ঢাকা অফিস :: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা তৈরি করে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম অনুকূলে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অন্তর্ভূক্তিমূলক ডিজিটাল অর্থনীতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অবদান’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম তুলনামূলক একটু বেশি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টেলিটকের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা তৈরি করে সেটিও গ্রাহকের স্বার্থের অনুকূলে আনার চেষ্টা আমরা করছি। ইতোমধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের আনলিমিটেড প্যাকেজ চালু হয়েছে। টেলিটক এটি প্রথম শুরু করে এবং অন্য অপারেটররাও সেটা কার্যকর করেছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগাতে দক্ষ মানব সম্পদ অপরিহার্য। দেশব্যাপী উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি দক্ষ মানব সম্পদ এবং ডিজিটাল সংযোগ সহজলভ্য করতে সরকার কাজ করছে।
ইন্টারনেটের মূল্য সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম অনেক কম। ৬০ টাকায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। অথচ ২০০৬ সালে এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ৭৮ হাজার টাকা, ২০০৮ সালে ২৭ হাজার টাকা এবং বর্তমানে একদেশ এক রেটের আওতায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় মাত্র ৬০ টাকায়।
মন্ত্রী ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটকে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেবলমাত্র শহরের মানুষের জন্য নয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। দেশের ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগের আওতায় আসছে।
তিনি দেশে ইন্টারনেট প্রসারের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যা্ন্ড নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ৪জি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে ৫জি স্পেকট্রাম নিলাম করা হয়েছে এবং ৫জি চালু করা হয়েছে।
মোবাইলের কলড্রপ কমিয়ে আনতে অপারেটরগুলোকে সম্প্রতি অতিরিক্ত বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকরা এই সুবিধা পাবে।
তিনি একই সঙ্গে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কানেক্টিভিটির প্রসারের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, এখন মধুপরের পাহাড় বা হাওরে বসে ইন্টারনেটের সহায়তায় তরুণ-তরুণীরা বিদেশে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো মাত্র ৮ লাখ। ২০২০ সালে কোভিড শুরুর প্রাক্কালে দেশে ১০০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৪৪০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও প্রয়োগে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের ট্রেডবডিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
দেশে ডিজিটাল ডিভাইস বিশেষ করে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা প্রসঙ্গে মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে গত চার বছরে সরকারের প্রযুক্তি বান্ধব নীতি কাজে লাগিয়ে স্যামসাংসহ ১৪টি ব্র্যান্ডের মোবাইল কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৭০ ভাগ এই সব কারখানার উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি মোবাইল কারখানার পাশাপাশি ল্যাপটপ ও কম্পিউটার কারখানা স্থাপনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের বাংলাদেশ বিষয়ক সমন্বয়ক শহীদ উদ্দিন আকবরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমদ, অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের গ্লোবাল পলিসি বিষয়ক কর্মকর্তা এলিনোর এবং এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বয়কারী আনজু মাংগল বক্তব্য দেন।
॥ নজিস্ব প্রতবিদেক ॥ রাঙ্গামাটি র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে পরচিালনা র্বোডরে ৩য় সভা অনুষ্ঠতি হয়ছে।ে সোমবার (১ র্মাচ) সকাল ১১টার দকিে র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোড ‘পরচিালনা র্বোড’ এর ২০২০-২০২১ র্অথ বছররে ৩য় সভা স্বাস্থ্যবধিি মনেে রাঙ্গামাটস্থি র্বোডরে প্রধান র্কাযালয়রে র্কণফুলী সম্মলেন কক্ষে অনুষ্ঠতি হয়।
সভায় র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে চয়োরম্যান নব বক্রিম কশিোর ত্রপিুরা, এনডসি’ির সভাপতত্বিে আলোচ্য বষিয় ছলি (১) গত ১৮ নভম্বের, ২০২০ তারখিে অনুষ্ঠতি র্বোড সভার র্কাযববিরণী পাঠ ও অনুমোদন এবং গৃহীত সদ্ধিান্তরে অগ্রগতি র্পযালোচনা (২) ২০২০-২০২১ র্অথ বছরে র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোড র্কতৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহরে ২০ ফব্রেুয়ারি ২০২১ র্পযন্ত সময়রে অগ্রগতি র্পযালোচনা এবং (গ) ববিধি আলোচনা করা হয়।
শুরুতে র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে সদস্য পরকিল্পনা ও সদস্য প্রশাসন উপ সচবি ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী’র সঞ্চালনায় সভাপতি সূচনা বক্তব্য রাখনে এবং পরচিালনা র্বোড সভায় নবাগত ৯১তম রাঙ্গামাটি জলো প্রশাসকসহ উপস্থতি সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করনে। সভাপতরি অনুমতক্রিমে সদস্য প্রশাসন উপসচবি ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বগিত পরচিালনা র্বোড সভার র্কাযববিরণী পাঠ করনে, এবং গ্রহীত সদ্ধিান্ত সমূহরে বাস্তবায়ন অগ্রগতি বস্তিারতি উপস্থাপন করনে।
