বিনোদন ডেস্ক :: ভারতীয় ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনিকে এবার নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে। আইপিএল-এ নিয়মিতই চেন্নাই কিংসের হয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি।
কিন্তু এবার চেন্নাইয়ের রাজ্য তামিলনাড়ুর জন্য কিছু করতে যাচ্ছেন ধোনি।
জানা যায়, তামিল সিনেমা প্রযোজনা করছেন ধোনি। আর এই সিনেমায় নায়িকা হিসেবে অভিনয় করতে যাচ্ছেন ভারতের দক্ষিণী সিনেমার নারী সুপারস্টার নয়নতারা।
এছাড়াও ‘অথর্ব’ নামের এক পৌরাণিক ওয়েব সিরিজেও নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক। রমেশ তামিলমানি রচিত ওই সিরিজও প্রযোজনা করবে ধোনির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ধোনি এন্টারটেইনমেন্ট’।
২০১৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল ধোনির বায়োপিক ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। সিনেমাটি ব্যাপক প্রশংসিত ও ব্যবসা সফল হয়। যেখানে ধোনির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত সুশান্ত সিং রাজপুত।
এদিকে শিগগিরই বলিউডে অভিষেক হতে যাচ্ছে নয়নতারার। বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করবেন তিনি।
চট্টগ্রাম: নগরের ফয়’স লেকে এমিউজমেন্ট পার্ক এবং সি ওয়ার্ল্ড গত দুই বছরে চারটি ঈদ আর দুটি পহেলা বৈশাখে বন্ধ ছিল করোনা মহামারীর কারণে। এবছর সেই অবস্থা নেই।
শিশুদের জন্য যোগ হয়েছে টয় ট্রেন। রাইডগুলোতে লেগেছে নতুন রঙ। মেরি গো রাউন্ডের ঘোড়াগুলোর বাহারি রঙে নজর কাড়ছে সবার। লেকের ধারে ওয়াকওয়েতে ফুটে উঠেছে রঙিন নকশা। নৌভ্রমণের জন্য আছে ১০টি নৌযান।
কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ঈদের পরদিন থেকে সাতদিনে মোট ৩৫-৪০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে আশা করছি। ঈদে থাকছে ডিজে শো। গত দুইবছর মহামারীর কারণে মানুষ ঈদে কোথাও বেড়াতে পারেনি। আমরা প্রস্তুত দর্শনার্থীদের বরণ করে নিতে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা রিসোর্ট ও বাংলো বুকিং দিয়েছেন।
এই বিনোদন কেন্দ্রের পাশে জেলা প্রশাসন পরিচালিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা মানুষের বিনোদনের বিশেষ আকর্ষণ। সেখানেও ঈদের সময় চার-পাঁচদিনে ৬০-৭০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে আশা করছেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ।
কাজীর দেউড়ির শিশু পার্কের রাইডগুলোতেও লেগেছে নতুন রঙ। পার্ক পরিচালনাকারী ওয়ান্ডার ল্যান্ডের জিএম মো. নাছির উদ্দিন জানান, গত দুই বছরের মধ্যে প্রায় এক বছর পার্ক বন্ধ ছিল। এবার ঈদে জনসমাগম হলে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।
নগরের বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্স পরিচালনাকারী ওয়েল এন্টারপ্রাইজের জিএম মো. আলী জনি বলেন, ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। এখানে সব রাইড সংস্কার করা হয়েছে।
এছাড়াও কর্ণফুলী নদীর তীর, কাট্টলী সৈকত, সিআরবি, ওয়ার সিমেট্রিতেও ভিড় হবে ঈদের ছুটিতে।
ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আসেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এবার দর্শনার্থীদের চাপ থাকবে। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব বিনোদন কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ সদস্যরাও টহলে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার ভোরের সোনালি আভায় ছায়ানটের আয়োজনে রমনা বটমূলে বঙ্গাব্দ ১৪২৯ কে বরণ করে নিয়েছে বাঙালি; যে জায়গাটি ষাটের দশকের শেষভাগ থেকে বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
পুরুষদের কেউ কেউ পাঞ্জাবি-পাজামা আর নারীদের অনেকে লাল-সাদা শাড়ির সঙ্গে খোঁপায় ফুল জড়িয়ে হাজির হয়েছিলেন রমনায়; আলপনায় কপোল রাঙিয়ে বাবা-মায়ের হাত ধরে প্রাণের মেলায় এসেছিল শিশুরাও।
দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বটমূলে ঘটে প্রাণের সঞ্চার; কবিগুরুর ‘নব আনন্দে জাগো’ বাণীকে এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য করেছিল ছায়ানট।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা বলেন, “এবার আমরা নব আনন্দে জাগবার আহ্বান জানাচ্ছি। দুই বছর কারাবন্দির মত একটা অবস্থা ছিল, সেই অবস্থা থেকে একটা স্বস্তির অবস্থায় এসেছি।
“নতুন করে আবার বটমূলে ফিরতে পেরেছি। সবাইকে নিয়ে আজকে যে প্রাণের মেলা হয়েছে, আমি মনে করি, মানুষের মনের ভেতরের আনন্দের কথা সঞ্চারিত হয়েছে।”
