স্পোর্টস ডেস্ক :: রাশিয়া-ইউক্রেন হামলার ইস্যুতে রাশিয়ার সব ক্লাবকে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করে উয়েফা। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে (সিএএস) আপিল করেছে রাশিয়ার চার ক্লাব।
রাশিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জেনিথ সেইন্ট পিটার্সবার্গসহ আরও তিন ক্লাব খবরটি নিশ্চিত করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক হামলা চালানোর পর গত ফেব্রুয়ারিতে উয়েফা জানিয়েছিল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাশিয়াকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা হলো। আগামী মৌসুমে উয়েফা আয়োজিত কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে না রাশিয়ার ক্লাব।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা নিয়ে জেনিথের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উয়েফার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলে জেনিথ সেন্ট পিটার্সবার্গকে সমর্থন দিয়েছে দিনামো মস্কো, এফসি সোচি ও সিএসকেএ মস্কো। এই আপিল দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে মূল্যায়নের অনুরোধ জানানো হচ্ছে সিএএসকে। ’কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টস’—সংক্ষেপে সিএএস, ক্রীড়াক্ষেত্রে যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তির চূড়ান্ত জায়গা। সুইজারল্যান্ডের লুসানে সিএএসের সদর দপ্তর অবস্থিত।
স্পোর্টস ডেস্ক :: পাকিস্তানে আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে ক্রিকেট। একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল পণ্ড হয়ে গেছে প্রবল গোলাগুলিতে।
পাকিস্তানের দা নিউজ পত্রিকার খবর, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহাত বিভাগের ওরাকজাই জেলার দ্রাদার মামাজাই এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সেখানে একটি টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিল বৃহস্পতিবার। এই ঘটনায় হতাহতের খবর অবশ্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রত্রিকাটি জানিয়েছে, ম্যাচ দেখতে বিপুল সংখ্যক দর্শক, অনেক রাজনৈতিক কর্মী ও সংবাদ কর্মী ছিলেন মাঠে। জামায়েত উলামায়ে-ই-ইসলামের স্থানীয় এক নেতা ছিলেন প্রধান অতিথি। খেলা শুরু হতে না হতেই কাছেই এক পাহাড় থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবষর্ণ শুরু হয়। ক্রিকেটার, দর্শক সবাই দ্রুত পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন।
ওরাকজাই জেলার পুলিশ কর্মকর্তা নিসার আহমেদ খান জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির খবর তাদের কাছে আছে এবং শিগগিরই কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযান ওই অঞ্চলে শুরু হবে।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে দীর্ঘদিন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল। গত কয়েক বছরে দলগুলি টুকটাক সফর করা শুরু করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি এখনও।
খেলায় হার-জিত আছে। এক দল হারবে, আরেক দল জিতবে এটাই স্বাভাবিক। আর ক্রিকেটকে বলা হয় ভদ্রলোকের খেলা। এখানে ট্রফি হাতছাড়া হলেও মেজাজ গরম করতে দেখা যায় না খেলোয়াড়দের, হতাশা যতই গ্রাস করুক। বরং খেলার পর দুই দলের করমর্দন খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
তবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল হারের পর ভদ্রলোকের খেলায় ভদ্রতাটা বজায় রাখতে পারলো না ভারত। প্রতিপক্ষের উদযাপন সহ্য করতে না পেরে মেজাজ হারিয়ে ভারতীয় একজন খেলোয়াড় বাংলাদেশের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে কেড়ে নেন লাল-সবুজের পতাকা।
বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট লড়াই তো এখন এশিয়ার সবচেয়ে রোমাঞ্চকর লড়াই। ছোটদের ক্রিকেটেও এর ব্যতিক্রম নয়। এই তো মাস কয়েক আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলো দুই দলের। একটুর জন্য এশিয়া কাপের শিরোপা হাতে নিতে পারেনি যুব টাইগাররা।
ভারতকে ১০৬ রানেই গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। একটা সময় সহজ জয়ের পথে ছিল। কিন্তু শেষ দিকে বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায়। শেষতক ১০১ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ৫ রানের জন্য হাতছাড়া হয় শিরোপা।
তবে বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে এবার আর ভুল করেনি বাংলাদেশ। ভারতকে এবারও মাত্র ১৭৭ রানে গুটিয়ে দেয় যুব টাইগাররা। জবাবে ১৪৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কায় পড়লেও শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
তবে পুরো ম্যাচ জুড়েই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা আলাদা উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ যখন বোলিং করছিল, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল ভীষণ আক্রমণাত্মক। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা পরাস্ত হলে বল ধরে থ্রো করা বা টুকটাক স্লেজিং করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। আউট হওয়ার পর ’পকেটে কিছু ঢুকিয়ে নেয়া’র মতো উদযাপন করেছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
বাংলাদেশ যখন ব্যাটিংয়ে নেমেছে ভারতীয়ও কম যায়নি। বল মিস করলেও ব্যাটসম্যানের সামনে গিয়ে স্লেজিং করেছে ভারতীয়রা। পুরো ম্যাচে এমনটাই চলেছে।
তবে মাঠের ঘটনা তো খেলা চলার সময়ই মানায়, এর বাইরে চলে গেলে সেটাকে আর পেশাদারিত্ব বলা যায় না। ম্যাচের পর ভারতীয় খেলোয়াড়রা বোধ হয় সেটা ভুলে গিয়েছিলেন।
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, তাদের উদযাপন তো বাধভাঙা হবেই। কিন্তু ভারতীয় খেলোয়াড়রা সেটা মেনে নিতে পারেননি। মেজাজ হারিয়ে পতাকা কেড়ে নেন এক খেলোয়াড়। ম্যাচের পর ভারতীয়রা ভদ্রতাসূচক করমর্দনও করেননি।
চট্টগ্রামে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জেলা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৯ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ৫ জানুয়ারী ২০২০ ইং রোববার সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে ফুটবল খেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।
সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী খেলায় কোতোয়ালী থানাধীন সরকারী ন্যাশনাল প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ১-০ গোলে পাঁচলাইশ থানাধীন এম.নাজের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে, পাহাড়তলী থানাধীন শহীদ লেইন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ৬-০ গোলে কর্ণফুলী থানাধীন পূর্ব জুলধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে, পটিয়া উপজেলাধীন পূর্ব জিরি আমানিয়া লোকমান হাকিম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ২-১ গোলে চন্দনাইশ উপজেলাধীন উত্তর জোয়ারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে, রাউজান উপজেলাধীন ঊনসত্তর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ট্রাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে আনোয়ারা উপজেলাধীন বরুমচড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন ঘাটচেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ২-১ গোলে সীতাকুন্ড উপজেলাধীন বাকখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।
