আজ শনিবার সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলের বোলিংটা ভালো হয়নি।
তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ছিলেন উইকেট শুণ্য অন্যদিকে কাটার মাস্টার খ্যাত মুস্তাফিজুর রহমান করেছেন খরুচে বোলিং।
তাই ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে বোলিং কিছুটা ভাবাচ্ছেই বাংলাদেশ দলকে। তবে টাইগারদের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন বোলিং নিয়ে ভাবার কোনো কারণ নেই।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, “আমি মনে করি, আমাদের বোলিং ঠিক আছে। উইকেট খুব ভালো ছিল। আগে ব্যাটিং করলে ওই উইকেটে তিনশ রান পাওয়া খুবই সহজ।”
ডাম্বুলায় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই স্বাগতিকরা অল আউট হয়েছে টাইগারদের কাছে। প্রথম ম্যাচে ২৩৪ রান করে অল আউট হয়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হারের স্বাদ নেয় লঙ্কানরা।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেও শেষ ওভারে টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে আবারো অল আউট হয় উপুল থারাঙ্গার দল। এবার স্কোর বোর্ডে রান তোলে ৩১১।
টস নিয়ে ভাবছেন না মাশরাফি। আগে বল করলেও তিনশোর নিচে লঙ্কানদের বেঁধে রাখতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানরাও নিশ্চিন্তে ব্যাট করতে পারবেন।
এই প্রসঙ্গে মাশরাফি বলেন, “এটা ভালো উইকেট, শুনেছি ২৭০/২৮০ এখানে গড় স্কোর। আমি চাইবো যেন তিনশ রানের নিচে লক্ষ্য রাখতে পারি আমরা। তাহলে হয়তো ব্যাটসম্যানদের জন্য একটু সহজ হবে কাজটা।”
সিরিজ বাঁচাতে সিরিজের শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার। অন্যদিকে টাইগারদের হাতছানি দিচ্ছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় বলাই যাচ্ছে লড়াইটা হতে চলেছে সমানে সমানে।
শিগগিরই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোন সিরিজ হচ্ছে না জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় । বলে কারণ, হিসেবে বলা হয়েছে, এখনও দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ততোটা ভালো হয়নি, তাই কোন প্রকার ঝুঁকি নেবে না ভারত সরকার।২০১৪ সালের ফিউচার ট্যুর প্লান (এফটিপি) অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সাড়া দেয়নি ভারত। ২০১৫ সালে দুই দেশের মধ্যে সিরিজ হওয়ার কথা থাকলেও সীমান্তে দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে যাওয়ায়, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোন সিরিজ খেলা হবে না বলে জানিয়ে দেয়।
তবে সম্প্রতি বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) পক্ষ থেকে খেলোয়াড়দের সম্মতি নামাসহ একটি চিঠি দেওয়া হয় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর। সেখানে লেখা হয়, যেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকার বরাবর আবেদন করে যাতে, নিরপেক্ষ ভেন্যু দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার অনুমতি পাওয়া যায়।কিন্তু বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হংশরাজ আহির ভারতের সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘দুই প্রতিবেশী দেশের বর্তমান সম্পর্কের ভিত্তিতে তেমন কিছু (সিরিজ) এখনই সম্ভব নয়।’
বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে খেলতে অনুমতি চাইলেও, বিসিসিআইয়েরই একটি অংশ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা তো বলেই ফেলেছেন, ‘যদি বিসিসিআই এফটিপি অনুযায়ী চলতে থাকে, তাহলে একদিন আমাদের চোখ বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে আর আমরা বলবো, আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলাম।’বিসিসিআইয়ের পরিকল্পনা ছিল, যদি ভারত সরকার অনুমতি দেয় তবে সেপ্টেম্বরে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পরপরই দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি সিরিজ খেলবে। কিন্তু সেটি আর হচ্ছে না।সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