র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে বভিন্নি উল্লখেযোগ্য র্কাযক্রম সর্ম্পকে সভাপতরি বক্তব্যে চয়োরম্যান নব বক্রিম কশিোর ত্রপিুরা বলনে, জলবায়ু পরর্বিতন ট্রাস্ট এর র্অথায়নে ১ কোটি টাকার ব্যয়ে র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে প্রধান র্কাযালয় সৌর বদ্যিুৎ দ্বারা চল।ে পরবিশে বান্ধব এ প্রকল্প বাস্তায়নরে ফলে এখন জাতীয় বদ্যিুৎ গ্রীডরে উপর নর্ভিরশীলতা কমে আসছ।ে পাশাপাশি র্বোডরে প্রধান র্কাযালয়রে বদ্যিুৎ বলিও অনকে সাশ্রয় হয়ছে।ে রাবার প্রকল্পরে বষিয়ে তনিি আরো বলনে, ইতোমধ্যে যসেব রাবার গাছগুলো বয়স উর্ত্তীণ হয়ছেে কমটিরি মাধ্যমে চহ্নিতি র্পূবক সগেুলো র্কতন করা হবে এবং শূন্যস্থানে উপকারভোগীদরে জন্য বকিল্প জীবকিায়ন হসিবেে চা/মশ্রি ফলদ চারা কলম রোপন করা হব।ে
সভায় নর্বিাহী প্রকৌশলীগণ র্বোডরে আওতাধীন কোড নং ২২০০১১০০, ২২০০০৯০০ এবং পরকিল্পনা কমশিন র্কতৃক অনুমোদতি প্রকল্প/স্কমিসমূহরে ২০২০-২০২১ র্অথ বছরে বাস্তবায়নাধীন বভিন্নি উন্নয়নমূলক র্কমকান্ডরে অগ্রগতি পাওয়ার পয়ন্টে প্রজেন্টেশেনরে মাধ্যমে বস্তিারতি উপস্থাপন করনে। পরর্বতীতে র্পযায়ক্রমে উন্নত জাতরে বাঁশ উৎপাদন প্রকল্প, গাভী বতিরণ প্রকল্প, মসলা চাষ প্রকল্প, মশ্রি ফল চাষ প্রকল্প, র্পাবত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টকেসই সামাজকি সবো প্রদান প্রকল্প, খাগড়াছড়ি সদরে মাস্টার ড্রইেন নর্মিাণ, তনি র্পাবত্য জলোয় গ্রামীণ সড়ক ও পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রককল্পসহ বভিন্নি প্রকল্পরে প্রকল্প পরচিালকগণ সংশ্লষ্টি প্রকল্পরে অগ্রগতি অবহতি করনে।
র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে র্অথায়নে সন্টোর ফর এনভায়রনমন্টে এন্ড জওিগ্রাফকি ইনফরমশেন র্সাভসিসে এর কারগিরী সহযোগতিায় তনি র্পাবত্য জলোয় চলমান পানরি উৎসমুখ জরীপ র্কাযক্রম অগ্রগতি সর্ম্পকে আলোচনা করা হয়। এছাড়া র্বোডরে বভিন্নি গুরুত্বর্পূণ স্থাপনা সংস্কার, একজন আইনজীবি নয়িোগ, রাঙ্গামাটি অবতরণ জটেঘিাট নর্মিাণ, প্রকল্পরে নাম পরর্বিতন ও অনুমোদন প্রভৃতি বষিয়ে সদ্ধিান্ত গৃহীত হয়।
রাঙ্গামাটি নবাগত জলো প্রশাসক মোহাম্মদ মজিানুর রহমান বলনে, র্পাবত্য এলাকায় বভিন্নি কারণে স্কুল ঝরে পরার হার বশেী। তাই এ বষিয়ে বশিষে নজর রাখতে হব।ে এ প্রসঙ্গে র্বোডরে ভাইস চয়োরম্যান সরকাররে অতরিক্তি সচবি মোঃ নূরুল আলম নজিামী র্পাবত্য প্রত্যন্ত এলাকায় র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে শক্ষিা সম্প্রসারণরে ক্ষত্রেে অবদানরে বষিয়ে বলনে, র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোড টকেসই সামাজকি সবো প্রদান প্রকল্পরে মাধ্যমে তনি র্পাবত্য জলোয় ৪৫০০টি পাড়াকন্দ্রে নর্মিাণ করছে।ে সখোনে ৩-৬ বছররে বভিন্নি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সুবধিা বঞ্চতি ছলে-েময়েরো নজি মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমকি শক্ষিা গ্রহণরে সুযোগ পাচ্ছে এবং লখোপড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছ।ে
বান্দরবান র্পাবত্য জলো পরষিদ সদস্য ক্যসাপ্রু বলনে, ইদানংি বান্দরবান র্পাবত্য জলোয় অসাধু ব্যবসায়ী দ্বারা বশেী মাত্রায় পাথর উত্তোলন করা হচ্ছ।ে এর ফলে একদকিে যমেন পরবিশে বর্পিযন্ত হচ্ছে অনুরূপভাবে ঝরিি ঝর্রণাগুলোতে দনি দনি পানি শুকয়িে যাচ্ছ।ে এতে স্থানীয় জনসাধারণ ক্ষতগ্রিস্থ হচ্ছ।ে তাই পরবিশে রক্ষায় ব্রীজ/কালভাট/রাস্তা নর্মিাণরে সময় যাতে কোন স্থানীয় পাথর ব্যবহার না হয় এবষিয়ে সভাপতরি মাধ্যমে সংশ্লষ্টি সকলরে প্রতি অনুরোধ জানান।
এছাড়া র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে নজিস্ব জায়গায় র্আথ-সামাজকি উন্নয়নরে লক্ষ্যে খাগড়াছড়রি র্জামপ্লাজম সন্টোররে ন্যায় বান্দরবান র্পাবত্য জলোতে মশ্রি ফলজ বাগানরে প্রর্দশনী প্লট তরৈীসহ বভিন্নি প্রজাতরি পরবিশে বান্ধব বৃক্ষ রোপনরে বষিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় এ সময় র্পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোডরে ভাইস-চয়োরম্যান সরকাররে অতরিক্তি সচবি মোঃ নূরুল আলম নজিামী, সদস্য পরকিল্পনা ও সদস্য প্রশাসন উপসচবি ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, সদস্য-বাস্তবায়ন উপসচবি মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, রাঙ্গামাটি নবাগত জলো প্রশাসক মোহাম্মদ মজিানুর রহমান, বান্দরবান র্পাবত্য জলো পরষিদরে প্রতনিধিি সদস্য ক্যসাপ্রু, রাঙ্গামাটি র্পাবত্য জলো পরষিদরে প্রতনিধিি ইলপিন চাকমা, খাগড়াছড়ি র্পাবত্য জলো পরষিদরে প্রতনিধিি শুভমঙ্গল চাকমা, বান্দরবান র্পাবত্য জলোর পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পরে পরচিালক মোঃ আবদুল আজজি, খাগড়াছড়ি ইউনটি র্কাযালযরে নর্বিাহী প্রকৌশলী মোঃ মুজবিুল আলম, বান্দরবান ইউনটি র্কাযালয়রে নর্বিাহী প্রকৌশলী আবু বনি মোহাম্মদ ইয়াছরি আরাফাত, মশ্রি ফল চাষ প্রকল্পরে প্রকল্প পরচিালক মোঃ শফকিুল ইসলাম, টকেসই সামাজকি সবো প্রদান প্রকল্পরে প্রকল্প ব্যবস্থাপক পরকিল্পনা ও মূল্যায়ন জনাব মোহাম্মদ এয়াছনিুল হক, খাগাড়াছড়ি জলোর টকেসই সামাজি সবো প্রদান প্রকল্পরে জলো প্রকল্প ব্যবস্থাপক মতউির রহমান, রাঙ্গামাটি নর্বিাহী প্রকৌশলী চলতি দায়ত্বি তুষতি চাকমা, উপসচবি মংছনেলাইন রাখাইন, কাইংওয়াই ম্রো, গবষেণা র্কমর্কতা, বাজটে ও অডটি অফসিার মোঃ নুরুজ্জামান, মোঃ কামরুজ্জামান, সহকারী প্রকল্প পরচিালক মশ্রি ফল চাষ প্রকল্প, মোহাম্মদ খোরশদে আলম সমন্বয় র্কমর্কতা, মজি ডজী ত্রপিুরা তথ্য র্কমর্কতাসহ র্বোডরে র্কমর্কতাবৃন্দ উপস্থতি ছলিনে।
