পঞ্চগড়, ০৫ মার্চ- পবিত্র কোরআনের শিক্ষা পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যেই আহমদিয়া মুসলিম জামাত বিভিন্ন ভাষায় পবিত্র কোরআনের অনুবাদ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ৭৬টি প্রধান ভাষায় আহমদিয়া জামাত পবিত্র কোরআনের অনুবাদ প্রকাশ করেছে।
আহমদিয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশের ৯৬তম বার্ষিক জলসা উপলক্ষে পঞ্চগড়ে জামেয়া আহমদিয়া বাংলাদেশের কমপ্লেক্স ভবনে ৬৫টি ভাষায় অনুদিত পবিত্র কোরআনের বিরল এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন নিখিলবিশ্ব আহমদিয়া মুসলিম জামাতের পঞ্চম খলিফার সম্মানিত প্রতিনিধি মাওলানা আব্দুল মাজেদ তাহের। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আহমদিয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশের ন্যাশনাল আমির আলহাজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী, জামেয়া আহমদিয়া বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল আলহাজ মোবাশ্বের উর রহমান এবং মাওলানা শাহ মুহাম্মদ নূরুল আমীন।
পঞ্চগড়ে এই প্রথমবারের মতো জলসা উপলক্ষে পবিত্র কোরআনের ৬৫টি ভাষায় সম্পূর্ণ অনুবাদ প্রদর্শনীর আয়োজন করে আহমদিয়া মুসলিম জামাত, বাংলাদেশ। এটি নিঃসন্দেহে পবিত্র কোরআনের বিরল এক প্রদর্শনী। এছাড়া আহমদিয়া মুসলিম জামাতের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০০টি ভাষায় সম্পূর্ণ কোরআন অনুবাদের কাজ সমাপ্ত হয়েছে যা প্রিন্টিং পর্যায়ে আছে।
প্রদর্শনীর আয়োজকরা বলেন, ‘আমরা চাই, প্রতিটি ভাষায় কোরআনের অনুবাদ প্রকাশ করে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা সবার কাছে পৌঁছে দিতে। আমরা এবার ৬৫টি ভাষায় অনুদিত কোরআন প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি।’
কোরআন প্রদর্শনীর পরিচালক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নুরুল আমীন বলেন, এ প্রদর্শনী দেখতে আসা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও দর্শনার্থীদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস পরিলক্ষিত হয়েছে। সেই সাথে জলসা উপলক্ষে আগত প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ উদ্যোগকে ভূয়সী প্রশংসা করেন। আহমদিয়া জামাত এ প্রদর্শনীর পদক্ষেপকে কোরআনের গুরুত্ব উপলব্ধি ও এর প্রকৃত জ্ঞান বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার এক মহাসুযোগ হিসেবে মনে করছে। প্রদর্শনীতে বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, মাওরি, জুলা, মেনডি, ওরিয়া, ইয়াউ, কিকাম্বা, কাটালান, টভালুয়ান ভাষাসহ মোট ৬৫টি ভাষায় অনুবাদকৃত কোরআন প্রদর্শন করা হয়েছে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পাহাড়ের মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরতে ধরতে যার জীবন যৌবনের ৫০ টি বছর কেটে গেলে এমন এক গুনী মানুষ পাহাড়ের চারণ সাংবাদিক সংবাদপত্রের পথিকৃত, পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিক তৈরীর কারিগর দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদকে সম্মাননা দিলো পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম।
গতকাল পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর ৬ বছরে পদার্পন উপলক্ষ্যে রাঙ্গামাটি চারুকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা, গুনীজন সম্মাননা ও সাংস্কতিক অনুষ্ঠানে এই গুনী মানুষের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর সম্পাদক নির্মল বড়ুয়া।
এ সময় রাঙ্গামাটি পৌর সভার প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দিন, আইএফআইসি ব্যাংক এর ব্যবস্থাপক শোয়েব রানা, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ গৌরব দেওয়ান, রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন, রাঙ্গামাটি জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা স্বপন কুমার চাকমা সহ গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সম্মাননা ক্রেষ্ট গ্রহণ কালে চারণ সাংবাদিক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ তার সাংবাদিকতা কালে বিভিন্ন কথা তুলে ধরে বলেন, পাহাড়ের বিভিন্ন চড়াই উৎরায় পেরিয়ে পাহাড়ের মানুষের কথা তুলে ধরতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। পায়ে হেঁটে হেঁটে এ পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কথা বিশ^বাসীর কাছে জানাতে চেষ্টা করেছি। জানিনা কতটুকু সফল হয়েছি। সেই সফলতা টুকু পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ বিবেচনা করবে। তিনি বলেন, পাহাড়ের মানুষের হাসি, কান্না, দুঃখ, বেদনা, জীবন, সংস্কৃতি আচার অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন সামাজিক কাজ গুলো তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি মাত্র।