ইমার্জিং এশিয়া কাপে দুর্দান্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেই হংকংয়ের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে সহজ জয় পেয়েছে তারা।সকালে টস জিতে ব্যাট করতে নামে হংকং। বাংলাদেশের বোলিং তাণ্ডবে ৩৫ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয় তারা।পরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ২ উইকেট হারিয়ে ১৬ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মমিনুল-নাসিররা।
কলম্বো টেস্টে হারের ধাক্কা সামলানোর আগেই আরেকটি হারের তিক্ত স্বাদ পেল শ্রীলঙ্কা। উজ্জ্বীবিত বাংলাদেশের কাছে প্রথম ওয়ানডেতে হারল ৯০ রানে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এই প্রথম কোনো ম্যাচে লক্ষ্য তাড়া করে জিততে ব্যর্থ হল সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের চারটি জয়ই ছিল লক্ষ্য তাড়া করে।
রনগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ৩২৪ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৬ ওভার ১ বলে ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
তামিম ইকবালের অষ্টম শতক আর তার সঙ্গে সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসানের দুটি দারুণ জুটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ও শ্রীলঙ্কায় প্রথমবারের মতো তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। অর্ধশতক আসে সাকিব, সাব্বিরের ব্যাট থেকে। শেষটায় ঝড় তুলেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।
দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বিরের সঙ্গে ৯০ রানের জুটি গড়েন তামিম। বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান চতুর্থ উইকেটে ১৪৪ রানের জুটি উপহার দেন সাকিবের সঙ্গে।
ডাম্বুলায় তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ার কোনো নজির নেই। কাজটি করতে যে শুরু দরকার ছিল তার কাছাকাছিও যেতে পারেনি শ্রীলঙ্কা মাশরাফি ও অভিষিক্ত মেহেদী হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য। নতুন বলে তাদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ঘাম ঝরাতে হয় স্বাগতিকদের।
শ্রীলঙ্কা ইনিংসের তৃতীয় বলেই আঘাত হানেন মাশরাফি। তার দারুণ বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি দানুশকা গুনাথিলাকা।
রান আসছিল না, চাপ বাড়ছিল। উইকেটের পিছন থেকে বল ঝুলিয়ে দিতে বললেন মুশফিকুর রহিম। দিলেন মিরাজ, ফাঁদে পড়লেন কুসল মেন্ডিস। চমৎকার ক্যাচে তাকে ফেরালেন বদলি ফিল্ডার শুভাগত হোম চৌধুরী। তৃতীয় ওভারেই নিজের প্রথম ওয়ানডে উইকেট পেলেন মিরাজ।
ব্যক্তিগত ৬ রানে বেনিফিট অব ডাউট পেয়ে স্টাম্পিং থেকে বেঁচে যাওয়া উপুল থারাঙ্গা বেশি দূর যেতে পারেননি। আক্রমণে এসেই লঙ্কান অধিনায়ককে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সহজতম ক্যাচ নেন অধিনায়ক মাশরাফি।
১১ ওভারে ৩১ রানে নেই লঙ্কানদের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। ১৫ ওভার শেষে ওভার প্রতি স্বাগতিকদের প্রয়োজনীয়তা দাঁড়ায় ৮ করে। সেখান থেকে আর কখনও নামেনি, কেবল বেড়েছে, ম্যাচ আরও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে গেছে।
প্রথম চার ওভার শেষে মাশরাফির বোলিং ফিগার ছিল এমন ৪-২-৬-১। পুরো ম্যাচে মেডেন ওভার হয়েছে ওই দুটিই।
৫৬ রানের জুটিতে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েন দিনেশ চান্দিমাল ও আসেলা গুনারত্নে। প্রান্ত বদল করে খেলতে পারছিলেন কিন্তু সংগ্রাম করতে হচ্ছিল বাউন্ডারির জন্য। সেই বাউন্ডারির আশায় সাকিবকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মোসাদ্দেক হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় গুনারত্নের ইনিংস।
নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে চান্দিমালকে বিদায় করেন মিরাজ। সুইপ করতে গিয়ে পারেননি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। সহজ ক্যাচ দুই হাতে তালুবন্দি করেন সৌম্য সরকার।
পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা মুস্তাফিজুর রহমানের বলে অসংখ্যবার অল্পের জন্য ব্যাটের কানা নেয়নি। আচমকা তার স্লোয়ারে ছক্কা মেরে চমকে দেন মিলিন্দা সিরিবর্ধনে। পরের বলে তাকে ফিরিয়ে প্রতিশোধ নেন বাঁহাতি পেসার। প্রায় ২০ গজ দূরে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তালুবন্দি করেন শুভাগত।
মাশরাফির ওপর চড়াও হতে গিয়ে অফ কাটার বুঝতে পারেননি সচিথ পাথিরানা। সহজ ক্যাচ উঠে যায় কাভারে, মাহমুদউল্লাহর কাছে।
থিসারা পেরেরাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সুরঙ্গা লাকমল। মুস্তাফিজকে উড়ানোর চেষ্টায় ফিরেন সাব্বির রহমানকে সহজ ক্যাচ দিয়ে।
আগের দিন সেন্টার উইকেটে অনুশীলনে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন থিসারা। ম্যাচেও নিতে আসতে পারলেন সেগুলোকে। ২৭ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় আসে তার অর্ধশতক। আড়াই বছরের বেশি সময় পর ওয়ানডেতে পঞ্চাশ পেলেন এই মারকুটে অলরাউন্ডার।
মুস্তাফিজের সরাসরি থ্রোয়ে লাকশান সান্দাকান রান আউট হলে জয়ের আরও কাছে চলে আসে বাংলাদেশ।
৩৫ বলে ৫৫ রান করা থিসারাকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের থামিয়ে দেন মুস্তাফিজ। ৫৬ রান দিয়ে বাঁহাতি এই পেসার নেন ৩ উইকেট। মাশরাফি ও মিরাজের শিকার দুটি করে। সাকিব ও তাসকিন নেন একটি করে উইকেট।
ব্যাটসম্যানদের এনে দেওয়া পুঁজি ব্যর্থ হতে দেননি বোলাররা। ফিল্ডিংও এদিন ছিল দুর্দান্ত। তামিমের জায়গায় প্রায় পুরোটা সময় বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে থাকা শুভাগতও দেখিয়েছেন জয়ের জন্য দলের সব সদস্য কতটা মরিয়া। ম্যাচের আগের দিন মাশরাফি বলেছিলেন, ডাম্বুলার বাজে স্মৃতি ভুলতে চান ভালো খেলে। এবার হয়তো পারবেন তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩২৪/৫ (তামিম ১২৭, সৌম্য ১০, সাব্বির ৫৪, মুশফিক ১, সাকিব ৭২, মোসাদ্দেক ২৪*, মাহমুদউল্লাহ ১৩*; লাকমল ২/৪৫, কুমারা ১/৭৪, থিসারা ০/৬৩, পাথিরানা ০/২৭, সান্দাকান ১/৪৩, গুনারত্নে ১/৪০, গুনাথিলাকা ০/২২)
শ্রীলঙ্কা: ৪৫.১ ওভারে ২৩৪ (গুনাথিলাকা ০, থারাঙ্গা ১৯, মেন্ডিস ৪, চান্দিমাল ৫৯, গুনারত্নে ২৪, সিরিবর্ধনে ২২, পাথিরানা ৩১, থিসারা ৫৫, লাকমল ৮, সান্দাকান ৩, কুমারা ০*; মাশরাফি ২/৩৫, মিরাজ ২/৪৩, তাসকিন ১/৪১, সাকিব ১/৩৩, মুস্তাফিজ ৩/৫৬, মোসাদ্দেক ০/২১)
ফল: বাংলাদেশ ৯০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের স্টার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ক্রিকেট বিশ্বের একজন বিস্ময় হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার মাগুরায় আয়োজিত এক বিশাল জনসমাবেশে ভাষণ প্রদানকালে জেলার জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যেখানে আপনাদের সূর্য সন্তান এবং ক্রিকেট বিশ্বের বিস্ময় সাকিব আল হাসানের জন্ম হয়েছে, সেই মাগুরার জনগণকে প্রথমে আমি অভিনন্দন জানাই।’
মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ৩২৭ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ২৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় এই জেলা সফরে যান।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তাদের শততম টেস্ট ম্যাচে শ্রীলংকাকে পরাজিত করে জয় বাংলার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। প্রধানমন্ত্রী এই ঐতিহাসিক বিজয়ের জন্য সাকিবসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সকল খেলোয়াড়,কোচ এবং কর্মকর্তাদের পুনরায় অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী রোববার ক্রিকেট দলের এই বিজয়ের পর ফোনে বাংলাদেশের স্কিপার মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কথা বলেন এবং শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেস্ট বিজয়ের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী মুশফিকুর ও সাকিবকে বলেন, শ্রীলংকাকে পরাজিত করে তোমরা একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছো। তোমরা যেন এ বিজয় ধরে রাখতে পারো, এ কারণে আমি তোমাদের জন্য দোয়া করি।
