চট্টগ্রাম ব্যুরো :: বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবাদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম বিশ্ব হার্ট দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে সম্প্রতি পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগে একটি স্পেশাল পেশেন্ট ফোরাম আয়োজন করে। পেশেন্ট ফোরামে সবার উদ্দ্যেশ্যে স্বাগত বক্তব্য দেন এভারকেয়ার হসপিটালস, বাংলাদেশ- এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রত্নদ্বীপ চাস্কার; হসপিটালের ডিপার্টমেন্ট ওভারভিউ দেন উক্ত হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ডা. তাহেরা নাজরীন। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম এর চিফ অপারেটিং অফিসার সামির সিং। স্বাগত বক্তব্যে এভারকেয়ার হসপিটালস, বাংলাদেশ- এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রত্নদ্বীপ চাস্কার বলেন “সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শিশু হৃদরোগ বিভাগের বিনামূল্যের এই বিশেষ প্যাকেজটি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত ” উক্ত অনুষ্ঠানে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা ও এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম এর শিশু হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. তাহেরা নাজরীন বলেন, “এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামে প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্ব হার্ট দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে আমরা পেশেন্ট ফোরাম আয়োজন করেছি। শিশুদের হৃদরোগ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমাদের সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে। শিশু হৃদরোগ চিকিৎসাযোগ্য ও প্রতিরোধযোগ্য। এভারকেয়ার শিশু হৃদরোগ বিভাগে আমরা শিশুদের হৃদরোগ-এর সকল প্রকারের সেবা প্রদান করছি। আমাদের শিশু হৃদরোগ বিভাগ, হাসপাতাল চালু হওয়ার শুরু থেকেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডিভাইস এবং বেলুন-এর মাধ্যমে হার্টের জন্মগত ছিদ্র বন্ধ করা এবং ত্রুটিযুক্ত ভাল্ভের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে ।
॥ লংগদু প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস’র সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্য বর্বরোচিত, নাড়কীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরা। ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তিবাহিনী। এই হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি এখনো। তাই পাকুয়াখালীসহ সকল বাঙ্গালী গণহত্যার বিচার দ্রুত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পাকুয়াখালীতে গণহত্যা দিবসের স্মরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলা শাখার উদ্যোগে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মুনাজাত, শোক র ্যালী ও শোকসভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে অসংখ্য গণহত্যার ঘটনার মধ্যে ৯ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যা দিন, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস।
১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পিসিজেএসএস এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াদের ওপর নিমর্ম নিযার্তনের পর হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বীভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম জিংঘাসার স্বরূপ উন্মোচন করে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যার দিন। এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তিবাহিনী। তাদের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশের নিমর্ম দৃশ্য দেখে সেদিন শোকে ভারী হয়ে ওঠেছিল পরিবেশ। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশী অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল সেদিন অসহায় ওই মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিবাহিনী।
এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খলিলুর রহমান এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের মহাসচিব আলমগীর কবির, রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ, খাগড়াছড়ি জেলা সদস্য সচিব এসএম মাসুম রানা, লংগদু উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন, পিসিএনপি লংগদু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এবিএস মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, ৩৫ কাঠুরিয়া পরিবারের শহীদ আলালউদ্দিনের সন্তান রাকিব হোসেন, প্রত্যক্ষদোষী মো: হাকীম, পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি মো: হাবীব আজম, কলেজ আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, পৌর সভাপতি পারভেজ মোশারফসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
এতে বক্তারা বলেন, মানবাধিকার এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ে সকল বাঙালি গণহত্যাকান্ডের তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। অন্যথায় পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনোদিনই সফল হবে না। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও সম্প্রীতি রক্ষায় সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারী ও দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যার দায়ে সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসা সহ তাদের সংগঠনের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
শোকসভার আগে সকালে লংগদু উপজেলা পরিষদের প্রাঙ্গন থেকে শোক র্যালি বের করা হয়। শোক র্যালিটি প্রধান সড়ক ঘুরে উপজেলা পরিষদের কাঠুরিয়াদের গণ কবরের সামনে এসে কবর জিয়ারত ও দোয়া মোনাজাতে শরিক হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন গাঁথাছড়া বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের সুপার হাফেজ মাওলানা ফোরকান আহমেদ, পরে উপজেলা মাঠের একপাশে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।শোকসভা শেষে ৩৫ জন শহীদ পরিবার ও একজন জীবিত ফিরে আসা মোঃ ইউনুসকে সহ মোট ৩৬ জনকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।
॥রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান॥ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বান্দরবানে অনগ্রসর নারীদের সেলাই মেশিন, প্রশিক্ষণ ভাতা, সনদপত্র ও স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির মাঝে অনুদান বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নারীদের সেলাই মেশিন, প্রশিক্ষণ ভাতা, সনদ পত্র ও অনুদানের চেক বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে দূর্বার গতিতে। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বের কারণে নারীদের উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে আর নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকারীভাবে বিনামুল্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, ভাতা এবং সেলাই মেশিন প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এসময় পার্বত্য মন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান সরকার নারীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করছে এবং নারীরা আগের চেয়ে এখন আরো বেশি কর্মঠ ও দক্ষতার সাথে নিজ নিজ পেশায় সফলতার স্বাক্ষর রাখছে।
এসময় জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.শাহ আলম, পৌরসভার মেয়র মো.সামশুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মীরা, সদর উপজেলা ভূমি কর্র্মকর্তা নারগিস সুলতানা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বান্দরবানের উপ-পরিচালক আতিয়া চৌধুরীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির নারী সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন প্রোগাম এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা ১৮০জন নারীকে সনদপত্র ও ১২হাজার টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা, ৪৫জন নারীকে ১টি করে সেলাই মেশিন এবং ২৮টি স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির মাঝে সর্বমোট আট লক্ষ পচিঁশ হাজার টাকার অনুদানের চেক বিতরণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কফি ও কাজুবাদাম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দিনব্যাপী উপকারভোগীদের গাছ রোপন ও পরিচর্যা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোড চেয়ারম্যান (প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত)সুপ্রদীপ চাকমা।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উক্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রকল্প পরিচালক মোঃ জসীম উদ্দিন (উপসচিব)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমাবলেন, তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত সকল মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হোক পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সেটাই চাই। তিনি ২০০৯ সালে ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় সেখানে কিভাবে কফি ও কাজুবাদাম চাষ শুরু হয়েছিলো সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে কফি ও কাজু বাদাম আমদানী করে। ভিয়েতনাম অন্যতম আমদানী কারক দেশ হিসেবে পরিচিত। বিদেশ থেকে কফি ও কাজুবাদাম আমদানী নির্ভরতা কমাতে তিন পার্বত্য জেলায় কফি ও কাজুবাদাম চাষের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। পার্বত্য এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কফি ও কাজুবাদাম উৎপাদিত হলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এর অভিপ্রায়ে তিন পার্বত্য জেলায় কফি ও কাজুবাদাম চাষের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। রাজশাহী জেলা যেমন আমের জন্য বিখ্যাত, সিলেট জেলা যেমন চায়ের জন্য বিখ্যাত তেমনি তিন পার্বত্য জেলাকে কফি ও কাজুবাদাম চাষের জন্য বিখ্যাত অঞ্চল হিসেবে দেখা চাই পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। কফি ও কাজুবাদাম চাষ প্রকল্প ছাড়াও বর্তমানে তুলা চাষ, ইক্ষু চাষ প্রকল্প চলমান রয়েছে। অত্র এলাকার ভাগ্যোন্নয়নের আর কি কি প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে সে পরামর্শ প্রদানের জন্য সকলের নিকট প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), সদস্য পরিকল্পনা ও প্রকল্প পরিচালক মোঃ জসীম উদ্দিন উপকারভোগী কৃষকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শমূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি সদর এবং মাটিরাঙ্গা উপজেলা থেকে মোট ৬০জন উপকারভোগী কৃষকগণ অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে উপকারভোগীদের মাঝে কৃষি সরঞ্জামাদিসহ এককালিন আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণটি সঞ্চালনা করেন বোর্ডের বাজেট ও অডিট অফিসার মোঃ নুরুজ্জামান।
এসময় খাগড়াছড়ি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুজিবুল আলম,উপ-পরিচালক মংছেনলাইন রাখাইনসহ উপকারভোগী কৃষকসহ বোর্ড ও বোর্ডের আওতায় কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বান্দরবান ॥ শিক্ষার কোন বিকল্প নেই,আর শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। পার্বত্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার যে উন্নয়ন হয়েছে তার ফলে দেশে শিক্ষিতের হার বৃদ্ধি পেয়েছে আর এই ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস্ এসোসিয়েশনের আয়োজনে বাংলাদেশ ম্রো ছাত্র সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেন।
এসময় পার্বত্য মন্ত্রী আরো বলেন, পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বলে নিজেকে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলে হবেনা, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে আর প্রতিযোগীতার যুগে টিকে থাকতে হলে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে সফলতার শীর্ষে পৌঁছাতে হবে। মন্ত্রী বলেন আগে বান্দরবানে শুধু ১টি কলেজ ছিল আর বর্তমান সরকারের আগ্রহ ও সফলতার কারণে ৭টি উপজেলায় ১৪টি কলেজ স্থাপিত হয়েছে। দুর্গম রুমা-রোয়াংছড়ি-থানচি উপজেলায় কলেজ হয়েছে আর জুম চাষীদের সন্তানেরা এখন ঘরের ডাল-ভাত খেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সহজেই পড়াশোনা করে উচ্চ শিক্ষা লাভ করার সুযোগ পেয়েছে আর তার জন্য একমাত্র প্রশংসার দাবিদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস্ এসোসিয়েশনের সভাপতি চ্যংলক ম্রো এর সভাপতিত্বে ম্রো ছাত্র সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.শাহ আলম, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিং ইয়ং ম্রো, টংকাবতী ইউপি চেয়ারম্যান মায়ং ম্রো প্রদীপ, আলীকদম কুরুক পাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো, সুয়ালক ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রাংলাই ম্রো, থানচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান অং প্রু ম্রোসহ প্রমুখ।
চট্টগ্রাম অফিস :: একুশে পত্রিকার সম্পাদক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য আজাদ তালুকদার আর নেই।
বুধবার (২ আগস্ট) ভোররাত ৩টা ৪৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।
মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর।
তিনি লিভার ক্যানসারসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২ আগস্ট) বাদ জোহর নগরের ওয়াসার মোড়স্থ জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠ প্রাঙ্গণে তাঁর ১ম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দুপুর আড়াইটায় জামালখানস্থ প্রেসক্লাবের সামনে ২য় নামাজে জানাজা এবং বাদে আসর তার নিজ বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
লেখক, সাংবাদিক ও সংগঠক আজাদ তালুকদারের অকাল মৃত্যুতে সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম এক বিবৃতিতে আজাদ তালুকদারের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন।
শোকবার্তায় সিইউজে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজাদ তালুকদার একজন অকুতোভয় ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। তার ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে সমাজ ও দেশকে সমৃদ্ধ করেছেন। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সাংবাদিকতায় অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
সাংবাদিক নেতারা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিক আজাদ তালুকদার মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে আসছিলেন। অসুস্থ আজাদ তালুকদার ভারতের মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হসপিটালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
সাংবাদিকতায় দীর্ঘ ৩ দশক ধরে জড়িত আজাদ তালুকদার একুশে পত্রিকা সম্পাদনা ছাড়াও একাত্তর টিভি, বৈশাখী টিভি, একুশে টিভি, সাপ্তাহিক ২০০০, আন্তর্জাতিক ফিচার সংস্থা-সান ফিচার সার্ভিস, এফএম রেডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন।
চট্টগ্রাম অফিস :: কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজের জন্য আগামী তিন মাস বন্ধ থাকবে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন ও যানবাহন চলাচল। সংস্কারের পর এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাত্রীবাহী ট্রেন ছুটবে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে এ সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল করবে।
আগামী সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ট্রেন লাইনসহ সেতুর ডেকিং, পাটাতন মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ সংস্কার কাজের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেতু বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন, কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে সেতুটির ডেকিং ডিসমেন্টলিং (খোলা) কাজ শুরু করবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাইটে নির্মাণ সামগ্রী ও ইক্যুইপমেন্ট মোবিলাইজেশন শুরু করেছে। সেতু সংস্কার ও নবায়নের পাশাপাশি পথচারীদের পারাপারের জন্য নতুন ভাবে পৃথক একটি ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, মেরামত চলাকালীন সময়ে সেতু দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেরি সার্ভিস চালু করেছে। ফেরি দিয়েও যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ভারী যানবাহন গুলো শাহ আমানত সেতু দিয়েও যাতায়াত করতে পারবে।
রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৮ জুন বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতুটি মেরামতের জন্য রেলওয়ের সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শতবর্ষী জরাজীর্ণ এই সেতু সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হবে।
এদিকে সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। মোট তিনটি ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। ২টি ফেরি চলাচল করবে। আর ১টি ফেরি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। ফেরির টোলের হার নির্ধারণ করা হলেও টোল আদায়ে কোনো ইজারাদার পায়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
চট্টগ্রাম অফিস :: ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের তালিকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। এমন অবস্থায় শিশুদের ব্যাপারে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের। সিভিল সার্জনের তথ্য মতে, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। যা শতাংশের হিসেবে প্রায় ৫৬ ভাগ। শুধুমাত্র চলতি বছরের জুলাই মাসেই মারা গেছে ৭ জন শিশু। শক সিনড্রোম ও হেমোরেজিক অবস্থা ডেঙ্গুতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে জানান চিকিৎসকরা। এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্রায় ২৬ শতাংশই শিশু। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৭৬ জন। এর মেধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু ৭২১ জন। পেট ব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত, ডায়রিয়া ও শরীর ফুলাসহ নানা নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে শিশুরা হাসপাতালে আসছেন বলেও জানান চিকিৎসকরা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় শিশুরা সহজেই ডেঙ্গুতে কাবু হচ্ছে বলে মনে করছেন বিআইটিআইডি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, শিশুরা সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু জ্বরের ঝুঁকিতে রয়েছে। উপসর্গ হিসেবে শিশুদের প্রচণ্ড জ্বর হচ্ছে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এছাড়া মশা সম্পর্কে না জানায় মৃত্যু ও আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জ্বর হলেই প্রথম দিনেই ডেঙ্গু পরীক্ষা এনএস ওয়ান পরীক্ষা করাতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়লে পর্যাপ্ত পানি জাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকবেন। এসময়ে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই উত্তম। সেজন্যে মশারি ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুল হাতা জামা পড়ানো, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সাধারণ জনগণের সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া চট্টগ্রামের কৃতি সন্তানদের চিরস্মরণীয় করে রাখতে স্থাপনা নির্মাণ ও নামকরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার একুশের প্রথম কবিতার কবি মাহবুব উল আলমের নামে চসিক পাবলিক লাইব্রেরীর নামকরণ ও ফলক উম্মোচন অনুষ্ঠানে মেয়র এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের বীর সন্তানরা সাহসী ভূমিকা রেখেছে। তাদের ভূমিকাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও নামকরণ করা হবে।
“কবি মাহবুব উল আলম চগ্রামের ভাষা আন্দোলনকে সুসংগঠিত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তরুণ ছাত্রনেতারা যখন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে লড়ছেন, রক্ত ঝড়াচ্ছেন তখন কবি মাহবুব উল আলম ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা রচনা করেন। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, ’ক্ষুধার্ত বাতাসে শুনি এখানে নিভৃত এক নাম চট্টগ্রাম: বীর চট্টগ্রাম!’ আজ বীর চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান কবি মাহবুব উল আলমের নামে এ লাইব্রেরির নামকরণ করতে পেরে আমি গর্বিত।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার আহ্বান আপনারা কবি মাহবুব উল আলমের প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করুন। আপনাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠুক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। যে বাংলা হবে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সাম্যের ঠিকানা।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে আধুনিক চট্টগ্রাম গড়তে চসিক কাজ করছে। বই যুক্তি শেখায়, মুক্তি দেয়। এই লাইব্রেরি পাঠকদের মাঝে আলো ছড়াবে, তাদের স্বাধীনতার চেতনা শেখাবে এই আমার কামনা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, কবি মাহবুব উল আলমের জামাতা স্থপতি ইশতিয়াক আহমদ আলম চৌধুরী, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, আঞ্চলিক কর্মকর্তা রেজাউল করিম, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু প্রমুখ।
উল্লেখ্য চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান একুশের প্রথম কবিতার কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী রাউজান উপজেলার গহিরায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বাংলাকে রাষ্টভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে চট্টগ্রামে সর্বদলীয় রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদ কমিটির আহবায়ক ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী এবং যুগ্ন আহবায়ক ছিলেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং এম এ আজিজ। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি কবিতাটি রচনা করেন। এ কবিতাটি ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত প্রথম কবিতা হিসেবে স্বীকৃত।
ঢাকায় গুলিবর্ষনের প্রতিবাদে ২৩ ফেব্রুয়ারি সমগ্র চট্টগ্রামে সাধারন ধর্মঘট পালিত হয়। লালদিঘি ময়দানে বিকাল ৩টায়
অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার জনসমুদ্রে “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” কবিতাটি আবৃত্তি করেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ। এর কয়েকদিন পরেই সেসময়কার মুসলিম লীগ সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করে। মাহবুব উল আলম চৌধুরী আমৃত্যু নিজ শহর চট্টগ্রাম ও সমগ্র বাংলাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সংক্রমক জাতীয় ওষুধ খাইয়ে লংগদু উপজেলার ভাসান্যাদাম ইউনিয়নের গাউছিয়া তৈয়্যাবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানায় ৯ম শ্রেণির ১ ছাত্রের দ্বারা শিক্ষককে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে অন্য এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়াও মাদ্রাসার বর্তমান পরিচালনা কমিটির উপর সীমাহীন দুর্নিতিসহ নি¤œমানের শিক্ষা প্রদানের অভিযোগ এনেছে এলাকাবাসী। বুধবার স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভাসান্যাদামের খাগড়াছড়ি বাজার এলাকার মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আশ্রাফ নবম শ্রেণির ছাত্র মো. মাসুম বিল্লাহ কে দিয়ে তার গণিত শিক্ষক ওবায়দুলকে ভাতের সাথে সংক্রমক ওষুধ খাওয়ালে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে সে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসার জন্য লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে সে সুস্থ অবস্থায় রিজার্ভমুখস্থ গাউছিয়া খানকায় অবস্থান করছেন। মাদ্রাসা ছাত্র মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, গত তারিখে আমাদের শিক্ষক আশ্রাফ স্যার আমাকে ওবায়দুল স্যার এর খাবারের সাথে মিট্রিল নামক ট্যাবলেট এর গুড়া মিশিয়ে দিতে বলেন। আমি তার কথা না মানলে মাদ্রাসা কমিটি এই কাজটি করতে বলেছে বলেন আশ্রাফ এমটাই ছাত্র প্রতিবেদক কে জানান। পরে আমি না বুঝে তার কথা মেনে ওবায়দুল স্যারের রাতের খাবারে ওই ওষুধ মিশিয়ে দেই।
ঘটনা সূত্রে জানাযায়, গত শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানের গণিত শিক্ষক ওবায়দুলকে ভাতের সাথে মিশিয়ে মেট্রিল নামক ঔষধটি খাওয়ানো হয়। এরপর থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন অবস্থা বেগতিক হওয়ায় গত রোববার রাতে তাকে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। পরদিন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
একজন বিশেষজ্ঞের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন- মেট্রিল সাধারণত পাতলা পায়খানা উপশমের জন্য খাওয়া হয়। কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া কেউর ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে এই ঔষধ ব্যবহারের কথা না। মেট্রিল অতিরিক্ত সেবনের ফলে সাইডইফেক্ট হয়। সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ঔষধ কোন রোগীকে দেওয়া হয়না।
এবিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। এলাকায় এসে বিষয়টি জানতে পেরে কমিটির সদস্যরা বসে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে এই ঘটনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যথায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
স্থানীয়রা জানায়- আশ্রাফ আলী একজন পল্লী চিকিৎসক সে বিগত প্রায় ১৮ বছর আগে এই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন দুর্নিতির অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু ২০২০ সালে মাদ্রাসা পরিচালনায় নতুন কমিটি করার পর। সে আবারো শিক্ষকতা শুরু করেন, কিন্তু তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে স্থানীয়রা সন্দেহ প্রকাশ করেন। স্থানীয়রা আরো বলেন- পূর্বেও ভুলভাল চিকিৎসা ও মেয়াদউর্ত্ত্বীর্ণ ঔষধ বিক্রির কারণে জেল খেটেছেন।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- বিষয়টি আমি এলাকাবাসীর মাধ্যমে জেনেছি। জানার পর ওই ছাত্রের সাথে কথা বলে জানতে পারি আশ্রাফ আলী এই কাজটি করিয়েছে। তারপর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে বিষয়টি অবগত করি এবং থানায় একটি জিডি করতে বলি। এখনো কেন থানায় জিডি করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন- মাদ্রাসা কমিটি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এদিকে ইউপি সদস্য ও অভিভাবক জানান, আমার ৪সন্তানের মধ্যে ৩জন এই মাদ্রাসা থেকে পড়ালেখা করে বর্তমানে ১জন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১জন রাঙ্গামাটিতে, ১জন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় অধ্যায়ন করেছে এবং আরেকজন বর্তমানে এই মাদ্রাসায় পড়ছে। যদি এমন ঘটনা শিক্ষার্থিদের সাথে ঘটতো তাহলে হয়তো অনেক মায়ের বুক কালি হতো। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবী জানাচ্ছি। অন্যান্য অভিভাবকরাও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
ভিকটিম ওবাইদুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- আমি হাসপাতাল থেকে বর্তমানে রিজার্ভমুখ খানকায় অবস্থান করছি। তার সাথে কথা বলার জন্য প্রতিবেদক খানকায় পৌঁছানোর আগেই সে ঐখান থেকে কেটে পরে। পরে বার বার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বিভিন্ন অযুহাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এলাকাবসী জানান অভিযুক্ত আশ্রাফ আলী ঘটনার পর থেকে রাঙামাটি অবস্থান করছে। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
স্থানীয় এলাকাবাসী আঞ্জুমান ও জেলা গাউসিয়া কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।