
॥ এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামা ॥ বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বুধবার সরকারী সফরে লামা উপজেলা পরিদর্শন করেছে। তিনি এ সময় লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলিয়ে উপস্থিতি এবং উপজেলা হল রুমে লামা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মিরিঞ্জা ভ্যালীর মেঘ ও পাহাড়ের নিবিড় আলিঙ্গন ভ্রমণপিপাসুদের দারুন একটা স্পট। পাহাড়, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী এই তিন শ্রেণির পরিব্রাজকদের জন্য সেরা গন্তব্য এখন বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড়। অনেকে মিরিঞ্জাকে দ্বিতীয় সাজেক বলছেন। অতি অল্প সময়ে মিরিঞ্জা দেশের পর্যটনখাতে হটস্পট হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। সারা দেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়লেও মিরিঞ্জাতে টুরিস্টদের জন্য সেইভাবে সুযোগ সুবিধা এখনো গড়ে উঠেনি। এখানে পানি, রাস্তা, বিদ্যুৎ ও ময়লা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা জরুরি। এইসব জরুরি নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কাজ করবে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় লামার পর্যটন মিরিঞ্জা ভ্যালি পরিদর্শনকালে এইসব কথা বলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই।
অধ্যাপক থানজামা লুসাই লামার মিরিঞ্জা পৌঁছালে লামা পর্যটন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা ঊনাকে এবং তাঁর সফরসঙ্গী জেলা পরিষদের সদস্যদের লাল গালিচার মাধ্যমে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিতা কেটে মিরিঞ্জা ভ্যালি এলাকার শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, ম্যা ম্যা নু, এ্যাডভোকেট উবাথোয়াই মার্মা, এ্যাডভোকেট মাধবী মার্মা, খুরশিদা ইসহাক, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রূপায়ণ দেব, লামা পর্যটন মালিক সমিতির আহবায়ক- দেলোয়ার হোসেন রফিক, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব সাদেকুল মাওলা ইরাকসহ প্রমূখ।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরো বলেন, মিরিঞ্জা ভ্যালির মেঘ ও পাহাড়ের নিবিড় আলিঙ্গন ভ্রমণপিপাসুদের বারবার মনে করিয়ে দেয় সাজেকের কথা। এখানকার জুমঘরগুলোর যে কোনোটিতে একটি রাত কাটানো সারা জীবনের জন্য অবিস্মরণীয় এক স্মৃতি হয়ে থাকবে। সবুজ বনে আচ্ছাদিত সুবিশাল পাহাড় আর সীমান্তরেখায় সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি ট্রেকিংয়ের ক্লান্তিকে নিমেষে ভুলিয়ে দেয়। মিরিঞ্জাকে পরিকল্পিত একটি পর্যটন স্পট করতে সামগ্রিক কাজ করবে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ।
লামা পর্যটন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাইকে পর্যটন এলাকায়, রাস্তা, বিদ্যুৎ, ময়লা নিষ্কাশন, পানির ব্যবস্থাসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য লিখিত আবেদন করা হয়।
এদিকে দুপুরে লামা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই মহোদয়ের মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়। বিকেলে চেয়ারম্যান লামা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা পরিদর্শন করবেন।
বান্দরবান মেঘলাস্থ সরকারী বাসভবন হতে ফাসিয়াখালী হয়ে লামা উপজেলার উদ্দেশ্যে বান্দরবান সদর ত্যাগ উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা এলাকায় অবস্থিত জীনামেজু টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট ও আশ্রমে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
এ কার্যক্রম শেষ লামা পর্যটন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই কে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় লামার মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকায় রাস্তা, বিদ্যুৎ, ময়লা নিষ্কাশন, পানির ব্যবস্থা সহ উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণে আবেদন আশ্বাসদেন।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলিয়ে উপস্থিতি এবং উপজেলা হল রুমে লামা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগদান দেন।
মতবিনিয় সভাশেষে লামা উপজেলায় পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তিনি বিকালে লামা ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার এতিমখানার শিশুদের শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগদান।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই আগামীকাল বৃহস্প্রতিবার আলীকদম উপজেলা সফর করবেন। তিনি রাতে বাত্রিযাপন করবেন লামা ব্রিটিশ আমেরিকা টোবাকো রেস্টহাউজে।