লাইসা আহমেদ লিসার ভাষায়, কোনো বাধায় বাঙালির প্রাণের উচ্ছ্বাস দমানো যায় না; মহামারীর শঙ্কা কাটিয়ে, সাম্প্রদায়িকার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে মানুষের ঢল নেমেছে বটমূলে।
“এটা আমরা জানি, এরকম জোয়ার হবে। হয়ত নানান ভয় থাকতে পারে, কিন্তু মানুষের প্রাণের উচ্ছ্বাস, উদ্যম দমানো যায় না। এটাই আমাদের বিশ্বাস ছিল।”
বৈশাখের প্রথম সকালে বৃহস্পতিবার রমনা বটমূলে গানে গানে নতুন বছরকে স্বাগত জানান ছায়ানটের শিল্পীরা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
স্বাস্থ্যগত কারণে এবারের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন না ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সনজীদা খাতুন; তার কণ্ঠে ধারণ করা রবীন্দ্রসংগীত ‘নব আনন্দে জাগো’ এর অংশবিশেষ বাজানো হয় মঞ্চে।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, “বাঙালির জীবনে নববর্ষের আয়োজন একমাত্র অসাম্প্রদায়িক আয়োজন, সকল ধর্মের মানুষের বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করা- এই সত্যটি বাঙালির জীবনে যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, সমাজে যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। সেটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।”
তিনি বলেন, “হৃদয়ে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে মানবিক সমাজ গঠনে আমাদের প্রাণিত করে বাংলা নববর্ষ। এই প্রত্যয় অর্জনে অর্ধ শতাধিক বছর ধরে সুর ও বাণীর আবহে রমনা বটমূলে আয়োজিত হচ্ছে বাঙালির মিলন মেলা।
“অতিমারীর কারণে গত দুটি বছর আর্থিক ও সামাজিক বিপর্যয় এবং স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে আমরা গৃহবন্দি ছিলাম। দুঃসময় পেরিয়ে এবার নব আনন্দে জাগ্রত হওয়ার আয়োজন করেছে ছায়ানট।”
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসসহ অনেকে এসেছিলেন ছায়ানটের এ আয়োজনে।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনের রথী মহারথীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ যোগ দিয়েছে এ উৎসবে।
ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াৎ হোসেন বললেন, এর আগে দুইবার বটমূলের বৈশাখী আয়োজনে আসার ইচ্ছা থাকলেও পারেননি; এবারই প্রথমবার এসেছেন।
“আমি ভেবেছিলাম, এবার হয়তো তেমন জনসমাগম হবে না। কিন্তু এসে ধারণা বদলে গেছে। পরিচিত অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে। একসঙ্গে গান শুনলাম; খুব ভালো লেগেছে পুরো আয়োজন।”
লাল পারের সাদা শাড়ি পরে রমনায় এসেছিল দেড় বছরের রুপন্তি; সঙ্গে তার বাবা শফিক মাহমুদ ও মা তাসনিম মাহমুদ।
মিরপুরের বাসিন্দা শফিক মাহমুদ বললেন, “বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে মেয়েকে নিয়ে এসেছি; গতবারও আসার খুব ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এবার আর মিস করিনি।”
বৈশাখের প্রথম সকালে বৃহস্পতিবার রমনা বটমূলে গানে গানে নতুন বছরকে স্বাগত জানান ছায়ানটের শিল্পীরা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
রমনার খোলা হাওয়ার ভোরে রাগ রামকেলি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান ছায়ানটের শিল্পীরা। পরে সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসংগীত ‘মন, জাগো মঙ্গল লোকে’।
পৌনে ৯টা পর্যন্ত ছায়ানটের ৮৫ শিল্পীর অংশগ্রহণে মোট ৩৭টি গান-আবৃত্তি পরিবেশিত হয়; শোনানো হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, রজনীকান্ত সেন, অতুলপ্রসাদ সেন, দিজেন্দ্রলাল রায়, লালন সাঁইসহ আরও অনেকের গান।
লাইসা আহমেদ লিসা ‘গাও বীণা, বীণা গাও রে’, খায়রুল আনাম শাকিল ‘আনো আনো অমৃত বারি’, শাহীন সামাদ ‘অন্তরে তুমি আছ চিরদিন’ গেয়ে শোনান।
রাগ তোড়ি কণ্ঠে তোলেন বিটু কুমার শীল, রাগ ভৈরবী পরিবেশন করেন অভিজিৎ কুণ্ডু। আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ডালিয়া আহমেদসহ অনেকে।
ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষ হতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ দুটো আয়োজন এখন বাঙালির বর্ষবরণের অত্যাবশ্যক অনুসঙ্গ।