অপরদিকে, একই স্টেডিয়ামে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্টিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলায় পাঁচলাইশ থানাধীন তৈয়বীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ১-০ গোলে কোতোয়ালী থানাধীন সরকারী ন্যাশনাল প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে, কর্ণফুলী থানাধীন শিকলবাহা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ১-০ গোলে পাহাড়তলী থানাধীন হালিশহর হাউজিং এস্টেট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে, পটিয়া উপজেলাধীন নাইখাইন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ১০-০ গোলে চন্দনাইশ উপজেলাধীন হারলা সমবায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে, আনোয়ারা উপজেলাধীন বরুমচড়া উদয়ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ২-১ গোলে রাউজান উপজেলাধীন দাশপাড়া অখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে এবং রাঙ্গনিয়া উপজেলাধীন ভরলছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিম ট্রাইবেকারে ২-১ গোলে সীতাকুন্ড উপজেলাধীন শেখপাড়া ওবায়দিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিমকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও শিক্ষক মিশু ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো.আবু হাসান সিদ্দিক, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হৃষিকেশ শীল, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জহির উদ্দিন চৌধুরী, সিজেকেএস’র যুগ্ম সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, বনফুল লিমিটেডের জিএম আমানুল আলম, জেলা ক্রীড়া অফিসার মনোরঞ্জন দে, সিজেকেএস ফুটবল কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম লেদু। খেলার ধারা বর্ণনায় ছিলেন তাসনীম আক্তার কাকলী ও আবদুল মান্নান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন থানা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সহকারী শিক্ষা অফিসার, কর্মচারী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ বিপুল সংখ্যক দর্শক উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী খেলা উপভোগ করেন। চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানা ও উপজেলা থেকে চ্যাম্পিয়ন ৪২টি দল এ দু’টি টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহন করছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর খেলাধুলাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। মাদকাসক্তি, জঙ্গিবাদসহ সকল অসামাজিক কর্মকা- থেকে বিরত থাকাসহ দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক হিসেবে জাতি গঠনের লক্ষ্যে তিনি তাঁর পিতা-মাতার নামে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও ক্রীড়া চর্চার কোন বিকল্প নেই। কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক, মানসিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধন, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সহিষ্ণুতা ও মনোবল বৃদ্ধি করতে ফুটবল খেলা অত্যন্ত জরুরি।এটি একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। সরকারের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে আগামীতে এদেশের সন্তানেরা ক্রিকেটের মত আগামীতে বিশ্বকাপ ফুটবলেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে।
দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের গত আসরে সোনাজয়ের পর তার আনন্দাশ্রু আবেগে ভাসিয়েছিল দেশের ক্রীড়ামোদীদের। তাকে ঘিরে এবারও ছিল অনেক প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশাকেই বাস্তবে রূপ দিলেন ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। দক্ষিণ এশিয়ার খেলাধুলার সর্বোচ্চ আসরে এবারও দেশকে সোনা এনে দিলেন এই অ্যাথলেট।
