করোনাভাইরাসের ঝাঁকুনিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রফতানি। নতুন করে এলসি তো খোলা হচ্ছেই না, পূর্বে এলসি করা পণ্যের জাহাজীকরণও বন্ধ। বন্ধ রয়েছে ব্যবসায়ী এবং কর্মরতদের আসা-যাওয়াও। অথচ বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় প্রতিটি পর্যায়েই যুক্ত রয়েছে চীন।
রফতানিমুখী এবং স্থানীয় বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানাগুলো কাঁচামালের জন্য অনেকাংশেই চীনের ওপর নির্ভরশীল। বতর্মানে বাংলাদেশের ১২টি প্রকল্পে ৯০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে চীন। এসব প্রকল্পে কাজ করছে দুই হাজারের বেশি চীনা বিশেষজ্ঞ।
তাদের অনেকেই ছুটিতে গেছেন, বাকিরা পরিবার-পরিজনের কাছে যেতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। করোনাভাইরাসের কারণে একরকম নিথর হয়ে আছে বিশ্ব অর্থনীতি। এর বিস্তৃতি ও ব্যাপকতা আরও বাড়লে বাংলাদেশের অর্থনীতি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, করোনাভাইরাসে দেশটিতে এ পর্যন্ত আট শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। বেশির ভাগ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনাই ঘটেছে হুবেই প্রদেশে, যার উহান শহরকে এ ভাইরাসের ‘উৎসস্থল’ বলা হচ্ছে। এ ছাড়া এ পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে হংকংয়ে একজন এবং ফিলিপাইনে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে চীনের বেশ কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার লোককে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে। ট্রেন স্টেশন ও বিমানবন্দরের পাশাপাশি রাস্তাগুলোও বন্ধ করে দেয়ায় চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছে। প্রথমে এই প্রদেশেই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছিল। প্রাদেশিক রাজধানী উহানের একটি সি-ফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি বলে মনে করা হয়।
বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে, বাংলাদেশকে তার অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে। বিশেষ করে কাঁচামালের অভাবে শিগগির অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মূলধনী যন্ত্রপাতির অভাবে অনেক নতুন ফ্যাক্টরি চালু করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে চীনা নাগরিকদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ রয়েছে। অনেক প্রতিনিধি তাদের সফর বাতিল করেছেন। এতে কারিগরি কর্মকর্তারাও আসতে পারছেন না।
এতে প্রস্তুতি শেষ হলেও কারিগরি কর্মকর্তার অভাবে অনেক শিল্পকারখানা চালু হতে পারবে না। ফলে পূরণ হবে না রফতানির ল্য। আটকে গেছে শত শত এলসি। এতে ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বাড়বে। পণ্য শিপমেন্টের অপেক্ষায় আছে বহু ব্যবসায়ী।
উদ্যোক্তারা জানান, বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয় চীন থেকে। এর বাইরেও কাপড়, আদা, রসুন, বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যসামগ্রী, মেশিনারি, খুচরা যন্ত্রাংশ, খেলনা, মোবাইল, বৈদ্যুতিক সামগ্রী মিলিয়ে শত শত আইটেমের পণ্য আমদানি করা হয় চীন থেকে। সবচেয়ে বড় বাণিজ্য হচ্ছে তৈরী পোশাক ও এর কাঁচামাল আমদানি।
যা চীনের বাইরে প্রত্যাশা করাটাও অসম্ভব। চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সারা বিশ্বে। দেশটির ভেতরে এ সংক্রমণের প্রভাব এত তীব্র যে চীনের বেশির ভাগ অফিস ও ব্যাংক নববর্ষের ছুটির পর এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। চেষ্টা করেও সেখানে এলসি খুলতে পারছেন না বাংলাদেশী আমদানিকারকরা।
দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর নবাবপুরে ব্যবসা করা ব্যবসায়ী আবদুল করিম গতকাল বলেন, নবাবপুর এলাকায় বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ পণ্য আসে চীন থেকে। বিশেষ করে ইলেক্ট্রনিক্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও মেশিনারিজ জিনিসপত্র পাওয়া যায় এখানে। চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা চীন যাচ্ছেন না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চীনের পণ্যও আসতে পারছে না। এখন বড় বড় মজুদদারদের কাছে কিছু পণ্য আছে। আবার কিছু পণ্য কারো কাছেই পাওয়া যাচ্ছে না।
যাদের কাছে পণ্য আছে, তারা পণ্যের দাম ১০ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে আগে যেসব পণ্য ১০০ থেকে ১১০ টাকায় পাওয়া যেতে সেগুলো এখন খুচরা বিক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। আবার যেসব পণ্য ২০০ টাকায় পাওয়া যেতে সেগুলো কিনতে হচ্ছে ২৫০ টাকায়। আর এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের ওপর।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে মোট বাণিজ্য হয় ১২ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে চীন থেকে দেশে আমদানি হয়েছে এক হাজার ১৬৯ কোটি ২৫ লাখ ডলারের পণ্য। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসাবে স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় এক লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে চীনে ৬৯ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ পাঁচ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে দেশটির সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১১ বিলিয়ন ডলার বা ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বর্তমানে চীনে চার হাজার ৭০০ পয়েন্ট শুল্কমুক্তভাবে রফতানি করতে পারে বাংলাদেশ।
