রাঙ্গামাটির সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় খাদ্য শষ্য প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটির সাজেকের দুর্গম এলাকার গ্রামগুলোতে খাদ্য সংকট দুর করতে হেলিকপ্টার যোগে জরুরী ভিত্তিতে ২০ মেট্রিক টন চাউল এবং ১০ লাখ টাকা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানান রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান।
তিনি বলেন, জুমচাষে ফলন না হওয়ায় সাজেকের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে তা মোকাবেলায় ত্রান বিতরণ চলছে। সাজেকের দুর্গত এলাকা গুলো দুর্গম হওয়ায় খাদ্যগুলো বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসক সেনা বাহিনীর কাছে হেলিকপ্টারের সহযোগিতা চেয়েছেন। শনিবার (৬ মে) এসব খাদ্য সহায়তা পৌছানো হবে। এছাড়া আগামী চারমাস দুর্গতদের বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে।
শুক্রবার (৫ মে) জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, সাজেক খুব দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। সেখানকার মানুষ নির্ভরশীল কেবল জুমচাষে উৎপাদিত ফসলের ওপর। বছরে জুমচাষ করে যা উৎপাদন করতে পারে তা দিয়ে তাদের জীবনজীবিকা। আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, গত বছর প্রকৃতির বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সেখানকার লোকজনের জুমচাষ ব্যাহত হয়। এতে ফসল উৎপাদন তেমন হয়নি। ফলে এ মৌসুমে খাদ্য সংকটে পড়তে হয়েছে তাদেরকে।
তিনি বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংকটের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মানবিক বিবেচনায় দেখছে সরকার। সংকট মোকাবেলায় জরুরিভাবে পর্যাপ্ত খাদ্য ও অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এটিকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে ১০ মেট্রিক চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১০ মেট্রিক টন বরাদ্দ দিয়েছে পার্বত্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া দুর্দশাগ্রস্তদের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নগদ ১০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে। জেলা প্রশাসনের জিআর কর্মসূচি হতে ২০ মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী পক্ষ হতেও বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তা ছাড়া পরবর্তী চার মাসের জন্য পরিবার প্রতি মাসে ২০ কেজি করে চাল বিতরণে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আশা করছি সংকট আর বেশি থাকবে না। মোকাবেলার জন্য যা করা দরকার সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তার তৎপরতা শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে  সাজেকে দুর্গম এলাকাগুলোতে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার খাত্য সংকটে পড়ে। এ খাদ্য সংকটের খবর প্রকাশ পাওয়ার পর গত কয়েকে দিন ধরে সেনা বাহিনী, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ দুর্গত এলাকায় চাউল বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্গম এলাকাগুলোতে এখনও খাদ্য পৌছায়নি বলে জানান জেলা প্রশাসক।
সূত্র জানায়, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা সাজেক ইউনিয়ন। আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় এ ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে বসবাসকারী লোকজন হঠাৎ খাদ্য সংকটে পড়েছেন। বর্তমানে সেখানে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট। সেখানকার লোকজন একমাত্র নির্ভরশীল জুমচাষের ওপর। কিন্তু গত মৌসুমে খরাসহ প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে জুমচাষ ব্যাহত হয়ে পড়ে। ফলে এ মৌসুমে খাদ্য সংকটে পড়েন স্থানীয়রা। চলতি মৌসুম কেবল শুরু। ফসল পেতে সময় লাগবে আরও অন্তত চার মাস। তা ছাড়া জুমচাষের বিকল্প আয়-উপার্জন ও কর্মস্থান কিছুই নেই তাদের।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031