তিনি বলেন, পাহাড়ের মানুষ আজ পার্বত্য শান্তি চুক্তির সুফল পাচ্ছে। এই পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরে দৈনিক গিরিদর্পণের অবদান কম নয়। প্রতিনিয়ত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে এই চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছি সব সময়। পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের সরকার যে ভ’মিকা রেখেছে তার অনেকাংশে আমার এবং দৈনিক গিরিদর্পণের সহযোগিতা কম ছিলো না। তিনি বলেন, এই কাজ করতে গিয়ে আমাকে অনেক অনেক বার মৃত্যুর পরোয়ানা গুনতে হয়েছে। এই অবস্থায় পাহাড়ের কাজ করে এসে আজ আমার জীবনের অর্ধেকেরও বেশী সময় পার হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমান যুগে যারা পাহাড়ে সাংবাদিকতা করছে তারাতো সোনার চামচ মুখে দিয়ে দিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে। তারা পাহাড়ের মানুষের কথা তুলে ধরতে পাহাড়ে পাহাড়ে হাটতে হয় না। অনলাইন যুগে ঘরে বসেই সব নিউজ পেয়ে যাচ্ছে। তার পরও বলছি পাহাড়ের সাংবাদিকতা বড় পাওয়া হচ্ছে আজ অনেক সাংবাদিক তৈরী করেছি। তারা যদি সঠিক ভাবে সাংবাদিকতা করতে পারে তাহলে পার্বত্য অঞ্চলের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারবে তরুন প্রজন্ম।
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, “টমেটোকে মৌসুমি ফল বা সবজি যে যাই বলুক না কেনো এর গুণাগুণ নিয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা না। রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।”
তিনি আরও বলেন, “টমেটো পেকে লাল হওয়ার সঙ্গে এর পুষ্টিগুণ আরও বৃদ্ধি পায়।”
এই টাটকা ফলের প্রধান অংশ পানি। এর প্রায় ৮০ থেকে ৯৫ শতাংশ পানি। ফলে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট তুলনামূলক কম থাকে। দ্রবণীয় শর্করা ও প্রোটিন বাদে ফলের পুষ্টিমান মূলত খনিজ ও ভিটামিন। এইসবের জন্য ফলকে দেহ রক্ষাকারী খাদ্য বলা হয়।
টমেটোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ফারাহ মাসুদা জানান-
প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে রয়েছে ৩৫১ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন। ক্যারোটিন মানব দেহে ভিটামিন এ’র কাজ করে। অর্থাৎ দৃষ্টিশক্তি প্রখর রাখে ও রেটিনা সুস্থ রাখে।
পাকা-টমেটোতে আছে ভিটামিন সি। যা দাঁত ও হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে ২৭ মি.গ্রা ভিটামিন সি থাকে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ০.১৩ মি.গ্রা থায়ামিন থাকে। থায়ামিন পরোক্ষভাবে স্নায়ুতন্ত্র, হৃদপিণ্ড ও পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ০.০৬ মি.গ্রা রিবোফ্লেভিন পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন গ্রন্থি ও কলা- ত্বক, চোখ, স্নায়ু ইত্যাদির সুস্থতা রক্ষা করে।
টমেটোতে সামান্য পরিমাণে লৌহ পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ০.৪০ মি.গ্রা লৌহ থাকে।
পাকা-টমেটোতে হাড় ও দাঁত গঠনকারী ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। সাধারণত প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ৪৮ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম থাকে।
ফসফরাস দেহের কোষকলার সুস্থতা রক্ষা করে। প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে ২০ মি.গ্রা ফসফরাস পাওয়া যায়।
পাকা-টমেটো রান্নার পরে পুষ্টিগুণে বৃদ্ধি পায়।
টমেটোর উপকারিতা: অনেক গবেষণায় দেখা গেছে,পাকা-টমেটো হৃদরোগ ও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি হৃদপিণ্ডের কার্য ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে। টমেটো দেহের হাড় মজবুত করে।
টমেটো রাতকানা রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। এটি কিডনিতে পাথর জমা রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পাকা-টমেটো বাতের ব্যাথা দূর করতে সাহায্য করে।
পাকা-টমেটো ফুসফুস ও যকৃতের ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে পানি শূন্যতারোধে সাহায্য করে।
টমেটোর পাতার রসে ভিটামিন ডি সামান্য পরিমাণে থাকে। যা ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের বিপাকে প্রভাব বিস্তার করে রিকেটস, অস্ট্রিওম্যালেয়শিয়া, অস্ট্রিওপেরোসিসের ঝুঁকি কমায়।
সৌন্দর্য চর্চা: পাকা-টমেটো সৌন্দর্য চর্চায় অনেক অবদান রাখে। টমেটোর পেস্ট মুখের দাগ, ছোপ ও রোদে পোড়াভাব কমায়। প্রাকৃতিক ভাবে রং ফর্সা করতে টমেটো বিশেষ কার্যকর।
দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বর্তমানের ব্যবসায়ীরা নানারকমের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে থাকেন। এতে টমেটোর পুষ্টিগুণ অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায় এবং এটি স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই অতিরিক্ত উজ্জ্বল টকটকে লাল রংয়ের টমেটো না কেনার পরামর্শ দেন ফারহ মাসুদা।
মহাকাশে আমেরিকার স্যাটেলাইট আছে ১৬১৬ টি
পাশের দেশ ভারতের স্যাটেলাইট ৮৮ টি
পাকিস্তানের স্যাটেলাইট আছে ৩ টি ।
মহাকাশে কেনিয়ার মতো দেশের স্যাটেলাইট আছে ১ টা ।
ফুটবলের দেশ আর্জেন্টিনার স্যাটেলাইট আছে ১৮ টি । ব্রাজিলের আছে ১৭ টি ।
সাউথ কোরিয়ার আছে ২৭ টি । স্পেনের আছে ২৪ টি । থাইল্যান্ডের আছে ৯ টি । জাপানের প্রায় ১৭২ টি ।
পরমানু অস্ত্রের তালিকা করলে দেখা যায় সব থেকে বেশি পরমানু অস্ত্র আছে সুপার পাওয়ার রাশিয়ার । প্রায় ৭ হাজারের উপর । এরপর লিস্টে আসে আমেরিকা । প্রায় সাড়ে ৬ হাজার পরমানু অস্ত্রের অধিকারী আমেরিকা (৬৬৫০ টি )
ভারত এবং পাকিস্তানের পরমানু অস্ত্র যথাক্রমে ১৩০ এবং ১৪০ টি করে ।
ইসরাইলের আছে ৮০ টি । আর ফ্রান্সের হাতে ৩০০ টি করে আছে ।
চীন এবং উত্তর কোরিয়ার আছে যথাক্রমে ২৭০ টি এবং ১৫ টি করে নিউক্লিয়ার উইপন্স ।
মহাকাশে রুশ স্যাটেলাইট কয়টা আছে সেটা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও ধরে নেয়া যায় এই সংখ্যা ১৪২ এর আশেপাশে হবে ।
২০১৬ সালে রাশিয়া মহকাশে আরো ৭৩ টি মাইক্রোস্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে ।