চীনের করোনাভাইরাস দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হতে পারে মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমাদের বড় দুশ্চিন্তা তৈরী পোশাক শিল্প নিয়ে। আদা-রসুন হয়তো আমরা ভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে পারব, কিন্তু তৈরী পোশাকের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে চীনের বিকল্প কিছুই ভাবছি না। তবে এ মুহূর্তেই কিছু বলা ঠিক হবে না। কারণ, তথ্যের অনেক ঘাটতি রয়েছে। আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। কী করব তা সময় বলে দেবে।
তৈরী পোশাক খাতের কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে কোনো সমস্যা নেই দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে চিন্তা করতে হবে। চীনের সাথে যেগুলো সেক্টরে বাণিজ্য রয়েছে বিশেষ করে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কাজ করছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে বোঝা যাবে। ব্যবসায়ীরাও বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। যথা সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
চীনের সাথে বাংলাদেশের যেসব সেক্টরের বাণিজ্য রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে সেসব সেক্টরের আমদানিকৃত বা রফতানিকৃত পণ্যের পরিমাণসহ বিভিন্ন তথ্য তিন দিনের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের কাছে। একইসাথে গত কয়েক বছর কী পরিমাণ পণ্যের বাণিজ্য চীনের সাথে হয়েছে তারও তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে এ নিয়ে কাজ করছেন বলে জানান এফবিসিসিআই নেতারা।
বতর্মানে বাংলাদেশের ১২টি প্রকল্পে ৯০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে চীন। এসব প্রকল্পে কাজ করছে দুই হাজারের বেশি চীনা বিশেষজ্ঞ। দেশটির মোট সহায়তার পরিমাণ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রোড ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড হাইওয়ের ১৬০ কোটি ডলার, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ১৫ কোটি ডলার, কর্ণফুলী টানেলে ৭০ কোটি, রাজশাহী ওয়াসায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে ৫০ কোটি ডলার, বিদ্যুৎ খাতের ডিপিসিতে পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্কে ৫০ কোটি, পদ্মা সেতু রেল সংযোগের দুই প্রকল্পে ২৫৮ কোটি ডলার, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসে ১৪০ কোটি ডলার, পাওয়ার গ্রিডে ১৩২ কোটি ডলার এবং টেলিকমিউনিকেশন আধুনিকায়নে ২০ কোটি ডলার সহায়তা করছে চীন। এ ছাড়াও আরও ৯টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। এসব প্রকল্পে সহায়তার পরিমাণ ৮০৮ কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুসারে বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। অন্য দিকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে ২০১৮ সালে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৪২তম। আর বিশ্বের চীনের অবস্থান দ্বিতীয়। এ সময়ে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৩০২ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার। এ সময়ে চীনের জিডিপি ছিল ১২ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ডলার।
অর্থাৎ বাংলাদেশের চেয়ে চীনের জিডিপির আকার ৫৫ গুণ বেশি। তৈরী পোশাকের বিশ্ববাজারে ৪০ শতাংশই চীনের দখলে। বাংলাদেশ চীন থেকে যেসব পণ্য আমদানি করে এর মধ্যে রয়েছে- টেক্সটাইল, যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, সার, টায়ার, লৌহ ও ইস্পাত, সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, গম প্রভৃতি। অন্য দিকে বাংলাদেশ চীনে যেসব পণ্য রফতানি করে এগুলো হলো- চামড়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, চা, তৈরী পোশাক ও মৎস্যজাতীয় পণ্য।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি মেটিটো। সর্বনিম্ন দরদাতা এবং কারিগরি বিবেচনায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মেটিটো, আল জোমাইহ এবং জিনকো পাওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামকে নির্বাচন করেছে সরকার। ২০ বছর মেয়াদে কেন্দ্রটি নির্মাণ, মালিকানা ও পরিচালনা করবে এ কনসোর্টিয়াম। এতে দেশের সবচেয়ে কম খরচের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের অনুমোদনের পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) গত সপ্তাহে মেটিটোর অনুকূলে প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে। পিডিবি সূত্র জানায়, প্রকল্পটির আওতায় উত্পাদিত প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট) বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ০.০৭৪৮ মার্কিন ডলার। এটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে নির্মিত ও নির্মাণাধীন সৌর প্রকল্পগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দর। সুষম জ্বালানি মিশ্রণ নিশ্চিত এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির এ কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শর্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনায় বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে মেটিটো। জমি প্রদান করবে পিডিবি। আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধে কেন্দ্রটি উৎপাদন শুরু করতে পারবে। চন্দ্রঘোনা ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাবস্টেশনের মাধ্যমে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। মেটিটোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক র্যামি গ্যানডো বলেন, বাংলাদেশে প্রগতিশীল নেতৃত্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিকল্প বা নবায়নযোগ্য জ্বালানির এ ধরনের প্রকল্প টেকসই সমাধান এনে দেয়। এ প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ সেই দূরদর্শী নেতৃত্বের পরিচায়ক। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অংশীদার হতে পেরে আমরা আনন্দিত। অদম্য এ কনসোর্টিয়ামের সবগুলো প্রতিষ্ঠানের রয়েছে অপূর্ব দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যার মাধ্যমে প্রকল্পটি সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করে বাস্তবায়িত হবে।
