॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নির্দেশনায় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের সমন্বয়ে ৮টি বিভাগীয় টিম গঠন করা হয়েছে।
আর এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের মধ্যে সদস্য হিসেবে রয়েছেন, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি।
শনিবার (৩ অক্টোবর) আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবনে এক বৈঠকের আলোচ্য সূচি নিয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব টিম অনুমোদনের তালিকা প্রকাশ করেন তিনি।
বিভাগ ভিত্তিক সাংগঠনিক সমস্যা সমূহ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিভাগীয় টিম তা সমাধান করবে। যার ফলে সাংগঠনিক কর্মকান্ডের গতিশীলতা আরো বৃদ্ধি পাবে। ৮টি বিভাগীয় টিমের মধ্যে রয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমে আরো যারা রয়েছেন, টিম সমন্বয়ক আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদ মাহবুব উল-আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।
টিমে অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি, নুরুল ইসলাম নাহিদ, অ্যাড. আব্দুল মতিন খসরু এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. মো. আবদুস সবুর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে কোন অপশক্তি দেশের বিদ্যমান শান্তি ও স্বস্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করলে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।
রোববার ৪ অক্টোবর সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
আগামী দুই মাসের মধ্যে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের মাঠে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি মাঠে থাকুক তা আমরাও চাই, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই জনগণ চায়। কিন্তু গণতন্ত্রের নামে কোন অপশক্তি দেশের বিদ্যমান শান্তি ও স্বস্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে।’
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে কোন ধরনের সন্ত্রাস সৃষ্টি, জণভোগান্তি এবং জণমালের ক্ষতি সরকার মেনে নিবে না।
বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের উপর মামলা- হামলার কল্পিত অভিযোগের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো এখনো অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসন্ন উপনির্বাচনে ভরাডুবির আশংকায় তারা এখন থেকেই হামলার মিথ্যা অভিযোগ করছে। এটা তাদের পুরানো অভ্যাস। ভোটারদের আস্থা অর্জনে তাদের কোন পুঁজি নেই, তাই বিএনপি মিথ্যাচারের ভেলায় চড়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, প্রার্থীরা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে চাইলেও বিএনপির হাইকমান্ডের অপরাজনৈতিক কৌশলের কারনে পার্থীরা ভোটের নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় একান্ত অনিচ্ছায়। নির্বাচন করা বিএনপির আসল লক্ষ্য নয়, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার স্বোচ্চার, অনিয়ম উদঘাটন করে সরকার স্বপ্রণোদিত হয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, কারো চাপে পড়ে নয়।
বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবীদের মতে তারা এখন কোমর ভাঙ্গা রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের হাত দিয়ে এদেশে দুর্নীতি বটবৃক্ষে রুপ নিয়েছিলো তারা দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন করবে, একথা শুনলে জণগণের হাসি পায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন ও কমিটি গঠনের সময় এলে বিএনপি নেতারা বাণিজ্য করছে বলে তাদের কর্মীদের প্রকাশ্যে অভিযোগ আছে। তাই তারা নাকি অনিয়ম দূর করার আন্দোলন করবে? জণগণ তা বিশ্বাস করে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জমা পড়া সকল কমিটি যাচাই বাছাই করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিয়ে কমিটি করতে হবে।
দুর্যোগ দুর্বিপাকে একমাত্র আওয়ামী লীগই জণগণের পাশে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, একদিকে করোনা মহামারী আর অপরদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সফলতার সাথে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। সরকার প্রমাণ করেছে দুর্যোগ প্রতিরোধ করা না গেলেও শেখ হাসিনার দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা যেতে পারে।
এসময় ধানমন্ডিস্থ অফিসে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
পরে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মাঝে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ করেন নেতৃবৃন্দ।
মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ড্রামা নতুন করে প্রকাশ্যে আসছে। ড. মাহাথির মোহাম্মদ ক্ষমতা হারানোর পর অনেকেই মনে করেছিলেন স্থিতিশীলতা আসবে রাজনৈতিক অঙ্গনে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে খেলা শেষ হয় নি। অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে। মাহাথির মোহাম্মদের পাকাতান হারাপান (পিএইচ) সরকারেরর পতনের পর দেশবাসীর দৃষ্টি পড়েছে করোনা মহামারি মোকাবিলায়। কিন্তু সেখান থেকে নতুন করে আবার শুরু হচ্ছে। সোমবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন নেতৃত্বাধীন পেরিকাতান ন্যাশনাল (পিএন) সরকারের অধীনে প্রথম একদিনের পার্লামেন্ট অধিবেশন বসছে। মার্চে অনানুষ্ঠানিকভাবে পিএন জোট ক্ষমতায় আসে।
জবাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ মে মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রথম তুরুপের তাসটি চেলে দেন। তাতে প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব করেন তিনি। তার এই আবেদন গ্রহণ করেন পার্লামেন্টের স্পিকার। কিন্তু দৃশ্যত রাজার উদ্বোধনী বক্তব্যের জন্য সীমিত আকারে একদিনের অধিবেশন বসছে সোমবার। তাই মাহাথিরের ওই প্রস্তাব দৃশ্যত আটকে দিয়েছে সরকার। পার্লামেন্ট অধিবেশন সীমিত করা হয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে। এ খবর দিয়েছে চ্যানেল নিউজ এশিয়া।
আবার কানকথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, নিজের দল পার্টি প্রিবুমি বারসাতু মালয়েশিয়া (বারসাতু)-এর চেয়ারম্যান ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং দলের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট মাহাথির মোহাম্মদের ছেলে মুখরিজ মাহাথিরকে বহিষ্কার করতে পারে দল। তবে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ কোনো মাধ্যম থেকে কিছু নিশ্চিত হওয়া যায় নি। নতুন করে ক্ষমতার লড়াই যখন আবার শুরু হয়েছে তখন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কিছু রাজনৈতিক হেভিওয়েট ব্যক্তি। তারা হলেন, ড. মাহাথির মোহাম্মদ, মুহিদ্দিন ইয়াসিন, পার্টি কেদিলান রাকায়েতের (পিকেআর) আনোয়ার ইব্রাহিম ও ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) আহমদ জাহিদ হামিদি। বলা হচ্ছে তারা ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা ভাইরাস মহামারিতে চমৎকার পারফরমেন্স করেছেন প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন। তা সত্ত্বেও তাকে প্রমাণ করতে হবে যে, পার্লামেন্টে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। যদি না পারেন তাহলে নির্বাচন ছাড়া ‘পিছনের দরজা দিয়ে এসে সরকার গঠনের’ জন্য তিনি বড় রকম হোঁচট খেতে পারেন।
অন্যদিকে ড. মাহাথির মোহাম্মদ তার ক্ষমতায় থাকাকালীন সুবিধাগুলো হারিয়েছেন। এর ফলে তিনি পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে। আর এর মধ্য দিয়ে পিএইচের প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। বর্তমান যে পরিস্থিতি তা আনোয়ার ইব্রাহিমের জন্য অনুজ¦ল। তিনি বার বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কাছাকাছি যেয়েও পারেন নি। এখন দেখার বিষয় বারসাতু দলের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় প্রশাসনে খুব সামান্য ভূমিকা নিয়ে সমর্থন দিতে এগিয়ে আসে কিনা ইউএমএনও। এ অবস্থায় ইউএমএনও দলের পার্লামেন্ট সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী নুর জাজলান মোহাম্মদ বলেছেন, অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তার উত্তম সমাধান হলো একটি যথাযথ জাতীয় নির্বাচন। ঠিক ্এই মুহূর্তে সোমবার মহামান্য রাজার ভাষণের ওপর যথাযথ বিতর্ক হওয়া উচিত নয়। কারণ, উদ্বেগ রয়েছে যে, ওই ভাষণ পার্লামেন্ট অনুমোদন নাও করতে পারে। ওই ভাষণ হলো ২০২০ সালের জন্য সরকারের মৌলিক এজেন্ডা। সমস্যাটা আরো জটিল হবে আরো পরে, যখন ২০২১ সালের বাজেট আসবে। যদি বাজেট পাস করাতে ব্যর্থ হয় সরকার, তাহলে তার অর্থ হবে তারা আস্থা ভোটে হেরে গেছে। তাই কঠোর লড়াইয়ের মাধ্যমে একটি যথাযথ নির্বাচন হতে পারে উত্তম সমাধান।
ওদিকে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া সাবাহ-এর ড. লি কুওক তিউং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ২৫০০০ কোটি রিঙ্গিতের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এ ঘোষণায় ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। এখন পর্যন্ত তার প্রশাসন গ্রহণযোগ্য। তাদের ক্ষমতার মেয়াদ মাত্র অল্প কয়েকদিনের। এ অবস্থায় সোমবারের পার্লামেন্ট অধিবেশনে বিরোধী পক্ষকে আগামী জুলাইয়ের অধিবেশনের ফাঁদে ফেলতে পারেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন।
তবে ইউনিভার্সিটি সেইন্স মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর ড. আহমেদ ফাউজি আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন সেই ধারণাটাকে অতিক্রম করতে হবে তাকে। ফেব্রুয়ারিতে পিএইচ সরকার থেকে বারসাতুকে বের করে আনায় নেতৃত্ব দেন মুহিদ্দিন। তিনিই সাবেক ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে হাত মেলান ক্ষমতা দখলের জন্য। ড. ফাউজি বলেন, একদিক থেকে দেখলে, এই সরকার ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে নি। আইনগতভাবে তার পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষে এমপিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখানো উচিত। তার উচিত পার্লামেন্টের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে জবাবদিহি করা। ড. ফাউজি আরো বলেন, মুহিদ্দিন ইয়াসিন নেতৃত্বাধীন সরকার পার্লামেন্ট অধিবেশনের মেয়াদ সীমিত করে একদিনে আনার মধ্য দিয়ে তাদের বৈধতার প্রশ্নকে আরো জটিল করে তুলছে। ড. ফাউজির ভাষায়, আমরা আধুনিক সময়ে এবং বহু গণতন্ত্রের মধ্যে বসবাস করছি। সর্বশেষ বৃটেন যখন অনলাইনে পার্লামেন্ট অধিবেশন করতে পারে তাহলে আমাদের সমস্যা কোথায়? আমাদের এখানে কেন ওই পথে স্বচ্ছতা দেখানো হবে না?