শনিবার মেয়েদের ভারোত্তোলনের ৭৬ কেজি ওজনশ্রেণিতে সোনা জিতেছেন মাবিয়া। স্ন্যাচে ৮০ কেজি এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১০৫ কেজি সহ মোট ১৮৫ কেজি ওজন তুলে সেরা হয়েছেন তিনি।
মাবিয়া পেছনে ফেলেছেন শ্রীলঙ্কার বিসি প্রিয়ান্থি ও নেপালের তারা দেবীকে। স্ন্যাচে ৮৩ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১০১ কেজি সহ প্রিয়ান্থি মোট তুলেছেন ১৮৪ কেজি ওজন। স্ন্যাচে ৭৫ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৯৭ কেজি সহ মোট ১৭২ কেজি ওজন তুলেছেন তারা দেবী।
শিলং-গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত ২০১৬ এসএ গেমসের ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে ১৪৯ কেজি তুলে সোনা জিতেছিলেন মাবিয়া।
চলতি আসরে এ নিয়ে পাঁচটি সোনার পদক জিতল বাংলাদেশ। সাতদোবাতোর ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ছেলেদের পুমসে ২৯ (প্লাস) বয়স ক্যাটাগরিতে ৮ দশমিক ২৮ ও ৭ দশমিক ৯৬ স্কোর গড়ে দেশকে প্রথম সোনা এনে দিয়েছিলেন দিপু চাকমা।
পরের তিনটি সোনা আসে কাতার থেকে। পুরুষ একক কুমিতের অনূর্ধ্ব-৬০ কেজিতে পাকিস্তানের জাফরকে ৭-৩ হারিয়ে সোনা জয় করেন আল আমিন।
কারাতের কুমিতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-৫৫ কেজিতে পাকিস্তানের কৌসরা সানাকে ৪-৩ পয়েন্টে হারিয়ে মারজান আক্তার প্রিয়া এবং কুমিতে অনূর্ধ্ব-৬১ কেজিতে স্বাগতিক নেপালের অনু গুরুংকে ৫-২ পয়েন্টে হারিয়ে হুমায়রা আক্তার অন্তরা সোনা জিতেন।
আলহাজ্ব বারিক মিয়া স্মৃতি জুনিয়র শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০১৯ এর ফাইনাল খেলা ও পুরুষ্কার বিতরণ অনুষ্টান গত ১ ফেব্রুযারী চট্টগ্রাম নগরীর গোষাইলডাঙ্গাস্থ ঐকতান ক্লাব এর উদ্যোগে বারিক মিঞা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিকাল ৪ ঘটিকায় অনুষ্টিত হয়। খেলা শেষে অনুষ্টিত পুরুষ্কার বিতরণ অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন ঐকতান ক্লাব এর সভাপতি আলহাজ্ব পানাউল্যা আহামদ। ঐকতান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ আহমদ এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ নং ওয়ার্ডের
কাউন্সিলর হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (২৮,২৯,৩৬ নং ওয়ার্ড) মহিলা কাউন্সিলর মিসেস ফেরদৌসি আকবর, চট্টগ্রাম জেলা ক্রিড়া সংস্থার কাউন্সিলর আলহাজ্ব মোঃ আবুল হোসেন, বারিক মিঞা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইমুনর রশিদ, গোষাইল ডাঙ্গা যুব গোষ্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ছৈয়দ নুর নবী লিটন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মোঃ একরাম মেম্বার, ঐকতান ক্লাবের সহসভাপতি মনছুর আহমদ ভুইঞা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক হাজী মোঃ কামাল সওদাগর ও মোঃ সাজিদ তোফাইল প্রমুখ। খেলায় অংশগ্রহনকারী দল উইন্ডোরস ওয়ারিয়র্স চ্যাম্পিয়ন ও আদুল হক স্মৃতি সংসদ রানার্স আপ অর্জন করেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নিয়ে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ টাইগাররা। ক্যারিয়ারে ২০০ ওয়ানডে ক্যাপ পরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে জয় উপহার দিয়েছেন মুশফিক-মুস্তাফিজরা। প্রথমে মাশরাফি-মুস্তাফিজের বোলিং তোপে দুইশ’ রানের আগে থেমে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ফিফটি করে ৫ উইকেটের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক।
