ভিডিও বার্তায় কেএনএফের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন বম সম্প্রদায়ের নেতারা
॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে বম সোশ্যাল কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ। এটি বম সম্প্রদায়ের একটি সংগঠন।
নেতারা বলেন, অবিলম্বে বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র ফেরত ও সন্ত্রাসী তৎপরতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না এলে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গ্রামে গ্রামে জন প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
শুক্রবার (১০ মে) বান্দরবানে শহরের নিউ গুলশান এলাকার বাংলাদেশ খ্রিস্টান চার্চ কার্যালয়ে এক সভার পর ভিডিও বার্তায় এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লাল জারলম বম, সাধারণ সম্পাদক লাল থান জেল বম, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম এবং বম সম্প্রদায় ও ইয়ং বম অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। বম সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষায় ভিডিও বার্তাটি দেওয়া হয়। বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার বম জানান, কেএনএফের সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে বম সম্প্রদায় অধ্যুষিত পাড়াগুলোয় এখন খাদ্য সঙ্কটসহ মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেখানকার লোকজন এখন জুম চাষ করতে পারছে না। বাগানে উৎপাদিত ফল বিক্রি করতে পারছে না। অনেকে পাড়ায় বসবাস করতে না পেরে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে যাচ্ছে।
বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার বম আরও বলেন, আমরা কেএনএফের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, তারা যাতে অবিলম্বে ব্যাংকের লুট হওয়া অস্ত্র ফেরত দেয়। এছাড়া সন্ত্রাসী তৎপরতা ছেড়ে তারা যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। আর যদি তারা তাদের কর্মকা- চালিয়ে যায় তবে তাদের বিরুদ্ধে গ্রামে গ্রামে সাধারণ বম সম্প্রদায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। কেএনএফ অস্ত্র ফেরত দিয়ে আলোচনায় বসতে চাইলে বম সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ সহায়তা করবে। আলোচনার জন্য প্রশাসনের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গত ২ এপ্রিল রুমা সোনালী ব্যাংকে হামলা, অস্ত্র ও টাকা লুট এবং অপহরণের ঘটনায় পাঁচটি এবং ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, হামলা ও টাকা লুটের ঘটনায় চারটি মামলা হয়। এরপর যৌথবাহিনীর সদস্যরা অভিযান শুরু করে। রুমা ও থানচি থানার মোট নয়টি মামলায় এ পর্যন্ত ৮৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ’র সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদ জানিয়েছে বান্দরবানের ১১ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে ঐ সংগঠনটির সাথে অপর পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জড়িত থাকার দাবিও অস্বীকার করেছেন তারা। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের অডিটরিয়ামে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
এসময় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি খুশিরায় ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, বম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি লালজারলম বম, এ্যাডভোকেট কাজী মাহাতুল হোসেন যতœ, চাকমা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা, ¤্রাে সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রাংলাই ¤্রাে সহ প্রমুখ। এছাড়া সভায় বান্দরবানের বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান কারবারিরা অংশ নেয়।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামে বিপদগামী আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, শান্তির আলোচনাকালে কেএনএফ ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর যে হামলা চালিয়েছে সেটি জঘন্য অপরাধ। কেএনএফের অপরাধমূলক কর্মকা-ের কারণের গ্রাম ছাড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও নিরীহ মানুষ গ্রেফতার হয়েছে। যার ফলে বম সম্প্রদায়ের সকল জাতিগোষ্ঠীরা বিপদগ্রস্থের পাশাপাশি ক্ষতির প্রভাব পড়ছে পুরো জেলায়। তাই বিপদগামী পথ থেকে কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা আরো বলেন, পাহাড়ের শান্তি ফিরিয়ে আনতে জীবন বাজি রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি কেএনএফের সাথে আলোচনায় বসেছে। আলোচনায় কেএনএফ সদস্যরা যেসব দাবি-দাওয়া করেছে সেটি জন্য সরকার কাজ করছে। সরকার তাদের জন্য পূর্ণবাসন করাও প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু আলোচনাকালে কেএনএফ সদস্যরা এভাবে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র, ও অর্থ লুটপাটের ঘটনা ঘটাবে সেটি ছিল কল্পনার বাইরে। ফলে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চলে গেছে। তাদের এই অপরাধমূলক কার্যকলাপের কারণের বর্তমানে পাহাড় অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখীন পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বম সম্প্রদায়সহ পাহাড়ের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী।
বক্তারা আরো বলেন, কেএনএফ সদস্যরা যেসব অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন চেয়েছেন সেটি কখনো সম্ভব নয়। তারা যদি এভাবে অস্ত্র হাতে নিয়ে সন্ত্রাসীর কার্যক্রম চালাতে থাকে তাহলে ঘটনা কোন দিকে যাবে সেটি বলার বাইরে। কেএনএফের প্রধান নাথাম বম আলোচনায় না আসলে কখনো সমাধান হওয়ার সম্ভব নয়। তাদেরকে স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা নতুন নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। তাই সেসব প্রস্তাবকে নিয়ে সামনে কেএনএফ সদস্যদের সাথে আলোচনা পথে এগিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।
