চিনি, ছোলা ও মুরগির দাম বাড়ছে

এক সপ্তাহের ব্যবধানে শুক্রবার চিনি ও ছোলা কেজিতে ৫ টাকা, মুগডাল ২০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

চিনি ও ছোলার দাম বৃদ্ধির জন্য পাইকাররা মিল থেকে সরবরাহে বিলম্বের কথা বলছেন। তবে একটি নিত্যপণ্য বিপণন কোম্পানির প্রতিনিধি বলছেন, পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই, দামও স্বাভাবিক আছে।

এভাবে দাম বৃদ্ধির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের মজুদদারিকে দায়ী করে বাজারে তদারকি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব।

এদিকে ক্রমবর্ধমান চালের বাজারে প্রায় সব ধরনের চালে গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি অন্তত এক টাকা করে বেড়েছে বলে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

শুক্রবার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ঠাকুরগাঁও ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপক রাজিনুর ইসলাম বলেন, গত ১০ দিনে চিনির ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে অন্তত ৩০০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকারও বেশি।

“১০ দিন আগে ২৯০০ টাকা ছিল। ফ্রেশ ব্র্যান্ডের চিনির বস্তা মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ৩১৯০ টাকা, কিন্তু সরাসরি ডিও কেটে ১৫ দিনেও চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। আর বিশেষ ব্যবস্থায় কিনতে হলে দাম কিছুটা বেশি দিতে হচ্ছে। সে কারণে বাজারে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে।”

তবে মিলগেইটে চিনির দাম বস্তা প্রতি ২৯০০ টাকা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

চিনির সরবরাহ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিত সাহা বলেন, “বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। মিল গেইটে প্রতি কেজি চিনির দাম এখন ৫৯ টাকা।”

এই কোম্পানির সব ধরনের পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

দেশ উৎপন্ন হওয়া মুগডাল এক সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা করে বেড়েছে বলে জানান কৃষি মার্কেটের সূর্য এন্টারপ্রাইজের নসরুল আমিন।

মুগডালের কেজি এখন ১২০টাকা। এক সপ্তাহ আগেও মুগডাল ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলার দাম কেজিতে অন্তত ৫ টাকা বেড়ে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান নসরুল।

একই তথ্য জানান সিটি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক আবু তাহের মৃধা।

তিনি জানান, সাভারের আড়ৎদারদের কাছ থেকে তারা শুক্রবার ৯৮ টাকায় ভালো মানের এক কেজি মসুর ডাল, ৮০ টাকায় ভাঙা বুট ডাল, ৭৯ টাকায় ছোলা, খেসারি ডাল ৭০ টাকা করে কিনেছেন। বিক্রি করছেন কেজিতে ২-১ টাকা লাভে।

চিনি ছোলার পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। কারওয়ানবাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে।

এই বাজারের একজন মুরগি বিক্রেতা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানি কক ও দেশি মুরগির দামও বাড়ছে।

চালের দাম

কৃষি মার্কেটের কাজী রাইস এজেন্সির কাজী কামাল উদ্দিন জানান, কিছু দিনের ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহেও বিভিন্ন ধরনের চাল কেজিতে অন্তত এক টাকা করে বেড়েছে।

গুটি স্বর্ণা ৪১ থেকে ৪১ টাকা ৫০ পয়সা, মিনিকেট ৫০ থেকে ৫১ টাকা, বিআর আঠাশ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, পায়জাম ৪৪ থেকে ৪৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং নাজিরশাইল চাল কেজি প্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এভাবে দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সহ-সভাপতি এসএম নাজির হোসেন বলেন, সরবরাহ ঘাটতি নয়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর মজুদদারির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে।

“আমাদের জানা মতে, এবার রমযান উপলক্ষে পর্যাপ্ত ছোলার মজুদ আছে। আমদানিকারকদের হাত থেকে ছোলা মধ্যম পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের হাতে গিয়ে জমা হয়ে আছে। তারাই দাম বাড়াচ্ছে।”

সরকারের প্রতি বাজারে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31