রোববার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু মাশরাফির সঙ্গে মুস্তাফিজ-সাকিবদের দারুণ বোলিংয়ে ১৯৫ রানে আটকে যায় তারা। অলআউট হলেও রান বাড়াতে পারেনি তারা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার তামিম-লিটন সতর্ক শুরু করেন। দু’জনে তুলে ফেলেন ৩৭ রান। এরপর চেজের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। তার আউটের পরই ক্রিজে এসে বোল্ড হয়ে ফেরেন ইমরুল কায়েস।
এরপর ভরসা দিতে থাকা লিটনও ফেরেন বোল্ড হয়ে। দ্রুত রান তুলতে থাকা সাকিবও ফেরেন সেট হয়ে।
ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ। মুশফিক ৪৭ রানে ব্যাট করছেন। তার সঙ্গী থাকা সৌম্য সরকার ফিরেছেন ১৯ রান। এর আগে লিটন দাস নিজের ৪১ রানের মাথায় বোল্ড হয়ে যান। তার পর ক্রিজে আসা সাকিব ফেরেন ২৬ বলে ৩০ রান করে। এর আগে ১২ রান করে ফেরেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা তামিম ইকবাল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রেকর্ড রান করা ইমরুল কায়েস ৪ রান করে আউট হন।
সময় যত গড়ালো ততই উইকেট থেকে সহায়তা পেলেন স্পিনাররা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সকালের শিশির শুকালে বল ভয়ানক টার্ন এবং স্কিড করল। সেই সঙ্গে উঠা-নামা করল। কখনও লাফিয়ে উঠল, মাঝে মধ্যে নিচু হয়ে গেল। এর সদ্ব্যবহার করলেন বাংলাদেশ বোলাররা।
আধিপত্য বিস্তার করে বোলিং করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। তাদের স্পিন ভেলকি কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারলেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। বলির পাঁঠা হয়ে একে একে এলেন আর গেলেন। সবশেষ যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দিলেন শারমন লুইস। ২১৩ রানে অলআউট হলেন অতিথিরা। এতে এক ইনিংস ও ১৮৪ রানে জিতল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ২-০ ব্যবধানে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ জিতল টাইগাররা।
নিজেদের ১৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। এসময়ে কখনও ইনিংস ব্যবধানে জেতেনি তারা। এর আগে সাকিবদের বড় জয় ২২৬ রানের। ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ ব্যবধানে জেতে তারা। রানের ব্যবধানে উইন্ডিজের বিপক্ষে জয়টি চতুর্থ সর্বোচ্চ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৫০৮ রানের জবাবে ১১১ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ফলোঅনে পড়ে সফরকারীরা। ৩৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে পরে ব্যাট করতে নেমেও শুরুটা শুভ হয়নি তাদের।
সূচনালগ্নেই ফিরে যান দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অতিথি শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন সাকিব। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান তিনি। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ছোবল মারেন মিরাজ। কাইরন পাওয়েলকে মুশফিকুর রহিমের স্ট্যাম্পিং করে ফেরান তিনি।
খানিক বাদে সুনিল আমব্রিসকে এলবিডব্লিউ করে প্রতিপক্ষদের চাপে ফেলেন তাইজুল। এর মধ্যে রোস্টন চেজকে মুমিনুল হকের ক্যাচে পরিণত করে বিপর্যয়ে ফেলেন তিনি।
সেই বিপর্যয়ের মধ্যে শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন শাই হোপ। সফলও হচ্ছিলেন তারা। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেননি মিরাজ। সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে হোপকে (২৫) ফিরিয়ে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন তিনি। এতে হেটমায়ারের সঙ্গে তার ৫৬ রানের জুটি ভাঙে। স্পিনে দক্ষ এ ব্যাটসম্যান ফিরতে ফের পথ হারায় উইন্ডিজ। এর পর পরই নাঈমের শিকার হয়ে ফেরেন শান ডাওরিচ। স্লিপে দারুণ ক্যাচে তাকে ফেরান সৌম্য সরকার।
এরপর মিরাজ-সৌম্য যুগলবন্দি। তাদের জোটের কামড়ে ফেরেন দেবেন্দ্র বিশু। একে একে সবাই ফিরলেও শিকড় গেঁড়ে বসেন হেটমায়ার। খাদের কিনারে থেকেও টাইগার বোলারদের ওপর স্টিম রোলার চালান তিনি। রীতিমতো ব্যাটিং তাণ্ডব চালান। স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে ধীরে ধীরে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান। তবে তা হতে দেননি মিরাজ। মোহাম্মদ মিঠুনের তালুবন্দি করে তাকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন তিনি। ফেরার আগে ৯২ বলে ৯৩ রান করেন হেটমায়ার। ৯ ছক্কার বিপরীতে মাত্র ১টি চারে এ বিধ্বংসী ইনিংস সাজান তিনি।
সেই আউট উৎসবের মাঝেই জোমেল ওয়ারিক্যানকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে ফেরান মিরাজ। এ নিয়ে টানা দুই ইনিংসে ৫ উইকেট নেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে দ্বিতীয়বার ১০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন এ অফস্পিনার। এর আগে এ নজির আছে সাকিবের। ফলে জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
তবে শেষদিকে ঝামেলা পাকান শেষ দুই লোয়ারঅর্ডার ব্যাটসম্যান। দশম উইকেটে ৪২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন কেমার রোচ ও লুইস। অবশেষে লুইসকে ফিরিয়ে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেন তাইজুল। ফলে ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয়ের আনন্দে মাতেন সাকিব বাহিনী। বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৫টি, তাইজুল ৩টি ও সাকিব নেন ২টি উইকেট।
এর আগে ফলোঅনের শঙ্কা নিয়ে তৃতীয় দিন খেলতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় দিনের ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে নতুন দিনে খেলা শুরু করে সফরকারীরা। হেটমায়ার ৩২ ও ডাওরিচ ১৭ রান নিয়ে খেলতে নামেন। স্বাভাবিকভাবেই তাদের দিকে তাকিয়ে ছিল তারা।
তবে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি এ জুটি। শুরুতেই মিরাজের কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন হেটমায়ার। ফেরার আগে ৫৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রান করেন তিনি। সেই রেস না কাটতেই দেবেন্দ্র বিশুকে সাদমান ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মিরাজ। এ নিয়ে ৫ উইকেটের কোটা পূরণ করেন তিনি।
এতেই ক্ষ্যান্ত হননি মিরাজ। পরক্ষণেই লিটন দাসের তালুবন্দি করে দেবেন্দ্র বিশুকে ফেরান এ অফস্পিনার। সবাই নিয়মিত বিরতিতে যাওয়া-আসা করলেও একপ্রান্ত আঁকড়ে ছিলেন ডাওরিচ। অবশেষে তাকেও উপড়ে ফেলেন তিনি। নির্ভরযোগ্য এ ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ ফাঁদে ফেলে ৫৮ রানে ৭ উইকেট শিকার করেন মিরাজ। এটি তার ক্যারিয়াসেরা বোলিং। আগেরটি ছিল ৭৭ রানে ৬ উইকেট, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৬ সালে।
এ নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো ৫ উইকেট এবং বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে ইনিংসে সাত বা এর বেশি উইকেট পেলেন মিরাজ। দেশের হয়ে এ কীর্তি আছে তিনজনের-এনামুল হক জুনিয়র, সাকিব ও তাইজুলের।
ক্যারিবীয় শিবিরে শেষ পেরেকটি ঠুকেন সাকিব। তৃতীয় শিকার হিসেবে লুইসকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান তিনি। এতে ১১১ রানে অলআউট হয় উইন্ডিজ। ফলে ৩৯৭ রানে পিছিয়ে ফলোঅনে পড়েন অতিথিরা।
এ নিয়ে নিজেদের ১৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে কোনো দলকে প্রথমবারের মতো ফলোঅনে ফেলে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বড় লিডও নেয়। ফলে প্রথমবারের মতো ইনিংস জয়ের অপেক্ষায় ফের বোলিং শুরু করে টাইগাররা।