উইকিপিডিয়া ঘাটলেই দেখবেন ব্যালাস্টিক সাবমেরিন আছে এরকম ৬ টা এলিট দেশের তালিকায় ভারতের নাম আছে ।
জাপান শান্তিপ্রিয় দেশ হয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই । সেই জাপান ১৬ টা সাবমেরিন তৈরি করেছে ।
ইন্ডিয়ার আছে ১৬ টা আর ইরানের আছে ৩১ টা করে সাবমেরিন ।
রাশিয়া নিজের সাবমেরিন নিজেই বানায় । এখন পর্যন্ত আছে ৬৩ টি ।
চীনের আছে ৬৯ টা
অবরোধের মধ্যে থেকে উত্তর কোরিয়া ১৫ টা পরমানু বোমা আর ৭৮ টা সাবমেরিনের অধিকারী ।
স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এসে একটা দেশ পড়ে আছে ফুটবল আর ক্রিকেটের উন্মাদনা নিয়ে । ক্রিকেটে আমাদের অবস্থান ভালো হইলেও ফুটবলে আমাদের র্যাঙ্কিং হইলো ১৯৭ ।
৪৭ বছর বয়সী দেশটার একটা ক্যাম্পাসও সারাবিশ্বে ১০০ সিরিয়ালে ঢুকতে পারে নাই ।
লাল বাস আছে
শাটল আছে
প্যারিস রোড আছে
সংস্কৃতির রাজধানী আছে ।
সবই আছে ।
শুধু নাই সাইন্টিফিক মেধা । যে মেধা দিয়ে একটা দেশ এগিয়ে যেতে পারে ।
ভারতে মাহিন্দ্রা , মারুতি সুজুকির মতো ব্রান্ড তৈরি হইলেও আমাদের দেশে এক “”প্রগতি “” ছাড়া আমি কোন ব্রান্ড পাই নি ।
সেই প্রগতি আবার গাড়ি বানায় না । তারা গাড়ির পার্টস জোড়া লাগায় ।
অথচ দেশে আছে বুয়েট , রুয়েট , চুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠান । ঢাবির মতো প্রতিষ্ঠান আবিস্কারের জন্য বিখ্যাত নয় । তারা বিখ্যাত আন্দোলনের জন্য । যে কোন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঢাবির ছেলেরা গিয়ে রাস্তা ব্লক করে । সেটা নিউজ হবে । জাস্ট এইটুকু ।
অথচ সুযোগ দিলে এই ঢাবি বিশ্বের ১০০ ক্যাম্পাসের মধ্যে যাওয়ার যোগ্যতা রাখে ।
আমাদের ছেলেরা বুলেট ট্রেনের নকশা করে কিনা জানি না । তবে জাপানের বুলেট ট্রেন নিয়ে একটা প্রতিবেদন দেখেছিলাম । সেখানে বলা হয়েছিল জাপানীরা যাতায়াত ব্যাবস্থাকে এতোটা সংক্ষিপ্ত করে এনেছে যে জাপানের যে কোন জায়গা থেকে টোকিওতে যেতে মাত্র ১ ঘন্টা সময় লাগে । সবই সুপার ফাস্ট বুলেট ট্রেনের বদৌলতে ।
আমরা ক্রিকেট খেলি
বিশ্বকাপের পতাকা বানাই
ইউটিউবার বানাই ।
র্যাংকিং নিয়ে ফাইট করি ।
দেশটাকে সুযোগ দেন । দেশটা এগিয়ে যাক । প্লিজ … 🙂
যেন ২০ বছর পরে আমরা বলতে পারি , আমাদের আছে বঙ্গবন্ধু সিরিজের ৪ টা মিলিটারি স্যাটেলাইট । আছে ১০ টা সাবমেরিন । আমাদের পরমানু প্রকল্প আছে । আমরা কারো কাছে মাথা নত করতে আসি নাই ।
সংগৃহিত
-ঃ জিয়াউর রহমান জুয়েল ঃ-
ভাবতেই পারিনি কেউ আমায় বিয়ে করবে। আর এখন ছিমছাম সংসার, দুই ছেলেমেয়ে! ভালো বাসা নাই ঠিকই কিন্তু ভালোবাসা রয়েছে পাহাড় সমান। সংসার জীবন নিয়ে এমনই পরিতৃপ্তির বয়ান অন্ধ গৃহবধু রেমা মারমা(৪৫)’র; যার স্বামীও একজন অন্ধ মানুষ। ইর্ষণীয় ভালোবাসায় মাখামাখির কারণে এখন তারা অন্যদের কাছে ভালোবাসার ‘আইকন’।
রাঙ্গামাটি শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরত্বের কাউখালী উপজেলার শামুকছড়ি পাহাড়ি গ্রামের এই যুগল নাম শুনেই প্রেমে পড়েছিলেন দুজন দুজনার। তাদের ভালোবাসার এই ‘রহস্য’ ভেদ করতে নানা চেষ্টা চলছে তিন প্রজন্মের মানুষের। এই নিয়ে বাতাসে ভেসে বেড়ায় নানা আখ্যান।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কাউখালী উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে অন্ধ দম্পতির বাড়ি গিয়ে জানা গেছে তাদের আলোহীন জীবনের কাহিনী। ভাষার দূরত্ব ঘোচাতে দোভাষী হিসেবে এই প্রতিবেদকের সাথে যুক্ত হন রাঙামাটি কৃষি ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমার শেষ বর্ষের শিক্ষার্থি এসিমং মারমা টিটু(১৮)। তার বাড়ি উপজেলা সদরের কচুখালী গ্রামেই।
শামুকছড়ি বটতলের চা দোকানের সামনে দেখা মেলে সুইজাউ’র সাথে। মারমা ভাষায় টিটু জানায় সাংবাদিক যাবে তাঁর বাড়িতে। হাতে থাকা লাঠিতে ঠাহর করে বাড়িরে পথে এগিয়ে চলেন তিনি। সামনে ভাঙা সাঁকো, গড়গড় করে পার হতে দেখে বিস্ময় জাগে মনে। পার হয়েই ঘরের উঠোনে গিয়ে বাড়তে থাকে কথার ডালপালা। তারপর মাচাংয়ের ওপরে বসে মারমা ভাষার বাংলা তরজমায় চলে জম্পেস আড্ডা !
শার্ট ময়লা হয়ে গেছে, তোমায় ভালো দেখাচ্ছে না। দাও ধুয়ে দেবো। গোছল করে মাথায় তেল দাও, চুল আঁচড়াও। গত ১৯ বছর ধরে রেমার এই কথাগুলো যেন ঠিক সময়ে এলার্ম দেওয়া ঘড়ির মতো শোনায় সুইজাউ’র। রেমা-সুইজাউ অন্ধ দম্পতির জীবন নামের ধারাবাহিকের খন্ডিত সংলাপ এগুলো। তবে বিস্ময়কর তথ্য হলো এই ১৯ বছরে তাদের মধ্যে ‘ঝগড়া’ হয়নি একবারও! শরীরের ঘ্রাণ শুকেই চেনেন স্বামী, সন্তানকে। এমনকি বাচ্চাদের শরীর স্পর্শ করেই তাদের অসুস্থতা বুঝে ডাক্তারের কাছে যেতেন।
আচ্ছা, কে বেশি ভালোবাসে…প্রতিবেদকের কথা শেষ না হতেই সুইজাইউ বলেন ‘আমি’। মুহুর্তেই রেমার মায়াবী হাসির দ্যুতি ছড়ায় চারপাশ। তার জবাব, হুম, আমি বুঝি কম? তাহলে দুটি বাচ্চাকে বড়ো করে তুললাম কিভাবে? সত্যিইতো, আমরা দুজনেই সমান ভালোবাসি বলে কথার নিয়ন্ত্রন নেন সুইজাইউ। বলেন জোছনা রাতে দুজনে মাচাংয়ে বসে তারা গুনি। চাঁদ বড় ছোট তাও বুঝি; আলো দেখে।
সুইজাউর কাছে যাবেন বলে ঘর থেকে পালিয়েছিলেন রেমা। পড়ে ঝোপ থেকে খুঁজে এনে মুরব্বিরা বিয়ে করিয়ে দেন তার হিরো সুইজাইউ’র সাথেই। সেটা ১৯ বছর আগের কথা; ১৯৯৯ সালের। এই নিয়ে ব্যাপক সাড়া পড়ে গিয়েছিল পাহাড়ি পল্লীগুলোতেও। কাঁছে আসার গল্পের শুরুটা হয় মনিবের হাতে পান তুলে দিতে গিয়ে। মজা করে বলেছিলেন, অন্ধ সুইজাউ’র সাথে তাকে বিয়ে দেবেন। সেই থেকে না দেখেই তার প্রেমে পড়েন রেমা। ঘরের মানুষদের জিগেস করতেন কেমন দেখতে সুইজাউ, আজ তাকে কেউ দেখেছে কিনা। আরো কত কি..