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ করোনা প্রতিরোধে দীর্ঘ প্রায় ৫মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে ২১ আগস্ট (শুক্রবার) থেকে বান্দরবানের সকল পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে বান্দরবানের জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসনে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হোসেন। মহামারী দূর্যোগ করোনা মোকাবেলার জন্য প্রায় পাঁচ মাস ধরে পর্যটন বন্ধ রয়েছে, তাতেই বিরাট ক্ষতির মুখে পরেছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা, অবশেষে জেলার পর্যটন শিল্পের কথা ভেবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগামী শীত মৌসুমকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার থেকে বান্দরবানে সব সরকারি-বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়া হবে। সবুজ অরণ্যে ঘেরা সৌন্দর্যের অপরুপ জেলা বান্দরবান। যেখানে রয়েছে মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, বৌদ্ধ জাদি, চিম্বুক, শুভ্রনীলা, থানচির রেমাক্রি, নাফাকুম, রুমার বগালেক, কেউক্রাডং, লামার মিরিঞ্জা, আলীকদমের আলীর সুড়ঙ্গসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট। পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ার পর স্পটগুলোতে বাড়বে পর্যটকের সংখ্যা, এমন মত সংশ্লিষ্টদের। এই ব্যাপারে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বান্দরবানের পর্যটনস্পটে পর্যটকদের প্রবেশ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কড়া নজরদারি থাকবে, মাস্ক ছাড়া কাউকে পর্যটন কেন্দ্র ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে গত ১৮মার্চ থেকে জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। জেলায় ৬০টি হোটেল মোটেল রয়েছে, আর পর্যটকবাহী যান রয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক, এই পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত জেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ যেকোন সরকারি বন্ধে, পূজা ও ঈদের ছুটিতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, বগালেক, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, নীলগীরি, নীলদিগন্ত সহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরতে যায় অসংখ্য দেশি বিদেশি পর্যটক। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখায় বান্দরবানের পর্যটকদের আগমন ঘটেনি। পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মুলফটকে লাগানো হয়েছে তালা আর কর্র্মচারীরা পার করছে অলস সময়। পর্যটক না থাকায় বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে বিরাজ করছে শুনসান নীরবতা। বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্র্যটনকেন্দ্র মেঘলা ঘুরে দেখা যায় প্রতিবছর এসময়টা পর্যটনকেন্দ্রে অসংখ্য পর্যটক থাকলে ও এবারে কোন পর্যটক নেই বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে টিকেট কাউন্টার রাখা হয়েছে বন্ধ। পর্যটনকেন্দ্র মেঘলার তত্বাবধায়ক সুকুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার জন্য নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাই এবারে সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ। সুকুমার তঞ্চঙ্গ্যা আরো জানান,আমাদের এই পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমনে প্রতিদিনই অনেকে মূল ফটকের সামনে আসে কিন্তু অনুমতি না থাকায় আমরা কাউকে প্রবেশ করে ভ্রমন করতে দিই না। বান্দরবানের আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদের বন্ধে বান্দরবানের প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়, কিন্তু এবারে বান্দরবানে কোন পর্যটক নেই, আর আমাদের সব ব্যবসা বন্ধ হয়ে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায় একেবারে ধস নেমে এসেছে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল হিলভিউ এর জেনারেল ম্যানেজার মো: সুলতান বলেন, করোনায় আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আমাদের বান্দরবানের সকল হোটেল মোটেল বন্ধ থাকায় অনেক কর্মচারী বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে, পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা নতুন ব্যবসার চিন্তা করছে। এদিকে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হোসেন জানান, কোরবানীর ঈদে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হলে ও শীঘ্রই বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র ও সকল আবাসিক হোটেল মোটেল খোলা হবে এবং বান্দরবান ভ্রমনে পর্যটকরা আরো বেশি আনন্দ পাবে। তিনি আরো জানান,বান্দরবানে দীর্ঘদিন লকডাউন ছিল আর বন্ধ ছিল যানবাহন চলাচল, তবে এখন শুধু পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল মোটেল বন্ধ। বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হোসেন আরো জানান, বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এই বন্ধে আরো নিত্যনতুন কাজ করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে এবং দেশী বিদেশি প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে। প্রসঙ্গত, গত ৮মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার ১০দিন পর ১৮মার্চ থেকে বান্দরবানের সকল আবাসিক হোটেল মোটেল ও পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় বান্দরবান জেলা প্রশাসন আর সেই থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে বান্দরবানের সকল আবাসিক হোটেল মোটেল ও পর্যটনকেন্দ্র।