জানা যায়, পানি ব্যবস্থাপনা সল্যুশন খাতে ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন দেশে কাজ করছে মেটিটো। ডিজাইন ও বিল্ডিং, রাসায়নিক এবং ইউটিলিটিজ-এ তিনটি খাতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে কোম্পানিটির। পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবিদ্যুতের পাশাপাশি মেটিটো সম্প্রতি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে বিকল্প জ্বালানি শক্তি, সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ এবং বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়েছে। রাঙ্গুনিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাংলাদেশে কোম্পানিটির জন্য প্রথম প্রকল্প।
সৌর শক্তিকে টেকসই এবং সাশ্রয়ী মূল্যের উৎস হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিকাশ, গঠন, অর্থায়ন, মালিকানা এবং পরিচালনা করে আসছে জিনকো পাওয়ার। বিভিন্ন দেশে প্রায় ৩৫০টি সৌর পিভি প্রকল্পের মালিকানায় ও পরিচালনায় রয়েছে এটি। এর মধ্যে শুধু চীনেই রয়েছে ৩ দশমিক ১ গিগাওয়াট সৌর পিভি প্রকল্প। জিনকো বিশ্বের বৃহত্তম সৌর পিভি ১.৭৭ গিগাওয়াট ক্ষমতার সুইহান কেন্দ্রের মালিক এবং অপারেটর। রাঙ্গুনিয়া কেন্দ্রটি দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য কারিগরি ও অপারেশনাল সহায়তা দেবে কোম্পানিটি।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সই করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি: ফোকাস বাংলা
জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আসন্ন ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়ইটার দিকে বাজেটে অনুমোদনের মধ্য দিয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষ হয়। খবর ইউএনবির।
এ বৈঠকে অনুমোদিত বাজেট বেলা ৩টা থেকে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
দুপুর পৌনে ১টা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রপরিষদ বৈঠক শুরু হয়। অসুস্থতার কারণে এর প্রায় আধাঘণ্টা পর দুপুর ১টা ২১ মিনিটে বৈঠকে যোগ দেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
এবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ করছেন মুস্তফা কামাল। এটি দেশের ৪৮তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম বাজেট।
প্রস্তাবিত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এটি চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা এবং সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে না পারা ও উন্নয়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কর বহির্ভূত আয় ধরা হয়েছে ৩৭ লাখ ৭১০ কোটি টাকা। নতুন বছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টার কথা বলা হয়েছে। নতুন বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এই ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) বেলা ১২টা ৫২ মিনিটে তিনি বাজেট পেশ শুরু করেন। এটি হচ্ছে দেশের ৪৭তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯তম এবং অর্থমন্ত্রীর দশম বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে। বৈদেশিক অনুদান থেকে ৪ হাজার ৫১ কোটি পাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
যেসব পণ্যের দাম বাড়ছে
জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৃহস্পতিবার ‘সমৃদ্ধ আগামী পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়। চলতি অর্থ বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ আকার বেড়েছে প্রস্তাবিত এই বাজেটের।
প্রস্তাবিত এ বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ছোট ফ্ল্যাট, ফার্নিচার, পোশাক, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা ইত্যাদি।
আমদানি করা চালের ওপর রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে সব ধরনের চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ ও রেগুলেটরি শুল্ক ৩ শতাংশ প্রযোজ্য হবে। ফলে আমদানি করা চালের দাম বাড়তে পারে।
আগামী অর্থবছর থেকে ছোট ফ্ল্যাট (১ থেকে ১১০০ বর্গফুট) কেনায় খরচ বাড়তে পারে। তবে মাঝারি আকারের (১১০১ থেকে ১৬০০ বর্গফুট) ফ্ল্যাট কেনার খরচ কমতে পারে। কেননা বর্তমানে ১ থেকে ১১০০ বর্গফুট পর্যন্ত ফ্ল্যাট নিবন্ধনে ১ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। আর ১১০১ থেকে ১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত ফ্ল্যাট নিবন্ধনে ভ্যাটের হার রয়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে এই দুই ধরনের ফ্ল্যাটের নিবন্ধনে ২ শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে বড় ফ্ল্যাট (১৬০১ থেকে বেশি) নিবন্ধনের ভ্যাট হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকছে। এদিকে যারা পুরনো ফ্ল্যাট কিনবেন তাদেরও খরচ বাড়তে পারে। কারণ নতুন অর্থবছরে পুরনো ফ্ল্যাট পুনঃনিবন্ধনে ২ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে।
ফ্ল্যাট কেনার পর ঘর সাজানোর আসবাবপত্র কিনতে গেলে আগামী অর্থবছর বাড়তি চাপে পড়তে হতে পারে ক্রেতাদের। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে আসবাবপত্র উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে ১ শতাংশ করে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বর্তমানে আসবাবপত্র উৎপাদন পর্যায়ে ৬ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। আগামী অর্থবছর থেকে তা ৭ শতাংশ হারে প্রস্তাব করেছেন
