টেলিটকের মাধ্যমে ইন্টারনেটের দাম কমানোর চেষ্টা হচ্ছে: টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

ঢাকা অফিস :: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা তৈরি করে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম অনুকূলে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অন্তর্ভূক্তিমূলক ডিজিটাল অর্থনীতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অবদান’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মোবাইল ইন্টারনেটের দাম তুলনামূলক একটু বেশি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টেলিটকের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা তৈরি করে সেটিও গ্রাহকের স্বার্থের অনুকূলে আনার চেষ্টা আমরা করছি। ইতোমধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের আনলিমিটেড প্যাকেজ চালু হয়েছে। টেলিটক এটি প্রথম শুরু করে এবং অন্য অপারেটররাও সেটা কার্যকর করেছে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগাতে দক্ষ মানব সম্পদ অপরিহার্য। দেশব্যাপী উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি দক্ষ মানব সম্পদ এবং ডিজিটাল সংযোগ সহজলভ্য করতে সরকার কাজ করছে।

ইন্টারনেটের মূল্য সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম অনেক কম। ৬০ টাকায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। অথচ ২০০৬ সালে এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল  ৭৮ হাজার টাকা, ২০০৮ সালে ২৭ হাজার টাকা এবং বর্তমানে একদেশ এক রেটের আওতায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় মাত্র ৬০ টাকায়।

মন্ত্রী ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটকে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেবলমাত্র শহরের মানুষের জন্য নয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। দেশের ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগের আওতায় আসছে।

তিনি দেশে ইন্টারনেট প্রসারের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যা্ন্ড নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ৪জি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে ৫জি স্পেকট্রাম নিলাম করা হয়েছে এবং ৫জি চালু করা হয়েছে।

মোবাইলের কলড্রপ কমিয়ে আনতে অপারেটরগুলোকে সম্প্রতি অতিরিক্ত বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকরা এই সুবিধা পাবে।

তিনি একই সঙ্গে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কানেক্টিভিটির প্রসারের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, এখন মধুপরের পাহাড় বা হাওরে বসে ইন্টারনেটের সহায়তায় তরুণ-তরুণীরা বিদেশে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো মাত্র ৮ লাখ। ২০২০ সালে কোভিড শুরুর প্রাক্কালে দেশে ১০০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৪৪০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও প্রয়োগে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের ট্রেডবডিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

দেশে ডিজিটাল ডিভাইস বিশেষ করে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা প্রসঙ্গে মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে গত চার বছরে সরকারের প্রযুক্তি বান্ধব নীতি কাজে লাগিয়ে স্যামসাংসহ ১৪টি ব্র্যান্ডের মোবাইল কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৭০ ভাগ এই সব কারখানার উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি মোবাইল কারখানার পাশাপাশি ল্যাপটপ ও কম্পিউটার কারখানা স্থাপনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের বাংলাদেশ বিষয়ক সমন্বয়ক শহীদ উদ্দিন আকবরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমদ, অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের গ্লোবাল পলিসি বিষয়ক কর্মকর্তা এলিনোর এবং এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বয়কারী আনজু মাংগল বক্তব্য দেন।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031