রেমা মারমা’র ভারি মিষ্টি চেহারা। ক্যামেরায় ছবি ধারণ করেই প্রশ্ন ছিল ছবি দেখতে ইচ্ছে করেনা? জবাব, পরজন্মে এসব ছবি দেখবো। কিন্তু তার এই মিষ্টি মুখ তো সবাই দেখছে। সেকি অন্যদের মুখগুলো কখনো দেখতে পারে? এমনকি স্বামীকে পর্যন্ত ! শুধু কি তাই? স্বামীর অবস্থাও একই। তারও দু চোখে আলো নেই। আর তাইতো এই অন্ধ দম্পতি সন্তানের চোখে খুঁজে ফেরে চার নয়নের আলো। দেশীয় কবিরাজ আর স্থানীয় বিশ^াসের কারণে অপচিকিৎসার শিকার হয়ে এ দম্পতির এই দশা।
জন্মান্ধ নন তাঁরা, দুজনেরই অন্ধ হওয়ার গল্পটা বেশ পুরনো। সেই পাঁচ বছর বয়সে হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন রেমা মারমা। একনাগাড়ে ১০ দিন ভোগেন। বাবার বাড়ি ফটিকছড়ির ডাবুয়ায় তখনো আধুনিক চিকিৎসার স্পর্শ লাগে নি। উপায় না দেখে উপজাতি কবিরাজের দেওয়া বনাজি ঔষধ খেতে হয় তাকে। পরে কিছুটা উপশম বোধ করতে থাকলেও ধীরে ধীরে অনুভব করতে থাকেন চোখের জ্যোতি নিভে যাচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে চুড়ান্ত পরিনতি অন্ধত্বে। পরিণত বয়সে তাকে কেউ বিয়ে করতেই চাইলেন না। এর আগে গৃহপরিচারিকা হিসেবে থাকার সুবাদে উপজেলা সদরে অবস্থিত ঘাগড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত শাথোয়াই প্রু মারমা’র বাড়িতে ছিলেন তিনি। একদিন ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। পরিণয়ে আবদ্ধ হন আর এক অন্ধ সুইজাউ এর সঙ্গে। তারপর গল্পের বর্তমান রূপ। দুই ছেলেমেয়ে।
আর রেমার স্বামী সুইজাউ মারমা সেই ছয় বছর বয়সে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হন এ গ্রামেই। বনাজি ঔষধ সেবন করতে হয় তাকেও। মোটামুটি সেরেও উঠছিলেন। এরই মধ্যে মাসখানেক পরিবারের সদস্যরা জোর করে ধরে তার দুচোখে গুল্মপাতার রস দিলে তার চোখের আলো ক্ষীণ হতে থাকে। চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে ডাক্তার দেখান। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তিনভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় সুইজাউ। অন্ধ বলে কেউ তাকেও বিয়ে করতে রাজি হয়নি। অবশেষে পরিবার ও প্রতিবেশিরা স্থানীয় ওই চেয়ারম্যানের সহায়তায় ১৯৯৯ সালে বিয়ে দেয় রেমার সঙ্গে।
রেমা জানালেন, নিজে মাসে ৫০০ টাকা বিধবা ভাতা আর স্বামী ৬০০ টাকা প্রতিবন্ধি ভাতা পান ৬ মাস পরপর। আগে সুইজাউ ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতেন, সন্তানেরা বড় হওয়ায় ছেড়েছেন অনেক আগে। এখন প্রতিবেশিদের কাছ থেকে মাঝেমধ্যে ধারদেনা করে চলেন কোনভাবে। কখনো আধপেটা থাকা কিংবা উপোসও করতে হয়। প্রতিবেশিরা চারজনের মাথাগোঁজার জন্য কোনরকমে একটা ‘ডেরা’ তৈরি করে দিয়েছেন। ভাঙা বেড়া আর জঙ ধরা টিনে বর্ষায় পানি আর শীতে হুহু করে ঠান্ডা বাতাস ঢুকে। তবুও আক্ষেপ নেই তাদের।
নাকে ঘ্রাণ নিয়ে রান্নার কাজটা বেশ ভালোভাবেই করেন রেমা। রান্নায় লবন-মরিচ-হলুদ বেশি হলেও কখনো রাগ করেনি স্বামী। এমনকি অসুস্থ্য হলেও রেমাকেই রান্না করতে হয়েছে স্বামীর কথা ভেবে। অবশ্য রান্নার উপকরণ নির্দিষ্ট স্থানে থাকে সেটা শুধু রেমাই চেনেন। মাছ-মাংশ, সবজি কাটা ধোয়া, ঘরের কাজ, কাপড় ধোয়া, ¯œান, খাওয়ানো সবই করেন স্বাভাবিকভাবেই। অবশ্য দিনরাত সবই সমান তার কাছে। তবে অনেকবার মশারী ও কম্বলে কুপির আগুন লেগেগিয়েছিল, প্রতিবেশিরা নিভিয়েছে।
দাম্পত্য জীবনে পরিতৃপ্ত এই দম্পতি নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন পরিবার পরিকল্পনা করে ছোট পরিবার আর বড় করবেন না। অর্থাভাবে থাকায় ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া ছেলে উশিমং মারমা(১৮) সংসারের হাল ধরেছেন। আর স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া মেয়ে অংমাচিং মারমাকে নিয়ে স্বপ্ন এখন একটাই-ভবিষ্যতে এই সন্তান বড় হবে, চাকরি করবে, সংসারের হাল ধরবে।
সুইজাই মারমা বলেন, অসাধারণ দাম্পত্য জীবন পেয়েছেন তারা। ঈশ^র সবাইকে এমন সুখ দেন না। তবে ছোট একটা ‘অসামর্থ’ মাঝে মাঝেই পিড়া দেয়। বর্ষায় ছড়ার ঘোলা পানি দিয়ে রান্না ও ধোয়ার কাজ করতে হয় স্ত্রী রেমাকে। পা পিছলে অনেক বার আহত হয়েছে সে। তাই ঘরে একটা টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন বসাতে পারলে মরেও শান্তি পেতেন।
প্রতিবেশি পাইচিং মারমা (৪৭) বলেন, এলাকার মডেল এই দম্পতি। ভালোবাসার অভাব নাই। সংসার জীবন অত্যন্ত সুখের। বরং অন্য প্রতিবেশিরা এই দম্পতির সুখের সংসার দেখে ইর্ষা করে। রহস্যে ঘেরা অদ্ভুদ তাদের ভালোবাসা। আরেক প্রতিবেশি চাইথোয়াইপ্রু মারমা(৪৮) বলেন, এই দম্পতির একটা ঘর নাই। প্রতিবেশিরা ঘর মেরামত করে দেয়। গরু ছাগল থাকলে পুষতো। তা দিয়ে সংসার চলতো। সরকারি ভাতার ১১শ টাকা দিয়ে কি মাসে চারজনের সংসার চলে? সরকার চাইলেই এই অন্ধ দম্পতির দায়িত্ব নিতে পারে।
কথায় কথা বাড়ে, অস্তাচলে যায় সূর্য। সাঁঝের কুয়াশা ভেদ করে রাতের অন্ধকার নামে পাহাড়ি জনপদে। মোবাইলের ক্ষীণ আলোতে ফিরতি পথ খুঁজি নিড়ে ফেরার। ভালোবাসার এই অনবদ্য গল্পের রহস্যে সাঁতরে চলি। পাশর্^প্রতিক্রিয়া হয়, আহা রোজকার এই অন্ধকার কী সড়ানো যায়না? তাহলে তো বেঁচে যেতো ভালোবাসা ! আচ্ছা, আলো কত দূর?