বিগত অর্থ বছরে মেঘনা পেট্রোলিয়াম পরপর তিন বছর সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান ৫০৫ কোটি টাকা কর পূর্ব মুনাফা অর্জন। বর্তমানে বাংলাদেশ মেঘনা পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এর তিনটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সরাদেশে জ্বালানি তেল বিপণনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তন্মধ্যে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড জ্বালানি তেল বিপণনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বিগত অর্থ বছরের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এককভাবে দেশের সামগ্রিক চাহিদার ৩৮% জ্বালানি তেল ও তিনটি বিপণন কোম্পানীর মধ্যে ৫৫.৫% লুব্রিকেন্টস বিপণন করে।
২০১৬ সালে ১৪ জুন দায়িত্ব গ্রহণের পর জ্বালানি তেল ও লুব্রিকেন্টসের বিক্রয় বৃদ্ধি, প্রশাসনিক ব্যয় হ্রাস, কনভারশন ক্ষত্রি হ্রাস এবং পরিচালন লাভ বৃদ্ধি করে তার ব্যবস্থাপনার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। কোম্পানীটির কর উত্তর মুনাফা ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ১৮৫.০২ কোটি টাকা থেকে ২০১৬-২০২১ অর্থ বছরে ২১৯.৪৮ কোটি টাকা, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৩৬০.৪১ কোটি টাকা ও ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের ৩৭৯.৯১ কোটি টাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোষাগারে বর্ণিত অর্থ বছরে যথাক্রমে ৬৩.৯৫ কোটি, ৭৩.৬৩ কোটি, ১১৬.৩ কোটি ও ১২৪.৩০ কোটি টাকা কর প্রদান করেছে।
এ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আউটস্ট্যান্ডিং এ্যাওয়ার্ড ইন পাবলিক ক্যাটাগরি অর্জন এবং জ্বালানি খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে ট্যাক্স কার্ডে সম্মানিত হয়েছে। তিনটি তেল বিপণন কোম্পানীর মধ্যে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে পরপর তিন বছর সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিগত অর্থ বছরে করোনা দূর্যোগ ও বিশ্বময় মন্দাকালীন সময়েও প্রতিষ্ঠানটি কর উত্তর ৩০৭.৯১ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে, সরকারি কোষাগারে কর বাবদ ১০২.৭৫ কোটি টাকা প্রদান করেছে এবং জ্বালানি তেল বিপণন খাতে তিন তেল কোম্পানীর মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে। সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন ও কর প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবারও প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জ্বালানি খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ট্যাক্স কার্ডে সম্মানিত হয়েছে।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে গতি সঞ্চার এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণে দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার আরও দুটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারীর প্রভাব মোকাবেলায় দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে গতি সঞ্চার, গ্রামীণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অতিদরিদ্র বয়স্ক ও বিধবাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণে প্রধানমন্ত্রী নতুন দুইটি প্রণোদনা কর্মসূচি অনুমোদন করেছেন। কর্মসূচি দুইটির বাস্তবায়ন অবিলম্বে শুরু হবে।
নতুন প্রথম প্যাকেজটির আকার এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যার আওতায় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাত এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নেওয়া কার্যক্রম সম্প্রসারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিককে) ১০০ কোটি এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।
পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে এনজিও ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি, সোসাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি, ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে ১০০ কোটি এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডকে ৩০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় প্যাকেজে ১২০০ কোটি টাকা আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের ১৫০টি উপজেলায় দরিদ্র্য সব বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।
নতুন অনুমোদিত এই দুটিসহ মোট প্রণোদনা প্যাকেজের সংখ্যা হল ২৩টি। এসব প্যাকেজের মোট আর্থিক পরিমাণ এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা (জিডিপির ৪.৪৪ শতাংশ)।