শ্রীলঙ্কার শেষ উইকেট নেয়ার আগেই ইংল্যান্ডের টনি লককে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তার ঝুলিতে জমা পড়েছিলো ১৭৫ টেস্ট উইকেট। এতে জায়গা মিলে যায় টেস্ট ক্রিকেটের আরেকটি রেকর্ড পাতায়। কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা পাঁচ বাঁ-হাতি স্পিনারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার।৪৯তম টেস্ট খেলতে নামা সাকিবের টেস্ট উইকেট এখন ১৭৬টি। টেস্ট ইতিহাসের বাঁ-হাতি স্পিনারদের রেকর্ড পাতায় তার সামনে আছেন কেবল মাত্র চারজন স্পিনার। যদিও তালিকার উপরের স্পিনাররা সাকিববের চেয়ে বেশ এগিয়ে। চার নম্বরে থাকা ভারতের সাবেক স্পিনার বিষেন সিং বেদী ৬৭ টেস্টে নিয়েছেন ২৬৬ উইকেট।
সর্বকালের সেরা বাঁ-হাতি স্পিনারের তালিকার সবার ওপরে আছেন শ্রীলঙ্কার অন্তর্বর্তীকালীন টেস্ট অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ। কলম্বো টেস্টে এখন পর্যন্ত ছয় উইকেট নেয়া হেরাথ পেয়েছেন ৩৭২ উইকেট। ৩৬২ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক স্পিনার ডেনিয়েল ভেট্টরি। ৮৬ টেস্টে ২৯৭ উইকেট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে আছেন ইংলিশ স্পিনার ডেরেক আন্ডারউড।তালিকার ছয় নম্বরে নেমে যাওয়া আরেক ইংলিশ স্পিনার টনি লক ৪৯ টেস্টে ১৭৪ উইকেট নিয়েছিলেন। টনি লকের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য যেন ক্যারিয়ারের ৪৯তম টেস্ট ম্যাচটিই টার্গেট করছিলেন বাংলাদেশ প্রাণভোমড়া। প্রথমে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে পরে বল হাতেও দেখালেন জাদু।
অবশ্য সাকিবের এমন কীর্তি উদযাপনের আরো বড় উপলক্ষ আছে। কলম্বোতে দলের শততম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। এমন ম্যাচে ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে দলকে এগিয়ে নেয়াটা তার কাছে ব্যক্তিগত সাফল্যর চেয়েও হয়তো অনেক বড়।প্রথম ইনিংসে বল হাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। ৩৩ ওভারে ৮০ রান খরচায় নিয়েছিলেন দুই উইকেট। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সময় বুঝে জ্বলে ওঠেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই স্পিনার। নিজেদের লক্ষ্য ছোট রাখতে নিজের স্পিন ভেল্কি দেখাতে সময় নেননি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। ৭৪ রান খরচায় তুলে নেন চার উইকেট। আর এই চার উইকেট তাকে জায়গা করে দেয় আরো একটি অনন্য রেকর্ড পাতায়।
টেস্ট ক্রিকেটের সেরা পাঁচ বাঁ-হাতি স্পিনার
বোলার ম্যাচ উই. গড় সেরা ৫ উই
রঙ্গনা হেরাথ (শ্রীলঙ্কা) ৮১* ৩৭২ ২৭.৭৬ ৯/১২৭ ২৯
ডেনিয়েল ভেট্টরি (নিউজিল্যান্ড) ১১৩ ৩৬২ ৩৪.৩৬ ৭/৮৭ ২০
ডেরেক আন্ডারউড (ইংল্যান্ড) ৮৬ ২৯৭ ২৫.৮৩ ৮/৫১ ১৭
বিষেন সিং বেদী (ভারত) ৬৭ ২২৬ ২৮.৭১ ৭/৯৮ ১৪
সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) ৪৯* ১৭৬ ৩৩.০৪ ৩৬/৭ ১৫
ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগগুলো মৌসুমের শেষদিকে চলে এসেছে। শিরোপা দৌড়ে কোন লিগে কে এগিয়ে সেটা অনেকেরই জানা। কিন্তু ইউরোপীয় মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু-র দৌড়ে এগিয়ে আছেন কে—এ নিয়ে কৌতূহল কিন্তু আছেই।
খুব বেশি ফুটবলের খোঁজ খবর যারা রাখেন না, তারাও এমনিতেই চেনা কয়েকটা নাম বলে দিতে পারেন। লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লুইস সুয়ারেজ। সর্বশেষ আট মৌসুমে এই তিনজনই ঘুরেফিরে জিতেছেন পুরস্কারটা। যারা একটু খোঁজ-খবর রাখেন তারা সঙ্গে যোগ করতে পারেন রবার্ট লেভানডফস্কি, পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং, এডিনসন কাভানির নামও। এই মৌসুমে দুর্দান্ত খেলছেন এই তারকারা। কিন্তু বিস্ময়কর হচ্ছে, এঁদের পেছনে ফেলে গোল্ডেন শুর-র দৌড়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন স্পোর্টিং ক্লাব ডি পর্তুগালের ডাচ স্ট্রাইকার বাস দোস্ত!