তবে কিছুটা আশার আলো মেলে রাঙামাটি জেনালে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শওকত আকবরের কথায়। তিনি জানান, আরোগ্যযোগ্য হলে চিকিৎসা কিংবা চক্ষু স্থাপনের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করা যায়। তবে পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
রেমা-সুইজাউ দম্পতির পরিণতির ব্যাপারে স্থানীয় সমাজকর্মী অংপ্রু মারমা জানান, আধুনিক চিকিৎসা পাহাড়ি পল্লিগুলোতে না পৌছায় সচেতনতার অভাবে এখনো উপজাতিদের ৯০ শতাংশই বনাজি ঔষধের ওপর নির্ভরশীল। ফলে এধরণের অপচিকিৎসার ঘটনা অহরহ ঘটছে।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ¯েœহাশীষ দাশ জানান, বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক। তবে পরিবারটির আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর সবার জন্য বাসস্থান প্রকল্পে তাদের নাম আছে কিনা দেখবো। একদিন অফিসে আসতে বলেন। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেবা।
বিশ্বের তাবড় তাবড় ধনী ব্যক্তি রয়েছেন। কারও কারও সম্পত্তির তো কোনও হিসেব-নিকেশ নেই। যেমন ধরা যাক বিল গেটস, মুকেশ অম্বানি কিংবা সৌদি আরবের শেখরা। কিন্তু মানবজাতির ইতিহাসে সবথেকে বড়লোক কে ছিলেন তা খুঁজে বের করতে সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়েছিল Celebrity Net Worth নামে এক সংস্থা। হিসেবটা এইভাবে করা হয়েছে যে ১৯১৩ তে যদি সম্পত্তির পরিমান থাকে ১০০ মিলিয়ন ডলার, ২০১৩-র হিসেবে সেটা হবে ২২৯৯.৬৩ বিলিয়ন ডলার।
এমন হিসেবে দেখা গিয়েছে ২৫ জন সর্বকালের ধনীতম ব্যক্তির মধ্যে ১৪ জনই আমেরিকান। আর এদের মধ্যে কেবলমাত্র বিল গেটসই জীবিত। তিনিই সবথেকে ধনী আমেরিকান। তবে গোটা বিশ্বের ইতিহাসে মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবথেকে ধনী ব্যক্তি হিসেবে যার নাম উঠে এসেছে তাঁর নাম অনেকেই শোনেননি। তিনি হলেন মানসা মুসা।
পশ্চিম আফ্রিকার মালি সাম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন তিনি। মালি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সান্দিয়াতা কেইতার ভাগ্নে ছিলেন সম্রাট মানসা মুসা। ১৩০৭ সালে তিনি সিংহাসনে বসেন। তিনি প্রথম আফ্রিকান শাসক যিনি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। তার সম্পদ এত বেশি ছিল যে তা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়না। আনুমানিক ৪০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি ছিল তাঁর।
প্রচলিত আছে, ১৩২৪ সালে তিনি যখন হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যান, তখন তার হজবহরের ৬০ হাজার লোক ছিল শুধু রসদপূর্ণ ব্যাগ বহনের জন্য। সঙ্গে ছিল ৫০০ গোলাম, যারা প্রত্যেকে একটি করে সোনার দণ্ড নিয়ে গিয়েছিল। ৮০ থেকে ১০০টি উট ছিল, যেগুলো প্রত্যেকটি প্রায় ১৪০ কেজি সোনা বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তার এই যাত্রাপথে তিনি প্রায় কয়েক শ’কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেছিলেন। কায়রোতে তিনি এত বেশি সোনা বিতরণ করেছিলেন যে, বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানে সোনার দাম অনেক কম ছিল। মুসার সফরে তার প্রথম স্ত্রী সঙ্গী হন।
মুসার স্ত্রীর সেবায় ৫০০ দাসী নিযুক্ত ছিল। এই কাফেলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকারী কর্মকর্তা ও সঙ্গীত শিল্পীও ছিলেন। মুসা অত্যন্ত দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। কথিত আছে, প্রতি জুম্মা বারে মুসা একটি মসজিদ তৈরি করতেন। মক্কায় হজের পর মক্কার জ্ঞান-বিজ্ঞানে অভিভূত হয়ে পড়েন তিনি।
মক্কা থেকে উট বোঝাই করে চিকিৎসা, জোতির্বিদ্যা, দর্শন, ভুগোল, ইতিহাস, গনিত শাস্ত্র এবং আইনের উপর প্রচুর বই নিয়ে আসেন। এবং মক্কা থেকে মেধাবী এবং সেরা গনিতবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আর্কিটেক্টদের আমন্ত্রন করে নিয়ে আসেন
বলা হয়ে থাকে মুসা এই ঐতিহাসিক হজে ১,৫০,০০০পাউন্ড সোনা ব্যয় করেছিলেন। তিনি মালি সাম্রাজ্যের প্রায় ৪০০টি শহরকে আধুনিক করে গড়ে তোলেন। তাঁর তৈরি স্থাপত্যের মধ্যে শংকর মাদ্রাসা বা ইউনিভার্সিটি অফ শংকর , হল অডিয়েন্স, গ্রান্ড প্যালেস উল্লেখযোগ্য। মুসার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল, তা স্পষ্টভাবে জানা যায় না। তবে শোনা যায়, তিনি ২৫ বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন।
॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব খাগড়াছড়ি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে কালো চুক্তি অ্যাখ্যাসহ বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে চুক্তি স্বাক্ষরে বেঘাত ঘটাতে বিএনপি পার্বত্য চট্টগ্রামে লং মার্চ করা থেকে প্রমাণ হয় বিএনপি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও উন্নয়নে বিশ্বাসী নয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি করে পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছে। পাহাড়ে এখন শান্তির সু-বাতাস বইছে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে পারস্পারিক আস্থা ও বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন দাবি করে, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেই চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এ কথা বলেন।