গত বছরের মার্চে দেশে কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য পৃথক ঋণ প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল সরকার। ইতোমধ্যেই এসব প্রণোদনার অধিকাংশ অর্থ নির্বাচিতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
মহামারীর প্রকোপ চলতে থাকার মধ্যে গত নভেম্বরে অর্থনীতিতে প্রথম প্রণোদনার প্রভাব নিয়ে অর্থ বিভাগ আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী আলোচনায় আরেকটি প্যাকেজ ঘোষণার সুপারিশ করেন অর্থনীতিবিদরা।
সভাগুলোতে মহামারী মোকাবেলায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে বেগবান করার লক্ষ্যে ব্যাংক ব্যবস্থার পাশাপাশি কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত সংশ্লিষ্ট সরকারি ও আধাসরকারি সংস্থা/ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো, নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ নেওয়া এবং দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অব্যাহত রাখতে পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অতিদরিদ্র পরিবারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র দুই বছর মেয়াদী কার্যনির্বাহী কামিটির সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (১৬ জানুয়ারী) সকালে রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র মিলনায়তনে নির্বাচনে সভাপতি পদে মোঃ আবদুল ওয়াদুদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে উসাং মং ও সহ-সভাপতি পদে মোঃ আলী বাবর নির্বাচিত হন।
পরিচালক পদে কার্যনির্বাহী কমিটির মোট ১৫ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। সর্বমোট ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়।
রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি বেলায়েত হোসেন ভূইয়া নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র দুই বছর মেয়াদী নব নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচারকদের মধ্যে রয়েছে মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া, মোঃ শাহ আলম, মোঃ কামাল উদ্দিন, নিখিল কুমার চাকমা, মোঃ ইউসুফ হারুন, মোঃ জাহিদ আক্তার, মোঃ হারুনুর রশিদ মাতব্বর, মনসুর আলী, মোঃ নিজাম উদ্দিন, মোঃ মামুনুর রশীদ মামুন, নেছার আহমেদ, মোঃ জহির উদ্দীন চৌধুরী, মোঃ মনিরুজ্জামান মহসিন, মেহেদী আল মাহবুব, এ.এম. ওবাইদুল্লাহ, সচিব মু. শাব্বির আহম্মদ।
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের জরুরি সহায়তা দেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ।
প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসেবে এই সহায়তার পরিমাণ ৬ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের সভায় এ জরুরি ঋণ সহায়তা অনুমোদন করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে যেমন অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে গেছে, অন্যদিকে রপ্তানিও তলানিতে নেমে এসেছে।
“এই পরিস্থিতিতে লেনদেন ভারসাম্য ও রাজস্ব চাহিদা মেটাতে আইএমএফ বাংলাদেশকে ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার জরুরি সহায়তা দিচ্ছে।”
র্যাপিড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি এবং র্যাপিড ফাইন্যান্সিং ইনস্ট্রুমেন্টের আওতায় এই ঋণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশের অর্থনীতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আইএমএফ। প্রয়োজন হলে তারা বাংলাদেশকে আরও সহায়তা দেবে। এছাড়া জরুরি সহায়তার অর্থ যাতে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, তার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।” আইএমএফ বলেছে, কোভিড-১৯-এর প্রভাবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান দুটি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি ও রেমিটেন্স মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ একদিকে রোগের বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করছে, অন্যদিকে তার প্রভাবে অর্থনীতিতে শ্লথ গতি দেখা যাচ্ছে।
“এতে রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে। ব্যালান্স অব পেমেন্টের ক্ষেত্রেও ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই জরুরি সহায়তা বাংলাদেশকে অর্থায়নের ঘাটতি মোকাবিলায় সহায়তা করবে। পাশাপাশি রোগের বিস্তার ঠেকাতে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আরও সহায়তা পেতে কাজ করবে।”
কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করে আইএমএফ বলেছে, “বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য ঘাটতি মেটাতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে এবং আর্থিক খাত যাতে অর্থনীতির সহায়ক হতে পারে, সেই ব্যবস্থাও নিয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থার আরও অবনতি হলে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও ছাড় দিতে পারে।
“অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে, এই ধাক্কা সামলাতে ধারাবাহিকভাবে মুদ্রার বিনিময় হার বাড়ানো, সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঠিক রাখা।”
সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার দরিদ্র ও অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য তাৎক্ষণিকভাবে যে সহায়তা প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তারও প্রশংসা করেছে আইএমএফ।
“সামষ্টিক অর্থনীতির সম্ভাবনা অক্ষুণ্ণ রেখে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সরকার সহায়তা করেছে। এসব পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে আইএমএফ,” বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা ভাইরাসের অজুহাতে পরিবহন সংকট দেখিয়ে রাঙ্গামাটি মৌসুমী পণ্যে ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। গতকাল সকালে রাঙ্গামাটি সাপ্তাহিক হাট বাজারে শত শত বোট আনারস ও কাঠাল নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষীরা। গতকাল রাঙ্গামাটির বনরূপা বাজার সমতা ঘাট এলাকায় ক্রেতারা মৌসুমী পণ্য ক্রয় না করায় বিক্রি করতে আসা চাষীরা মাথায় হাত পড়েছে।
বাজার এলাকায় আসা চাষীরা বলেন, বর্তমান করোনা যুদ্ধে রাঙ্গামাটির কাচা পণ্যে ব্যবসায় ধ্বস নামলেও আজ হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা মালামাল ক্রয় না করায় আমাদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে। এই অবস্থায় কাচা মাল গুলো বিক্রি করতে না পারলে বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে আমরা বিপাকে পড়ে যাবো। তারা বলেন, এই মালামাল বিক্রি করে বাড়ীতে বাজার করে নিয়ে যেতে হবে। তা না হলে বাড়ীর সবায় উপোষ করতে হবে।
বাজারের কাঠাল নিয়ে আসা এক চাষী বলেন, নিজের বাগানের কাঠাল প্রতিবছর কয়েক লক্ষ টাকা বিক্রি করি। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কাঠালের তেমন দাম পাওয়া না গেলেও গাছের বাতি কাঠাল গুলো বাজারে নিয়ে গিয়ে কিছুটা কম দামে হলেও বিক্রি করতে পেরেছি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে কোন পণ্য ক্রয় করছে না। তাই ভোর ৫ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে আছি। কোন ক্রেতা কাঠাল ক্রয় করছে না। তিনি বলেন, ব্যবাসয়ীরা বলছে কাঠাল নিয়ে রাঙ্গামাটির বাইরে যেতে পারছে না বলে তাই ক্রয় করছে না।
এদিকে এক ব্যবসায়ী মোঃ হামিদ জানান, গতকাল আমরা প্রায় ২ লক্ষ টাকার কাঠাল ক্রয় করেছি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে রাঙ্গামাটি প্রশাসন থেকে পন্য পরিবহন চট্টগ্রামে বাইরে বন্ধ করে দেয়ায় আমি এই কাঠাল গুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছি। তিনি বলেন, কাঠাল গুলো আর এক দিন যদি এই ভাবে বোটে থাকে তাহলে সব কাঠাল পেকে যাবে। তিনি প্রশাসনের কাছে কাঠাল গুলো চট্টগ্রামে বাইরে পরিবহনের অনুমতি প্রদান করতে জেলা প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।
এদিকে রাঙ্গামাটি মৌসুমী পণ্য ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল জানান, রাঙ্গামাটির মৌসুমী পণ্য কাঠাল, আনারস ও কলা সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদা গুলো রাঙ্গামাটির পণ্য ব্যবসায়ীরা পুরণ করে। তারা রাঙ্গামাটির বিভিন্ন বাজার থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে রাঙ্গামাটির চাহিদা মিটিয়ে পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করে। প্রতিদিন রাঙ্গামাটির বাজার থেকে ৬০ থেকে ৭০ ট্রাক মৌসুমী পণ্য রাঙ্গামাটির বাইরে রপ্তানী করে। কিন্তু গতকাল রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন থেকে চট্টগ্রামের বাইরে মালামাল পবিরহন করতে নিষেধ কওে দেয়ায় আমরা মালামাল ক্রয় করছি না। কারণ চট্টগ্রামে মাত্র আমরা ৫ থেকে ১০ গাড়ী মালামাল বিক্রি করতে পারবো। অন্য পন্য গুলো আমরা বিক্রি করতে না পারলে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হবে। তাই আমরা নিজেদের ক্ষতি কাটাতে বাধ্য হচ্ছি।
এই দিকে মৌসুমী পণ্য ব্যবসায়ীর সভাপতি মোঃ রহিম বলেন, রাঙ্গামাটির মানুষের কথা চিন্তা কওে আমরা পন্য ব্যবসা করছি। নিজেদের লাভ ক্ষতির কথা চিন্তা কওে আমরা দিনের পর দিন রাঙ্গামাটিতে ব্যবসা কওে আসছি। রাঙ্গামাটি জেলায় প্রতিটি বাজারে থেকে আমরা ৫০/৬০ ট্রাক আনারস, কাঠাল, কলা সহ বিভিন্ন পণ্য সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী করছি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে প্রশাসন থেকে পন্যে পরিবহনের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারী করায় আমরা পন্য ক্রয় করছি না। এই খবর পেয়ে প্রশাসন থেকে আমাদেরকে আজকে পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু কাল থেকে আমরা কি করবো না। যদি অনুমতি না পায় তাহলে আমরা মালামাল ক্রয় করবো না। ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য থাকবো।
এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সুফি উল্লাহ বলেন, দেশের করোনা আতংকের কারণে যানবাহন চলাচলে আমরা কিছুটা শিথিলতা নিয়ে এসেছি। চট্টগ্রামের বাইরে কোন যানবাহন আমরা অনুমতি দিচ্ছি না। তাই এই অবস্থায় তারা পন্য নিয়ে চট্টগ্রামের বাইরে যেতে পারছে না। সকলের মঙ্গলের জন্য আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।