পর্তুগিজ প্রিমেরা লিগায় গত রাতে ন্যাসিওনালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে স্পোর্টিং ক্লাব ডি পর্তুগাল। দুটি গোলই করেছেন বাস দোস্ত। আর এই দুই গোল দিয়েই ২৭ বছর বয়সী দোস্ত পেরিয়ে গেছেন বেশ কিছুদিন ধরে গোল্ডেন শু-এর লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা মেসি ও অবামেয়াংকে।
লিগে এ মৌসুমে ২৩ ম্যাচে ২৪ গোল দোস্তের। উয়েফায় পর্তুগিজ লিগের রেটিং ফ্যাক্টর ২, তাই দোস্তের মোট পয়েন্ট ৪৮। অন্যদিকে মেসি ও অবামেয়াং দুজনেরই গোল ২৩টি করে, দুজনেরই পয়েন্ট ৪৬। ২২ গোল নিয়ে এই তিনজনের পরেই আছেন তুরিনোর স্ট্রাইকার আন্দ্রেয়া বেলোত্তি। ১৯ গোল করে রোনালদো আছেন বেশ পেছনে।
অন্যদিকে ২৭ ম্যাচে ২৭ গোল পিএসজি স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানির। কিন্তু উয়েফায় ফরাসি লিগের রেটিং ফ্যাক্টর যেহেতু ১.৫, কাভানির পয়েন্ট ৪০.৫। দোস্ত-মেসি-অবামেয়াংদের চেয়ে বেশি গোল করেও তাই গোল্ডেন শু-র লড়াইয়ে বেশ পিছিয়ে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার!
তাড়া করতে নেমে সৌম্য সরকার আউট হয়ে গেছেন শুরুতেই। ছবি-এএফপি
১৯১ রান তাড়া করতে নেমে চাপে বাংলাদেশ। রঙ্গানা হেরাথকে ডাউন দ্য উইকেটে মারতে গিয়ে থারাঙ্গাকে ক্যাচ দিয়েছেন সৌম্য সরকার (১০)। হেরাথের পরের বলেই স্লিপে গুণারত্নের ক্যাচ হয়েছেন ইমরুল কায়েস (০)। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের রান ৯ ওভারে ২ উইকেটে ২৪।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ৩১৯ রানে।
২৩৮ রানে পড়েছিল অষ্টম উইকেট। সেটি গতকাল বিকেলের কথা। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসের ৯২তম ওভার ছিল সেটি। তারপর থেকেই বাংলাদেশের অপেক্ষার শুরু। যে অপেক্ষা শেষ হয়েছে আজ সকালের সেশনের ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে। মিস ফিল্ডিংয়ে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়েছেন পেরেরা। পরের ওভারেই সাকিবের দ্বিতীয় বলে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন লাকমল।
একটা লম্বা সময় বাংলাদেশের বোলারদের হতাশা উপহার দিয়ে গেছেন দিলরুয়ান পেরেরা-সুরঙ্গা লাকমল। নবম উইকেটে তাঁরা দুজন যোগ করেছেন ৭৯ রান। তারপর রানআউট হলেন পেরেরা। অবশ্য এর আগেই পেয়ে গেছেন নিজের ফিফটিটাও।
দিনের খেলা শুরুর আগে তামিম ইকবাল অবশ্য টেন ক্রিকেটকে বলেছেন, এখনই জয়ের কথা ভাবছে না দল। আগে লঙ্কানদের শেষ দুটি উইকেট তুলে নিতে চান তাঁরা। তারপর রান তাড়া করার ভাবনা। ইতিবাচক খেলতে চায় বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কান বোলার সান্দাকান বলেছিলেন, ১৭৫ রানের লিড পেলেই জেতার সুযোগ থাকবে তাঁদের। তাঁর প্রত্যাশার চেয়েও বেশি রান এরই মধ্যে হয়ে গেছে লঙ্কানদের।