রাজনৈতিক ভাষ্যকার ওহ ই সান বলেন, অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করতে মুহিদ্দিন রাজনীতির অন্য পাশ থেকে এমিপদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। তাদেরকে দলছুটে প্রলুব্ধ করতে পারেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জোনিং এর মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণ করুন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সহ বিভিন্ন দেশে যেখানে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাকে “রেড জোন” কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাকে “গ্রীণ জোন” হিসেবে চিহ্নিত করে লকডাউন সম্পূর্ণ কড়াকড়ি কিংবা শিতিলযোগ্য হিসেবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেখানে আমরা এখনও জোন ভাগ না করে সর্বক্ষেত্রে লকডাউন শীতল করে পুরো দেশের জনগণকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছি। জোনিং ভাগ করলে হয়তো সমস্ত দেশের মানুষকে ত্রাণের আওতায় না এনে, ঝুকিঁপূর্ণ ‘রেড জোনের’ সর্বসাধারণকে ত্রাণের আওতায় এনে কম বাজেটের মধ্যে সুফল পাওয়া যেত। সর্বসাধারণকে আধার কার্ডের মাধ্যমে ১০০০ টাকা প্রণোদনা দেয়া যেতে পারত।
তিনি আজ ৯ মে, শনিবার দুপুরে নিজ বাস ভবনস্থ বাদশা মিয়া রোডে ২৫নং রামপুরা ওয়ার্ড ও ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের অসহায় দরিদ্রদের জন্য ৫শতাদিক পরিবারের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কালে এবং বিভিন্ন পেশার অসহায় দুঃস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কালে একথা বলেন। ডা. শাহাদাত আরো বলেন, দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। তাই এই মুহূর্তে সবাইকে ঘর থেকে বাহির না হয়ে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সহ-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান লিটন, হালিশহর থানা বিএনপির সভাপতি মোশাররফ হোসেন ডেপ্টি, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, নগর বিএনপির সদস্য হাজী মহসিন, ২৫নং রামপুরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, বিএনপি নেতা আব্দুল গফুর বাবুল, মোহাম্মদ শফিক প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন এর পক্ষ থেকে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ম্যাক্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও করোনা সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
॥ জুরাছড়ি প্রতিনিধি ॥ দুর্বৃত্তের গুলিতে রাঙ্গামাটি জুরাছড়ি বনযোগীছড়ায় হেমন্ত চাকমা নামে এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নিহত হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে তার আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াতে গেলে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুরাছড়ি যক্ষ্মা বাজার আর্মি ক্যাম্পের কিছু দুরে হেমন্ত কুমার চাকমার আত্মীয়ের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ খেতে যায়। রাত ১১ টার দিকে তারা কয়েজন বসে গল্প করার সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় আশ পাশে থাকা লোকজন ছুটাছুটি করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে আত্মীয় স্বজন তাকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে জুরাছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটানাস্থলে দিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তিনি কিছুই জানাতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানায়, ইউপি সদস্য হেমন্ত চাকমা পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস্্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর সক্রিয় সদস্য ছিলো। দীর্ঘদিন আগে সে ইউপিডিএফ থেকে পদত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে এবং ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। স্থানীয়রা আরো জানায়, বর্তমানে জুরাছড়ি উপজেলায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সন্তু গ্রুপের একক আধিপত্য বিরাজ করছে। দীর্ঘ বছর ধরে আঞ্চলিক আর কোন সংগঠন জুরাছড়ি উপজেলায় অবস্থান করতে পারেনি।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ের চিৎমরমে যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব যখন বৈশ্বিক মহামারি করোনা নিয়ে আতংকিত মানুষে মানুষে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলছে সেখানে পার্বত্য অঞ্চলের অবৈধ অস্ত্রধারীরা আবার মাথা চারা দিয়ে উঠেছে। তারা পার্বত্য অঞ্চলে নিরহ জনগনের উপর অবৈধ অস্ত্র প্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, দেশ মার্তৃকার কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী করোনা নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে পূর্বে যেমন অভিযান পরিচালনা করে সন্ত্রসাীদের দম করেছে বর্তমানেও তা অব্যাহৃত রাখার আহ্বান জানান। তিনি পাহাড়ের সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বরেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পাহাড়ের প্রতিটি মানুষ যেমন এগিয়ে এসেছে তেমনি অবৈধ অস্ত্রদারীদের বিরুদ্ধেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ের চিৎমরমে হেডম্যান পাড়ায় উসুইপ্রু মারমা ওরফে আচেসে (৩০) নামের এক যুবলীগের নেতাকে ঘর থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। নিহত যুবলীগ নেতা ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ওই এলাকার জিংহ্লা মারমার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাতে একদল মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী উসুইপ্রু এর বাড়িতে প্রবেশ করে ঘর থেকে ডেকে এনে গুলি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে। এরপর ঘটনা চারদিক জানাজানি হলে ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