অর্থমন্ত্রী। আর বিপণন পর্যায়ে ৪ শতাংশ ভ্যাট পরিবর্তন করে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
বর্তমানে নিজস্ব ব্র্যান্ড সংবলিত তৈরি পোশাক বিক্রিতে ৪ শতাংশ হারে ভ্যাট আছে। সরকার আগামী অর্থবছর থেকে এ খাতে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রস্তাব করেছে। এ ছাড়া স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য ব্র্যান্ডবিহীন পোশাক পণ্য বিপণনের ক্ষেত্রেও ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপিত হবে।
তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর বর্তমানে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছেন অর্থমন্ত্রী। এতে এ খাতে ব্যয় বাড়বে। সম্প্রতি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা গ্রহণের মাত্রা বেড়েছে। এতে মানুষের জীবনযাপনের ব্যয় বাড়তে পারে।
বর্তমানে ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পণ্য বা সেবা কেনাবেচা অনেক বেড়েছে। এভাবে পণ্য ও সেবার পরিসর আরও বাড়াতে ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ নামে একটি সংজ্ঞা দেয়া হচ্ছে বাজেটে।
অনলাইনভিত্তিক যেকোনো পণ্য ও সেবার ক্রয়-বিক্রয় বা হন্তান্তর এ সেবার আওতাভুক্ত হবে। এই ভার্চুয়াল বিজনেস সেবার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সরকার দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ করে তার ওপর ভ্যাট আরোপ করে। ট্যারিফ ভ্যালু সাধারণত বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম হয়। ফলে একই হারে ভ্যাট আরোপ হলেও আমদানি পণ্যের চেয়ে দেশি পণ্যের ভ্যাট দিতে হয় কম। আসছে বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের ট্যারিফ ভ্যালু যৌক্তিকীকরণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এ তালিকায় রয়েছে- টমেটো পেস্ট, কেচাপ, সস, বিভিন্ন ফলের পাল্প, ফলের জুস, ব্যবহার অযোগ্য ট্রান্সফর্মার অয়েল, লুবব্লেন্ডিং অয়েল, বিভিন্ন ধরনের পেপার ও পেপার প্রোডাক্ট, কটন ইয়ার্ন বর্জ্য, ওয়েস্ট ডেনিম, স্টক্র্যাপ/শিপ স্টক্র্যাপ, সিআর কয়েল, জিপি শিট, সিআই শিট, রঙিন সিআই শিট, ব্লেড, চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস।
আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম ভ্যাট ও ব্যবসায়ী পর্যায়ের ভ্যাট ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। আমদানিতে এর প্রভাব পড়তে পারে। বর্তমানে প্রায় ১১০০ ধরনের পণ্য আমদানি হয়, যেখানে ভ্যাট দিতে হয়। এর বাইরে অ্যানার্জি ড্রিংক, প্রসাধন সামগ্রী, সানস্ক্রিন সানগ্লাস, আফটার শেভ লোশন, সিগারেট, সিরামিক বাথটাব, ফিলামেন ল্যাম্প, পলিথিন, লিপস্টিক, পুরনো ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ফি, আমদানি করা মোবাইল ফোন, বিদেশি চকোলেট, কফি, গ্রিন টি, আমদানি করা বাদাম, আমদানি মধু, ইউপিএস, আইপিএস, স্টাবিলাইজার, ছাপাখানার পণ্য, প্লাস্টিক ব্যাগ, মোবাইল ব্যাটারি চার্জার, নেলপলিশ, অ্যালকোহল বিক্রয়কারী হোটেল রেস্তরাঁয় সেবার মান, হেলিকপ্টার সেবা, বিড়ি, জর্দা, গুল, সোস্যাল মিডিয়া ও অনলাইন লাইন কেনাকাটা। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমছে
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাাব করেছেন। ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ প্রত্যয়ে নিয়ে এবার ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেট অনুসারে বেশ কিছু পণ্যের দাম কমতে পারে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেসব পণ্যের তালিকা-
১. মোটরসাইকেল উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ১৮০০ সিসি পর্যন্ত হাইব্রিড মোটরগাড়ি আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এ পণ্যগুলোর দাম কমতে পারে।
২. ওষুধশিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানো, ক্যানসার নিরোধক ওষুধ প্রস্তুতের জন্য আমদানি পর্যায়ে কতিপয় উপকরণের রেয়াতি সুবিধা প্রদান এবং ওষুধশিল্পের উৎপাদনের ব্যবহৃত কাঁচামালের রাসায়নিকে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে ওষুধ পণ্যের দাম কমতে পারে।
৩. পোলট্রি ফিডের প্রয়োজনীয় উপকরণ সয়াবিন ওয়েল, ফ্লাওয়ারের ওপর শুল্ক হ্রাস করে শূন্য করা হয়েছে তবে রেগুলেটরি ডিউটি ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফিশিং নেট আমদানিতে শুল্ক প্রণোদনার প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
৪. গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের কাঁচামাল ফিল্ড মিল্ক পাউডার বাল্ক আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে।
৫. বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের মধ্যে কার্বন রডের শুল্ক কমেছে। কর্নফ্লাওয়ার, অ্যালুমিনিয়ামের তার আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে।
৬. দেশীয় মুদ্রণশিল্প রক্ষায় মুদ্রণশিল্পের কাঁচামালে শুল্ক ১০ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে।
৭. বল পয়েন্ট কলমের কালি আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ছবি ছাপানোর পণ্যসামগ্রীতে শুল্ক কমানো হয়েছে। ফ্লাক্স ফাইবারে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ ছাড়া স্কুল বাস সার্ভিস চালুর আগ্রহ প্রকাশ করলে বিশেষ শুল্ক সুবিধায় আমদানির সুযোগ দেওয়া হবে। সিগারেট, বিড়ি, জর্দাসহ সব ধরনের তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী ব্যবসা থেকে অর্জিত আদায় অপরিবর্তিত আছে ও অ্যালুমিনিয়ামের তারে রেগুলেটরি ডিউটি বাড়ছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করল ওয়ালটন। দেশীয় বাজারে সাফল্যের পর এবার আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিকারক হিসেবে আর্বিভূত হলো বাংলাদেশ। নাইজেরিয়ায় দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটনের ল্যাপটপ রপ্তানির মাধ্যমে এই উৎপাদক দেশ থেকে রপ্তানিকারক দেশে পা রাখছি আমরা। এর পুরো কৃতিত্ব ওয়ালটনের।
বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নাইজেরিয়ার সাথে ওয়ালটন ল্যাপটপ রপ্তানির চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগ শিল্পায়নের যুগ। আগামী আরো দুই যুগ বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম পরিমাপক হবে শিল্পায়ন। আর শিল্পায়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে উৎপাদন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওয়ালটন বিভিন্ন খাতে উৎপাদন নিশ্চিত করে যাচ্ছে। আমি তাদের এই অগ্রযাত্রাকে সাধুবাদ জানাই।
তিনি বলেন, এখনো দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান উৎপাদক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিলেও, শতভাগ উৎপাদন কেউ করতে পারছে না। কিন্তু ওয়ালটন তাদের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। এটি আমাদের জন্য ভাল লাগার সংবাদ।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আজ সকাল থেকেই ভাল খবর পাচ্ছি আমি। সকালে কথা বললাম নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার বিষয়ে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের স্বীকৃতির সার্টিফিকেট আমার হাতে এসেছে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই সার্টিফিকেট তুলে দেব আমরা। আর এখন বিকেলে কথা বলছি, স্বাধীনতার মাসে রপ্তানিকারক হিসেবে দেশের অর্জন নিয়ে।
এর আগে নাইজেরিয়ায় ল্যাপটপ রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে নাইজেরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওয়ালটনের আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ইনঅগোরেশন সেরিমনি অব ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সপোর্টেশন’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম এবং অর্থ মন্ত্রণালয় ও ওয়ালটনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওয়ালটনের পক্ষে রপ্তানি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম। নাইজেরিয়ার পক্ষে ছিলেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন বেজ নাইজেরিয়া লিমিটেডের পরিচালক ডেভিড নোনে।
পরে ওয়ালটনকে অভিনন্দন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারি সুযোগ সবার জন্যই সমান। কিন্তু ওয়ালটন সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে তারা প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন করে দেশে সুনাম কুঁড়িয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রপ্তানিকারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কম্প্রেসার এবং ল্যাপটপের মতো মানসম্পন্ন নতুন প্রযুক্তির বৃহৎ পণ্য উৎপাদনের তারা সফল হয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার বক্তব্যে বলেন, ওয়ালটন ল্যাপটপ রপ্তানির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। তিনি চেয়েছিলেন দেশেই ল্যাপটপ কম্পিউটারের মতো প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন হবে এবং মেড ইন বাংলাদেশ লেখা নিয়ে তা রপ্তানি হবে। ওয়ালটন আজ তা সফল করলো।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও ওয়ালটনের পণ্য ব্যবহার করছেন। এমনকি তিনি নিজেই টাকা দিয়ে ওয়ালটনের পণ্য কিনেছেন। দেশে এখন বিশ্বমানের পণ্য তৈরি হচ্ছে এটি আমাদের জন্য আনন্দেরও।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ওয়ালটন প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে যে সাফল্য দেখিয়েছে তা অন্যান্য দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ওয়ালটন আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, দেশীয় ল্যাপটপ কম্পিউটার খাতের পুরোটাই ছিল আমদানি নির্ভর। কিন্তু সরকারি দিক-নির্দেশনা ও সহায়ক নীতির ফলে আমদানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। এ বছরের ১৮ জানুয়ারি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ড্রাস্ট্রিজে চালু হয়েছে দেশের প্রথম কম্পিউটার উৎপাদন কারখানা। যেখানে উৎপাদিত হচ্ছে উচ্চমান সম্পন্ন ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ও মনিটরসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য। এই কারখানার মাসিক উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ হাজার ইউনিট ল্যাপটপ, ৩০ হাজার ইউনিট ডেস্কটপ এবং আরো ৩০ হাজার ইউনিট মনিটর। এর অর্থ বর্তমানে দেশের ল্যাপটপের চাহিদার পুরোটাই পূরণ করার সক্ষমতা রয়েছে ওয়ালটনের।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানায়, ইন্টেল-মাইক্রোসফট এবং বিজয় বাংলার সমন্বয়ে উচ্চমান বজায় রেখে ল্যাপটপ কম্পিউটার উৎপাদন করছে ওয়ালটন। যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে রপ্তানি আদেশ আসছে। ওয়ালটনের তৈরি ল্যাপটপ কম্পিউটারের প্রথম রপ্তানি আদেশ এসেছে আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ নাইজেরিয়া থেকে। শুরুতে ৫০০ ইউনিট ল্যাপটপ নাইজেরিয়ায় পাঠাচ্ছে ওয়ালটন। প্রতিবেশি দেশ নেপাল থেকেও ইতিমধ্যেই ল্যাপটপ রপ্তানির আদেশ পেয়েছে ওয়ালটন। ভুটান এবং পূর্ব তিমুরেও ওয়ালটন ল্যাপটপ রপ্তানির বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। সব মিলিয়ে প্রযুক্তি পণ্যের জগতে ‘সময় এখন বাংলাদেশের’।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশের জন্য আসছে বেশকিছু সুখবর। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশের পথে উত্তরণ হলো দেশের। এবার ল্যাপটপ কম্পিউটার উৎপাদক থেকে রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হলো বাংলাদেশ।