॥ ডেস্ক রির্পোট ॥ ‘আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রাম, হাওর ও চরাঞ্চলসহ দেশের প্রত্যন্ত সব এলাকায় বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিতে হবে। যেখানে সরাসরি বিদ্যুতের লাইন টানানো সম্ভব হবে না, সেখানে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে’ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে সংযুক্ত হন তিনি। বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ অন্যান্য মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সভায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, জমির মালিকানা নিষ্কণ্টক হতে হবে। এ জন্য ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করা জরুরি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জমি সুরক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। মোট কথা ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে।
এ সময় স্থানীয় সরকারকে ঢেলে সাজানোর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা দরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের টাকায় পথ চলতে বলেছেন। নিজেদের টাকায় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ দেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ প্রল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সরকারি তহবিল থেকে এ প্রকল্পের সব ব্যয় মেটানোর সুপারিশ করেন।
সরকারের তহবিল থেকে বরাদ্দ চেয়ে মেয়র বলেন, এবার আমাদের টাকা নেই। এ প্রকল্পের সব টাকা দিয়ে দেন। পরবর্তীতে আমাদের সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবো।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা (ডিএনসিসি) স্থানীয় সরকারের আওতায়। আপনারা নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। রাজস্ব আদায় করতে পারছেন না কেন? উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন- এগুলো স্থানীয় সরকারের আওতায়। এখন আমাদের সময় এসেছে এগুলো (স্থানীয় সরকার) ঢেলে সাজানোর। একদিকে এরা বলে, আমরা (স্থানীয় সরকার) স্বাধীন, অন্যদিকে আবার টাকা ওঠাতে পারে না। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সহায়তা চায়। এই দুইটাতো একসঙ্গে চলতে পারে না। আপনি যদি স্বাধীন হন, তাহলে স্বাধীনভাবেই চলেন। স্থানীয় সরকারের চলমান পদ্ধতি দীর্ঘ দিনের, এটা এখন ঢেলে সাজাতে হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিডের কারণে টাকা শর্টেজ হবে, তারপরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে, ব্যয় সাশ্রয় করতে হবে। এমনকি গাড়ি কেনার বিষয়েও একটা বিধি-নিষেধ এসেছে। আগে আমরা সভা-সমিতি করতাম, চা-কেক খেতাম, কিন্তু (ব্যয় কমাতে) এখনতো আমরা সবাই এমনটি করি না। আমরাতো এখন সভা করি ডিজিটালি, যার যার ঘরে বসে। সুতরাং এখানেও অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। প্রকল্পের কাজে বিদেশে যেতে হতো, এখন প্রয়োজন হয় না। গাড়ি-ঘোড়া ক্রয়, বিদেশ ভ্রমণসহ সব ব্যাপারে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে।
এদিন বৈঠকে দেশের যত্রতত্র সেতু নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন এমন একটি পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, জনপ্রতিনিধিরা সবাই ঘরে ঘরে বা বাড়ির সামনে একটি করে সেতু চান। কিন্তু এতে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দুই দিক থেকেই ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখন অনেক সেতু হয়েছে। আর লাগবে না। তাই এখন থেকে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। সেতু এভাবে বানাতে থাকলে নদী মরে যাবে।
এ ছাড়া তিনি যত্রতত্র সেতু নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, জনপ্রতিনিধিরা সবাই ঘরে ঘরে বা বাড়ির সামনে একটি করে সেতু চান। এতে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দুই দিক থেকেই ক্ষতি হয়।