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের হলরুমে পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল জিএম সোহাগ, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর নাজমুস সালেহীন সৌরভ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিনসহ জেলা পরিষদে ন্যস্ত বিভিন্ন বিভাগের প্রধানগণ, এনজিওকর্মী, শিক্ষক ও সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আগামী ২রা ডিসেম্বর পবিত্র ঈদুল মিলাদুন্নবী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২দশক পূর্তি একই দিন হওয়ায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১লা ডিসেম্বর আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২৯ নভেম্বর পৌর শাপলা চত্বরে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, ৩০ নভেম্বর বিকালে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের হলরুমে সেমিনার ও ১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বরে কেক কাটা ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং বিকালে ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম চুক্তি পরবর্তী অস্ত্র সমর্পনস্থল ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। এতে বাংলাদেশের অন্যতম জীবনমুখী শিল্পী হায়দার হোসেন ও দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল মাইল্স দর্শকদের মাতাবেন।
এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ২৫ নভেম্বর ২০১৭ইং শনিবার সকাল ১০.০০টায়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবস্থ ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক অডিটোরিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণে আন্তর্জাতিক মহলে মানবতার ঝড় উঠেছে শীর্ষক আলোচনা সভা ও শীত বস্ত্র বিতরণ’ মাওলানা আনোয়ার হোসেনের কুরআন থেকে তেলোয়াতের মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে সংগঠনের মহানগর আহব্বায়ক আবুল কালামের সভপত্বিতে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে শামছুল করিম লাভলুর সঞ্চালয়ান প্রধান অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মোঃ দুললা মিয়া। উদ্ভোধক ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক এম কে মোমিন, প্রধান আলোচক আন্তর্জাতিক আইনজীবি ড. সেলিম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রশিদ, এন জি আকবর, সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন, ফরিদা ফারভিন সাথি, বিশিষ্ট সংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠক বাবু মিলন বড়–য়া, মোঃ মুছা খান, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাহমুদুল হক আনসারি, গাজী রোকন উদ্দিন, মিসেস মনোয়ারা বেগম, সরোয়ার হোসেন চৌধুরী, মোঃ হাসান মুরাদ, ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন, মুজিবুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনে আন্তর্জাতিক মহলে মানবতার ঝড় উঠেছে এবং মুক্তিযুদ্ধে বিনিময়ে বাঙলীজাতি স্বধীনতা লাভ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী মায়ানমার-এর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় মাদার অব হিউম্যানিটি অর্জন করেছেন। যা বিশ্ববাসী কখনো ভুলবে না। বক্তারা সকলকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতা পেশায় বিশেষ অবদান রাখায় দৈনিক গিরিদর্পনের সম্পাদক চারণ কবি জনাব এ কে এম মকছুদ আহমেদকে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ্ জাহানকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে কম্বল দিয়ে সারাদেশে শীতবস্ত্র বিতরন কর্মসুচীর উদ্ভোধন করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপি॥
সুদৃশ্য মোজাইক পাথরে আবৃত বিশাল মসজিদ প্রাঙ্গণ। একটু সামনে এগিয়ে যেতে চোখে পড়লো, ছোট একটা কামরায়দু’জন মানুষ প্রার্থনারত। এই কামরায় ভেতরেই কাঁচের বাক্সে সংরক্ষণ করা হচ্ছে দুটি পাথরের পবিত্র পদচিহ্ন। সেই কাঁচেরবাক্সটি আবার স্টিলের একটি কাঠামো দিয়ে বেস্টনি দেয়া হয়েছে। গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের সৌজন্যে। বেস্টনির ডান পাশের পদচিহ্ন বরাবরেবাংলায় লেখা রয়েছে: ‘সরওয়ারে কায়েনাত হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম–এর কদম মোবারক’। বাম পাশের পদচিহ্ন বরাবরে লেখারয়েছে : ‘হযরত গাউসুল আজম আব্দুল কাদের জিলানী (র.) এর কদম মোবারক’।
মসজিদের সহকারী ইমাম মো. সোলায়মানের কাছ থেকে জানা গেছে, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা, প্রথম মোতোয়াল্লি নবাব ইয়াসিনমুহাম্মদ খান (র.) ১৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে মহানবী (স.)-এর ডান পায়ের ছাপ বিশিষ্ট প্রস্তরখ–টি এবং বাগদাদ থেকে বড়পীর হজরতআব্দুল কাদের জিলানী (র.)-এর পদচিহ্ন সংগ্রহ করেছিলেন।
কামরার বাইরে দেয়ালের ওপরে সেই একই বর্ণনা বাংলায় ছাপা হরফে লেখা রয়েছে। জানা যায়, ‘কদম মোবারক’ নামকরণ হয়েছে এই দুটি পবিত্রপাথরের পদচিহ্ন থেকে।
যেখানে পবিত্র পদচিহ্ন দুটি সংরক্ষণ করা হয়েছে সেটিই হচ্ছে মসজিদের মুল অংশ। এর বাইরে বর্ধিত অংশটি পরে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদেরসহকারী ইমাম মো. সোলায়মানও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বর্তমানে জামালখান ওয়ার্ডে অবস্থিত মোগল–আমলের অনুপম পুরাকীর্তি কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীনে রয়েছে।
মসজিদের পেছনের দিকে গেলেই নজরে আসে এর সত্যিকার স্থাপত্য শৈলীর নির্দশন। বিভিন্ন সময়ে সংস্কার ও সম্প্রসারণের পরও মোগল স্থাপত্যেরসৌন্দর্য বজায় রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত শতবর্ষের স্মৃতিবাহী আয়তাকার মসজিদটি পাঁচ গম্বুজের। একটি বড় গম্বুজ আরদুপাশে দুটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। যার উত্তর ও দক্ষিণে চারকোনা আরও দুটি গম্বুজ রয়েছে। স্থাপত্যের ক্ষেত্রে মোগলেরা খিলান গম্বুজ ও খিলান ছাদকেপ্রাধান্য দিত। লতাগুল্মের নকশা, আরবি ক্যালিওগ্রাফি, জ্যামিতিক রেখাচিত্র, মোজাইক নকশা বসানো পাথরের সাজে সজ্জিত মসজিদটি।
গম্বুজের অস্তিত্ব অক্ষত থাকলেও সেগুলোর গায়ে শেকড় গেড়েছে বুনো গাছপালা। এর সামনে সীমানা দেয়ালের পাশ ঘেঁষে ছোট–বড় বিভিন্ন গাছগাছালিরঘন জঙ্গল তৈরি হয়েছে। মসজিদের সামনের দেয়ালের মাঝের দরজার দুপাশে আছে খিলান দেয়া তিনটি দরজা।