এই সময়ের মধ্যে পোশাক রপ্তানিতে ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সার্বিক রপ্তানিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়েছে; তবে তা চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য (০.০২ শতাংশ) পিছিয়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি থেকে প্রকাশিত চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসের (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি-২০১৮) হালনাগাদ তথ্যে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এতে দেখা যায়, গেল অর্থবছরে (২০১৬-১৭) প্রাথমিক ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩৪ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। চলতি অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি করে ৩৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য পূরণে প্রথম আট মাসেই ২৪ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনা ছিল।
তবে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে রপ্তানি হয়েছে ২৪ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কম।
অবশ্য ২০১৬-১৭ অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ইপিবির প্রতিবেদনে।
চলতি অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি করে ৩০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে বেশ সাফল্য পাওয়া গেছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১৯ দশমিক ৬২ বিলিয়ন রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে রপ্তানি হয়েছে ২০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ওভেন খাতে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এলেও নিটওয়্যার খাতে এসেছে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
রপ্তানি নিয়ে সন্তুষ্ট বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিগত অর্থবছর পোশাক রপ্তানির জন্য খারাপ গেলেও এবার এই খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তৈরি পোশাকখাতে প্রবৃদ্ধির এই ধারা অবশ্যই ইতিবাচক।
“গত বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা যেখানে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখিনি, সেখানে এই মাসে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আছে। এর মানে হচ্ছে আমরা ঘুরে দাঁড়ালাম। আশা করছি, চলতি বছরের বাকি সময়টাতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে পৌঁছাবে।”
চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্য ৯৬ মিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য থাকলেও রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৬৪ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩২ শতাংশ পিছিয়ে আছে এই খাত। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম ২১ শতাংশ।
একইভাবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ শতাংশ কম রপ্তানি হয়েছে। আর গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ পিছিয়ে আছে।
তবে এই সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে হিমায়িত ও জীবিত মাছ রপ্তানি। প্রায় ৩৮৩ মিলিয়ন ডলারের চিংড়ি, হিমায়িত ও জীবিত মাছ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ঢাকা ক্লাবে তরঙ্গের নিলামের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নিলামে অংশ নিয়ে দেশের দুই অপারেটর বাংলা লিংক ও গ্রামীণফোন মোট তিন হাজার ৮৪৪ কোটি টাকায় ফোর জি তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়েছে।
এছাড়া টু জি ও থ্রি জি সেবার জন্য বরাদ্দ করা তরঙ্গে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দিয়ে (যাতে ওই তরঙ্গ যে কোনো প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা যায়) গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক ও রবির কাছ থেকে সরকার পেয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ দশমিক ০৮ কোটি টাকা।
দেশের চার অপারেটর ফোর জি তরঙ্গ নিলামে থাকার আবেদন করলেও শেষ পর্যন্ত নিলামে অংশ নিয়েছে শুধু গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অপারেটর রবি তাদের হাতে থাকা তরঙ্গ প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায় রূপান্তর করে ফোর জি সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
আর বন্ধ হয়ে যাওয়া অপারেটর সিটিসেল নিলামে অংশ না নেওয়ায় তাদের পুনরায় চালু হওয়ার সম্ভবনা আর থাকল না।
তরঙ্গের প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার সুবিধা পেতে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক ফোর জি সেবায় আসতে চাইলে ওই সময়ের মধ্যে তাদের প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার সুবিধা নিতে হবে।
চারটি ব্লকে এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজে (প্রথম ব্লক- ৫ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ, দ্বিতীয় ব্লকে ৫ মেগাহার্টজ করে দুটি এবং দুই দশমিক ৪ মেগাহার্টজ আরেকটি ব্লক) এবং দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজের ৫টি ব্লকে ( প্রতি ব্লকে ৫ মেগাহার্টজ করে) এ নিলাম হয়।
এর মধ্যে গ্রামীণফোন শুধু এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ এবং বাংলালিংক দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজ ও এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামে অংশ নেয়।
বাংলালিংক এক হাজার ১১৯ কোটি টাকায় ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড এবং এক হাজার ৪৩৯ কোটি টাকায় ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের মোট ১০.৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে।