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পর্যটন খাতে। পর্যটন মৌসুমে প্রচুর পর্যটক আসলেও এবার উল্টো চিত্র। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর পরই কমে গেছে বান্দরবানে পর্যটকের আগমন। পর্যটকরা অগ্রীম বুকিং বাতিল করে দিয়েছে, কমে গেছে বিকিকিনি, এতে লোকসান শুনছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে অনিদিষ্টকালের জন্য বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন, এতে পর্যটক শূন্য হয়ে গেছে তিন পার্বত্য এলাকায়। এতে বেকার হয়ে গেছে পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্টরা। পার্বত্য এলাকায় পাহাড়, ঝিরি, ঝরনা ও উপত্যকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম। পর্যটন মৌসুমে প্রতিবছরই ব্যাপক পর্যটকের সমাগম হয়। তবে এভাবে করোনা ভাইরাস আতংকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই খাতে। জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাহাড়ে প্রচুর পর্যটক সমাগম হলে এখন প্রায় পর্যটক শূন্য। বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, স্বর্ণ মন্দির, রামজাদি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নীলদিগন্ত, বগালেকসহ বিভিন্ন দর্শনীয় কেন্দ্রগুলোতে এখন সুনসান নিবরতা। করোনায় বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে কম আসায় লোকসান গুনছে পরিবহন শ্রমিকরা। বান্দরবানের পর্যটকবাহী যান চালক মো. আলমগীর বলেন, ‘‘করোনার কারণে পর্যটক কমে গেছে। প্রতিদিন কমপক্ষে এসময়টা ৫০ টা চান্দের গাড়ি নীলগীরিতে যেত এখন সব বন্ধ, ভাড়ায় চালিত সিএনজি যেত ২০ থেকে ২৫ টা। এখন পর্যটক নিষিদ্ধ করায় কোন আয় নেই। ’ বান্দরবানের পর্যটকবাহী যান চালক আবুল কাসেম বলেন, “প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক আসলেও এবার করোনায় বান্দরবানে কোন পর্যটক আসেনি। বান্দরবানের আবাসিক হোটেল হিলভিউ এর জিএম সুলতান নাফিজ জানান ‘প্রতিবছর এসময়টা বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক সমাগম হলে ও এবার পর্যটক নেই। যারা সামনের ছুটিতে বেড়াতে আসার কথা তাদের আসার সম্ভাবনা কম। এই নিষেধা জ্ঞা লম্বা হলে লোকসান গুনতে হবে আমাদের সবাইকে। বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শামীম হোসেন বলেন,‘ প্রানঘাতি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে বান্দরবানের সকল বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তিনি আরো বলেন, স্থানীয়দের সুরক্ষায় এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে’।
ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই প্রতিনিধি : পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে অবস্থিত কাপ্তাই উপজেলা। কাপ্তাইয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম লেক, রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, পাহাড়ের পাশে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা শীতল জলের কর্ণফুলী নদী, নদী ধারে গড়ে উঠা অনেক পর্যটন কেন্দ্র।
প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে পর্যটকের ঢ়ল নামলেও এইবার পর্যটক শূণ্য হয়ে হাহাকার করবে পর্যটন কেন্দ্র গুলো। অবশ্য ইতিমধ্যে বিশ্ব করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধ করতে গিয়ে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক গত ২৫ মার্চ থেকে দেশের সবধরনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। প্রাকৃত্তিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাপ্তাইয়ে রয়েছে অনেক জনপ্রিয় পর্যটন স্পটসমূহ যেখানে কাপ্তাই ছাড়াও রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকের আগমন ঘটতো ঈদ উপলক্ষে। কিন্তু এইবার যেন অন্য রকম একটা সময় যেটি এর আগে কখনও কাপ্তাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ইতিহাসে আসেনি। কারণ এই প্রথম ঈদে পর্যটক শূণ্য হয়ে হাহাকার করবে কাপ্তাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলি। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনের আনন্দে প্রাণ ফিরে পেলেও এইবার সেই স্পট গুলো পর্যটক শূণ্য হয়ে থাকবে প্রাণহীন।
আর শুধু তাই নয় এই ঈদ উপলক্ষেই পর্যটকের আগমনে অনেক টাকা আয় হতো কাপ্তাই পর্যটনকেন্দ্র গুলোর। কিন্তু এইবার আয় তো হচ্ছেই না বরং করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে পর্যটন কেন্দ্র গুলো প্রায় ২ মাসের অধিক সময় বন্ধ থাকার ফলে গুনতে হচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি। যার প্রভাব বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কাপ্তাই উপজেলায় বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম কাপ্তাই প্রশান্তি পার্ক, জুম রেস্তোরা, বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্র, লেক প্যারাডাইস, লেকশোর পিকনিক স্পট, জীপতলি পিকনিক স্পট, বেরাইন্না লেক, লেকভিউ আইলেন্ড সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় পর্যটন স্পট।