শেখ সাইফুল ইসলাম : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাটসহ ১০ জেলার তরমুজের বাম্পার ফলন করোনার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই তাই তরমুজ নিতেও আসে না ব্যাপারীরা।মাঠেই নষ্ট হচ্ছে বহু কষ্টে আর অনেক টাকায় ফলানো তরমুজ। প্রাণঘাতী করোনার কারণে আবার ভয়াবহ ধাক্কা, এত বড় বিপর্যয় কিভাবে কাটাবেন তা জানেন না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাটে চাষিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে দেশে চলমান করোনা পরিস্থতিতে বাংলাদেশ তৃতীয় ধাপে অবস্থান করায় তা প্রতিরোধে ও সংক্রমণ ও মোকাবিলায় স্থানীয় হাটবাজার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। বাগেরহাট জেলায় তরমুজচাষ করে চাষীরা ব্যাপক ফলন পাওয়ায় তাদের মাঝে তরমুজ চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নতুন চাষীরাও আগ্রহী হয়ে উঠছে।মাঠেই নষ্ট হচ্ছে বহু কষ্টে আর অনেক টাকায় ফলানো তরমুজ। এ অঞ্চলের লাভজনক ফসল হিসেবে তরমুজ চাষ বেশ পরিচিত। এ এলাকার মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী হওয়ায় বেশি লাভের আশায় তরমুজ চাষ করেন চাষিরা। ধান ও অন্যান্য ফসলের লোকসানের ধকল পোষাতে এবার আবাদ করেছিলেন আরো বেশি। সরেজমিনে জানা গেছে,বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ বাজারের ফল ব্যবসায়ী দেলোয়ার শেখ জানায়,করোনা ভাইরাসে বাজার বন্ধ থাকায় তরমুজবিক্রি করতে পারছি না, বিপাকের মধ্যে পড়েছি। এই ভাইরাসের কারণে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে না। ফলে মহাজন আমাদের মজুরি দিতে পারছেন না, এতে করে আমরাও বেশ বিপাকের মধ্যে পড়েছি। কতদিন এমন অবস্থা চলবে বুঝতেও পারছি না।
বাগেরহাটের ৯উপজেলায় ধান আবাদে উপর্যুপরি লোকসান, সম্ভাবনা দেখে শুরু করেছিলেন তরমুজ আবাদ কিন্তু তাতেও এত বড় বিপর্যয়! প্রাণঘাতী করোনার কারণে আবার ভয়াবহ ধাক্কা, এত বড় বিপর্যয় কিভাবে কাটাবেন তা জানেন না বাগেরহাটের চাষিরা।
এদিকে চাষের উপযোগী জমি কমে যাওয়ায় তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের অনেক কৃষক পার করছে বেকার সময়। এ বছর জমির পরিমাণে তরমুজের আবাদ কম হলেও বিগত বছরের চেয়ে ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি তরমুজ চাষীদের।
তরমুজের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে খুশির ঝিলিকনেই করোনা বিপর্যয় করে দিয়েচে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠেই নষ্ট হচ্ছে বহু কষ্টে আর অনেক টাকায় ফলানো তরমুজ। ঘুরে দেখা যায় বিস্তীর্র্ণ এলাকাজুড়ে শুধু তরমুজক্ষেত। দুই-তিন কেজি সাইজের এই তরমুজ আর কয়েক দিনের মধ্যে বিক্রি করা যাবে কিন্তু করোনার কারণে পাইকার না আসায় বড় ধরনের লোকসানের মুখে চাষিরা। প্রতিবার তরমুজ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকে কিনে নিয়ে যান ট্রাক ট্রাক তরমুজ। এখানকার তরমুজ যেত যশোর, মাগুরা, চাঁদপুর, মানিকগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় তরমুজের বিশেষ খ্যাতি ছিল। কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তরমুজ তোলা ও বাজারজাতকরণের কাজে ব্যস্ত থাকতেন চাষিরা। বেলে-দোআঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় অন্য জেলায় উৎপাদিত তরমুজের চেয়ে এখানকার তরমুজ মিষ্টি বেশি, টকটকে লাল ও চামড়া পাতলা হওয়ায় সবার প্রিয়।
কৃষকরা বেশি লাভের আশায় ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দ্বিগুণ হারে তরমুজের চাষাবাদ করেছেন। শেষ পর্যন্ত করোনার কারণে খরচের টাকার অর্ধেকটাই ওঠে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত তারা। ধানখালী ইউনিয়নে পাঁচজুনিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি মোহাম্মদ সান্টুমাল বলেন, মাঘ মাসের শুরুতে তরমুজ চারা রোপণ করি কিন্তু মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় তরমুজ চারা নষ্ট হয়ে যায়। আবার চারা রোপণ করি। আর পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলতে হবে কিন্তু দেশের যে অবস্থা তাতে তরমুজ বিক্রি করতে পারি কি না তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভালো জানেন। এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তরমুজ চাষ করছি। এখন বিক্রি করতে না পারলে রাস্তায় বসা ছাড়া কোনো উপায় দেখি না।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক রঘুনাথ কর জানান, করোনার কারণে তরমুজচাষিরা বড় ধরনের বিপাকে পড়েছেন। তাদের ক্ষেতে উৎপাদিত তরমুজ পাকলেও বাজারজাত করতে পারছেন না। মৌসুমের শুরুতে বুলবুলের কারণে কৃষকের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে, এখন আবার করোনার কারণে বড় ধরনের লোকসানের মুখে তারা। তাদেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে প্রতিদিন ক্ষেতে পানি দিলে তরমুজ কম পাকে। পানি দেয়া বন্ধ করলে অল্পতে তরমুজ পেকে যাবে। ১১ তারিখ পর্যন্ত লোকজন বাজারে আসতে পারবে না, দেখা যাক তারপর পরিস্থিতি কী হয়
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খলিলুর রহমান গভীর উদ্বেগের সাথে বলেন যে, করোনাভাইরাস এর প্রভাবে দেশের আমদানি-রপ্তানি, বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্য, রেমিটেন্স প্রবাহ এমনিতেই মন্দা অবস্থা বিরাজমান। এমতাবস্থায়, পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই হঠাৎ করে প্রাইম মুভারের চালক ও সহকারীদের কর্ম বিরতির ফলে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার না নিয়ে বিদেশী জাহাজ বন্দর ত্যাগ করে। বিষয়টি বহির্বিশে^ বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা আমাদের সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সহায়ক। ইতিমধ্যে ৩দিন পার হয়েছে এবং অতীতেও এমন ঘটনা আমরা লক্ষ্য করেছি, যা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সহ বিদেশী বিনিয়োগকারী আকর্ষনে সরকারী উদ্যেগের পরিপন্থী। ব্যবসা ব্যয় কমানো, ব্যবসার পরিবেশ উন্নতি এবং ব্যবসা সহজীকরন নীতির পরিপন্থী কার্যক্রমের প্রতি সরকারের বিশেষ দৃষ্টি কাম্য। বৈধ-অবৈধ যে কোন সংগঠনের কার্যক্রম প্রচলিত আইন বিরোধী হওয়া অগ্রহনযোগ্য। সিএমসিসিআই মনে করে যে, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সহ ব্যবসা বাণিজ্য ব্যাহত করে এমন যে কোন কার্যক্রম মোকাবেলায় সরকারের সক্ষমতার ব্যবহার কাম্য। ব্যবসায়ী মহল অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে পড়লে দেশ, শ্রমিক এবং সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোন অবস্থাতেই আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য জিম্মি করা কাম্য নয়। বিষয়টির দীর্ঘ মেয়াদী সুরাহা করা না হলে ব্যবসায়ী ক্ষতি সহ ব্যাংক ঋণখেলাপী বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা থেকেই যায়। অনতিবিলম্বে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করে সংশ্লিষ্ট মহলের সক্ষমতা দেখে এবং বিরাজমান অর্থনীতির চলমান সমস্যাবলী বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা সুরাহা হওয়া কাম্য।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ নিয়ে বিশ্বের অনেক গুনি ব্যক্তি প্রায় সময় নানা রকম কথা বলেন। বিশ্বের অনেক ব্যক্তি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যে বন্ধন রয়েছে তা বাংলাদেশের আশে পাশের দেশে লক্ষ্য করা যায় না। এ সকল বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এবার বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেছেন করন থাপার। এই সম্মানিত ব্যক্তি ভারতীয় এক গনমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকার দেন। তার সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের উন্নতি ও ভারতের মিথ্যাচারের বর্ণনা উঠে এসেছে। তিনি যে গনমাধ্যমকে যে সাক্ষাৎকার দেন তার কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হলো-
তিনি প্রথমেই বলেন, বাংলাদেশে উইপোকা হওয়া আসলে ভারতীয় নাগরিকত্বের চাইতে হাজার গুণ বেশি আকর্ষণীয়।
সত্যি বলতে কি, আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আমি অভিযোগের আঙুল প্রথমে হেনরি কিসিঞ্জারের প্রতি তুলতে চাই। ১৯৭০ এর দশকে এই মার্কিন কূটনীতিবিদ বাংলাদেশকে একটি আন্তর্জাতিক ত্রাণ ভিক্ষাকারী তলাবিহীন ঝুড়ি বলে উল্লেখ করেন। যুদ্ধ পরবর্তী ওই সময়ে, অবশ্য বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমনটাই ছিল। সে সময়ের টেলিভিশন সংবাদে বাংলাদেশে বন্যা দুর্গত অঞ্চলের ছবিও ছিল নিত্য-নৈমেত্তিক ঘটনা। তাই কিসিঞ্জারের সংজ্ঞা সে যাত্রা টিকে গেল।
আজকের বাংলাদেশ অবশ্য ভিন্ন এক দেশ। বাংলাদেশের ব্যাপারে পৃথিবীর দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে সময় লাগলেও, আমি অন্তত এই ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত। আর আমার মতো ভারতবাসীরও বাংলাদেশ নিয়ে সেই ৭০’এর দশকের আদ্যিকালের ধারণা রাখা উচিত নয়। অথচ গত সপ্তাহে আমাদের উপস্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জি কে রেড্ডি সেই কাজটাই করেছেন।
নিজের বর্ণবাদী মনোভাব চেপে না রেখেই এই মন্ত্রী বলেছেন, নাগরিকত্ব দিলে নাকি অর্ধেক বাংলাদেশের মানুষ নিজের দেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসবেন।
এই বক্তব্য শুধু প্রচলিত কূটনৈতিক শালীনতা লঙ্ঘন তাই নয়, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের সকল মানুষকে আরও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে যে কিছুই জানেন না এটা তার বক্তব্যেই স্পষ্ট। নাহলে কি আর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তুলনা দেয়া চলে। অন্তত বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তুলনা দেয়া পরিহাসেরই নামান্তর।
বাংলাদেশ আজ জীবনমান আর মানব উন্নয়ন সূচকের সব কয়টিতেই ভারতের চাইতে অনেক ভালো অবস্থানে। খোলা চোখে তাকালে প্রথমেই নজরে আসে বাংলাদেশের বিপুল মোট উৎপাদন প্রবৃদ্ধি, যা এখন ঈর্ষণীয় ৮ শতাংশের ঘরে। আর ভারত তার প্রবৃদ্ধি বিজেপির শাসনামলেই ৫ শতাংশে নেমে আসতে দেখেছে।
ভারতে এখন স্তিমিত হয়ে পড়া অর্থনীতিতে গতি ফেরানোর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগ আকর্ষণের চাপে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন প্রকৃত বাণিজ্যিক করের আওতা নামিয়ে আনছেন ১৫ শতাংশে। বিনিয়োগ নিয়ে আমাদের অবস্থা টালমাটাল হলেও, বাংলাদেশ কিন্তু বিনিয়োগ প্রবাহ ধরে রেখেছে।
