॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ‘সোনালী আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে পাট অধিদপ্তর ও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সারাজেলার ন্যায় রাঙ্গামাটিতেও পালিত হলো জাতীয় পাট দিবস-২০১৭।
সোমবার (৬ মার্চ) সকালে দিবসটি উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র্যালী ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। র্যালীটি জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ হতে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শেষ হয়ে আলোচনাসভায় মিলিত হয়।
অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মফিজুল ইসলাম, মুজাদ্দেদ-ই-আল ফেসানি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মঈন বক্তব্য দেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম পাট অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ আজিজুল হক এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, তামাক চাষীদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করে পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে তামাক চাষের ফলে নিজের এবং পরিবেশের প্রচুর ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, এক সময় এই সোনালী আঁশ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে কিন্তু দিন দিন সে ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। সে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাষীদের পাট চাষে আগ্রহ বাড়াতে হবে। পরিবেশবান্ধব যেসব ফসল উৎপাদিত হয় সেসব ফসল উৎপাদনে চাষীদের বেশী করে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সোমবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নতুন কোচ সংযুক্ত করে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে ঋণ চুক্তির জন্য রেল সংযোগের কাজটি আটকে আছে।
“আগামী মাসে চীনের সঙ্গে লোন এগ্রিমেন্ট হবে। এরপর এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে আশা করছি।”
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গত বছর অগাস্টে চুক্তি করে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ’ নামের এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেল লাইন নির্মাণ করা হবে।
গত বছরের ৩ মে একনেকে অনুমোদিত ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০ বছর মেয়াদে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা চীনের, যার জন্য সুদ গুণতে হবে ২ শতাংশ হারে। বাকি ১০ হাজার ২৪০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে।
বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে কুষ্টিয়া থেকে যশোর-খুলনায় রেল যোগাযোগ আছে। পদ্মায় সেতু হলে ফরিদপুর হয়ে ট্রেন যাবে যশোরে।
বহু প্রতীক্ষিত এ সেতুর মূল কাঠামোর নির্মাণ কাজ চলছে এখন। ২০১৮ সাল নাগাদ সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার আশা করছে সরকার। একই সময়ে সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু করাও সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এপ্রিলের শুরুর দিকে দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুও উদ্বোধন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রেলমন্ত্রী। রেলের যাত্রী সেবায় বিভিন্ন উদ্যেগে নেওয়ার কথাও তিনি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “যাত্রীসেবায় নতুন কোচ সংযুক্ত করা হয়েছে, আগামীতে আরও উন্নতমানের কোচ আনা হবে।”
রেলপথ সচিব মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।