কাপ্তাই শিলছড়ি বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্হাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রুবাইয়াৎ আক্তার জানান, করোনা ভাইরাসের ফলে প্রায় ৩ মাস হলো বনশ্রী সহ কাপ্তাইয়ে সব কয়টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। প্রতি বছর ঈদে কাপ্তাইয়ে হাজার হাজার পর্যটক কাপ্তাইয়ে আসতো। এবার সেই সম্ভাবনা নেই, ফলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। তিনি জানান, ঝড়ো হাওয়ায় কর্নফুলির নদীর ধারে অবস্হিত বনশ্রীর কটেজ গুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে কাপ্তাই বালুচরে অবস্হিত প্রশান্তি পিকনিক স্পট এর পরিচালক কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন জানান, কাপ্তাইয়ের অপরুপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটন মৌসুম ছাড়াও সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা হতো। বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢ়ল নামতো। কিন্ত এই বার করোনার প্রকোপে পর্যটক শূণ্য থাকবে কাপ্তাই। ফলে আমরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হবো।
কাপ্তাই ফোরামের এডমিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন জানান, নয়নাভিরাম কাপ্তাই লেক, কর্নফুলি নদী, পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কেপিএম মিল, সীতাপাহাড়, ওয়াগ্গা চা বাগান, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার সহ কাপ্তাইয়ের প্রতিটি পড়তে পড়তে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য্য। তাই তো সারা বছর কাপ্তাইয়ে পর্যটকের আনাগোনা থাকতো, কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপে কাপ্তাই পর্যটন শূণ্য থাকবে।
একদিন সেই মেঘ কেটে যাবে, আবার উঠবে সোনালী সূর্য্য, আবার কোলাহল হবে কাপ্তাইয়ের প্রতিটি বিনোদন স্পট- সকলের সেই প্রত্যাশা।
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ করোনার প্রভাবে গেল কয়েকদিনের টানা বন্ধে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে হুমকির মুখেপড়েছে পর্যটনশিল্প। লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি হওয়াতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে জেলার পর্যটনখাত, ক্ষতি পুষিয়ে আগামী দিনে নতুনভাবে এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনার আবেদন জানিয়েছে জেলার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। করোনা সংক্রামক প্রতিরোধে গত ১৮মার্চ থেকে বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় বান্দরবানের জেলা প্রশাসন, আর এই লকডাউনের কারণে জেলার পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল মোটেল আর পর্যটকবাহী যান চলাচল সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে পর্যটন জেলা বান্দরবানে লকডাউনের কারণে পর্যটনশিল্পের সাথে জড়িতরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে, পর্যটন শিল্প নিয়ে যারা আয় রোজগার করে সংসার চালাতো দীর্ঘ বন্ধে তাদের সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব আর অনটন। বান্দরবানে পর্যটকবাহী গাড়ীর চালক মো: কামাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা গাড়ী চালাতে পারছি না, তাই আমাদের আয় নেই, আমরা অনেক কষ্টে দিনযাপন করে যাচ্ছি। বান্দরবানে পর্যটকবাহী গাড়ীর চালক বাপ্পী বড়–য়া বলেন, পর্যটন জেলা বান্দরবানে আমরা পর্যটকদের নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করি। পর্যটক আসলে আমরা তাদের গাড়ী করে বিভিন্ন পর্যটনস্পটে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সময় ব্যয় করি এবং ভালো আয় করে জীবনযাপন করি কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে করোনার কারণে আমাদের আয় নেই আমরা অসহায় হয়ে জীবনযাপন করছি। বান্দরবান মাইক্রোবাস জীপ কার শ্রমিক ইউনিয়নের আহবায়ক মো: আলমগীর বলেন, করোনায় আমাদের প্রায় ৪শত পর্যটকবাহী গাড়ী বন্ধ রয়েছে আর এই কারণে এই পেশার সাথে জড়িতদের পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। মো: আলমগীর আরো বলেন, আমরা এই করোনা সংকটে বান্দরবানের কিছু সংগঠন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামান্য