॥ মো সোহেল রানা, দীঘিনালা ॥ সেনা সদস্যদের মনোবল বাড়াতে ঈদুল আযহার উপলক্ষে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। রবিবার (১০ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের বাঘাইহাট জোন পরিদর্শন করেন এবং পরে দীঘিনালা জোনের পাংখোয়া পাড়া সেনাবাহিনী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি। জোন পরিদর্শনকালে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা ও সৈনিকদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আজ দুপুরে সেনাপ্রধান বাঘাইহাট জোনে আসলে তাকে অভ্যর্থনা জানান ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন ও খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম। পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান সকল সদস্যদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা এবং কুশলাদি বিনিময় করেন।
এ সময় সেনাপ্রধান বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। তারা পরিবার স্বজন ছেড়ে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় দেশের নিরাপত্তায় কাজ করছে। দেশের যেকোন সংকটে সেনাবাহিনীর তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে এবং করবে।
সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ উভয় ক্যাম্পেই গাছের চারা রোপণ করেন এবং দীঘিনালা জোনে সেনা সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশ নেন।
পরিদর্শনকালে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল খালেদ আল-মামুন, জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ছাড়াও সেনা সদরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর জাহিদ হাসানসহ অন্যান্য সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
॥ আশরাফ উদ্দিন, মিরসরাই ॥ মিরসরাইয়ে জোরারগঞ্জ থানায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে এসব চুরির ঘটনা ঘটছে। এসময় চোরের দল স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা সহ মূল্যবান আসবাবপত্র নিয়ে যায়। সর্বশেষ রবিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় ধুম ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে আবুল হোসেন পাটোয়ারি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আবুল হোসেন পাটোয়ারির ছেলে আমজাদ হোসেন রনি বলেন, রবিবার সন্ধ্যা ৮টার দিকে আমার মা, স্ত্রী সন্তান পাশে আমার অসুস্থ মামাকে দেখতে যান। সেখানে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ছিলেন। এরপর বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে ৩টি স্বর্নের চেইন, একটি আংটি ও আমার মা ও বোনের গচ্চিত টাকা, আমার মেয়ের ঈদ সালামির টাকাসহ প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। ওই সময় এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলো না। ঘরের সবকিছু তছনছ করে গেছে।
রনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ৫বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ২৮ জুন রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে পশ্চিম হিঙ্গুলী এলাকার নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে, ১ জুলাই বারইয়ারহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের জামালপুর গ্রামের আবুল হাশেমের বাড়িতে, ২ জুলাই হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের খায়েজ আহম্মদ, ফজলুল হকের বাড়িতে ও সর্বশেষ ৩ জুলাই ধুমে আবুল হোসেন পাটোয়ারির বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন বলেন, এলাকার চিহিৃত চোর-ডাকাতরা এখন এলাকায় নেই। অনেকে জেলে আছেন। হয়তো ছিচকে চোর মানুষের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে চুরি করছে। তবে এখনো পর্যন্ত এসব বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সন্ধ্যার দিকে এলাকায় অপরিচিত কাউকে দেখলে পুলিশকে খবর দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২০১৭ সালের ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় বিধ্বস্ত হওয়া রাঙ্গামাটির সড়কগুলোর ক্ষত এখনো কাটেনি। রাঙ্গামাটি শহর ও আন্তজেলা সড়কের দেড় শতাধিক স্থানে ভাঙ্গনের শিকার হলেও পাঁচ বছরেও তা স্বাভাবিক হয়নি। বরং সড়কের নতুন নতুন জায়গায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। ১৪৯ কোটি টাকার সংস্কার কাজ শুরু হলেও কাজের ধীরগতির কারণে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে ঘটে স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসের ঘটনা। এ ঘটনায় ১২০ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি বিধ্বস্ত হয় জেলার সড়ক যোগাযোগ। প্রায় এক মাস বন্ধ থাকে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ। এরপর রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এসব সড়কের ১৫৩টি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান চিহ্নিত করে সংস্কার প্রকল্প গ্রহণ করে। এতে সরকার ১৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ২০২০-২১ অর্থ বছরে এ প্রকল্প পাশ হলেও করোনা মাহামারি কারণে থমকে যায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। পরে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু হলেও কাজের রয়েছে ধীরগতি। এতে চলতি বর্ষ মৌসুমেও শঙ্কামুক্ত হচ্ছে না সড়কগুলো। আর সড়কগুলো স্থায়ী সংস্কার না হওয়ায় সড়কের পাশে বসবাসকারীরাও রয়েছেন ঝুঁকিতে।
রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল নুর সালেহীন জানান, ২০১৭ সালের পাহাড় ধ্বস রোধ কল্পে রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগ কর্তৃক একটি প্রকল্প গৃহিত হয় এবং বর্তমানে প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। কিন্তু পার্বত্য এলাকার নানা বাস্তবতার কারণে প্রকল্পের কাজের ধীরগতি হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের সমস্ত কাজ সমাপ্ত করতে পারবো। এ ছাড়াও নতুন করে ভাঙ্গন রোধে সড়ক বিভাগ তৎপর রয়েছে এবং সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আমরা সার্বক্ষণিক দেখভাল করছি।
এদিকে পাহাড় ধ্বস রোধ কল্পে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ অংশের ভাঙ্গন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: শুক্রবার (১৭ জুন) দিনগত রাত ১টার দিকে আকবর শাহ থানাধীন বরিশাল ঘোনা ও রাত ৩টার দিকে ফয়’স লেকের বিজয় নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- লিটন (২৪), ইমন (১৪), শাহীনুর (৩২) ও মাইনুর আখতার (২০)। পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বলেন, রাতে আকবর শাহ থানার ১ নম্বর ঝিলের বরিশাল ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে আহত ৫ জনকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে ২ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে ৬ জনকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। অন্যদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
দুইদিনের টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নগরে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শনিবার (১৮ জুন) নগরের নিচু এলাকা মরাদপুর, বহদ্দারহাট, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ, হালিশহর এলাকায় রাস্তায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় রিকশায় অথবা পায়ে হেঁটে হাঁটুপানি মাড়িয়ে যাত্রা করতে হয়েছে কর্মস্থলে। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার এই দুর্ভোগের জন্য নগরের সেবা সংস্থাগুলো খামখেয়ালিপনাকে দুষছেন নগরবাসী। এলাকার লেকজন জানান জলাবদ্ধতা সমস্যা নতুন নয়। খাল খননে কাজ চলছে অনেকদিন ধরে। এখনও শেষ হচ্ছে না। এতে নগরবাসীর ভোগান্তি দিন দিন আরও বাড়ছে। কখন এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে তা কেউ জানে না। এদিকে, বর্ষার এ বৃষ্টি আরো দুই একদিন স্থায়ী হবে বলে জানিয়েছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। সহকারী আবহাওয়াবিদ শেখ হারুনুর রশীদ জানান, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় প্রভাবের কারণে চট্টগ্রামের কোথাও কোথাও বজ্রপাতসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। ২০ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মাঝারী থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। নদীবন্দরগুলোর জন্য ২ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি নেই।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান। বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন), পরিচালক (পরিবহন) ও পরিচালক (নিরাপত্তা)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।
কনটেইনার ডিপোতে শনিবার (৪ জুন) রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ডিপোতে এখনও আগুন জ্বলছে। শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দও। ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। সকাল ৮টার দিকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনাস্থলে র্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন রয়েছেন।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনা তদন্তে টার্মিনাল ম্যানেজারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে।
রোববার (৫ জুন) সকালেও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কিছুক্ষণ পর পর বিস্ফোরণের কারণে আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। ডিপোতে বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ দাহ্য রাসায়নিক রয়েছে।
