॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যমান গভীর সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে একমত হয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে, দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকে ভোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানি না। তিনি বলেন, এদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উভয় দেশের মধ্যকার অনিষ্পন্ন সমস্যা সমাধানে আলোচনার তাগিদ দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে তিনটি সমঝোতা সই হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এগুলোর মধ্যে আছে কৃষি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক লেনদেন আরও সহজ করা। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে রওনা হন তিনি। নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে এই সফর।
প্রসঙ্গত, ভারতে হতে যাওয়া এবারের জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হচ্ছে—মিসর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিংগাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভারতের মধ্যে বিদ্যমান নানা সম্পর্কের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে।
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকে নতুন একটা খবর আছে, জি-২০ সম্মেলন হচ্ছে দিল্লিতে। আটলান্টিকের ওপারে হোয়াইট হাউসে থেকে নিষেধাজ্ঞা দেবে এ আশায় ছিল বিএনপি।
কিন্তু কী দেখা গেল? মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেই সেলফি তুললেন শেখ হাসিনার সঙ্গে, সঙ্গে পুতুলও ছিলেন। বিএনপির এখন কী হবে? পতনযাত্রা নাকি পশ্চাতযাত্রা। কেবলই পেছনের দিকে বিএনপিকে যেতে হচ্ছে। বাইডেন সাহেব শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি তুলেছেন কেমন করে? এসব ভালো লাগেনি বিএনপির।
শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের পদযাত্রায় জনগণ নেই, জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই। বাংলাদেশ বৃহৎ শক্তির শক্তিকেন্দ্র। এ বলয় বন্ধুত্বের বলয়, এখানে কোনো শত্রুতা নেই। বাংলাদেশের জাতির পিতা বলেগেছেন, সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল বলেন, এখন কী খবর? সিঙ্গাপুর থেকে শলাপরামর্শ নিয়ে এসেছেন, সেই আন্দোলন এখন ভুয়া। ২১ দফা, এক দফা, ২৭ দফা, বিএনপির আন্দোলন ভুয়া। কোনো জনসমর্থন নেই।
ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ অনেকেই পেশাগত ভুয়া সনদ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাচ্ছেন। এসব ভুয়া সনদধারী বিদেশগামী ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি এ নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের কাছে তথ্য আসছে, ভুয়া ডাক্তার, ভুয়া ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সনদ নিয়ে অনেকে বিদেশে কাজের জন্য যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এসব ভুয়া সনদধারী বিদেশগামী ও এর সঙ্গে জড়িতদের ধরতে নির্দেশনা দিয়েছেন। কীভাবে এই ভুয়া সার্টিফিকেট তারা নেয়, কীভাবে এই ভুয়া সার্টিফিকেটসহ তারা যায়, কারা তাদের এ কাজে সহযোগিতা করে এবং তারা নিজেরাও যারা কাজটি করছে, তাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করবে।
ভুয়া সনদধারীদের সংখ্যা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সংখ্যা কোনো বিষয় না। এমন অভিযোগ প্রায়ই পাওয়া যাচ্ছে। তখন একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটিকে খুব কঠোরভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ দ্রুতগতির উড়ালসড়ক ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে রাজধানীবাসীর জন্য নতুন উপহার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে রাজধানীর যানজট কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলানগরে পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে সড়ক, নৌ-পথ ও রেলপথের ব্যাপক উন্নয়ন করছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
কারো কাছে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যেতে হবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করেছি আমরা। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন অন্ধাকার যুগে নেই। সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এসময় প্রধানমন্ত্রী ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে শনিবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে টোল পরিশোধের মাধ্যমে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি আন্দোলন না করে বিএনপিকে ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তারা ঘরে বসে এসিরুমে হিন্দি সিরিয়াল দেখে। আর বাইরে পুলিশের গতিবিধি দেখে।
সুধী সমাবেশে আরও উপস্থিত আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, ঢাকা উত্তরের সিটি করপোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, মোহাম্মদ আলী আরাফাত প্রমুখ।
চট্টগ্রাম অফিস :: কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজের জন্য আগামী তিন মাস বন্ধ থাকবে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন ও যানবাহন চলাচল। সংস্কারের পর এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাত্রীবাহী ট্রেন ছুটবে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে এ সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল করবে।