পরিমান ত্রাণ পেয়েছি যা দিয়ে আমাদের পরিবারের এই দু:সময় কেটে ওঠানো সম্ভব নয়। লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হোটেল মোটেল ব্যবসায়ীরা আর এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনার আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা। বান্দরবানের আবাসিক হোটেল হিলভিউ এর জিএম মো: সুলতান নাফিজ বলেন, করোনায় আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিমাসে আমাদের হোটেল ব্যয় প্রায় ২০লক্ষ টাকা, কিন্তু এখন করোনায় লকডাউনের কারণে পর্যটক না আসায় আমরা এই ক্ষতি কিভাবে মেটাবো তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ বলেন, করোনায় বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্প। এই বান্দরবান জেলার অধিকাংশ জনসাধারণ পর্র্যটন শিল্পের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে কিন্তু এই করোনায় সবাই বেকার এবং আয় বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে তাদের কষ্ট হচ্ছে। বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ আরো বলেন, আমাদের বান্দরবানের অধিকাংশ ব্যবসায়ীই পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, তাদের কেউ কেউ আবার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে হোটেল-মোটেল নির্মাণ এবং উন্নয়নে কাজ করলে ও এমন স্থবির পরিস্থিতির কারণে তাদের অনেকে বর্তমানে লোকসান গুনছে, তাই সরকারিভাবে বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক ও সংশ্লিষ্টদের জরুরীভাবে প্রণোদনা প্রদান করলে এই শিল্পের সাথে জড়িতরা এগিয়ে যেতে পারবে বলে আমি আশা করি। এদিকে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম জানায়, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারিভাবে বিভিন্ন রকমের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে এবং আগামীতে ও এই সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। জেলা প্রশাসক আরো জানায়, বর্তমান সরকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং আগামীতে সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা প্রদান করা হলে আমরা তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো। বান্দরবান জেলায় ৬০টি হোটেল মোটেল রয়েছে আর পর্যটকবাহী যান রয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক আর এই পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত জেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়ি ভ্রমণে বিদেশি পর্যটকে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে একই সঙ্গে দেশি পর্যটকদের খাগড়াছড়িতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়।
বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।
কোন বিদেশি পর্যটকদের খাগড়াছড়ি ভ্রমণের অনুমতি আপাতত দেওয়া হবে না জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলা প্রশাসককে আহবায়ক ও সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জাতীয় কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করবে।
করোনা ভাইরাস যেহেতু সংক্রামক তাই দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এই সময়ে পর্যটকরা যাতে খাগড়াছড়িতে না আসেন সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জনস্বার্থে ও নিজের স্বার্থে আপাতত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, খাগড়াছড়ির কোন বাসিন্দা যদি বিদেশ থেকে আসে তাহলে তাকে অবশ্যই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকছে কিনা সেটি আমরা মনিটরিং করবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় শিশুদের বাসায় রাখার পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
পুরো জেলায় ৮০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেড এবং অন্য উপজেলাগুলোতে মোট ৫০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এদিকে ভারত ফেরত পাঁচ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
খাগড়াছড়ির ডেপুটি সিভিল সার্জন মিটন চাকমা জানান, খাগড়াছড়ি একটি পর্যটন এলাকা। এ জেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকেও মানুষ যাতায়াত করে। তাই খাগড়াছড়ির করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়াটা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। একমাত্র স্থানীয়দের সচেতনতা করোনা থেকে নিরাপদ রাখতে পারে। বিদেশ থেকে আসা খাগড়াছড়ির বাসিন্দাদের প্রথমে হাসপাতালে আসার আহ্বান জানান তিনি।