এদিকে, চমেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটে ৫২ জন এবং অর্থোপেডিক বিভাগে ১০ ভর্তি রয়েছে। চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ৫২ জন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। তাদের বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পোড়া। তাদের বাঁচাতে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সারা দেশের সাংবাদিকদের জন্য একটা ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকদের ভুয়া ও অপসাংবাদিকতা থেকে নিরাপদে রাখা। সাংবাদিকতার নামে অনেকে নানা অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে এমন খবরও গোচরে আসে। তাদের সম্পর্কে জনমনে নানা প্রশ্ন। জনগণ তাদেরকে ‘সাংঘাতিক’ও বলছেন। তাই সাংঘাতিক না হয়ে সঠিক ও সত্যনিষ্ঠ তথ্য তুলে ধরে প্রকৃত সাংবাদিক হিসাবে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান তিনি। শনিবার (৪ জুন) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত প্রেস কাউন্সিল আইন ও তথ্য প্রযুক্তি আইন বিষয়ক রাঙ্গামাটিতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জনাবে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আল মামুন মিয়ার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মোঃ শাহালমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের প্রাক্তণ সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদ, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারন সম্পাদক আনোয়ার আল হক, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নন্দন দেবনাথ প্রমূখ।
বিচারপতি আরো বলেন, সাংবাদিকরা সরকারের পরিপূরক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের সম্মান করতেন। যে কারণে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় ১৯৭৪ সালে প্রেস কাউন্সিল আইন বাস্তবায়ন করেন। সে লক্ষ বাস্তবায়নের জন্য প্রেস কাউন্সিল কাজ করছে। আর সাংবাদিকরা কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আরো বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে বা গ্রেফতার করার আগে প্রেস কাউন্সিলের সাথে কথা বলতে হবে। অন্যায়ভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানী করা হলে প্রয়োজনে প্রেস কাউন্সিল আইনি সহায়তা দিবে।
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সাংবাদিকতার অপব্যহার হচ্ছে। তাদের অনেকে সাংঘাতিক কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মান রক্ষা করতে হলে নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজন আছে। সাংবাদিকতা পেশার সম্মান এখন আগের মতো নেই। প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকতার মানোন্নয়নের জন্য কাজ করছে। সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম গ্রাজ্যুয়েশ থাকতে হবে। তবে তা পাচঁ বছর আগে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে নয় বলে তিনি জানান।
এ সময় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম তথ্য প্রযুক্তি আইনের কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যাবহার ও অনলাইন পোর্টালের দৌরাত্ব কমাতে তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রয়োজন আছে। তবে এ আইনে আসামীকে জামিন দেয়া যাবে না যে বিধান আছে তার সাথে দ্বিমত করে তিনি বলেন, এটি সংশোধন করা প্রয়োজন। একই সাথে তথ্যমন্ত্রীর দেয়া ঘোষণা “এ আইনে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা যাবে না” তা বাস্তবায়নেরও আহবান জানান প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান।
কর্মশালায় রাঙ্গামাটিতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ৪২ জন সাংবাদিক অংশগ্রহন করেন।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সমাজের সুষ্ঠু বিকাশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সমাজ যাদের দিকে তাকানোর সুযোগ পায় না, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সেই মানুষের না বলা কাহিনী তুলে ধরে।’
তিনি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ১১ জন সাংবাদিককে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য প্রত্যেককে আড়াই লাখ টাকা, মফস্বল সাংবাদিকতায় ৬৪ জন প্রবীণ সাংবাদিক প্রত্যেককে এক লাখ টাকা এবং সকলকে সনদপত্র ও সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়।
তথ্যমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন ও বসুন্ধরা গ্রুপকে বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পুরস্কার আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই ধরনের পুরস্কার প্রদান অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও সার্বিকভাবে সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করবে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যা সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করতে সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দিতে এবং অবহেলিত দিকগুলোতে সমাজের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে যেভাবে ভূমিকা রাখে, তা অন্য কোনো পেশার মানুষ পারে না।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ভিন্ন মাত্রার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সাংবাদিকতায় ঝুঁকি থাকে, জীবন বিপন্ন হতে পারে। সেসব অতিক্রম করে সাংবাদিককে কাজ করতে হয়। পথের পাশের বিপন্ন মানুষগুলোর জীবনের যে গল্প, যে বেদনা, সেটিও তুলে আনতে পারে অনুসন্ধানী সাংবাদিকই।
গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতূর্থ স্তম্ভ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মনে করে গণমাধ্যমের বিকাশের সাথে রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক সমাজের বিকাশ নিহিত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেকারণেই বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে গত সাড়ে ১৩ বছরে সংবাদপত্র, বেতার, টেলিভিশন ও অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিটি ক্ষেত্র যুগান্তকারী বিকাশ লাভ করেছে। একইসাথে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও আইনবিরোধী চর্চা কমে এসেছে।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতিতে আমরা বিশ্বাস করি, লালন করি। সমালোচনা পথ চলাকে শাণিত করে, কাজকে বিশুদ্ধ করে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান তার বক্তৃতায় অতিথিদেরকে উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানান। সভাপতির বক্তব্যে সায়েম সোবহান আনভীর পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন এবং পুরস্কারের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা বুবলির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে ডেইলি স্টারের আহমাদ ইশতিয়াক, মাছরাঙা টেলিভিশনের কাওসার সোহেলী, জাগো নিউজ ২৪.কম-এর সালাহ উদ্দিন জসিম, অপরাধ ও দুর্নীতি ক্যাটাগরিতে দেশ রূপান্তরের শোয়েব চৌধুরী, জিটিভির জান্নাতুল ফেরদৌসী, নিউজ বাংলা২৪.কম-এর জেসমিন পাপড়ি, নারী ও শিশু ক্যাটাগরিতে সমকালের রাজীব আহাম্মদ, আনন্দ টিভির শওকত সাগর, ঢাকা পোস্টের আদনান রহমান, অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্রে মাছরাঙা টেলিভিশনের মাজাহারুল ইসলাম, তৃণমূল সাংবাদিকতায় অবদানের ক্যাটাগরিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদ এবং আলোকচিত্রে প্রথম আলোর দীপু মালাকার, পুরস্কার গ্রহণ করেন।
পুরস্কারের জুরিবোর্ডে ছিলেন, অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক দেশ রূপান্তর সম্পাদক অমিত হাবিব, লেখক নাসির আলী মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার ও সাংবাদিক জুলফিকার আলি মানিক।
কাপ্তাই প্রতিনিধি ॥ চলমান কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢলে ভেঙে গেলো রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নারানগিরিমুখ এলাকার হাজারো মানুষের পারাপারের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি। যার ফলে যাতায়াতে চরম সমস্যাই ভুগছেন ওই পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোমবার (৩০ মে) সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলের ফলে বাঁশের সাঁকোর মাঝখানে কিছু অংশ ভেঙে গেছে। ফলে দুই পাড়ের জনগণ এই ব্রিজ দিয়ে পার হতে পারছে না। বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা নারানগিরি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আসতে পারছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রাশেদ, ইউচুফ সওদাগর, মোহাম্মদ আজিজ মিয়াসহ এলাকাবাসীরা জানান, নারানগিরি ১নং পাড়ায় হাজারো মানুষের বসবাস। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া শতশত ছাত্র-ছাত্রী এ সাকোঁটি দিয়ে পার হয়। এছাড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হয় গর্ভবতী মা সহ স্থানীয় জনগণরা। যা নিত্যদিনের কষ্টে পরিণত হয়েছিলো।
এছাড়া বেশ কয়েকবার ভারীবৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে সাঁকোটি পারাপারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। পরে তারা নিজেদের সহযোগিতায় ব্রীজটি কোনভাবে মেরামত করে পারপার হয়। কিন্তু টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে গত রবিবার সাঁকোটি আবারো ভেঙে গেলো। এখন নারানগিরি মুখ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছেছে বলে তারা জানান।
এদিকে ইতিপূর্বে এই বাঁশের সাঁকোটির দুর্দশা চিত্র নিয়ে কাপ্তাইয়ের স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন করেছিলো। যার ফলে সাঁকোর জায়গায় নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য সরকারি অনুমোদন হওয়ার কথা শোনা গিয়েছিলো। কিন্তু কেন এখনো ব্রীজটি নির্মিত হচ্ছেনা, এতে হতাশ হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই বিষয়ে স্থানীয় ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শৈবাল সরকার জানান, সম্প্রতি নতুন ব্রীজটির নির্মানের কাজ রাঙ্গামাটি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে টেন্ডারের অপেক্ষায় আছে। তবে বর্তমানে দেশের বাজারে রড সিমেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ায় থমকে গেছে কাজটি। তবে আগামী জুনের পরে এই ব্রীজের টেন্ডার কাজ শুরু হতে পারে বলে তিনি জানান।
২নং রাইখালী ইউপি চেয়ারম্যান মংক্য মারমা বলেন, এই বাঁশের সাকোঁটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি পারাপার করে স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানে সাঁকোর জায়গায় একটি ব্রীজ নির্মিত হওয়া অনেক জরুরী।
এবিষয়ে এলজিইডির কাপ্তাইয়ের সিনিয়র প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, করোনার কারণে সেতু নির্মানের কাজটি পিছিয়ে পরার ফলে এখনো অনুমোদন হয়নি সেতুটির নির্মান কাজ। তবে তিনি এই বিষয়ে, আবারো উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত সময়ে ব্রীজটি নির্মাণে ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করেন।