দর্পণ ডেস্ক :: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে মুক্তি দিয়েছেন । এখন বিএনপির কাছে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন তিনি । বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সমসমায়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন সড়িক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। খালেদা জিয?া কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা যে কোনো সময় হবে। আনুষ্ঠানিকতা আছে তা সম্পন্ন হলেই তার মুক্তি পেতে কোনো সমস্যা নেই। সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিজেই মুক্তি দিয়েছেন। কাজেই এ ব্যাপারে তো গড়িমসির কোনো কারণ নেই। এখন আনুষ্ঠানিকতার কিছু বিষয় আছে। ফর্মালিটিজ কমপ্লিট হলে তিনি মুক্তি পাবেন।” দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দন্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার এই ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বিএনপি নেত্রীর মুক্তির অপেক্ষায় আছেন দলটির নেতাকর্মীরা। সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিকাল ৪টার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা মামলায় দন্ডিত হয়ে কারাগারে ঢোকার পর এই প্রথম মুক্তি পেলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন,“বেগম জিয?ার সাজা স্থগিতের উদ্যোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের পরিচয় দিয়ে উদার নৈতিক মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আশা করি, বিএনপি এ বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আমাদের সকলের অভিন্ন শত্ত করোনা মোকাবেলায় সরকারের সর্বাত্মক ও সম্মিলিত উদ্যোগে সহযোগিতা করবে।” বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বৈশ্বিক ও দেশের ভয?াবহ এ সংকটকালে সকল নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে মানুষকে বাঁচানোর অভিন্ন পথ বেছে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। “ ওবায়দুল কাদের বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার বয়স ও অসুস্থতার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সিআরপিসির ৪০১ (১) ধারাবলে তার সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। “ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৪০১ এর উপধারা-১ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কোন অপরাধের জন্য দন্ডিত হইলে সরকার যে কোনো সময় বিনা শর্তে বা দন্ডিত যাহা মানিয়া নেয় সেই রূপ শর্তে যে দন্ডে সে দন্ডিত হইয়াছে , সে দন্ডের কার্যকরীকরণ স্থগিত রাখিতে বা সম্পূর্ণ দন্ড বা দন্ডের অংশবিশেষ মওকুফ করিতে পারিবে।“
দুর্নীতির দায়ে ২৫ মাস সাজা ভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তার দন্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বুধবার বিকালে ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়।
এরপর প্রয়োজনীয় অনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানান।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদাকে তার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ নিয়ে যেতে আগেই হাসপাতালের বাইরে এনে রাখা হয় তার নিশান প্রেটোল গাড়ি। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঁচটি গাড়ি ও মাইক্রোবাসও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দেখা যায়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং খালেদা জিয়ার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। কেবিন ব্লকে খালেদার মুক্তির অনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন একটি হুইলচেয়ার নিয়ে যাওয়া হয় ছয় তলার ৬২১ নম্বর কক্ষে।
কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ও জমায়েত না করার বিষয়ে বারবার হুঁশিয়ারির পরও বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করলে পরিস্থিতি কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ে। পুলিশ ও বিএনপি মহাসচিবকে হ্যান্ডমাইকে বারবার নেতাকর্মীদের হাসপাতাল চত্বর থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানানো হয়।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদন্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া। প্রথমে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলেও গত বছর ১ এপ্রিল থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
খালেদার জামিনের জন্য আইনজীবীরা গত দুই বছরে বহুবার আদালতে গেলেও জামিন মঞ্জুর হচ্ছিল না। এই প্রেক্ষাপটে মার্চের শুরুতে তার সাময়িক মুক্তি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার খবর আসে।
তার তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সরকার নির্বাহী আদেশে দন্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শর্ত হল- এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার শুধু বলেন, “খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় মানবিক কারণে সরকার সদয় হয়ে দন্ডাদেশ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