আপনি লন্ডনে যান কি নিউইয়র্কে, সেখানের হাই স্ট্রিটগুলোতে আপনি বাংলাদেশে তৈরি পোশাক দেখতে পাবেন। সেই তুলনায় লুধিয়ানা বা ত্রিপুরায় উৎপাদিত (ভারতীয়) পোশাক খুব একটা চোখে পড়ে কি? আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ডাবল ডিজিট আকারে বেড়েছে। একই সময়ে রপ্তানি বাজারে ভারত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।
তবে শুধু অর্থনীতির উদাহরণ দিলেই তো একটি দেশ সম্পর্কে সব বলা যায় না। মানব উন্নয়ন প্রকৃত উন্নতির প্রধান শর্ত। সেদিকেও নজর দেওয়া দরকার।
বাংলাদেশিদের নারী ও পুরুষদের গড় আয়ু এখন যথাক্রমে ৭৪ এবং ৭১ বছর। ভারতে যা মাত্র ৭০ এবং ৬৭ বছর।
এসব কিছুর পরেও আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বলছেন বাংলাদেশ নাকি ভারতীয় নাগরিকত্ব দিলে খালি হয়ে যাবে। পরিসংখ্যান আরও অসংখ্য আছে। নারী শিক্ষা, ইত্যাদি দিক থেকে উন্নতিতে বাংলাদেশ আজ বহু যোজন সামনে।
তাইতো দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারতের অনেক নাগরিক এখন বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন। একথার সত্যতা সব ভারতীয়কে অনুধাবন করতে হবে।
বিজেপি পাণ্ডাদের প্রিয় গরু খেতে কোনো বাংলাদেশি ভারতে আসে না, বরং ভারতীয়রাই সেদেশে যায়। কারণ তারা জানেন, ভারতে বৈধ নাগরিক হলেও জীবনের কোনো মূল্য নেই। তার চাইতে বরং বাংলাদেশে অবৈধ উইপোকা হয়েই বেঁচে থাকা ভালো।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে ও হচ্ছে। এছাড়া বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশের মানুষ রয়েছে যাদের পাঠানো রেমিটেন্সের মাধ্যমে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশের সুনাম এখন বহি:বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের বড় মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর কাজ চলছে। এই বাংলাদেশের বড় মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর কাজের পুরো অর্থ বাংলাদেশই বহন করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
———————————————————–
বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে কোথায় কোথায় এগিয়ে দেখিয়ে দিল হিন্দুস্তান টাইমস
ভারত বাংলাদেশের জনগণকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করলে অর্ধেক বাংলাদেশ জনমানব শূন্য হয়ে যাবে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জে কৃষ্ণ রেড্ডি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার কঠোর জবাব দিলেন দেশটির সাংবাদিক করণ থাপার।
তিনি ভারতীয় মন্ত্রীর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন- বাংলাদেশ এখন আর ভারতের চেয়ে পিছিয়ে নেই।
যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন ভারতের চেয়ে এগিয়ে তা তুলে ধরেছেন ওই সাংবাদিক। আর এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশটির জনপ্রিয় দৈনিক ‘হিন্দুস্তান টাইমস’।
* জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ভারত যেখানে শতকরা ৫ শতাংশ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি, বাংলাদেশ সেখানে ৮ শতাংশ হারে এগিয়ে যাচ্ছে।
* ভারতের অর্থমন্ত্রী সীতারাম ১৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স নির্ধারণ করে যেখানে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণে মরিয়া, সেখানে চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে।
* বিশ্বের ধনী শহরগুলো যেমন— লন্ডন ও নিউইয়র্ক যখন বাংলাদেশে তৈরি পোশাকে ভরে গেছে, সেখানে লুধিয়ানা ও ত্রিপুরায় বানানো কাপড়ের ছোট্ট একটা অংশ জায়গা পেয়েছে।
* বাংলাদেশ যেখানে রফতানি দ্বিগুণ করেছে, সেখানে ভারতের রফতানি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
* বাংলাদেশের পুরুষ ও নারীদের গড় আয়ু যথাক্রমে ৭১ ও ৭৪ বছর; ভারতে তা যথাক্রমে ৬৭ ও ৭০ বছর।
* ভারতে নবজাতকের মৃত্যুর হার প্রতি ১ হাজার জনে ২২ দশমিক ৭৩, বাংলাদেশে সে হার ১৭ দশমিক ১২।
* ভারতে শিশু মৃত্যুর হার ২৯ দশমিক ৯৪, বাংলাদেশে ২৫ দশমিক ১৪।
* ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার বাংলাদেশে ৩০ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা ভারতে ৩৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
* বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সী ৭১ ভাগ নারীই স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন, ভারতে এ হার ৬৬ শতাংশ।
* বাংলাদেশে ৩০ শতাংশের বেশি নারী শ্রমে যোগ দিচ্ছেন ; ভারতে এ হার মাত্র ২৩ শতাংশ।একযুগে তা ৮ শতাংশ কমেছে।
* ছেলে-মেয়েদের উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির হারে ০ দশমিক ১৯ শতাংশ হারে এগিয়ে ভারত, সেখানে বাংলাদেশ ১ দশমিক ১৪ শতাংশ হারে এগিয়ে এগিয়ে।
* সীমান্তের ওপারের অবস্থা শুধু আমাদের চেয়ে ভালোই নয়, বরং তা আরও ভালোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
* ‘কিছু ভারতীয় অর্থনৈতিক কারণে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে’, কথাটা বাস্তবতার নিরিখে সঠিক। মানুষ খুব স্বাভাবিকভাবেই উন্নত জীবনযাপনের জন্য ভালো জায়গায় পাড়ি দেয়। যদি আমেরিকা আজ ঘোষণা করে যে তারা নাগরিকত্ব দেবে, তাহলে দেখা যাবে অর্ধেক ভারত খালি হয়ে গেছে। বলতে গেলে এর চেয়েই বেশি খালি হবে। আরেকটা বিষয়, আমেরিকার দরজা এখন বন্ধ থাকলেও আমাদের থামানো যাচ্ছে না।’