আর গ্রামীণফোন ১ হাজার ২৮৪ কোটি টাকায় কিনেছে ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ফোর জি লাইসেন্স ও তরঙ্গ ব্যবহারের অনুমতিপত্র অপারেটরগুলোর কাছে হস্তান্তর করবেন তারা।
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উপস্থিতে তরঙ্গ নিলম অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিটিআরসি স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক নাসিম পারভেজ।
বাংলা লিংকের সিইও এরিক অস ও গ্রামীণ ফোনের সিইও মাইকেল ফলি বসেন দুটি আলাদা টেবিলে বসে নিলামে অংশ নেন।
মঙ্গলবার ইতালির রোমে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) গভর্নিং কাউন্সিলের ৪১তম অধিবেশনে ‘নাজুকতা থেকে দীর্ঘমেয়াদে তেজিভাব: টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে এ আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুসহ একাধিক আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেওয়া নানা পদক্ষেপগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তার সামনের চ্যালেঞ্জগুলোর কথাও তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, দুর্যোগে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা তৈরিতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ অন্যতম প্রধান বিষয়। এবং আমরা বিশ্বাস করি, বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা ছাড়া এটা অর্জন করা সম্ভব নয়।”
দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে উন্নয়ন সহযোগীদের আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে মনে হয় এটার জন্য বিশ্ব এখন প্রস্তুত। আমি আপনাদের সকলকে টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই।”
স্বাধীনতার পর কৃষি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু ১৯৭৫ সালে তাকে হত্যার পরের বছরগুলোতে দেশের কৃষি খাত ধারাবাহিক অবহেলার শিকার হয়েছে, যার ফলে দেশ মারাত্মক খাদ্য ঘাটতিতে পড়েছিল।
আইএফএডির প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট ফাউসন হোউংবোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ সংস্থাটির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অভিনন্দন জানান এবং উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
সৌদি আরবের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, সৌরপ্যানেল এবং সার কারখানায় বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
সফররত সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করে।
সৌদি আরবের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি গ্রুপের নির্বাহী সভাপতি মোসহাবাব আব্দুল্লাহ আলখাতানির নেতৃত্বে সোমবার ঢাকায় আসা ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি বুধবার এফবিসিআই আয়োজিত একটি বাণিজ্য সেমিনারেও অংশ নেবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, “আমরা আশা করি এর মধ্য দিয়ে অনেক বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে।”
বাংলাদেশের বিভিন্ন চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সৌদি ব্যবসায়ীদের ভালো সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী মুহিতও।
সৌদি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন কোম্পানির সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সচিবালয়ের বৈঠকে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন দুই মন্ত্রী।
তোফায়েল বলেন, “আমরা একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি, সৌদি আরব চাইলে যেকোনো একটি অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারে।
“বাংলাদেশে যারা বিনিয়োগ করবে তাদের যদি কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় আমরা তা অবশ্যই পূরণ করব। আমরা বলেছি সকল ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করব।”
বাংলাদেশ আটটি খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আইটি, ফার্মাসিউটিক্যাল, লেদার, পাট, প্লাস্টিক, ফার্নিচার, হিমায়িত পণ্য খাতে আমরা বিনিয়োগ করছি। ১৬ কোটি মানুষের চাহিদা মিটিয়ে ১২৭টি দেশে আমাদের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে।”
স্বাধীনতার পর শুধু চামড়াজাত পণ্য, পাট ও চা বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হত জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন আমরা সাতশর বেশি পণ্য রপ্তানি করি, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই আমরা রপ্তানি করি।”
শুধু সৌদি আরবের ব্যবসায়ী নয়, অন্য দেশের ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে কীভাবে বেশি লাভবান হতে পারেন সেই পন্থাও তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
“কেউ যদি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে তাহলে লাভবান হবে। কারণ আমরা এখনও এলডিসিভুক্ত দেশ। আমরা বেশিরভাগ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ থেকে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা পাই। এখানে বিনিয়োগ করে অন্য দেশে পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাবেন।”
সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। … আমাদের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক ঘাটতি আছে।”
কিছুটা বাধা থাকলেও প্রায় সবাই কোনো জটিলতা ছাড়াই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে বলে সৌদি ব্যবসায়ীদের জানান তিনি।
২০০৯ সালে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সমস্যা ছিল জানিয়ে মুহিত বলেন, “এই সম্যসা সমাধানে সরকার ক্র্যাশ গ্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে। এখন বেসরকারি কোম্পানি বিদ্যুৎ উৎপাদান করছে, আমরা তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছি আমরা তাদের বিদ্যুৎ কিনব।”
