এতদিন বিদেশ থেকে চাল আনতে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্কের সঙ্গে ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি দিতে হত। সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে কম্পিটিশন আইন নিয়ে এক কর্মশালার শুরুতেই মন্ত্রী শুল্ক কমানোর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে আদেশ জারি হবে।
“এই সিদ্ধান্তের ফলে বাজার দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আমরা আশা করছি। ইতোমধ্যে সরকারি পর্যায়েও চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করা যায় বাজার দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”
ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির মুখে সরকারের চালের মজুদও তলানিতে পৌঁছে যাওয়ায় সম্ভাব্য সংকট মোকাবেলায় ব্যবসায়ীদের চাল আমদানিতে বিনা মার্জিনে ঋণপত্র খোলার সুযোগ দিচ্ছে সরকার।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানায়, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাল আমদানির এলসি খুলতে ব্যাংকগুলো কোনো ‘মার্জিন’ ধার্য করতে পারবে না।
অর্থাৎ, চাল আমদানির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলার সময় ব্যবসায়ীদের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা থাকতে হবে না। তারা বাকিতে চাল আমদানি করতে পারবেন এবং চাল দেশে আসার পর ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারবেন।
হাওরাঞ্চলে বন্যা, দেশের বিভিন্ন এলাকায় অতিবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চালের স্বাভাবিক সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় চালের বাজারে অস্থিতিশীলতা নিরসনে এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।
দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চালের দাম গত তিন মাস ধরে বাড়তে থাকায় কষ্টে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সরকারি হিসাবে গত এক বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে আট শতাংশের বেশি; চিকন চালের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
সন্তোষজনক বাড়তি মজুদ থাকায় আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে চালের শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করে সরকার। এর সঙ্গে রেগুলেটরি ডিউটি তিন শতাংশ যোগ হওয়ায় ব্যবসায়ীদের ২৮ শতাংশ শুল্ক গুণতে হয়।
ফলে গত দেড় বছর ধরে বেসরকারি পর্যায়েও চাল আমদানি প্রায় বন্ধ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) চাল আমদানিতে এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ৫৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আর এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ কমেছে প্রায় ৬৩ শতাংশ।
কিন্তু এবার বোরো মৌসুমে আগাম বন্যায় সরকারি হিসাবেই হাওরে ছয় লাখ টনের মতো ধান নষ্ট হওয়ায় এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে (১০ টাকা কেজি দরের চাল) সাড়ে সাত লাখ টন চাল বিতরণ করায় সরকারি মজুদ তলানিতে নেমে আসে।
গতবছর এপ্রিলে যেখানে সরকারি গুদামগুলোতে সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি চাল ছিল, সেখানে এ বছর ১৫ জুনে তা ১ দশমিক ৯০ লাখ মেট্রিক টনে ঠেকেছে।
এই পরিস্থিতিতে বাজারে চালের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় সরকারিভাবে মোট ছয় লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়। পরে সরকারিভাবে ভিয়েতনাম থেকে আরও আড়াই লাখ টন আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন পায়।
এর মধ্যে প্রথম দেড় লাখ টনের দরপত্র দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আরো ৫০ লাখ টন চাল আমদানির দরপত্র চাওয়া হয়েছে।
এ অর্থ দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতে সক্ষমতা বাড়াতে ব্যবহার করা হবে।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এডিবির এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এডিবির সঙ্গে ঋণ চুক্তিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডির ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজুহিকো হিগুচি স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে এডিবি ও ইআরডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঋণের অর্থের মধ্যে ৬০ কোটি ডলার কিছুটা কঠিন শর্তের অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্সেস-ওসিআর, যাতে প্রায় ৩ শতাংশের বেশি সুদ দিতে হবে। আর বাকি মাত্র ১ কোটি ৬০ ডলার ২ শতাংশ সুদে।
পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ২৫ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
‘বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম এনহ্যান্সমেন্ট অ্যান্ড ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট’ শিরোনামের এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব বলেন, এ প্রকল্পটি মোট ১০৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে এডিবি ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিচ্ছে। বাকি অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে যোগান দেওয়া হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে পিজিসিবি, ডেসকো এবং বিআরইবি এ তিন বাস্তবায়নকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।
কাজুহিকো হিগুচি বলেন, এ প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে। এসব পরিবারের অধিকাংশই গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা। এছাড়া প্রকল্পটি ঢাকার বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো এবং বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে সাহায্য করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চার বছর মেয়াদে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হবে।
এছাড়া ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। সেইসাথে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগেরও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতি করা হবে।
এডিবি ছাড়াও এ কর্মসূচিতে সহ-অর্থায়নকারী হিসেবে জাপান ফান্ড ফর পোভার্টি রিডাকশন (জেএফপিআর) শূন্য দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে শুক্রবার চিনি ও ছোলা কেজিতে ৫ টাকা, মুগডাল ২০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।
চিনি ও ছোলার দাম বৃদ্ধির জন্য পাইকাররা মিল থেকে সরবরাহে বিলম্বের কথা বলছেন। তবে একটি নিত্যপণ্য বিপণন কোম্পানির প্রতিনিধি বলছেন, পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই, দামও স্বাভাবিক আছে।
এভাবে দাম বৃদ্ধির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের মজুদদারিকে দায়ী করে বাজারে তদারকি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব।
এদিকে ক্রমবর্ধমান চালের বাজারে প্রায় সব ধরনের চালে গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি অন্তত এক টাকা করে বেড়েছে বলে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
শুক্রবার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ঠাকুরগাঁও ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপক রাজিনুর ইসলাম বলেন, গত ১০ দিনে চিনির ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে অন্তত ৩০০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকারও বেশি।
“১০ দিন আগে ২৯০০ টাকা ছিল। ফ্রেশ ব্র্যান্ডের চিনির বস্তা মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ৩১৯০ টাকা, কিন্তু সরাসরি ডিও কেটে ১৫ দিনেও চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। আর বিশেষ ব্যবস্থায় কিনতে হলে দাম কিছুটা বেশি দিতে হচ্ছে। সে কারণে বাজারে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে।”
তবে মিলগেইটে চিনির দাম বস্তা প্রতি ২৯০০ টাকা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
চিনির সরবরাহ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিত সাহা বলেন, “বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। মিল গেইটে প্রতি কেজি চিনির দাম এখন ৫৯ টাকা।”
এই কোম্পানির সব ধরনের পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
দেশ উৎপন্ন হওয়া মুগডাল এক সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা করে বেড়েছে বলে জানান কৃষি মার্কেটের সূর্য এন্টারপ্রাইজের নসরুল আমিন।
মুগডালের কেজি এখন ১২০টাকা। এক সপ্তাহ আগেও মুগডাল ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলার দাম কেজিতে অন্তত ৫ টাকা বেড়ে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান নসরুল।
একই তথ্য জানান সিটি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক আবু তাহের মৃধা।
তিনি জানান, সাভারের আড়ৎদারদের কাছ থেকে তারা শুক্রবার ৯৮ টাকায় ভালো মানের এক কেজি মসুর ডাল, ৮০ টাকায় ভাঙা বুট ডাল, ৭৯ টাকায় ছোলা, খেসারি ডাল ৭০ টাকা করে কিনেছেন। বিক্রি করছেন কেজিতে ২-১ টাকা লাভে।
চিনি ছোলার পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। কারওয়ানবাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে।
এই বাজারের একজন মুরগি বিক্রেতা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানি কক ও দেশি মুরগির দামও বাড়ছে।
চালের দাম
কৃষি মার্কেটের কাজী রাইস এজেন্সির কাজী কামাল উদ্দিন জানান, কিছু দিনের ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহেও বিভিন্ন ধরনের চাল কেজিতে অন্তত এক টাকা করে বেড়েছে।
গুটি স্বর্ণা ৪১ থেকে ৪১ টাকা ৫০ পয়সা, মিনিকেট ৫০ থেকে ৫১ টাকা, বিআর আঠাশ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, পায়জাম ৪৪ থেকে ৪৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং নাজিরশাইল চাল কেজি প্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এভাবে দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সহ-সভাপতি এসএম নাজির হোসেন বলেন, সরবরাহ ঘাটতি নয়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর মজুদদারির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে।
“আমাদের জানা মতে, এবার রমযান উপলক্ষে পর্যাপ্ত ছোলার মজুদ আছে। আমদানিকারকদের হাত থেকে ছোলা মধ্যম পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের হাতে গিয়ে জমা হয়ে আছে। তারাই দাম বাড়াচ্ছে।”
সরকারের প্রতি বাজারে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
রোববার সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ২ মে থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত ২৪ টাকা কেজি দরে ৭ লাখ টন ধান ও ৩৪ টাকা দরে ৮ লাখ টন চাল কেনা হবে।
গত বছর ২৩ টাকা কেজি দরে ৭ লাখ টন ধান এবং ৩২ টাকা কেজিতে ৬ লাখ টন চাল কিনেছিল সরকার।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবার বোরো ধান-চালের বাইরে ২৮ টাকা কেজি দরে এক লাখ টন গম কেনা হবে।
আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গম কেনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রতিকেজি গমের উৎপাদন খরচ ২৮ টাকার মতো পড়েছে।”
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের আমরা অ্যাকাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট করব, যাতে সরাসরি সেই মূল্যটা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়, কোনো রকম যাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম না থাকে।”
এ বছর প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ ২২ টাকা এবং এক কেজি চালের উৎপাদন খরচ ৩১ টাকা পড়েছে বলে জানান তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ৮ লাখ টন চালের মধ্যে ৩৩ টাকা কেজি দরে এক লাখ টন আতপ চাল কেনা হবে।
অসময়ে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় হাওরের কৃষকদের ক্ষতি হওয়ায় তাদের ওএমএসের মাধ্যমে চাল ও আটা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কামরুল বলেন, এছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলমান আছে।
বোরোর উৎপাদন এবার বেশি হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, হাওর এলাকায় বোরোর কিছু ক্ষতি হলেও অন্য জায়গায় বাম্পার ফলন হওয়ায় সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।
হাওর এলাকায় বোরো ধানের ক্ষতি হওয়ায় (চালের আকারে) সাড়ে চার লাখ টনের মত চাল নষ্ট হবে বলেও জানান তিনি।
এ বছর এক কোটি ৯১ লাখ ৫৩ হাজার টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে জানিয়ে কামরুল বলেন, “টার্গেট ফুলফিল করতে পারব, কোনো অসুবিধা হবে না।”
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের মোবাইল ফোন অপারেটররা প্রতি গিগাবাইট ইন্টারনেট ডাটা কিনছে গড়ে ২৬ পয়সায়। একই পরিমাণ ডাটা গ্রাহকের কাছে ২০০ টাকার বেশি নিচ্ছে অধিকাংশ অপারেটর। যদিও অপারেটরগুলোর দাবি, ব্যান্ডউইডথের যে দাম তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়, তা তাদের ডাটাভিত্তিক সেবার মোট ব্যয়ের ১-৩ শতাংশের বেশি নয়।
সেলফোন অপারেটররা ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে প্রতি মেগাবিটস পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) ব্যান্ডউইডথ কিনছে ৩৯০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এক এমবিপিএস গতির সংযোগে মাস শেষে ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৯২ গিগাবাইট (জিবি)। এ হিসাবে প্রতি জিবি ডাটা কিনতে অপারেটরদের ব্যয় হয় ১৫-২১ পয়সা। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্নতাসহ অন্যান্য খাতে ৩০ শতাংশ অপচয় সমন্বয় করা হলেও তা দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১৪ জিবি। এতে প্রতি জিবি ডাটা কিনতে অপারেটরদের ব্যয় হয় সর্বনিম্ন ২২ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ পয়সা, দুটোর গড় করলে যা দাঁড়ায় ২৬ পয়সা।
সেলফোন অপারেটরদের ডাটাভিত্তিক সেবার তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে গ্রামীণফোনের ১ জিবি ডাটার সরাসরি কোনো প্যাকেজ না থাকলেও ফ্লেক্সিপ্ল্যানের মাধ্যমে সমপরিমাণ ডাটা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ফ্লেক্সিপ্ল্যানে ৩০ দিন মেয়াদে ১ জিবি ডাটা কিনতে গ্রামীণফোনের গ্রাহকের ব্যয় ২৭৪ টাকা ২৮ পয়সা। একই পরিমাণ ডাটা কিনতে বাংলালিংকের গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে ২০৯ টাকা। রবি ও এয়ারটেলের ১ জিবি ডাটা প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ২১৩ টাকা ৬ পয়সা ও ২০৯ টাকা। তবে এক্ষেত্রে মেয়াদ ধরা হয়েছে ২৮ দিন। আর রাষ্ট্রায়ত্ত সেলফোন অপারেটর টেলিটকের ১ জিবি ডাটা প্যাকেজের মূল্য তুলনামূলকভাবে অন্যদের চেয়ে কম। প্রতিষ্ঠানটির ৩০ দিন মেয়াদি ১ জিবি ডাটা প্যাকেজের মূল্য ১৮০ টাকা। তবে গড় হিসাবে এ পাঁচটি অপারেটরের প্রতি জিবি ডাটার বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ২১৭ টাকা।
দেশে ইন্টারনেট সেবার সম্প্রসারণে গত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে ব্যান্ডউইডথের মূল্য কমিয়ে এনেছে সরকার। পাশাপাশি ওয়াইম্যাক্স ও থ্রিজির মতো তারবিহীন উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে। ফলে সেবাটির গ্রাহকও বেড়েছে। আর ইন্টারনেট গ্রাহকের সিংহভাগই সেলফোন অপারেটরদের ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে। থ্রিজি প্রযুক্তি চালু অপারেটরদের ডাটাভিত্তিক সেবা আরো সম্প্রসারণের সুযোগ এনে দেয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অপারেটররা ব্যবসা করলেও বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাহক।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেটর গ্রুপের (বিডিনগ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাবির বলেন, দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের দাম আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। বিশ্বের অন্যতম সস্তা মূল্য এটি, তাতে সন্দেহ নেই। তবে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য কতখানি কমেছে, সেটি বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে মূল্য যেভাবে কমেছে, মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য সেভাবে কমেনি। অপারেটরদের ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য আগের তুলনায় খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। অথচ এ সময়ে কয়েক গুণ বেড়েছে তাদের গ্রাহক। এসব বিবেচনায় দেশে মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম গ্রাহক পর্যায়ে আরো সহনীয় করতে হবে।
এদিকে ইন্টারনেট ডাটার মূল্য বাবদ গ্রাহকের কাছ থেকে বেশি অর্থ আদায়ের বিষয়টি মানতে রাজি নয় অপারেটররা। তাদের দাবি, ডাটাভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয়, তার মাত্র ১-৩ শতাংশ হলো ব্যান্ডউইডথের মূল্য। সিংহভাগ অর্থই প্রতিষ্ঠানের মূলধনি ও পরিচালন ব্যয় সংশ্লিষ্ট। এসব ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে— নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নির্মাণ, তরঙ্গ বরাদ্দ, বার্ষিক তরঙ্গ বরাদ্দ ফি ও লাইসেন্স ফি, বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য।
এ বিষয়ে রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশন অ্যান্ড করপোরেট রেসপন্সিবিলিটি) ইকরাম কবীর বলেন, প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে কস্ট মডেলিংয়ে দেখা গেছে, ব্যান্ডউইডথের ব্যয় সেবাটির সংশ্লিষ্ট মূলধনি ও পরিচালন ব্যয়ের ১ শতাংশেরও কম। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে এ সেবা দিতে যে ব্যয় হয়, তার তুলনায় ব্যান্ডউইডথের ব্যয় সামান্যই।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতি মেগাবাইট ডাটার খুচরা বিক্রয়মূল্য আমাদের ব্যয়ের চেয়ে কম। বাজারে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতার কারণেই সেবাটির মূল্য এ পর্যায়ে এসেছে। এতে সেবাটি গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এলেও সেবাদানকারী অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের জন্য তা লাভজনক হচ্ছে না।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারি শেষে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৬ কোটি ৭২ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু সেলফোন অপারেটরদের টুজি ও থ্রিজি প্রযুক্তির ইন্টারনেট সেবার আওতায় গ্রাহক রয়েছে ৬ কোটি ৩১ লাখের বেশি। এছাড়া ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আইএসপি) ও পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন) অপারেটরদের সেবাগ্রহণকারী ৪০ লাখ ৩৬ হাজার। আর ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহক রয়েছে ৮৯ হাজার। দেশে বর্তমানে প্রতি মাসে গ্রাহকপ্রতি ডাটা ব্যবহার হচ্ছে ৪০০-৫০০ মেগাবাইট (এমবি)।
২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নিলামের মাধ্যমে থ্রিজির তরঙ্গ বরাদ্দ পায় গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল। পরবর্তীতে একই বছরের ৭ অক্টোবর গ্রামীণফোন, ২১ অক্টোবর বাংলালিংক, ৩০ অক্টোবর রবি ও ৭ নভেম্বর এয়ারটেল বাণিজ্যিকভাবে এ সেবা চালু করে। আর রাষ্ট্রায়ত্ত সেলফোন অপারেটর টেলিটক পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি সেবাদান শুরু করে আরো এক বছর আগে। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর সেবাটি চালু করে টেলিটক।
থ্রিজি চালু হওয়ার পর থেকে ডাটাভিত্তিক সেবায় কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে সেলফোন অপারেটররা। গত তিন বছরে অপারেটরদের আয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে ডাটাভিত্তিক সেবা। গত বছর ইন্টারনেট সেবা থেকে শীর্ষ সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন আয় করেছে ১ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খাতটি থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয় যথাক্রমে ৫৫০ কোটি ও ৮৫০ কোটি টাকা।
গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্স সৈয়দ তালাত কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, ডাটা নয়, আইআইজি থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনছে গ্রামীণফোন। এরই মধ্যে গ্রামীণফোনের থ্রিজি সেবার আওতায় এসেছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ইন্টারনেট গ্রাহক।
ইন্টারনেট সেবা থেকে গত বছর ৬৮৪ কোটি টাকা আয় করে সেলফোন অপারেটর রবি। এ সেবা থেকে ২০১৫ সালে ৫২৪ কোটি ও ২০১৪ সালে ২৮৭ কোটি টাকা আয় করে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া বাংলালিংক ডাটাভিত্তিক সেবা থেকে গত বছর আয় করেছে ৪৯১ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ডাটা থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে যথাক্রমে ১৭৬ কোটি ও ৩২৫ কোটি টাকা।
বাংলালিংকের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন্স আসিফ আহমেদ বলেন, গত কয়েক বছরে ইন্টারনেট সেবার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে বাংলালিংক। ২০০৯ সালে যেখানে প্রতি এমবি ডাটার মূল্য ৩ টাকা ৯০ পয়সা ছিল, তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ পয়সায়। তিনি বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে সেলফোনের গ্রাহকরা ফিচারফোন থেকে স্মার্টফোন ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এর ফলে ডাটার ব্যবহারও ক্রমেই বাড়ছে।
বর্তমানে দেশে ব্যান্ডউইডথের চাহিদা প্রায় ৪০০ গিগাবিটস পার সেকেন্ড (জিবিপিএস)। সাবমেরিন কেবল ও ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) সংযোগের মাধ্যমে এ ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করা হচ্ছে। সাবমেরিন কেবল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) সরবরাহ করছে ১৩০ জিবিপিএস। আইটিসি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশন্স ১০০ জিবিপিএস, ফাইবার অ্যাট হোম ৮০ জিবিপিএস, ওয়ান এশিয়া ৪০ জিবিপিএস ও অন্য তিনটি আইটিসি প্রায় ৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে। আইআইজি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিএসসিসিএল ও আইটিসির কাছ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনে তা বিক্রি করছে সেলফোন অপারেটর, আইএসপি, পিএসটিএন এবং ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে। সূত্র : বণিক বার্তা।
শেয়াবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকিং খাতের প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড অব ডাইরেক্টরস শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করেছে।
জানা গেছে, ব্যাংকের ৩৪তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ লভ্যাংশ প্রদান করা হবে। বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বোর্ড অব ডাইরেক্টরস সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় ব্যাংকের দেশি-বিদেশি ডাইরেক্টর এবং ম্যানেজিং ডাইরেক্টররা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ সালের লাভ-লোকসান ও ব্যালান্স শিট অনুমোদন করা হয়। ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে ২৩ মে। একইসঙ্গে লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৩ এপ্রিল।
দেশের পাইকারি বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমলেও খুচরা বাজারে তেমন প্রভাব নেই। এতে দাম কমার কোনো সুফলই পাচ্ছেন না সাধারণ ভোক্তারা। এজন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার প্রবণতাকেই দায়ী করছেন পাইকাররা।
দু সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে প্রতিমণে সাতশ টাকা। পামওয়েলের দামও কমেছে মণে প্রায় তিনশ টাকা।
পাইকারি বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা এবং পামওয়েল বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৬৭ টাকায়। কিন্তু দাম কমলেও খুচরা বাজারে তেমন কোন প্রভাব নেই। এদিকে লিটারে পার্থক্য প্রায় ৬ থেকে ৭ টাকা।
কারওয়ান বাজারে যে দাম একটু দুরেই হাতিরপুল বাজারে গেলে তা বেড়ে যাচ্ছে। আবার অন্যান্য বাজার ভেদেও রয়েছে দামের হেরফের। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন সঠিক তদারকির অভাবেই খুচরা বাজারে দাম কমার তেমন প্রভাব পড়ছে না।
বাজারে খোলা তেলের দাম কমলেও বোতলজাত তেলের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
দেশে মোট ৯৮টি পাট সুতা প্রস্তুতকারী কারখানা রয়েছে। আর বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পাটপণ্য রফতানি হয়, তার মধ্যে পাট সুতার পরিমাণ ৬৮ শতাংশ। বিশ্বজুড়ে পাট সুতার চাহিদা রয়েছে প্রায় ছয় লাখ টন। এর মধ্যে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে রয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) বার্ষিক সাধারণ সভায় এ বিষয়ে জানানো হয়।২৯ শে মার্চ বুধবার দৈনিক বণিক বার্তায় প্রকাশিত ‘পাট সুতায় বিশ্বচাহিদার ৯২% বাংলাদেশের দখলে’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে দুই ধরনের পাটকল রয়েছে। এগুলো হলো— বস্তা, চট ও সিবিসি প্রস্তুতকারী পাটকল এবং পাট সুতা প্রস্তুতকারী কারখানা। আমরা গর্বিত যে, দেশের অর্থনীতিতে পাট সুতা খাত বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পাটপণ্য রফতানি হয়, তার মধ্যে পাট সুতার পরিমাণ ৬৮ শতাংশ। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কঠিন নজরদারির মধ্যে পাট সুতা তৈরি করতে হয়, যা বিদেশে অবস্থিত বিভিন্ন শিল্পের আধা প্রক্রিয়াজাত কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহূত হয়। পাট সুতার বিশ্বচাহিদার ৯২ শতাংশই বাংলাদেশের দখলে থাকলেও বস্তা, চট ও সিবিসি (কার্পেট ব্যাকিং ক্লথ) পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার নানা কারণে সংকুচিত হয়ে আসছে।
তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের পাট শিল্পের রফতানি বাণিজ্য গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে কাঁচা পাটের উচ্চমূল্য, শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধি, বিদ্যুত্ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে পাটপণ্যের উত্পাদন ব্যয় বেড়েই চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, আমদানিকারক বিভিন্ন দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব বিরাজ করায় পাটপণ্যের রফতানিমূল্য বাড়ছে না। পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় এ শিল্পে ধস নামছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এসব কারণে এরই মধ্যে ২৫টি পাট সুতাকল বন্ধ হয়ে গেছে। দৈনিক বণিক বার্তা
দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যোগে “২৫তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৭” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১৯ মার্চ বিকেলে রেলওয়ে পোলোগ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এমপি, বিশেষ অতিথিদ্বয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন ও এফবিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) এবং চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সিআইটিএফ’১৭ এর চেয়ারম্যান মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ, অনারারী কনস্যূল, ডিপ্লোম্যাটস, সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিসিসি কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন ট্রেডবডি নেতৃবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিসহ নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি আমির হোসেন আমু এমপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে টেকসই ও সুসংহত শিল্পখাত বিকাশের পাশাপাশি উৎপাদিত শিল্পপণ্য বৈচিত্রকরণে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ইতিবাচক অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন-শিল্প মন্ত্রণালয় প্রণীত জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬ এ বেসরকারী উদ্যোক্তাদের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতি সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। শিল্প মন্ত্রী ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে জিডিপি-তে সার্বিক শিল্পখাতের অবদান ৩১.৫৪% যেখানে ম্যানুফেকচারিং শিল্পখাতে মোট প্রবৃদ্ধি ১১.৬৯% উল্লেখ করে তৈরী পোষাক শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, জুতা ও ঔষধ শিল্পের সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথি সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন-জিডিপিতে ব্যবসায়ীদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত চিহ্নিত সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। তিনি বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ চট্টগ্রামের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বেগবান করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। কর্ণফুলীর তীর ঘেঁষে রিং রোড নির্মাণ করে যানজট নিরসন ও শহরের মূল সড়কের উপর অত্যাধিক চাপ হ্রাস করা সম্ভব উল্লেখ করে পরিবেশবান্ধব মহানগর গড়ার আহবান জানান সিটি মেয়র।
বিশেষ অতিথি এফবিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন-বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য বিকাশে বিশেষ করে রপ্তানী পণ্যের প্রচার, বাজার সম্প্রসারণ এবং পণ্যের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন একটি প্রয়োজনীয় ও যথার্থ উদ্যোগ। তিনি রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে দেশীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো প্রয়োজন এবং কারখানার উৎপাদন পরিবেশ, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স বিষয়গুলো প্রতিপালনের উপর অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-বর্তমান প্রবৃদ্ধিতে ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানি ষাট বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত উন্নীত করা সম্ভব । তবে এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রামসহ সমুদ্র বন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, নতুন নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ এবং রেল, নৌ ও সড়ক যোগাযোগের সুবিধা কাজে লাগাতে বে-টার্মিানাল সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি কাস্টমস্’র লোকবল বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে ওয়ান স্টপ সার্ভিস এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের ক্ষমতায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। চিটাগাং চেম্বারসহ অন্যান্য চেম্বারের মেলা আয়োজনের জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যুর দাবী জানান চেম্বার সভাপতি।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ২৫তম সিআইটিএফ-২০১৭ কমিটির চেয়ারম্যন মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম বলেন-উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশগ্রহণের ফলে লব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে অনেক শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন এবং নতুন নতুন শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে । উল্লেখ্য, ১৯ মার্চ শুরু হওয়া মাসব্যাপী এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রতিদিন সকাল ১০.০০ টা থেকে রাত ১০.০০ টা পর্যন্ত চলবে।
গত মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে ছিল ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
অর্থাৎ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হত, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সে পণ্য বা সেবার জন্য ১০৫ টাকা ৩১ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্য সাংবাদিকদের সামনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মূল্যস্ফীতি বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ করে গরুর মাংস ও ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছু বেড়ে যায়।