আইন মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবারেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায়। এরপর বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নথি যায় গণভবনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজেও সকালে গণভবনে যান।
সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর বুধবার নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসে। মন্ত্রণালয় তখন খালেদার মুক্তির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে কারাগারে পাঠায়। এরপর খালেদা জিয়ার মুক্তির কাগজ নিয়ে একজন কারা কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছান।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তির সিদ্ধান্ত হলেও বুধবারের আগে তার বন্দিত্বের অবসান ঘটছে না।
আইন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত নথি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা যাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
সেখানে চূড়ান্ত অনুমোদনের পর তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাবে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে, তারপরই বিএসএমএমইউ থেকে মুক্তি মিলবে বিএনপি চেয়ারপারসনের।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে জানান, খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় মানবিক কারণে সরকার ‘সদয় হয়ে’ দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত রেখে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শর্ত হল- এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
বিকালে ঢাকার জেলার মাহবুবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা এখনও কোনো নির্দেশনা পাননি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু বিকালে বলেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তি সংক্রান্ত নির্দেশনা তারা পেয়েছেন।
“স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন আইন দেখে একটি সামারি তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সে সামারি অনুমোদন হয়ে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফিরে আসবে।”
মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান সন্ধ্যায় বলেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো কাগজ পাওয়ার পর আমরা তা ঠিক করে রেখেছি। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার স্বাক্ষর করার পর সেই কাগজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।”
কখন পাঠানো হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা তো আমি বলতে পারব না, আগে তো মন্ত্রী স্যারের স্বাক্ষর লাগবে।” কত সময় লাগতে পারে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “যা প্রক্রিয়া রয়েছে তা শেষ করতে বুধবার পর্যন্ত লাগবে। এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির খবরে বিকালে বিএসএমএমইউতে জড়ো হয়েছিলেন বিএনপির একদল নেতা। তবে তারাও জানেন না, কখন মুক্তি পাবেন তাদের নেত্রী।
বিএনপি নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশ কর্তৃপক্ষ, জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা এখনও এ বিষয়ে জানি না।”
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাজনীতি করতে হবে দলের জন্য। নিজের জন্য রাজনীতি করার চিন্তা থাকলে তারা কখনো সফলতা অর্জন করতে পারে না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে একই ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচন করলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করলে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ৮ মার্চ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্থানীয় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সিডিএ চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম দোভাষ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, কোন ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকতে পারবেন না। যারা বর্তমানে প্রার্থীতা বজায় রাখছেন, তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে দল থেকে বহিস্কার করার হুশিয়ারি দেন এ প্রবীণ রাজনীতিবিদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ আছেন–এটা প্রমাণ করে দিবেন আগামী ২৯ তারিখ সিটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করার মত দল চট্টগ্রামে নেই। তিনি বলেন, নির্বাচনে জিতে যাব একথা বলা যাবে না। মনে রাখতে হবে প্রতিপক্ষও সবল। প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী মনে করে নির্বাচনের প্রস্ততি নিতে হবে। ইভিএম এর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইভিএম এর ভোট স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ। এতে এক জনের ভোট অন্যজন দিতে পারে না। কাউন্সিলরদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে মেয়রের জন্য পরে নিজের জন্য ভোট চাইতে হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেন, ৭ মার্চ জাতির জনক স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপি বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে পারেনি। তারা ক্ষমতায় থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ছাড়া দেশের জন্য কিছুই করেনি।