লাশ হয়ে ফিরলো মাইলস্টোন স্কুল ছাত্র ও রাজস্থলীর মেধাবী সন্তান উক্য চিং মারমা, পরিবারে শোকের মাতব

॥ আজগর আলী খান, রাজস্থলী ॥ ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনী একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্থ হওয়ার ঘটনায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গতরাত ২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার জাতীয় বার্ণ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে মাইলস্টোন স্কুল ছাত্র ও রাজস্থলীর মেধাবী সন্তান উক্য চিং মারমা।
মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া উক্যচিং মারমা মেধাবী সন্তানটি উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে আজ লাশ হয়ে ফিরছে। আর তার এই মৃত্যুতে পুরো এলাকায় বয়ে যাচ্ছে শোকের মাতব। পরিবারের কান্নার আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। কিছুতেই মানতে পারছে তার এই অকাল মৃত্যু। ভালো স্কুলে পড়তে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরে আসছে নিজ গ্রামে।
মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতরাত আনুমানিক ২টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ উক্যচিং মারমা (১৪)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পিতা উসাইমং মারমা।
জানা যায়, সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টায় ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনী একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্থ হয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানেই স্কুলে অবস্থান করছিলো রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কলেজ পাড়ার ছেলে উক্যাচিং মারমা। উক্যচিং মারমা ওই স্কুলের ইংলিশ মিডিয়ামের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। এই ঘটনায় তার শরীরের শতভাগ অংশ দগ্ধ হয়।
আর সকালে লাশ বহনকারী এ্যাম্বলেন্স নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন আত্মীয়-স্বজন। লাশটি রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়ায় নিজ বাড়িতে আনা হবে। আর এলাকায় আসতে বিকেল ৫টা নাগাত লাগতে পারে বলে জানিয়েছে উক্যচিংয়ের দাদা কমহ্লাপ্রু মারমা।
কান্নাজড়িত কন্ঠে দাদু কংহলাপ্রু মারমা (৭৫) জানান, নাতিকে এইভাবে হারাবো কখনো ভাবিনি। অত্যান্ত ভদ্র ও সুর্দশন ছিলো আমার নাতি। সে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিলো। উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকাতে গেছিলো। কিন্তু লাশ হয়ে ফিরছে আমার নাতি। নাতির সাথে কত স্মৃতি। তার মা বাবা খবর পেয়ে ঢাকাতে ছুটে গেছেন। আজকে নাতির মরদেহ নিয়ে আসবে। আগামীকাল নাতিকে বাঙালহালিয়া কিউংধং পাড়ায় দাহ করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে নাতির পুরানো ছবি দেখে বার বার বিলাপ যাচ্ছেন দাদি ক্রাপ্রুমা মারমা (৬৫)। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, নাতিকে ছোটবেলায় কোলে পিঠে আদর করে মানুষ করেছি। তারা বান্দরবান থাকলেও ছুটিতে দাদুর বাড়িতে আসতো। কত দুষ্টুমি করতো আমার নাতিটা। নাতির এই মৃত্যু আমরা কোনভাবেই মানতে পারছিনা। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো সে সামান্য আঘাত পেয়েছে কিন্তু পরে যখন নাতি উক্য চিং এর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার কথা শুনি তখন নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারছিলাম। সে পড়া লেখায় খুব ভালো ছিলো। আমার নাতিটার এইভাবে মৃত্যু হবে তা আমরা কখনো কল্পনা করিনি।

বান্দরবানে কৃষক ও নারীদের আর্থ অবস্থার সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ গুণগত শিক্ষা, আর্থ সামাজিক ও টেকসই উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে —-পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031