স্পোটিং ক্লাব দি দেওতলা কর্তৃক আয়োজিত ৩য় তম অলিম্পিক ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৭ দেওতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে সংগঠনের সভাপতি মো.সাজ্জাদ এর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা মো.শাহেদুল ইসলাম এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মামুনুর রশীদ চৌধুরী (আশরাফ)। প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম পূজা কমিটির সভাপতি বাবুল ঘোষ (বাবুন)। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জমজম ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাষ্ট্রিজ এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক, মোরশেদ হোসেন চৌধুরী, এম.এ রহিম, ভিংরোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু, সাবেক মেম্বার মো: নয়ন, সাংবাদিক হান্নান রহিম তালুকদার প্রমুখ। ফুটবল একদাশ পাটনীকোঠা বনাম ওষখাইন যুব কল্যাণ পরিষদ এর মধ্যে উক্ত ফাইনাল খেলায় বিজয়ী হয়েছেন ওষখাইন যুব কল্যাণ পরিষদ।
শততম টেস্টে স্মরণীয় করে রাখার কথা জানিয়েই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। ঐতিহাসিক এই টেস্টের প্রথম দিন মাঠে দেখা গেল অন্য বাংলাদেশকে। দিনেশ চান্দিমালের অপরাজিত ৮৬ রান বাদ দিলে ঐতিহাসিক এই টেস্টের প্রথম দিনের পুরোটাই শাসন করেছে স্বাগতিকরা।বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে ১৯৫ রান তুলতেই সাত উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত প্রথম দিন শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় সাত উইকেট ২৩৮ রান। লিটন দাসের হঠাৎ ইনজুরিতে একাদশে সুযোগ পাওয়া সাব্বির রহমানের মতে, চালকের আসনেই রয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, প্রথম দিনের মত টেস্টের বাকি চারদিনও নিজেদের করে নিয়ে শততম এই টেস্টে জয় তুলে নিতে চান সাব্বির।
ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট খেলতে নামা ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বললেন, ‘আমরা দলের সবাই শততম টেস্টের অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। সবাই চাই, যেভাবেই হোক এই ম্যাচটা জিততে। সব ম্যাচই জিততে চাই তবে এই ম্যাচটা জেতা দেশের জন্য, দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সব টেস্টেই আমাদের প্রস্তুতি এক রকম থাকে। কিন্তু এই টেস্ট বিশেষ। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি।’রঙ্গনা হেরাথকে সাথে নিয়ে অষ্টম উইকেটে অবিচ্ছিন্য ৪৩ রানের জুটি গড়েছেন চান্দিমাল। চান্দিমাল ৮৬ ও হেরাথ ১৮ রানে অপরাজিতদ্বিতীয় দিন সকালে এই জুটি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার আগেই লঙ্কানদের অলআউট করতে চান সাব্বির, ‘যত দ্রুত ওদের অলআউট করতে পারি তত ভালো। দিনের প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই যদি অলআউট করতে পারি তাহলে তিনশ রানের আগেই ওদের থামাতে পারবো।’বোলারদের প্রশংসায় ২৫ বছর বয়সী সাব্বির আরও বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল যত কম রান দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে ডট বল বেশি করা। কারণ, রান কম হলে ওরা চাপে থাকবে। মুস্তাফিজ-মিরাজ দু’জনই চমৎকার বোলিং করেছে। এছাড়া আমাদের বোলিং খুবই ভালো হয়েছে বলেই অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেগুলো আমরা কাজেও লাগিয়েছি।’