উল্লেখ্য, গত ২ ও ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে কেএনএফ সদস্যরা অস্ত্র গুলি ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমান বলেছেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শান্তি চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মোট ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৬৫টি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনটি আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। চারটি ধারা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চলমান আদিবাসী সংক্রান্ত জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের ২৩তম অধিবেশনে পার্বত্য শান্তিচুক্তির অগ্রগতি তুলে ধরে বাংলাদেশ। শনিবার (২০ এপ্রিল) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমান ঐতিহাসিক ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’ বাস্তবায়ন এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান দেশের জনগণের মধ্যে ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থান নির্বিশেষে সম-অধিকার দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটেছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণকে এ দেশের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ডিজিটাল ভূমি জরিপ ও ব্যবস্থাপনা উদ্যোগসহ অত্র অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে ফোরামকে অবহিত করেন। তিনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় তিনজন প্রথাগত সার্কেল চিফ নানাবিধ প্রশাসনিক ও আইনি কর্তৃত্ব ভোগ করেন এবং প্রতিটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত হন বলেও উল্লেখ করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সচিব।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী এ অঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রমের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তিনি উল্লেখ করেন স্পষ্টতই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পর থেকে এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে অসামান্য পরিবর্তন ঘটেছে।
সরকার আইন প্রণয়ন করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্য, রক্ষা ও প্রচারের জন্য বিশেষায়িত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে। পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের মধ্যে তাদের নিজ নিজ ভাষায় বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক নিয়মিতভাবে বিতরণ করা হচ্ছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরি ও সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পাঁচ শতাংশ হারে কোটা সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে জাতীয় সংসদে চারজন ও মন্ত্রিসভায় একজন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্য রয়েছেন বলেও মশিউর রহমান উল্লেখ করেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ১৫-২৬ এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত দুই সপ্তাহব্যাপী আদিবাসী সংক্রান্ত জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের ২৩তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিনিধিদলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিলুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমাসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের আওতায় আদিবাসী সংক্রান্ত স্থায়ী ফোরাম বিশ্বব্যাপী আদিবাসীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করে থাকে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে নানান আনুষ্ঠানিকতায় শুরু হয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিরদের সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবি উৎসব। আর পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে ৪ দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে।
উৎসবকে সামনে রেখে বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউট, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজ মাঠ প্রাঙ্গন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী তাদের ঐতিহ্যবাহী স্ব স্ব পোশাকে অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
পরে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান (এমপি)।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ, যুগ্ম সচিব ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ (বিপিএম বার), রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রনেল চাকমা প্রমুখ।
৪ দিনের সংস্কৃতি মেলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নানা খাবার, ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও হস্তশিল্প সামগ্রী শতাধিক স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলায় প্রতিদিন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
মুলত আগামী ১২, ১৩ এবং ১৪ এপ্রিল এই তিনদিন ব্যাপী মুল উৎসব পালন করা হলেও এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন নানা কর্মসুচী পালন করে।
সরকারি ভাষায় ব্যবহৃত বৈসাবি শব্দকে চাকমারা বিঝু, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বৈইসুক এবং মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাই উৎসব নামে পালন করে থাকে।
॥ বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বান্দরবানের রুমায় অভিনব কায়দায় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতের আধারে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি হয়েছে। এ ঘটনায় নগদ টাকাসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র নিয়ে যায়। এসময় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরন করা হয়। রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে রুমা উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় ৭০/৮০ জনের আধুনিক অস্ত্র সশস্ত্র সজ্জিত সশস্ত্র সদস্যরা রুমা সদরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের গ্রীল ভেঙ্গে প্রবেশ করে। তারপর ব্যাংক ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তবে আনুমানিক দেড় থেকে দুই কোটি টাকা অনুমান করা হলেও কি পরিমাণ টাকা লুট হয়ে গেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ডাকাতির সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে দশটি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। ব্যাংকের অদূরে থাকা আনসার ব্যারেক থেকে চারটি অস্ত্র ও ৩৫টি গুলি ছিনিয়ে নেয় সশস্ত্র এই সন্ত্রাসীরা। ওই সময় পুলিশ ও আনসারকে মারধর করে। ওই সময় ব্যাংকের লাগুয়া থাকা অফিসার কোয়ার্টারে অবস্থান করা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন কর্মামচারী মারধরের শিকার হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যাংকে টাকাগুলো মঙ্গলবার (২এপ্রিল) বান্দরবান সদর থেকে রুমা সোনালী ব্যাংকে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, এসময় উপজেলা মসজিদ ঘেরাও করে মসুল্লিদের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। সশস্ত্র সদস্য একটি অংশ উপজেলা পরিষদ এলাকায় ব্যাংক থেকে প্রায় একশ গজ দুরে আলমগীর চা দোকানের সামনে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে প্রহরা দেয় সশস্ত্র সদস্যরা। তখন রুমা বাজার দিক থেকে আসা সাধারণ যাত্রী ও মোটরবাইকসহ যাত্রীদের আটকিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে লোকজন বেধরক পিটিয়েছে।
একইভাবে উপজেলা পরিষদের পশ্চিম দিকে সেগুন বাগান নিচে ছোট্ট কালভাটের পাশে রাস্তা গতিরোধ করে মোটরবাইক ও যাত্রীদের আটকিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিস যা থাকে সব ছিনিয়ে নিয়ে সবাইকে মারধর করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এঘটনার ভুক্তভোগীরা জানায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে আধুনিক অস্ত্র ও মুখে কাপড় ঢাকা ছিল। তাই তাদের চেনা না গেলেও বাংলা ভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি তাদের মধ্যে ফিশফিশে বম ভাষায় কথোপকথনের ভাষার সুর শুনতে পেরেছেন-অনেক ভুক্তভোগী ও মারধরের শিকার হওয়া লোকজন।
আর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর বিরুদ্ধে। তবে তাৎক্ষণিক কেএনএফ এর দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ব্যাংক লুটপাট করা পর যারা নিরাপত্তা দায়িত্বে ছিল তাদের কাজ থেকে এসএমজি, রাইফেলসহ ১৪টি ও গুলি রাউন্ড ৪১৫টি নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে দ্রুত আইনে আওতায় আনতে সক্ষম হবো।
এদিকে এই ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে, এলাকায় আতংক বিরাজ করায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে একটি সূত্র জানায়, ব্যাংকে টাকা সংরক্ষণ করা লোহার বাক্সের তালা খুলতে পারেনি। মূলত এ কারণে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোঃ নেজাম উদ্দিনকে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় পরিদর্শন করেছেন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল মামুন। ব্যাংক পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার পর মসজিদ পরিদর্শন করেন এবং ডাকাতির ঘটনায় আহত পুলিশকে দেখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান।
পরে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংক ডাকাতি ও পুলিশের অস্ত্র লুটকারী সন্ত্রাসীদের কোন প্রকার সার দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় বান্দরবান রিজিওনের রিজিয়ন কমান্ডার জেনারেল মেহেদী হাসান, জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে উপজেলা সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন এর নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে উপজেলা পরিষদ এলাকায় মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন এর নিঃশর্ত মুক্তি, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরাপত্তা বিধান ও ব্যাংক ডাকাতিসহ পুলিশের অস্ত্র লুটকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে ব্যাংক ডাকাতের ঘটনাটি সশস্ত্র সংগঠন ও কিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ব্যাপারে কেএফএফ’র পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত থেকে তাদের ফেসবুক পেইজে বা লিখিত কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে ডাকাতির সময় কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে মিয়ানমারের চীন স্টেট এর বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি গোষ্ঠীর কিছু সদস্য ও থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এদিকে রুমার সোনালী ব্যাংক ডাকাতির পর বান্দরবান-রুমা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং ব্যাংকের যাবতীয় লেনদেন বন্ধ থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এবার ভরদুপুরে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি
এদিকে, বান্দরবানের থানচিতে ভরদুপুরে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। তবে ব্যাংকের ভল্ট এখনো অক্ষত আছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুটি গাড়িতে করে মোট ৩০-৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল এ ডাকাতিতে অংশ নেয়। থানচি থানার ওসি জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি।
সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ওমর ফারুক বলেন, ডাকতরা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে অফিসিয়ালি ঠিক কত টাকা লুট হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।
ডাকাতির শিকার হওয়া সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক ভুক্তভোগী আরমান বলেন, আমি ভেতরে ছিলাম, ডাকাতরা মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মোবাইল ফোনসহ আমার সঙ্গে থাকা সব টাকা নিয়ে গেছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মামুন ঘটনা স্বীকার করে জানান, দু’ টি ব্যাংকে মোট ১৭ লক্ষ ৪৫ হাজার লুট করে নিয়েগেছে সন্ত্রাসীদল।
এর আগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রুমায় সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল সেক্টরে সক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মধুপুর এলাকায় এপিবিএন ও বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারে ১৩তম পুলিশ কমান্ডে কোর্স-এর সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, আমাদের দেশের বীর সেনারা দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন, সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে- এটিই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন। তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন, চিন্তা ও চেতনায় বাংলাদেশী হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সকলকে অনন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ২১টি বছর দেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল-নিজেদের মধ্যে হানাহানি, ভুলবুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল, পার্বত্য এলাকায় একসময় চরম অশান্তি বিরাজমান ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, যোগ্য নেতৃত্ব আর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলেই পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙালি ভ্রাতৃঘাতী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটেছে। প্রতিমন্ত্রী জনাব কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন- ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা এবং ২০৪১ সালে একটি আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সকল বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার সকল বাহিনী দেশের কল্যাণে অবদান রেখে যাচ্ছেন। শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সৈন্যরা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। পার্বত্য এলাকার সমস্যাবলী ও ঝঞ্ঝাট অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করেছেন। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি সংশ্লিষ্ট সকলকে এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, পুলিশ কমান্ডো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আপনারা দেশের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।
খাগড়াছড়ি এএসটিসি কমান্ড্যান্ট (ডিআইজি) পরিতোষ ঘোষের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার), খাগড়াছড়ি সদর পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ৩৪ জন প্রশিক্ষণার্থীর মাঝে ব্যাজ পড়িয়ে দেন ও সনদ বিতরণ করেন।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়িতেও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে শুরু হয় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোর ৫টা ৪৯ মিনিটে খাগড়াছড়ি জেলা শহরস্থ চেঙ্গী স্কোয়ার স্মৃতিসৌধে ৩১ বার তোপধ্বনি প্রদর্শন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরপরেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
এরপর একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, পিপিএম (বার), পৌরসভার মেয়র নির্মেলেন্দু চৌধুরী, জেলা নির্বাচন অফিসার মো. কামরুল আলমসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্ যাপনের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নানান কর্মসূচি গ্রহণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে এত ব্যাপক নারকীয় গণহত্যা বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশ-মাতৃকার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালিরা।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ, সেই সকল মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা মা-বোনের প্রতি জানাই আমার গভীর শ্রদ্ধা। তিনি মহান স্বাধীনতা দিবসের চেতনাবোধ ও তাৎপর্যকে ধারণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এবারের প্রতিপাদ্য ছিল যাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, সেই সাথে সকল মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা মা-বোনের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। কামনা করি জয় হোক যুগে-যুগে বাংলার মেহনতি মানুষের, বারবার ফিরে আসুক আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, আগামি প্রজন্মকে আথুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ করে ২০৪১ সালে একটি সুন্দর জাতি উপহার দেয়ার জন্যই জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের শিশুদের জন্য শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের টাউন হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, জাতীয় শিশু দিবস জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, আজকের শিশু আগামি দিনের ভবিষ্যত। এ প্রজন্মকে শক্তিশালী রূপে গড়ে তোলার দায়িত্ব আপনার, আমার সবার। তিনি শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ গড়ে তুলতে সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনগুলোর সুদৃশ্য পাকা বিল্ডিং, বাউন্ডারি ওয়ালসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্কুলের ক্যাম্পাসের ভিতরে খেলাধুলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবার তথ্য প্রযুক্তির সাথে শিশুদের পরিচয় করিয়ে দিতে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাপটপ দিয়ে শিশুদের সুশিক্ষিত করার প্রয়াস চালিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠিত করে শিশুদের মনোবাসনা ও চিন্তা চেতনা বিকশিত করার সুযোগ করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, দেশে সুশাসন কায়েম করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। আর তা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দুরদর্শীতা এবং দেশের মানুষের প্রতি তাঁর প্রেম ও ভালবাসার কারণে। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল আরও বলেন, এখন আমাদের দরকার সম্প্রীতি। আরও দরকার আমরা যে যেখানেই থাকি, সেখান থেকেই দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বারংবার জাগ্রত করা। এভাবে যদি আমরা এগুতে পারি, তাহলে সামনের ২০৩০ এর এসডিজি অর্জনে আমরা সফল হবোই এবং ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না বলে মন্তব্য করেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
সমাজের নিন্দুক শ্রেণির মানুষদের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, নিন্দুকেরা সবসময় নিন্দা করবেই। যারা নিন্দুক তাদের কাছে কোনো জাত নাই, এমনকি নাই কোনো সম্প্রদায় ধর্ম। যারা কুচক্রকারী, ষড়যন্ত্রকারী, যারা দুর্বৃত্তকারী তারা তাদের দুর্বৃত্তায়ন কাজ করেই যাবে। এই দুর্বৃত্তশ্রেণি ও হায়েনারা স্বাধীনতা সংগ্রামে নিরীহ মানুষের সীমাহীন ক্ষতি করেছিল। দেশের মানুষকে দ্বিধা দ্বন্দের মধ্যে রেখেছিল। সমাজের এধরনের দুর্বৃত্ত শ্রেণি ও হায়েনাদের কাছ থেকে নিজেদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, অনুরূপভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা চান আজকের শিশু আগামিতে দেশ পরিচালনায় অনন্য ভূমিকা পালন করবে। সে লক্ষ্য অর্জনে শিশুদের স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে উন্নত নাগরিক হিসেবে বড় করে তোলার পরিবেশ করে দেওয়ার জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান এর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, শফিকুল ইসলাম ফারুক, দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার দে, উপ দপ্তর সম্পাদক নুরুল আযম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শতরুপা চাকমা, সদর উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি সনজিত ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় দাস, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শানে আলম, ভাইস চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনা আক্তার, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগ আহ্বায়ক সুইচিং থুই মারমা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম ইসমাইল হোসেন, যুবমহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বিউটি রানি ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদিকা বিলকিস চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন, দলীয় সংগঠন ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে নিয়ে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গনে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে জাতি, বর্ণসহ সকল ধর্মের মানুষকে স্বাধীনভাবে যার যার ধর্ম পালন করার নিশ্চয়তা দিয়ে গেছেন বলে মন্ত্য করেছেনপার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ নীতিবাক্যকে সমস্বরে ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষকে এক করেছেন। বাংলাদেশে এ সরকারের আমলে সকল ধর্মের মানুষ সুখে, শান্তিতে ও নিরাপদে যার যার ধর্ম পালন করতে পারছেন বলে মন্তব্য করেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। শনিবার (৯ মার্চ) বিকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বুদ্ধপাড়ায় সর্বজনীন শ্রী শ্রী শিব মন্দির প্রাঙ্গণে সর্বজনীন শিব চতুর্দশী ব্রত উদযাপন উপলক্ষ্যে অষ্ট্রপ্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞ পুজো শেষে সেখানে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয় ঘোষণা দিয়ে সকল ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে আজীবন শ্রদ্ধার মানুষ হিসেবে জিইয়ে থাকবেন।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সকল ধর্মের মানুষকে নির্বিঘেœ যার যার ধর্ম পালন করার অধিকার নিশ্চিত করে গিয়েছেন। একই পথে হাঁটছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানুষের কল্যাণে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই ছোট আয়তনের বাংলাদেশকে বিশ্বের শীর্ষে নিয়ে দাঁড় করাতে চান। তিনি সকলকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
শিব মন্দির পরিদর্শন ও পুজা শেষে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ভক্তবৃন্দের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং পরে তিনি হরিসভায় অনুষ্ঠিত ভজন-কীর্তন সঙ্গীত উপস্থিত ভক্তবৃন্দের সাথে উপভোগ করেন।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়িতেও বর্ণিল আয়োজনে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে পুষ্পস্তবক অর্পন, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৭মার্চ) সকাল ৯টায় জেলা শহরস্থ পৌর টাউন হল প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেক মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি নাজমুন আরা সুলতানা, পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, উপজাতীয় শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ কামরুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আশুতোষ চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম ইসমাইল হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরেই টাউন হলের অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, ৭ই মার্চ এই দিবসটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক দিন। এদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে বক্তব্যের মধ্যদিয়ে সর্বস্তরের মানুষ একত্র হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো। আজ পরিচয় দেবার মতো আমরা জায়গা খুঁজে পেয়েছি, পরিচয় দেবার মতো একটি স্বাধীন বাংলাদেশ খুঁজে পেয়েছি, সেটা সম্ভব হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারণে। তাঁর (বঙ্গবন্ধু) দর্শনটা অন্যরকম ছিল, তাঁর চিন্তা চেতনা অন্যরকম ছিল। দেশের ও জনগনের কল্যাণের জন্যই অন্যরকম চিন্তা চেতনা ছিল তার। তিনি মানবিক আদর্শের প্রতীক ছিলেন।