শেখ আদনান ফাহাদ: ভারত, পাকিস্তান কিংবা ধর্ম-সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানদের আর বেহুঁশ হলে চলবে না। রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষায় মাথা ঠাণ্ডা রেখে সচেতনভাবে জীবন যাপন করতে হবে। নানা দিক থেকে উস্কানি আসছে। বিশেষ করে ধর্ম নিয়ে একাধিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দেশের কোটি কোটি মুসলমানকে উস্কানি দিয়ে চলেছে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মাথা ঠাণ্ডা রেখে চলাফেরা করলেও কোনো কোনো উস্কানিতে পা দিয়ে গরীব হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আক্রমণ করে বসেছে স্থানীয় মুসলমানরা। রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে হলে যুক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে চলতে হবে। কারও উস্কানিতে পা দিলে হবে না।
রংপুরে হিন্দুদের বাঁচাতে পুলিশ গুলি করেছে, মুসলিম তরুণ হাবিবুর রহমান মারা গেছে, আহত হয়েছে অনেক। উস্কানি দাতারা সংখ্যায় বেশি না, কিন্তু সে উস্কানিতে পা দেয়ার মানুষের সংখ্যা কম নয়। উস্কানি দুই দিক থেকে আসছে। স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তান-পন্থী জামাত আর ভারতের বিজেপি-শিবসেনা জঙ্গি গোষ্ঠীর বাংলাদেশী সহযোগীরা সরাসরি এবং গোপনে ক্রমাগত উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। এদের ধর্মের লেবাস ভিন্ন হলেও এরা নিজেদের কর্মকাণ্ড দিয়ে একে অপরের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করে।
বাংলাদেশ নিয়ে নানা দিকে, নানা পর্যায়ে ষড়যন্ত্র চলছে। চিরশত্রু পাকিস্তান তো আগে থেকেই আছে। আঞ্চলিক রাজনীতি-অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পশ্চিম ও প্রাচ্যের কতিপয় বড় দেশের মনোযোগের কেন্দ্রে এখন বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে বাগে রাখতে চায় সবাই। ফলে ষড়যন্ত্র ডালপালা মেলছে। চলমান রোহিঙ্গা সংকট শুধুমাত্র ধর্মীয়, জাতিগত ও অর্থনৈতিক বিষয় নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে আঞ্চলিক ও বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর আধিপত্য বিস্তারের খেলা। মানবিক কারণে দেশের জনগণের প্রত্যাশার সাথে তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। সারাবিশ্বে নন্দিত হয়েছেন শেখ হাসিনা, দেশের মানুষ বুকভরা ভালোবাসা আর দোয়া জানিয়েছেন শেখ হাসিনার প্রতি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এও বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফেরত যেতে হবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সরকার যখন আপ্রাণ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে সাফল্য পেতে শুরু করেছে, তখন চরম উদ্বেগের খবর জানিয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু সংবাদ মাধ্যম। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় রাজ্য আসামের স্থানীয় জনগোষ্ঠী বাঙালি মুসলমানদের ‘বাংলাদেশী’ আখ্যা দিয়ে বের করে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে কট্টরপন্থী হিন্দুদের দল বিজেপি ও সমমনা আরএসএস, শিবসেনা ও বজরং পার্টির লোকেরা। বাঙালি মুসলমান মানেই বাংলাদেশী বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। অথচ আসামে চলে যাওয়া বাংলাদেশীদের প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের।
আসাম থেকে লাখ লাখ মুসলিমকে তাড়িয়ে সেখানে আরও একটি মিয়ানমার তৈরি করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের প্রবীণ নেতা মাওলানা সৈয়দ আর্শাদ মাদানি। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সম্পর্কে আমাদের অনেকেই জানি না। ব্রিটিশ শাসনামলে ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে ভাগ করে ফেলার অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে সবার আগে সংগঠন হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আলাদা নয়, সম্মিলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থার দাবিতে ব্রিটিশ আমলে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছে এই জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।
বৈধ নাগরিকদের তালিকা থেকে রাজ্যের লাখ লাখ মুসলিম বাদ পড়তে পারেন, সেই আশংকা প্রকাশ করে দিল্লিতে এ সপ্তাহে একটি সেমিনার আয়োজন করেছিল ‘দিল্লি অ্যাকশন কমিটি ফর আসাম’। সেখানে জমিয়ত নেতা মওলানা মাদানি বলেন, ‘৪০০ বছর ধরে যারা বংশপরম্পরায় আসামে বসবাস করছেন তাদের আপনি বাংলাদেশি বলে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন, তা আমরা কিছুতেই হতে দেব না। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, তাহলে আগুন জ্বলে যাবে। ভারতীয় নয় বলে এই মুসলিমদের যদি আপনি বের করার চেষ্টা করেন, তাহলে তো বলব আসামের বিজেপি সরকার এটাকেও আর একটা মিয়ানমার বানানোর চেষ্টা করছে।’
ইঙ্গিত স্পষ্ট, আসাম সরকার বাঙালি মুসলমানদেরকে রাজ্য থেকে বের করে দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিতে চায়। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিয়মিত ভাবে বাঙালি মুসলমানদের বের করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে চরমপন্থি হিন্দুরা। সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের শিকার হয়ে আসামে মুসলমানদের হতাহতের ঘটনা বহু। ‘প্রতিকূল পরিস্থিতির’ কারণে যেসব বাংলাদেশি আসামে অবৈধভাবে এসেছেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা অনেক আগেই দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তরুণ গগৈ। অন্যদিকে আসামের ৪০ লাখ মুসলমানকে অবৈধ নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করাকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে সেখানকার কমিউনিটি নেতারা তৎপর আছেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নাগরিক নিবন্ধনের সময় বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১১ সালে আসামের আদমশুমারিতে দেখা যায়, রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ৩৪ দশমিক ২ শতাংশ লোক মুসলিম। এত বড় জনগোষ্ঠীকে আসামে ‘বাংলাদেশী খেদাও আন্দোলন’ আর মাধ্যমে বের করে দিতে চায় বিজেপি ও সমমনারা।