ক্রীড়া প্রতিবেদক : ২১ বছর আগে মালয়েশিয়ায় আইসিসি ট্রফি জিতে নতুন উচ্চতায় উঠেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। সেই মালয়েশিয়াতেই রচিত হলো আরেকটি ইতিহাস। আগের সব আসরের চ্যাম্পিয়ন, প্রবল পরাক্রমশালী ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপ ক্রিকেটে শিরোপা জিতল বাংলাদেশের মেয়েরা।
কুয়ালা লামপুরে রোববার দারুণ বোলিংয়ে ভারতকে ১১২ রানে আটকে রাখে বাংলাদেশ। উত্তেজনাপূর্ণ রান তাড়ায় অনেক চড়াই-উৎরাই শেষে রোমাঞ্চকর জয় ধরা দেয় শেষ বলে।
এশিয়ার ক্রিকেটে প্রায় অপরাজেয় ভারতের বিপক্ষে ফাইনালের জয় স্রেফ একটি ম্যাচের অঘটন নয়। প্রাথমিক পর্বেও দারুণ খেলে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের ইতিহাসেই সেটি ছিল ভারতের প্রথম পরাজয়। সেই দলকেই আবার হারাল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে শিরোপা জিতল সালমা খাতুনের দল।
শেষ ২ ওভারে ১৩ রানের আপাত সহজ সমীকরণ অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল শেষের আগের ওভারে মাত্র ৪ রান আসায়। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৯ রান। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ ওভারে ঠিক ৯ রানের চেষ্টায়ই ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশের ছেলেরা।
প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন সানজিদা। পরের বলে দুর্দান্ত ইনসাইড আউটে রুমানা আহমেদের চার। পরের বলে সিঙ্গেল। ৩ বলে যখন প্রয়োজন ৩ রান, ছক্কায় শেষ করতে গিয়ে সীমানায় ধরা সানজিদা।
আবার জমে ওঠে ম্যাচ। পরের বলে এক রান নেওয়ার পর রান আউট রুমানা। ২২ বলে ২৩ রানের মহামূল্য ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু তার বিদায়ে শঙ্কা বাড়ে আরও। শেষ বলে স্ট্রাইকে যে নতুন ব্যাটার! সেই জাহানারার ব্যাটেই আসে স্বপ্নের জয়।
রান তাড়ায় বাংলাদেশকে মোটামুটি ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন শামিমা সুলতানা ও আয়েশা রহমান। তবে দুজনের ৩৫ রানে জুটির পরই জোড়া ধাক্কা। লেগ স্পিনার পুনম যাদবের পরপর দুই বলে আউট দুজন।
তৃতীয় উইকেটে সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ফারজানা হক ও নিগার সুলতানা। এই জুটিও ভাঙেন পুনম। ফিরিয়ে দেন প্রাথমিক পর্বে এই দুই দলের লড়াইয়ে ম্যাচ জেতানো ফিফটি করা ফারজানাকে।
দ্বাদশ ওভারে তখন বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৫৫। একটু শঙ্কায় দল। কিন্তু আতঙ্কিত না হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় দলকে কিছুটা এগিয়ে নেন নিগার সুলতানা ও রুমানা আহমেদ।
৬ ওভারে যখন প্রয়োজন ৪৭ রান, ভারতের অভিজ্ঞতম বোলার ঝুলন গোস্বামির টানা তিন বলে চার মেরে সমীকরণ নাগালে নিয়ে আসেন নিগার।
তবে কাজটা শেষ করতে পারেননি তিনি। আবারও বাধা সেই পুনম। দায়টা যদিও নিগারের, আউট হন ফুলটস বলে। ২৪ বলে করেছেন ২৭ রান।
হাল ধরেন দলের সেরা ক্রিকেটার রুমানা। শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার দায়িত্ব যার, সেই ফাহিমা ফেরেন ৭ বলে ৯ রান করে। নাটক পরে আরও জমে ওঠে শেষাঙ্কে গিয়ে। যেখানে শেষ হাসি বাংলাদেশের মেয়েদের।
ম্যাচের শুরুটাও বাংলাদেশের ছিল দুর্দান্ত। টস জিতে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই ভারতকে চমকে দিয়েছিল কৌশল পাল্টে। নতুন বলের নিয়মিত বোলার জাহানারা নয়, বাংলাদেশ ইনিংস শুরু করে নাহিদা আক্তারের বাঁহাতি স্পিনে। আরেক পাশে যথারীতি সালমার অফ স্পিন। ভারতের ইনিংস শুরুতেই গতিহারা।
নিজেদের অন্যতম সেরা ব্যাটার স্মৃতি মান্ধানাকে রান আউটে হারায় ভারত। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তারা তুলতে পারে কেবল ২১ রান। নাহিদার ৩ ওভার থেকে আসে মাত্র ৬ রান!
জাহানারা বোলিংয়ে এসেই দলকে এনে দেন বড় উইকেট। বোল্ড করেন দেন দিপ্তি শর্মাকে। খাদিজা তুল কুবরা ফিরিয়ে দেন এশিয়ার সফলতম ব্যাটার মিতালি রাজকে। রান নেওয়ার সময় দিক বদলে অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড আউট হয়ে ফেরেন অনুজা পাতিল। নবম ওভারে ভারতের রান তখন ৪ উইকেটে ৩২।
সেখান থেকে দলকে উদ্ধারের অভিযানে নামেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর। জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ভেদা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙতে নিজেকে দ্বিতীয় স্পেলে ফেরান অধিনায়ক সালমা। সফলও হন। সুইপ করত গিয়ে বোল্ড ভেদা।
রুমানা আহমেদ এরপর এক ওভারেই আউট করেন তনিয়া ভাটিয়া ও শিখা পান্ডেকে। ৭৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে আরও বিপদে ভারত।
কিন্তু হারমানপ্রিত ছিলেন টিকে। মেয়েদের ক্রিকেটে সময়ের সেরা ব্যাটারদের একজন তিনি। দারুণ অভিজ্ঞ, হাতে জোর ও শট অনেক। প্রয়োজনের সময় দারুণ খেলে আবারও এগিয়ে নিলেন দলকে।
শেষ দিকে দলকে এনে দিলেন দ্রুত রান। ৪২ বলে ৫৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হলেন ইনিংসের শেষ বলে। ভারত ততক্ষণে পেয়ে গেছে লড়ার মতো রান।
লড়াই হলোও তুমুল। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও সফল ছিলেন হারমানপ্রিত। পেসার শিখা পাণ্ডে নিজের প্রথম ওভারেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। বাধ্য হয়ে বল হাতে নিয়ে অনিয়মিত বোলার হারমানপ্রিত তুলে নেন দুটি উইকেটও।
কিন্তু দিনটি তবু ছিল না ভারত অধিনায়কের। শেষ ওভারে তাকে ও তার দলকে হতাশায় ডুবিয়ে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১১২/৯ (মিতালি ১১, স্মৃতি ৭, দিপ্তি ৪, হারমানপ্রিত ৫৬, অনুজা ৩, ভেদা ১১, তানিয়া ১, শিখা ১, ঝুলন ১০, একতা ১*; নাহিদা ০/১২, সালমা ১/২৪, খাদিজা ২/২৩, জাহানারা ১/২৩, রুমানা ২/২২, ফাহিমা ০/৮)
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১১৩/৭ (শামিমা ১৬, আয়েশা ১৭, ফারজানা ১১, নিগার ২৭, রুমানা ২৩, ফাহিমা ৯, সানজিদা ৫ জাহানারা ২*, সালমা ০*; একতা ০/১৩, শিখা ০/১০, দিপ্তি ০/১৯, অনুজা ০/২৩, পুনম ৪/৯, ঝুলন ০/২০, হারমানপ্রিত ২/১৯)।
ফল: বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: রুমানা আহমেদ
প্লেয়ার অব দা সিরিজ: হারমানপ্রিত কাউর
বন্দর নগরীর ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলার ১০৯তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কক্সবাজারের তারেকুল ইসলাম জীবন বলী। টানা ১৫ মিনিট ধরে একে অপরের সঙ্গে লড়াই শেষে কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন চকরিয়ার এই বলী।
বুধবার বিকেল ৫টা ৩১ মিনিটে শুরু হওয়া ফাইনাল খেলা চলে ৫টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত। এরপর ফাউল করার কারণে শিরোপা থেকে ছিটকে পড়েন শাহজালাল। এর আগে সেমিফাইনালে মহেশখালীর মোহাম্মদ হোসেনকে হারিয়ে কুমিল্লার শাহজালাল বলী, উখিয়ার জয়নাল বলীকে হারিয়ে চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন বলী ফাইনালে উন্নীত হন।
এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুমিল্লাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৮৬ জন বলী খেলার বিভিন্ন পর্যায়ে অংশ নেন। খেলাশেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ সময় স্পন্সর প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক এর কর্মকর্তা সৌমেন মিত্র উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার বিকেল চারটায় বলী খেলার উদ্বোধন করেন সিএমপির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুল হাসান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ৪’শ বর্গফুটের ৫ ফুট উঁচু বালুর মঞ্চে শুরু হয় প্রথম পর্বের খেলা। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বলীরা খেলায় অংশ নেন। খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেন সাবেক কাউন্সিলর মো. আবদুল মালেক।