॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, ‘কোনো প্রকল্পের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না।’
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় প্রকল্প প্রণয়নের সময় দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে হবে। একই জায়গার একাধিক সংস্থা যেন প্রকল্প না নেয় তা নিশ্চিত করতে সমন্বয় করতে হবে। বাস্তবায়িত প্রকল্প থেকে জনগণ যেন দীর্ঘমেয়াদী উপকার পায় সেটা বিবেচনা করে প্রকল্প নিতে হবে।
পার্বত্য মন্ত্রী আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রকল্প প্রণয়নের সময় কৃষিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যাতে পার্বত্য এলাকার চাষযোগ্য কোনো কৃষিজমি অনাবাদী না থাকে। পার্বত্য এলাকার কৃষকদের উন্নত জাতের ফল ও উচ্চমূল্যের বিভিন্ন মশলা উৎপাদনের আগ্রহ রয়েছে, কিন্তু তাদের সেই সামর্থ্য নাই। এসব কৃষকদের কথা বিবেচনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের মিশ্র ফল চাষ ও উচ্চমূল্যের মশলা চাষের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের কথা মনে করিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোনো প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে না। প্রকল্পের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে হবে। ভালো কাজের জন্য পুরস্কার দেয়া হবে, তেমনি কাজ খারাপ করলে তিরস্কার ও শাস্তি দেয়া হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদকে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সফিকুল আহম্মদের সভাপতিত্বে সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুপ্রু চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ দফতর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যেই দেশে আসছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। এখন চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে সংক্রমণের হার ও জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় সারাদেশের কোন কোন জেলায় কত সংখ্যক ভ্যাকসিন যাবে তাও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে প্রথম ধাপে পার্বত্য তিন জেলায় মোট টিকা পাবেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪৩১ জন। এর মধ্যে খাগড়াছড়িতে ৬৩ হাজার ৯৩০ জন, রাঙ্গামাটিতে ৬২ হাজার ৬২ জন এবং বান্দরবানে টিকা পাবেন ৪০ হাজার ৪৩৯ জন। আর এর মধ্যে সবচেয়ে কম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বান্দরবান জেলায়। জেলাটিতে ৪০ হাজার ৪৩৯ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। অপরদিকে কক্সবাজারে প্রথম ধাপে টিকা পাবেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৬৪ জেলাতেই প্রথম ধাপে পর্যায়ক্রমে টিকা দেয়া হবে। তবে ঢাকা জেলার জন্য রাখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ। এখানে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ ডোজ দেওয়া হবে। জনসংখ্যার ঘনত্ব, সংক্রমণের হার প্রভৃতি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়া হবে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে। আগে ২৫ লাখের কথা বলা হলেও এখন ৫০ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে টিকা দেয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনা বিভাগে দেয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে, সিলেট বিভাগে দেয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার জনকে এবং বরিশাল বিভাগে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে টিকা দেয়া হবে। তিন রাউন্ডে এ জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।
দেশের ২৯ শতাংশ মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪০ ভাগ মানুষের টিকা নিশ্চিত করতে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা করা হবে। যারা টিকা নেবেন, তাদের প্রত্যেককে সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে।
যেসব জায়গায় টিকা দেয়া হবে: উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। এসব জায়গায় প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দিতে সাত হাজার ৩৪৪টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলে দুজন সরাসরি ভ্যাকসিন দেবেন এবং বাকি চারজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অন্যান্য কাজ করবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হবে ২৬ জানুয়ারি। টিকা আসার পর দুদিন তা বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে থাকবে। টঙ্গিতে বেক্সিমকোর দুটি ওয়্যারহাউজ রয়েছে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকা পাঠিয়ে দেয়া হবে। প্রথমে যে ৫০ লাখ টিকা আসবে তার পুরোটাই দিয়ে দেয়া হবে। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় চালান আসলে সেই ৫০ লাখ ডোজও পুরো দিয়ে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুসারে প্রথম ধাপে প্রত্যেক মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা। এ মাসেই যার প্রথম চালান আসছে।
॥ ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ॥ রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে সার্কেল পুলিশের ব্যারাকে অগ্নিকান্ডে দুইটি ঘর পুড়েছে। সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত ৮ টায় বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। পরে ব্যারাকের গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হওয়ায় আগুনের লেলিহানশিখা ছড়িয়ে তিনটি ঘর ভষ্মিভূত হয়।
অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে আধা ঘন্টা যৌথভাবে চেষ্টা চালিয়ে ‘কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’ ও ‘বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর কাপ্তাই শহীদ মোয়াজ্জেম ঘাঁটির ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ‘ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউসার এবং কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল আনসারি জানান, বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত্র হতে পারে। তবে কোন পুলিশ সদস্য আহত হন নাই।
রাঙ্গামাটি পৌর নির্বাচনে এবারও হচ্ছে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হে হচ্ছে প্রার্থী আকবর না হাবিব ?
॥ নন্দন দেবনাথ ॥ রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র প্রার্থী নিয়ে এখনো ঝুলে আছে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্ত। কে পাচ্ছে মনোনয়ন বর্তমান মেয়র আকবর না প্রাক্তন মেয়র হাবিব। এই নিয়ে রাঙ্গামাটি পৌরসভার সাধারণ মানুষের মাঝে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে। এই দুই জনকে নিয়ে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপ বিভক্ত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেক নেতাকর্মী। রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে এই দুই জনকে নিয়ে চলছে চরম উত্তেজনা। একটি পক্ষ বলছে হাবিব হবে এবারের মেয়র প্রার্থী আরেক পক্ষ বলছে আকবর হবে মেয়র প্রার্থী। তবে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ২ জনের নাম লিখে কেন্দ্রে নাম পাঠিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কেন্দ্র থেকে আওয়ামীলীগের পক্ষে মনোনয়ন পেতে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আরো বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে রাঙ্গামাটি পৌর আওয়ামীগের সভাপতি মোঃ সোলায়মান বাদশা, রাঙ্গামাটি পৌর আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ মঈন উদ্দিন সেলিম, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের বড় ভাই বিশিষ্ট তেল ব্যবসায়ী মোঃ মনিরুজ্জামান মহসিন রানা সহ আরো বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।
এদিকে রাঙ্গামাটি পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে কোন ধরনের ভুল সিদ্ধান্ত আসলে রাঙ্গামাটি পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আসতে পারে এমনটাই মনে করছেন সাধারণ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের একটি সুত্র জানায় রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর সাথে রাঙ্গামাটি আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধের কারণে প্রাক্তন মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিবকেই বেছে নিতে চাচ্ছে আওয়ামীলীগের একাংশ। তবে দলের আরেকটি অংশ বলছে বর্তমান মেয়রের উপর জনগনের আস্থা রয়েছে। দলের অল্প কিছু নেতাকর্মীর কারণেই রাঙ্গামাটি পৌর নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে।
২০১৫ সালে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীগের সিদ্ধান্তে আকবর হোসেন চৌধুরী মেয়র প্রার্থী হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে রাঙ্গামাটিতে দুই জন আওয়ামীলীগের প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। তার মধ্যে একজন সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়র প্রার্থী মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব ও সনাতন সম্প্রদায়ের পক্ষ অমর কুমার দে। সেই সুবাদে রাঙ্গামাটি জেলায় আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবের অফিস ভাংচুর সহ হাবিবকে নির্বাচনী প্রচারণা ব্যাপক বাধা প্রদান করেন। পরবর্তীতে দলের নেতাকর্মীদের চাপের মুখে শেষ মুহুর্তে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের প্রার্থী আকবর হোসেনকে সমর্থন দিতে বাধ্য হয় হাবিবুর রহামন হাবিব। রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় মোঃ আকবর হোসেনকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ায়। তারপর ও তিনি বেশ কিছু ভোট পায় নির্বাচনে। অপরদেিক অমর কুমার দে’কেও নেতাকর্মীদের চাপের মুখে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আকবর হোসেনকে সমর্থন দিয়ে বসিয়ে দেয় আওয়ামীলীগের সিনিয়ররা।
অন্যান্য দিকে আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন আওয়ামীলীগের কোন ধরনের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ আবারো হারাতে পারে এই সিট। যা ২০১১ সালে পৌর নির্বাচনে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির সাইফুল ইসলাম ভ’ট্টো মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। যার কারণে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদারকে নানা মুখী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় বলে জানান তারা।
এদিকে রাঙ্গামাটি পৌর নির্বাচনের দামাডোল বেজে না উঠলেও রাঙ্গামাটির জেলা বিএনপি ও আঞ্চলিক রাজনৈতক দল জেএসএস বসে আছে আওয়ামীলীগ কাকে প্রার্থী দিচ্ছে সেই দিকে তাকিয়ে। আওয়ামীলীগের প্রার্থীর উপর নির্ভর করে রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপি ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএস প্রার্থী ঘোষণা করবে এমনটাই ভাবছেন তারা।
২০১৫ সালে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মোঃ আকবর হোসেনের বড় জয়ের ন্যেপথ্যে ছিলো আওয়ামীলীগের ঐক্যবদ্ধতা। রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চষে বেড়িয়েছেন। ভোট চেয়েছেন আওওয়ামীলীগের প্রার্থী নৌকার প্রতীকের জন্য। রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা একক ভাবে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের মন জয় করার কারণে বিশাল ব্যবধানে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আকবর হোসেনকে জয় লাভ করাতে পেরেছে।
আওয়ামীলীগের প্রার্থী জয়ের পর থেকে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্কের টানা পোড়ান রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলকে ঘিরে আরো বেড়ে যায়। দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীদের মাঝে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের মাঝে। অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন গুলোর মাঝে দ্বিধাবিভক্ত না থাকলেও কিছু কিছু মতপাথর্কের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সংগঠন গুলোর মাঝে এমনটাই মনে করছে আওয়ামীলীগের তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
তবে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্তের উপর তাকিয়ে আছে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তেমনি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপিও রাঙ্গামাটি আওয়ামীলীগের প্রার্থী ঘোষণার দিকে তাকিয়ে আছে র্তীর্থের কারকে মতো। দল যে দিকেই সিদ্ধান্ত নেক না কেন গতবারের মতো এবারও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকছে এবারের নির্বাচনে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে অংশীজন ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ জানুয়ারী) দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি, চট্টগ্রাম এর আয়োজনে ও জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিস, রাঙ্গামাটি এর সহযোগিতায় এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়ক কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ১০টি উদ্যোগ সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক তথ্য অফিস।
এসময় আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রাম এর উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মামুর (শিক্ষা ও আইসিটি)।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিল্পী রানী রায়, রাঙ্গামাটি ডেপুটি সিভিল সার্জন নিতিশ চাকমা, জেলা সমাজ সভা অফিসের উপ-পরিচালক ওমর ফারুক, শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোসনে আরা বেগম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা কৃপাময় চাকমা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়কারী মিঠুন দুপ্ত, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ কে এম মুকছুদ আহম্মেদ, প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ আজিজুল হক নিউটনসহ রাঙ্গামাটির কর্মরত পিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক, শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ মামুন বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা যদি জনগণ না জানে এবং সচেতন ও সম্পৃক্ত না হয়, তাহলে তা লক্ষ্যমাত্র অর্জন করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততা, জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ, সচেতনকরণ করতে গণমাধ্যমের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যমের সচেতনতার মাত্রার উপর নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের সফলতা ও ব্যর্থতা।
সভায় তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যম পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে। সমাজের অন্য কোনো সেক্টর পরিবর্তন নিয়ে এতো কাজ করে না। মিডিয়াই হচ্ছে পরিবর্তনের ক্যাটারিস্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগকে প্রচারের জন্য অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার উপযোগী করে ফিচার তৈরি করা হবে বলেও তিনি জানান।
তথ্য অধিদফতর আরও গতিশীল করার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, তথ্য অধিদফতর ও কার্যালয়কে আরও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তোলা হবে। দ্রুতই এ কাজ করা হবে। এ সময় সাংবাদিকদের কাছ থেকে পিআইডির বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে আসার পর দ্রুত সমাধান করার আশ্বাসও দেন তিনি।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে মীর হোসেন আহসানুল কবীর বলেন, সরকারের পক্ষে থেকে ‘১০টি খাত চিহ্নিত করা হয়েছে, এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারা যাবে। সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিবেশ, বৈষম্য, নারীর ক্ষমতায়ন, জ্বালানি নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা। ১০টি বিশেষ উদ্যোগ দারিদ্র্যমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, পরিবেশবান্ধক, টেকসই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখবে।
সভায় বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে বড় ধরনের ভূমিকা রাখার যেমন সুযোগ আছে তেমনী অনুসন্ধানী কাজেরও সুযোগ আছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। এর থেকে বের হতে হলে সব মহলের সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।
বক্তারা আরো বলেন, তথ্য অধিকার আইনটির মাধ্যমে অর্জিত তথ্য সাংবাদিকের পেশাদারিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করবে। পাশাপাশি তাকে তথ্য-প্রমাণ দিয়েও সুরক্ষিত করবে। আর জনগণের হয়ে সাংবাকিরাই পারেন তথ্য অধিকার আইনের শক্তিশালী দিকগুলো ব্যবহার করে দূর্নীতি-অনিয়ম, অন্যায়-অবহেলা ও বঞ্চনার খবর তুলে আনতে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের কুতুকছড়িতে ইটের কংকর বোঝাই ট্রাক পারাপারের সময় বেইলি ব্রীজ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে গিয়ে ট্রাকের চালকসহ ঘটনাস্থলে ৩ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারী) সকাল ৭টার দিকে কুতুকছড়ি বাজার সংলগ্ন রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের বেইলি ব্রীজ নামক স্থানে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি অভ্যন্তরীন সড়কের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। নিহত তিন জনের মধ্যে ড্রাইভারের নাম জানা গেছে ড্রাইভার আরাফাত হোসেন, হেলফার জহিরুল ইসলাম, ও মোঃ বাচ্চু। নিহত আরাফাত হোসেনের চাচা ঘটনাস্থলে এসে তার পরিচয় নিশ্চত করেন। রাঙ্গামাটি কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা কবির হোসেন জানান, সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা চট্টমেট্টে-শ, ১১-৩৪ ৩৮ নাম্বারের ট্রাকটি মহালছড়ি কংক্রীট ভর্তি যাওয়ার পথে কুতুকছড়ি বেইলী ব্রীজ ভেঙ্গে ঘটনাস্থলেই চালকসহ তিন জন নিহত হয়। লাশ উদ্ধার শেষে ময়না তদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত ৩জনের মধ্যে ২জনের নাম এখনো জানা যায়নি।
ঘটনার পর পরই নানিয়ারচর সেনা জোন, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, যৌথ বাহিনী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টরা চালকসহ ৩ জনের মুত্যু নিশ্চিত করেছেন। তবে এখনো তাদের পরিচয় জানা যায়নি। বর্তমানে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাঙ্গামাটি কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা কবির হোসেন জানান, ইটের কংক্রিট বোঝাই ট্রাকটি নানিয়ারচর যাওয়ার সময় বেইলী ব্রীজ নামক স্থানে এই দুঘর্টনার কবলে পড়ে। তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তাৎক্ষনিক তাদের পরিচয় জানা যায়নি। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একে এম মামুনুর রশিদ, সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে আরিফিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল তাপশ রঞ্জন ঘোষ। কুতুকছড়ি বাজার ব্যবাসায়ী সমিতির সভাপতি বাবুল চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার ভোরে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক চট্টগ্রাম থেকে মহালছড়িকে দিকে যাচ্ছিল। গাড়ীটিতে অতিরিক্ত পাথর বোঝাই থাকার কারণে নড়বড়ে কুতুকছড়ি ইষ্ট্রিল ব্রীজ পার হওয়ার সময় বিটক শব্দে ভেঙ্গে পড়ে। ট্রাকটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। এই ঘটনায় ট্রাকে থাকা ৩ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১ জনকে উদ্ধার করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা একে ট্রাকের চালক ও হেলফারের লাশ উদ্ধার করে।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক রতন কুমার নাথ জানান আজ সকালে ৬.৪৫ এর দিকে কুতুবছড়ির বেইলি ব্রীজ ভেঙে পাথর ভোঝায় করা একটি ট্রাক নদীতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা রাঙ্গামাটি থেকে গিয়ে ঘন্টাব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে আমরা তিনজনের লাশ উদ্ধার করি। পরে লাশগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।
রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ আরেফিন জানান, পাথর বোঝাই ট্রাকটি ওভার লোডের কারণে ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষ করেছি। ব্রীজটির পাটান থুলে আবার নতুন করে বসাতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব আমরা যানবাহন চলাচলের জন্য চেষ্টা করবো।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ,কে,এম মামুনুর রশিদ তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া বলেন, পাথর বোঝাই ট্রাকটি ভোর বেলা উল্টে গিয়ে ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ে। ঘটনাস্থলে ৩ জন প্রাণ হারায়। এই ঘটনায় রাঙ্গামাটির সাথে খাগড়াছড়ির অভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেছি যত দ্রুত সম্ভব ব্রীজের কাজ করে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করতে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নবাগত চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সাথে পার্বত্য অন্যতম সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন “ওয়ার্ল্ড পীস্ এন্ড হিউম্যান রাইটস সোসাইটি”, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা নেতৃবৃন্দের ফুলেল শুভেচ্ছাভিনন্দ এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্টিত।
সৌজন্য সাক্ষাতে সোসাইটির পক্ষ থেকে ৯ জনের টিমে নেতৃত্বে ছিলেন, ওয়ার্ল্ড পীস্’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি শিক্ষক অরূপ মুৎসুদ্দী। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত সম্পাদক সুফিয়া কামাল ঝিমি, প্রচার সম্পাদক স্বরূপ মুৎসুদ্দী, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক দেবাশীষ পালিত রাজা, সম্পাদক অপ্রু মুৎসুদ্দী মনি, সমাজ কল্যান সম্পাদক অসীম চক্রবর্তী শংকু, সদস্য লোমা লুসাই, বাবু দাশ, হৃদয় দাশ ও মোহাম্মদ তসলিম উপস্থিত ছিলেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে রাঙ্গমাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নবাগত চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর অত্র জেলার বর্তমান অবস্থা এর উন্নয়ন, মানুষের অধিকার সুরক্ষা, সংরক্ষণ, আইনি সহায়তা, নিরাপত্তা নিশ্চিত ইত্যাদি বিষয় উঠে আসে। তিনি তার পক্ষ থেকে মানবাধিকার সুরক্ষা ও সংরক্ষণে কাজ করে যেতে “ওয়ার্ল্ড পীস্” কে সাধ্যমত সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন।
॥ ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ॥ সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত না করা এবং অপ্রতুল বরাদ্দে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উমেচিং মারমা।
বুধবার (৬ জানুয়ারী) সকাল ১১ টায় তিনি তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের এইসব অভিযোগ করেন। এইসময় তিনি বলেন, আমি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে কাপ্তাই উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন হতে বিপুল পরিমান ভোট পেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। স্বাভাবিক কারনে জনগণের কাছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে আমার যথেষ্ট দায়বদ্ধতা আছে। অথচ উপজেলা পরিষদের কোন উন্নয়ন কর্মকান্ডে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে সম্পৃক্ত করা হয় না এবং কোন সরকারি বিতরণ অনুষ্ঠানে আমাকে অবহিত করা হয় না, এমনকি চিঠি পর্যন্ত দেওয়া হয় না।
তিনি আরোও বলেন, বিশেষ করে মহিলা ভোটাররা আমাকে বেশী পরিমাণ ভোট প্রদান করেছেন, তাই মহিলারা তাঁর কাছে বেশী আসে, কিন্তু কোন বরাদ্দ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এর অনুকূলে না থাকায় আমি তাদের দিতে পারি না। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উমেচিং মারমা আরোও জানান, কাপ্তাই উপজেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে দেওয়া অনেক অসহায় পরিবারকে ঘর দেওয়া হচ্ছে, কিন্ত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে একটি ঘর ও দেওয়া হয় নাই। এই ছাড়া টি আর, কাবিখা, ভিজিডি, ভিজিএফসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের উপেক্ষা করা হচ্ছে, ফলে তিনি জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারছেন না। তিনি সরকারের নিকট প্রতিটি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদেরকে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান।
এদিকে এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক সাংবাদিকদের জানান, করোনার কারনে গত অর্থ বছরে অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড সরকার করতে পারে নাই, তবে যেটুকু অতি গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো করা হয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জানেন না, উপজেলা পরিষদের আইনে কি কি আছে। কোন খাত হতে কোন বরাদ্দ আছে, কার নামে বরাদ্দ আছে তিনি জানেন না।
উপজেলা চেয়ারম্যান মফিজুল হক আরোও জানান, এডিবি এবং জাইকার বরাদ্দ উপজেলা চেয়ারম্যান এর অনুকূলে আসে তিনি এই কমিটির সভাপতি এবং বাকি গুলোর ক্ষেত্রে তিনি উপদেষ্টা। উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড হতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে ৮ লাখ টাকা এবং তাঁর নিজের বরাদ্দ ২ লাখ টাকাসহ ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিটি সরকারি কর্মকান্ডে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান এর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমি যোগদানের পর হতে সরকারি প্রতিটি কর্মকান্ডে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে সম্পৃক্ত করেছি, চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেছি। উনি যদি না আসেন অফিস না করেন তাহলে জানবেন কি করে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট ট্রিজার স্কুলের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশনা না মেনে বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের। বুধবার সকালে স্কুলে প্রাঙ্গাণে এই অভিযোগ তুলেন অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে কয়েকজন অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, গত ১৮ নভেম্বর মধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছিল এম.পি.ও ভুক্ত ও এম,পি.ও বিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি গ্রহণ করবে কিন্তু এ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃ ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোন ফি গ্রহণ করনে না বা করা হলে তা ফেরত দেবে অথবা টিউশন ফি’র সঙ্গে সমন্বয় করবে। একই সঙ্গে কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন যেন কোন কারনে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে সকলকে যত্নশীল হতেও বলা হয়েছে।
কিন্তু সেন্ট ট্রিজার স্কুল কর্তৃপক্ষ সরকারি এই নির্দেশনা মানছে না বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
মো. জহির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যেখানে বিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সেখানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিল, টেলিফোন বিল, উন্নয়নের নামে আমাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা দাবি করছে। করোনায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি উল্টো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের উপর বাড়ড়ি টাকা চাপিয়ে দিচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।
মো. নাছের উদ্দিন বলেন বিষয়টি নিয়ে যখন বিদ্যালয় প্রধানের সাথে কথা বলি, তিনি আবেদন দিতে বলেন। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এবিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এবিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা জানান, সরকারি ও বে-সরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার নির্দেশনা দিয়েছেন যেখানে টিউশন ফি ছাড়া আর কোন ফি নেওয়া যাবে না। তিনি আরও জানান, সেন্ট ট্রিজার স্কুলটিতে বাড়তি ফি নেওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি আমরা দেখছি।
রাঙামাটির জেলা প্রশসক একেএম মামুনুর রশীদ বিষয়টি অবহিত হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাক মো. মামুন দ্রুত বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে ক্ষৃদ্র নৃ গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউটের মাধ্যমে কাজ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়না পাংখোয়া। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ১১ টি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের সংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য গুলোকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। তাদেরকে বিলুপ্ত হতে দেয়া যাবে না। তাদের সংস্কৃতি গুলোকে ধরে রাখতে স্ব স্ব গোষ্ঠীর বয়োবৃদ্ধদের মাধ্যমে আমাদেরকে কাজ করার উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউটের কর্মকর্তাদের এই উদ্যোগ গুলো নিতে কাজ করার আহবান জানান।
গতকাল ০৫ জানুয়ারী রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের তরুন উদীয়মান সদস্য রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউটের দায়িত্ব প্রাপ্ত আহবায়ক রেমলিয়না পাংখোয়া ইনিষ্টিটিউটের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি একথা বলেন।
এ সময় রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রনেল চাকমা, সাংস্কৃতিক পরিচালক, সংগীত পরিচালক সুরেশ ত্রিপুরা, কর্মকর্তা তৃষা ত্রিপুরা, নৃত্য পরিচালক সুফলা তঞ্চঙ্গ্যা সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক নৃ গোষ্ঠী রয়েছে যারা তাদের সংস্কৃতিক কী সেটা ভুলে গেছে। কিন্তু আমরা তাদের সংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যকে হারিয়ে যেতে দেবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পার্বত্য অঞ্চলের অহংকার দীপংকর তালুকদার পাহাড়ের মানুষের কল্যালে কাজ করার জন্য আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী গুলো যদি না থাকে তাহলে বাংলাদেশ কখনোই অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ হবে না। তাই হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিক গুলোকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের কাজ করতে হবে।
পরে তিনি রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী জাদুঘরের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।