আগামী সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ট্রেন লাইনসহ সেতুর ডেকিং, পাটাতন মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ সংস্কার কাজের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেতু বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন, কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে সেতুটির ডেকিং ডিসমেন্টলিং (খোলা) কাজ শুরু করবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাইটে নির্মাণ সামগ্রী ও ইক্যুইপমেন্ট মোবিলাইজেশন শুরু করেছে। সেতু সংস্কার ও নবায়নের পাশাপাশি পথচারীদের পারাপারের জন্য নতুন ভাবে পৃথক একটি ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, মেরামত চলাকালীন সময়ে সেতু দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেরি সার্ভিস চালু করেছে। ফেরি দিয়েও যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ভারী যানবাহন গুলো শাহ আমানত সেতু দিয়েও যাতায়াত করতে পারবে।
রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৮ জুন বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতুটি মেরামতের জন্য রেলওয়ের সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শতবর্ষী জরাজীর্ণ এই সেতু সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হবে।
এদিকে সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। মোট তিনটি ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। ২টি ফেরি চলাচল করবে। আর ১টি ফেরি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। ফেরির টোলের হার নির্ধারণ করা হলেও টোল আদায়ে কোনো ইজারাদার পায়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
চট্টগ্রাম অফিস :: ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের তালিকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। এমন অবস্থায় শিশুদের ব্যাপারে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের। সিভিল সার্জনের তথ্য মতে, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। যা শতাংশের হিসেবে প্রায় ৫৬ ভাগ। শুধুমাত্র চলতি বছরের জুলাই মাসেই মারা গেছে ৭ জন শিশু। শক সিনড্রোম ও হেমোরেজিক অবস্থা ডেঙ্গুতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে জানান চিকিৎসকরা। এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্রায় ২৬ শতাংশই শিশু। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৭৬ জন। এর মেধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু ৭২১ জন। পেট ব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত, ডায়রিয়া ও শরীর ফুলাসহ নানা নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে শিশুরা হাসপাতালে আসছেন বলেও জানান চিকিৎসকরা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় শিশুরা সহজেই ডেঙ্গুতে কাবু হচ্ছে বলে মনে করছেন বিআইটিআইডি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, শিশুরা সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু জ্বরের ঝুঁকিতে রয়েছে। উপসর্গ হিসেবে শিশুদের প্রচণ্ড জ্বর হচ্ছে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এছাড়া মশা সম্পর্কে না জানায় মৃত্যু ও আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জ্বর হলেই প্রথম দিনেই ডেঙ্গু পরীক্ষা এনএস ওয়ান পরীক্ষা করাতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়লে পর্যাপ্ত পানি জাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকবেন। এসময়ে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই উত্তম। সেজন্যে মশারি ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুল হাতা জামা পড়ানো, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সাধারণ জনগণের সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া চট্টগ্রামের কৃতি সন্তানদের চিরস্মরণীয় করে রাখতে স্থাপনা নির্মাণ ও নামকরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার একুশের প্রথম কবিতার কবি মাহবুব উল আলমের নামে চসিক পাবলিক লাইব্রেরীর নামকরণ ও ফলক উম্মোচন অনুষ্ঠানে মেয়র এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের বীর সন্তানরা সাহসী ভূমিকা রেখেছে। তাদের ভূমিকাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও নামকরণ করা হবে।
“কবি মাহবুব উল আলম চগ্রামের ভাষা আন্দোলনকে সুসংগঠিত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তরুণ ছাত্রনেতারা যখন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে লড়ছেন, রক্ত ঝড়াচ্ছেন তখন কবি মাহবুব উল আলম ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা রচনা করেন। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, ’ক্ষুধার্ত বাতাসে শুনি এখানে নিভৃত এক নাম চট্টগ্রাম: বীর চট্টগ্রাম!’ আজ বীর চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান কবি মাহবুব উল আলমের নামে এ লাইব্রেরির নামকরণ করতে পেরে আমি গর্বিত।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার আহ্বান আপনারা কবি মাহবুব উল আলমের প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করুন। আপনাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠুক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। যে বাংলা হবে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সাম্যের ঠিকানা।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে আধুনিক চট্টগ্রাম গড়তে চসিক কাজ করছে। বই যুক্তি শেখায়, মুক্তি দেয়। এই লাইব্রেরি পাঠকদের মাঝে আলো ছড়াবে, তাদের স্বাধীনতার চেতনা শেখাবে এই আমার কামনা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, কবি মাহবুব উল আলমের জামাতা স্থপতি ইশতিয়াক আহমদ আলম চৌধুরী, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, আঞ্চলিক কর্মকর্তা রেজাউল করিম, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু প্রমুখ।
উল্লেখ্য চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান একুশের প্রথম কবিতার কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী রাউজান উপজেলার গহিরায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বাংলাকে রাষ্টভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে চট্টগ্রামে সর্বদলীয় রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদ কমিটির আহবায়ক ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী এবং যুগ্ন আহবায়ক ছিলেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং এম এ আজিজ। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি কবিতাটি রচনা করেন। এ কবিতাটি ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত প্রথম কবিতা হিসেবে স্বীকৃত।
ঢাকায় গুলিবর্ষনের প্রতিবাদে ২৩ ফেব্রুয়ারি সমগ্র চট্টগ্রামে সাধারন ধর্মঘট পালিত হয়। লালদিঘি ময়দানে বিকাল ৩টায়
অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার জনসমুদ্রে “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” কবিতাটি আবৃত্তি করেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ। এর কয়েকদিন পরেই সেসময়কার মুসলিম লীগ সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করে। মাহবুব উল আলম চৌধুরী আমৃত্যু নিজ শহর চট্টগ্রাম ও সমগ্র বাংলাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।
বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির সীমান্তর্বতী বিভিন্ন দুর্গম এলাকা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন “ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ” ৭ জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র ্যাব। এ সময় তদের কাছ থেকে বিপুল অস্ত্র , গোলাবারুদ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বান্দরবানের মেঘলা এলাকায় র্যাব-১৫ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিংকালে র ্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এই তথ্য নিশ্চিত করেন । তিনি বলেন, সম্প্রতি নতুন জঙ্গি সংগঠন “ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার’র ” শীর্ষ নেতাদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান শুরু হয়। সম্প্রতি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নতুন করে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া তরুণরা জামাতুল আনসারের হয়ে পাহাড়ি এলাকার আস্তানায় আশ্রয় নেয়। এসব আস্তানায় হিজরত করা তরুণদের ভারি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান , উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া বিভিন্ন জেলার ৫০ তরুণের তথ্য পায় র্যাব, তাদের মধ্যে ৩৮ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়। বান্দরবানের সীমান্তবর্তী সীমান্তঘেঁষা দুর্গম পাহাড়ে বাড়িছাড়া কিছু তরুণ জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে টানা অভিযান চালিয়ে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৭জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করে র ্যাব। এ সময় তদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৯টি বন্ধুক, ৫০ রাউন্ড গুলি , ৬২টি কার্তুজ কেইস, ১টিওয়াকটকি, হাত বোমা ৬টি, মানচিত্র ও বিভিন্ন ধরনের পোশাক।
পার্বত্য এলাকায় সাধারণ জনগণের উন্নয়ন ব্যাহত ও শান্তি শৃংঙ্খলা ভঙ্গে যারা জড়িত থাকবে এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করবে সেই ধরণের সকল সংগঠন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র ্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
ঢাকা: নবনিযুক্ত মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বিশেষায়িত বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সংস্কারের কোনো প্রশ্নই আসে না বললেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন বাহিনীটি সবসময়ই সংস্কারের মধ্যে আছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এলিট ফোর্সটিতে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তাদের অনেকে জেলে আছেন।
রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁওয়ে মানব পাচার নিয়ে (লঞ্চিং অব দ্যা ফার্স্ট ন্যাশনাল স্টাডি অন ট্রাফিকিং ইন প্রিজনস ইন বাংলাদেশ) আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এলিট ফোর্স র্যাবকে আমরা দায়িত্ব দিয়ে থাকি। বাহিনীটি সে নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করে। যদি কেউ ভুল করেন, আমাদের কাছে যে রিপোর্ট আসে; আমরা সেগুলো স্টাডি করি। কারও যদি এখানে ইনভলভম্যান্ট থাকে সেটিও আমরা দেখছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের কাছে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে, সেগুলো আমরা প্রতিনিয়ত যাচাই করে দেখছি। সেখানে যদি কোনো ভুল থাকে তাও দেখা হবে।
র্যাব সংস্কার ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কি? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, র্যাব যখন তৈরি হয়, তাদের ট্রেনিং ইউএসএ দিয়েছে। কাজেই আমরা মনে করি র্যাব যদি কোনো ভুল করে থাকে তবে সেগুলোও আমরা দেখছি। র্যাব বা পুলিশ যারাই অপরাধযোগ্য কাজ করছে তারা কিন্তু শাস্তির বাইরে যায়নি। এখনও অনেক পুলিশ ও র্যাব সদস্য জেল খাটছে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আমাদের জানতে হবে তারা অন্যায়টা কি করছে। আর সংস্কারের কথা বলতে র্যাব সবসময় সংস্কারের মধ্যেই আছে। আমরা সবকিছু আধুনিক করছি। যেটা প্রয?োজন সেটাই দিচ্ছি।
এর আগে মানব পাচার নিয়ে আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব পাচার বিশ্বব্যাপী সমস্যা। ভুক্তভোগীদের যারা পাচার করেছে তাদের শাস্তির মুখোমুখি এনে এ সমস্যার সমাধান করতে চাই।
২০১২ সালে আইন তৈরি করা হয়েছে। কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা অফিস :: কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধ ও মাদক নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পের ভেতরে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একই সঙ্গে মাদকের প্রবেশ রোধে নাফ নদীতে মাছ ধরার ট্রলারে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ৫ম সভা মেষে সাংবাদিাদের এক প্রশ্নের জাবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, স্বরাষ্ট্রসচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন আমাদের এখানে অবস্থান করার কারণে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে আমরা পড়েছি। আমরা বারবার প্রচেষ্টার পরেও তাদের দেশে যাওয়ার যে প্রক্রিয়াটা তাদের অনীহার কারণে শুরু করতে পারিনি। তারপরেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝে মধ্যেই আমরা রক্তপাত দেখছি, সন্ত্রাস দেখছি।
তিনি বলেন, আজ দীর্ঘ আলোচনার পরে যে সিদ্ধান্তগুলো এসেছে— ক্যাম্পে আমরা মাঝেমধ্যেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করেছি এবং বিনা কারণে রক্তপাতও দেখছি। মাঝে মাঝে মিয়ানমার থেকে মাদকের আনাগোনাও আমরা লক্ষ্য করছি। এটার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা এবং অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য আমরা তথ্য ভিত্তিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই অভিযানে প্রয়োজনে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার তো আছেই প্রয়োজনে আমাদের সেনাসদস্যরাও এতে অংশ নেবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার নিরিখে এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে যৌথভাবে ক্যাম্পের ভেতরে এবং বাহিরে টহল ও অভিযান পরিচালনা করবে। ক্যাম্পের ভেতরে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। সেগুলো কেন হচ্ছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি, পাশাপাশি আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক ক্যাম্পের চতুর্দিকে নিরাপত্তা বেষ্টনি স্থাপন যেটা চলছিল, সেটা প্রায় শেষের দিকে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাপে টহল রাস্তা কিছুটা বাকি আছে, শেষের দিকে। ওয়াচটাওয়ার সেখানে হবে। তারা যেন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকে সে ব্যবস্থা আমরা করছি। ক্যাম্পের ভেতরে জন্মনিরোধের জন্য একটি এসওপি তৈরির কাজ চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ইসলামি ফাউন্ডেশন এ নিয়ে কাজ করছে। ঘরে ঘরে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন এবং সচেতন করছেন। মসজিদের ইমাম ও এনজিওরাও এ বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, নাফ নদী মাদক আনা নেওয়ার রুট, সেখানে মাছ ধরার ট্রলারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে এবং বাইরে মাদক চোরাচালান বন্ধে অভিযান যেটা ছিল তা আরও জোরদার করা হবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদকের পাশাপাশি ভারী অস্ত্রও দেখা যাচ্ছে, এ বিষয়ে উদ্যোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এ নিয়ে আমাদের কাজ চলছে। ভেতরে পুলিশসহ গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন, তারা কাজ করছেন। ভারী অস্ত্রের কথা যেটা বললেন, ঠিক অতখানি নয়, মাঝে মাঝে অস্ত্র দ্বারা রক্তপাত হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে যারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে। তারা কীভাবে কোথা থেকে আসে বিস্তারিত নিয়ে খুব শিগগিরই তথ্য প্রকাশ করবো। তথ্য অনুযায়ী আমাদের পুলিশ ও র্যাব কাজ করছে।
রোহিঙ্গাদের মোবাইল ব্যবহার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরা মিয়ানমারের মোবাইল ব্যবহার করে, এতে আমরা ক্রিমিনালদের শনাক্ত করতে পারছি না। আমরা যেটা চাচ্ছি তারা যেন আমাদের দেশি মোবাইল ব্যবহার করে। প্রয়োজনবোধে আমরা যেভাবে মোবাইল নিয়ন্ত্রণ করি সেভাবেই করবো।