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “সেটা খুব বেশি স্ট্র্যাকচারড না, একটু ইন্ডিভিজুয়াল এফোর্টের উপর নির্ভরশীল ছিল। আমাদের প্রত্যাশা ছিল ইট সুড বি স্ট্র্যাকচারড।”
রপ্তানি করার মত বাংলাদেশের অনেক পণ্য থাকলেও সেগুলো নিয়ে খুব প্রচার হয় না বলে জানান একজন সৌদি ব্যবসায়ী।
এ প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, “আমাদের পরিচিতি সিম্পল গার্মেন্টস দিয়ে। কিন্তু এখন আমরা এতভাবে ডাইভারসিফাইড হয়েছি যে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথেষ্ট এক্সপোর্ট ক্যাপাবিলিটি আছে। সেদিক দিয়ে এটি উল্লেখযোগ্য ভিজিট হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
“বাংলাদেশ এখন ইনভেস্টমেন্ট ডেস্টিনেশন, সেটার ফলও আমরা পাচ্ছি। ২০১৫ সালের পর যে দেশে স্থিতিশীল অবস্থা, এটা খুবই কাজের হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের মত ছিল, গত অর্থ বছরে এটা দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি মুভমেন্ট অব এফডিআর বাংলাদেশে বেশ কার্যকর হচ্ছে।”
সৌদি প্রতিনিধি দলের প্রধান ও দেশটির ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি গ্রুপের নির্বাহী সভাপতি মোসহাবাব আব্দুল্লাহ আলখাতানি এ ধরনের আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
প্রতিনিধিদলে যেসব ব্যবসায়ী বাংলাদেশে এসেছেন তারা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৮৫ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে সৌদি আরবে, বিপরীতে আমদানি করেছে ৬০৫ দশমিক চার মিলিয়ন ডলারের পণ্য।
মিরসরাইয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে পাঁচশ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ–বেজা।
ওই জমিতে ‘বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন (বিআইইজেড)’ নামের একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় এককভাবে বিনিয়োগ করবে দেশের অন্যতম শীর্ষ এই শিল্পগ্রুপ।
বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে ৪৮৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে পাল্প ও বোর্ড মিল শিল্প গড়ে তোলা হবে। প্রস্তাবিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৫ হাজারের বেশি নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হবে বলে তাদের আশা।
বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান ও বেজার নির্বাহী সদস্য মো. হারুনুর রশিদ সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে জমির ইজারাপত্রে সই করেন।
১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, এককোটি মানুষের কর্মসংস্থান, ২০২১ সালের মধ্যে ৪০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় ও ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করে বেজা।
এর মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ, আমান গ্রুপ, আব্দুল মোনেম গ্রুপ, বে- গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, ইউনাইটেড গ্রুপ ও আরিশা গ্রুপসহ এক ডজনের বেশি বেসরকারি শিল্প গ্রুপ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশ রকেট গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল তৈরি করেছেন। আমরা এই উন্নয়নের অংশীদার হতে চাই।”
দেশীয় বিনিয়োগকারীদের আরও সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রচুর জায়গা রয়েছে। যারাই বিদেশে টাকা রেখেছেন- ন্যায্যভাবে, অন্যায্যভাবে, যেভাবেই হোক; সরকারের উচিত তাদেরকে ন্যূনতম পেনাল্টির মাধ্যমে টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ করে দেওয়া।”
চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, বাংলাদেশি একটি কোম্পানি লাভ করলে আরও ৪০টি কোম্পানি গড়ে তুলবে। আর বিদেশিরা যা লাভ করবে তা সঙ্গে নিয়ে চলে যাবে। এজন্য দেশীয় উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে হবে।
দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠায় নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর হয়নি বলে অভিযোগ করেন শীর্ষ এই বিনিয়োগকারী।
“আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন, অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথে কাজও হয়তো শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর হয়নি। ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কথা অনেক দিন ধরে শুনছি, কিন্তু কার্যকারী হচ্ছে না।”
এক বছর আগে ঢাকার অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের নিজস্ব ভূমিতে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক অনুমোদন পায় বসুন্ধরা গ্রুপ।
২২৪ একর জমির ওপর ‘বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ এবং ২১৮ একর জমির ওপর ‘ইস্ট-ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ গড়ে তুলছে শিল্প গ্রুপটি।
অনুষ্ঠানের অতিথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বাংলাদেশ সরকার সঠিক সময়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দিয়েছে। আইনি কাঠামো এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছায় এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
আমলাতান্ত্রিক জটিলতার বিষয়ে তিনি বলেন, আগে প্রশাসনে এ জটিলতা থাকলেও এখন তা অনেকাংশে দূর হয়েছে।
“আমরা আইন প্রণয়নে হাত দিয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী বিধিও তৈরি করেছি। সেই বিধি অনুযায়ী কাজও শুরু হয়ে গেছে। কাজের স্থবিরতা দূর হওয়ার এটাও একটা প্রমাণ।”
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বলেন, “অনেক বাধা পেরিয়ে আমরা এতদূর এসেছি। শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিয়ে যে কাজ হচ্ছে তা অত্যন্ত কঠিন। কাজ করার মাধ্যমে আমরা সেই অভিজ্ঞতা পাচ্ছি।”