উদ্দিন, রাঙ্গামাটি কমান্ডের পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা ইউনিটের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের এলএমজি, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ হোসেন, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, মহানগরীর থানা কমান্ডের পক্ষে আকবর শাহ থানার ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূর উদ্দিন, জেলা সংসদের থানা কমান্ডের পক্ষে মিরসরাই কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশ্তী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, মহানগর কমিটির আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু, যুগ্ম আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজীশ ইমরান প্রমূখ। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা কমান্ডারগণ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি এক দিনের সফরে আগামী ৩১ অক্টোবর রাঙ্গামাটিতে আসছেন। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক থেকে প্রেরিত সফর সূচি সুত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি শনিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। এর পর সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় উপস্থিত এবং বিএফডিসি ও বিএফআরআই এবং মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন। দুপুর ১টার দিকে রাঙ্গমাটি সার্কিট হাউজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
এর পর দুপুর সাড়ে ৩টায় কাপ্তাই লেরক বিএফডিসি’র মৎস্য উৎপাদনের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন এবং সন্ধ্যা ৭টায় রাঙ্গামাটি সার্কিস হাউজে রাঙ্গামাটি র্পাত্য জেলার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত মৎস্য ও প্রানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থা সমূহের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন। পর দিন রবিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৭টায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
‘কাউকে বাদ দিয়ে আমরা বাংলাদেশের কথা চিন্তা করিনা’ বান্দরবানে চুক্তি প্রসঙ্গে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন/অনুপম মার্মা,বান্দরবান ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি বলেছেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি পুর্ণ বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। আমরা চাই সারা বাংলাদেশকে নিয়ে একসঙ্গে উন্নয়ন করতে। আমরা সবাই মিলেই বাংলাদেশ। কাউকে বাদ দিয়ে আমরা বাংলাদেশের কথা চিন্তাও করিনা। সবাই ভাই ভাই হয়ে আমরা চলতে চাই। বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবানের থানচি থানা ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সীমান্ত রক্ষা ও সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সীমান্ত সড়কের কাজ করছি। এই কাজ সম্পন্ন হলে বান্দরবানসহ পাহাড়ের উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে। আগামী প্রজম্ম বান্দরবানের পর্যটনের প্রতি আকৃষ্ট হবে। এর আগে মন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে থানচি বিজিবি সদর দপ্তরে অবতরণ করলে তাঁকে ফুলের তোড়া নিয়ে বরণ করে নেন বিজিবির বান্দরবান সেক্টরের কমান্ডার কর্ণেল নাহিদুল ইসলাম গাজী। পরে মন্ত্রী নব নির্মীত থানা ভবন এলাকায় পৌছলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ও বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার মন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোঃ দাউদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল হক মৃদুল উপস্থিত ছিলেন। বিকালে মন্ত্রী বাগলাই রোড় পরিদর্শন করেন। শুক্রবার সকালে রেমাক্রি পরিদর্শন শেষে বিকালে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে মন্ত্রীর।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে চট্টগ্রামের উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সে-সকল প্রতিশ্রুতি পূরণে একগুচ্ছ মেগা প্রকল্প উপহার দিয়েছেন। এই প্রকল্পগুলো এখন বাস্তবায়নাধীন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সমাপ্তির পথে। সর্বোপরি চট্টগ্রামের সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে একটি পরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যাণ প্রণয়নের বিষয়টি সরকারের নজরে আছে। আজ সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কর্ণফুলি নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ এবং রোধে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের বাস্তবায়ন,চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। সভায় মন্ত্রী আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক সংকট রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দেখছে। বিশেষ করে কর্পোরেশন চলে জনসাধারণ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ট্যাক্সের অর্থে। জনগণ যদি তাদের ট্যাক্স সঠিক সময়ে পরিশোধ করেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যদি তাদের ট্যাক্স নিয়মিত প্রদান করতেন তাহলে এই আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতো। তিনি উল্লেখ করেন যে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে পঞ্চবার্ষিকী কর মূল্যায়নে চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক কর ১৬০ কোটি ১৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা ধার্য্য করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে বার্ষিক কর দেয় মাত্র ৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। যেখানে চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ৩ হাজার ২শ কোটি টাকা আয় করে সেখানে চসিকের ধার্যকৃত ট্যাক্স কেন দেবে না। এই বিষয়টির যাতে সুরাহা হয় সেজন্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে। তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধতা, জোয়ারের পানি থেকে চট্টগ্রাম নগরকে রক্ষা করার জন্য সিটি আউটার রিং রোডের কোন বিকল্প নেই। সিডিএ তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পটির কাজ চলছে। চট্টগ্রাম মহানগর রক্ষাকারী বিদ্যমান উপকূলীয় বাঁধের উপর ৪ লেইন বিশিষ্ট ১৫ কি.মি. দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। বাঁধের বিদ্যমান উচ্চতা ২০-২৩ ফুট হতে ৩০-৩৩ ফুট পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড হতে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজও শেষের পথে। এসড়ক নির্মাণ হলে চট্টগ্রাম শহরের যানযট অনেকাংশে নিরসন হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের শহরের প্রবেশ মুখেও অসহনীয় যানজট থেকে চট্টগ্রামবাসী মুক্তি পাবে। চট্টগ্রাম শহরের মানুষের প্রধান দু:খ জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানি। বিষয়টি নিয়ে সরকার সর্বদা সচেষ্ট। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন,খাল সম্প্রসারণ ও সংস্কার নিয়ে এরই মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পটির কাজ দ্রুত এগুচ্ছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের আওতায় ৩৬ টি খাল হতে কাঁদা ও মাটি অপসারণ করা হয়েছে। ৩৬ টি খাল উদ্ধারের জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চলছে। ৩ হাজারেরও বেশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ২৮ টি খালের পাড়ে ৩৫ কি.মি. রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। সিডিএ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় চলমান এই প্রকল্পের কাজ করেনাকালেও বন্ধ হয়নি। তিনি চট্টগ্রামের কর্ণফূলী নদী রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানান দিয়ে বলেন, এই কর্ণফুলীর ৮০ কি.মি. স্থান জুড়ে অন্তত ৩ শটি কারখানা কিংবা শিল্প স্থাপনা রয়েছে। এসব কারখানা এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যাতে কারখানার বর্জ্য নদীতে চলে আসার আশংকা রয়েছে। পেপার মিল, তেল শোধনাগার, পাওয়ার প্লান্ট, ট্যানারী, সার প্রস্তুত কারক, সাবান এবং সিমেন্ট তৈরীর কারখানা এগুলোর মধ্যে অন্যতম। এসব কারখানার তরল বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি)আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে। থাকলেও এগুলোর ব্যবহার হচ্ছে কিনা তাও যাচাই বাছাই করা হবে। কর্ণফূলী রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে এই নগরীর মাস্টারপ্ল্যান করা হবে। তিনি আরো জানান সরকার প্রুতিশ্রুতি অনুযায়ী চট্টগ্রামের ৪১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় সবকটিতে ওয়াসার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করছে। দৈনিক ৪২ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা এখন ৩৭ কোটি লিটার পানি সরবরাহ দিচ্ছে। চট্টগ্রামে আবাসিক গ্রাহকরা ১ হাজার লিটার প্রতি পানির জন্য দাম দিচ্ছেন মাত্র ১২ টাকা ৪০ পয়সা, ঢাকায় যেটি ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা। নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও চট্টগ্রাম ওয়াসা চট্টগ্রামের ৪শ কি.মি. এলাকা নতুন সংযোগের আওতায় এনেছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা যে প্রকল্পগুলো বাস্তবাবায়ন চলছে এসব সম্পন্ন হলে পানি ও পয়:নিস্কাশনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম একটি আধুনিক নগরে পরিণত হবে। তিনি আরো জানান যে, শহরে প্রবেশ পথে কোন ডাম্পিং স্টেশন হবে না। চট্টগ্রামের ফয়’সলেক এলাকাকে অপরাধ মুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দেন। তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, কর্ণফূলী নদীর পাড় লিজ দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ কেন দিচ্ছেন আমি জানিনা। এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের স্বার্থে সরকারের বিরুদ্ধেও কথা বলতেন। তাঁর মধ্যে বেসিক দেশপ্রেম ছিল এবং এটা প্রধানমন্ত্রী উপলদ্ধি করতেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর পর চট্টগ্রামের স্বার্থ রক্ষায় এভাবে আর কেউ ভূমিকা রাখেনি। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, চট্টগ্রাম দৃষ্টি নন্দন শহর হবে। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সকল সুযোগ এই নগরীতে রয়েছে। আউটার রিং রোড, কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক করতে পারলে হাজার হাজার পাঁচ তারকা হোটেল হবে। এরজন্য রকেট সাইয়েন্সের দরকার হবে না। শুধু চট্টগ্রাম পর্যটন খাত দিয়ে পুরো দেশকে এগিয়ে নিবে। তবে অবকাঠামো যাতে আগামী দিনের দূর্ভাগ্য ডেকে না আনে সেব্যাপারে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক। তাই এত উন্নয়ন প্রকল্প ও টাকা দিয়েছেন। ভবিষ্যতে আরো দেবেন। যদি কাজে লাগাতে পারি। আগে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলতেন সিটি কর্পোরেশনকে আয়বর্ধক করতে হবে। তিনি করেও গিয়েছিলেন কিন্তু তা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। এখন সরকার সিটি কর্পোরেশনকে সহায়তা দিচ্ছে।
পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি বলেন, চট্টগ্রাম নিয়ে মন্ত্রণালয়ের যে সকল প্রকল্প রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের পথে। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতাও আছে। পর্যায়ক্রমে এই প্রতিন্ধকতা দূর করা হবে। তিনি বলেন, ওয়াসার বিদ্যমান প্রকল্পে সুয়ারেজ সিস্টেম যেন কর্ণফুলী নদী মুখী না হয়, তাহলে এই নদী দূষণ থেকে রক্ষা পাবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদ এমপি বলেন, চট্টগ্রামে যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হচ্ছে তা প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতারই বহি:প্রকাশ। এগুলো সমন্বয়ের মাধ্যমেই সম্পাদন করতে হবে। তা নাহলে এর সুফল থেকে নগরবাসী বঞ্চিত হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, চট্টগ্রাম প্রকৃতপক্ষেই একটি প্রাকৃতিক শহর। তবে এর নানান অবকাঠামোগত দূর্বলতা রয়েছে। রাস্তাঘাটগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৬ টনের হলেও ৬০ টনের বোঝা নিয়ে গাড়ী চলাচল করছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরমূখী সড়কগুলো একারণেই প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে। তাই আমার প্রশ্ন বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সাড়ে ৩শ কোটি টাকার বেশি তহবিল থেকে ১ শতাংশ হারে সিটি কর্পোরেশনকে দেবে না কেন? তাদের গৃহকর বাবদ পঞ্চবার্ষিকী কর পূন:মূল্যায়ন হলে সিটি কর্পোরেশনকে দেয় ট্যাক্সের পরিমাণ দাঁড়াতো প্রায় ১ শ ৬০ কোটি টাকা। কিন্তু দিচ্ছে মাত্র ৩৯ কোটি টাকা। আমি মনে করি এটা চট্টগ্রামবাসীকে বঞ্চিত করার আরেকটি অপপ্রয়াস। তিনি উল্লেখ করেন, একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী সহ ঢাকার চার পাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরীর নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনানুযায়ী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীকে সভাপতি করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক মনিরটরিং ও সমন্বয়ের জন্য সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি মাননীয় মন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে সিটি কর্পোরেশনের যে ম্যাচিং ফান্ড বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা থেকে যেন চসিককে অব্যাহতি দেয়া হয়।
সমন্বয় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়াসিকা আয়েশা খানম এমপি, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, পানি উন্নয়ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সিডিএ চেয়ারম্যান এম.জহিরুল আলম দোভাষ, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল শেখ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ আহমদ তানভীর, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক তাহেরা ফেরদৌস, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একে এম ফজলুল্লাহ,চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমূখ। চসিকের প্রকল্প উপস্থাপন করেন প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীর’ ব্রেইল সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৭ অক্টোবর) সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি এ মোড়ক উন্মোচন করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পরে দেশে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম সব জায়গা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। এ বই প্রকাশের পর সেই ইতিহাস বিকৃতির হাত থেকে কিছুটা হলেও আমরা রক্ষা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক তথ্য এখানে পাওয়া যায়। সারাবিশ্বে বইটি ইতিমধ্যে ১৪টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং আরও কয়েকটি ভাষায় অনুবাদের জন্য আমাদের কাছে অনুমতি চেয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে যারাই বইটা পড়েছে তাদের কাছেই এটি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের এই সময়ে তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের ছয় খন্ড ব্রেইল সংস্করণ প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।