আসাম পাবলিক ওয়ার্কার্স নামে একটি সংগঠন প্রদেশের ভোটার তালিকা থেকে ৪১ লাখ ‘অবৈধ বাংলাদেশীর’ নাম বাদ দেয়ার দাবি জানিয়ে ‘জনস্বার্থে’ যে আবেদন করেছিল ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট তা গ্রহণ করেছে। বাদিপক্ষের অভিযোগ হচ্ছে আসামের ভোটার তালিকায় কমপক্ষে ৪১ লাখ বাংলাদেশীর নাম রয়েছে। চরমমাত্রার সাম্প্রদায়িকতা থেকে উৎসারিত এমন দাবি। যে হিন্দুরা বাংলাদেশ থেকে নানা সময়ে আসামে গিয়ে ঘর-বাড়ি করেছেন, তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হচ্ছে আর যে মুসলমান জনগোষ্ঠী আসামের লোকাল, তাদেরকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশী! রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপিসহ অন্যান্য চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদী দলগুলোর এহেন কর্মকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক অভিলাষ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নানা ছুতোয় হিন্দুদের ভাগিয়ে নিয়ে আসামে স্থান দিয়ে নিজেদের ভোটার বাড়াতে চায় এরা। মুসলমানদের বের করে দিয়ে হিন্দুত্ববাদের স্লোগানে নিজেদের একাধিপত্য নিশ্চিত করতে চায় বিজেপি, শিবসেনা, আরএসএস, হিন্দু মহাসভা, বজরং পার্টি ও সমমনা মৌলবাদী দলগুলো। এই জন্যই বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য সীমান্ত খোলা রয়েছে বলে মাঝে মাঝেই বিবৃতি দেয় ভারতের হিন্দু নেতারা। এবং তাদের হয়ে কাজ করে এমন একদল লোক বাংলাদেশের ভেতরেই সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী।
ভারত এখন সব সম্ভবের দেশ। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের নানা রাজ্যে মুসলমান ও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন এতটাই বেড়ে গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক গবেষণা প্রতিবেদনে ভারতকে সহিংস রাষ্ট্রের তালিকায় বিশ্বের চার নম্বর স্থান দিয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা নিপীড়ন তো আছেই। সামান্য গুরুর মাংস খেলে বা গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগ দিয়ে দিনে দুপুরে জ্যান্ত মানুষ মেরে ফেলা হচ্ছে। ভারতকে ব্র্যান্ডিং করতে ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’ বলে একটি স্লোগান ব্যবহার করা হয়। ‘অবিশ্বাস্য’ ভারতে সত্যই এক অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটাতে চলেছে চরমপন্থি হিন্দু সংগঠন হিন্দু মহাসভা। মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল যে ব্যক্তি, সে নথুরাম বিনায়ক গডসের প্রতি ‘ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার’ বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মন্দির বানাতে যাচ্ছে চরমপন্থি হিন্দুদের সংগঠন হিন্দু মহাসভা। মহাত্মা গান্ধীকে যারা এত ঘৃণা করতে পারে, অন্য ধর্মের মানুষ, বিশেষ করে মুসলমানদেরকে তাহলে কত ঘৃণা করতে পারে সেটা বলা কল্পনা করা সহজ কাজ নয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্র সাফল্যে আমরা খুশি আর দুর্দশায় শুধু কষ্টই পেতে পারি। আমাদের করার কিছু নেই। তবে আমাদের স্বার্থ রক্ষায় নিজেদের করার আছে অনেক কিছু।
ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র হয়েছে দুটো-ভারত আর পাকিস্তান। পাকিস্তানকে যুদ্ধে পরাজিত করে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের শক্তিতে। তাই ইতিহাসের মানদণ্ডে আমরা বলতে পারি, মুসলমান কোথাও পাঠাতে হলে পাকিস্তানে পাঠানোর চেষ্টা করে দেখতে পারে ভারত। বাংলাদেশ শুধু মুসলিম বা হিন্দুর রাষ্ট্র নয়, এ রাস্ত্রর সকলের। বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগমুক্ত হয়ে সাবধান থাকতে হবে। মুসলমান মুসলমান বলে আবেগে উন্মাদ হয়ে গেলে চলবে না। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলাম ও মাদ্রাসা কমিউনিটিকে অনেক সাবধান হতে হবে। ভারত বা পাকিস্তানের মুসলমান আর আমরা এক নই। এক হলে আমাদের বর্ডার থাকত না, ভাষা আলাদা হত না। পাকিস্তানের মুসলিম সেনাবাহিনী আমাদেরকেই কচুকাটা করেছিল। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে।
বিজেপির শক্ত নেটওয়ার্ক আছে বাংলাদেশেও। এরা প্রকাশ্যে বাংলাদেশে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে। অন্যের উসকানিতে যে মুসলমান হিন্দুদের উপর আক্রমণ করে, সেও এই বিজেপির উদ্দেশ্য সাধন করে। তাই আমাদের দেশে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা যতটুকু আছে, তা দূর করার দায়িত্ব আমাদেরকে নিতে হবে। ভারত, পাকিস্তান, চীন, মিয়ানমার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, রাশিয়া তথা বিশ্বের নানা দেশকে সামাল দিয়েই আমাদের বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে এগিয়ে যেতে হবে। নিশ্চয় রাজনীতিবিদ, সামরিক-বেসামরিক নীতি নির্ধারকরা জনগণকে সাথে নিয়ে সঠিক সব সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালান করবেন। নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্বও অনেক। ধর্মকে ব্যক্তিজীবনে আপনি সবার উপরে স্থান দিয়ে চর্চা করেন, আপনার ইচ্ছা। কিন্তু যখনই রাষ্ট্র হিসেব করবেন, তখন প্রতিবেশী রাষ্ট্র, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি ইত্যাদি নানা বিষয়কে মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন। এখন এ স্বাধীন রাষ্ট্র আমাদের রক্ষা করতে হবে।
লেখকঃ সহকারী অধ্যাপক, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস