ফেনী প্রতিনিধি : অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ফেনীর ৩২৬ অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার পাবেন বীর নিবাস। জেলার ছয়টি উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে এসব ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, বীর নিবাস নির্মাণ শুরুর আগেই যাচাই-বাছাই করে জেলায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘরের বরাদ্দ পেয়ে এবং নির্মাণ শুরু হওয়ায় ব্যাপক খুশি অসহায় মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার। সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারা।
জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, অসচ্ছল-শহীদ-প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ লাখ টাকা করে এক একটি পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবেই ফেনীর ৩২৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সরকারি এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ৫ পৌরসভায় মোট ৩২৬টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে। ঠিকাদাররা বলছেন, দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতির কারণে এসব ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে তাদের লোকজন গুনতে হবে। তবুও, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করবেন।
ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবদুল মোতালেব বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বেশিরভাগ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সরকার যে ঘরগুলো দিচ্ছে তা অবশ্যই ভালো কাজ। এতে করে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মাথাগোঁজার ঠাই পাবেন এবং পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।
ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদুল উল হাসান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। সরকার দেশের অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ভেবে তাদের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ঘর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভীষণ উপকৃত হচ্ছেন। এ প্রকল্প মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।
ঢাকা অফিস :: সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ইনার হুইল ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত ‘পঞ্চম দক্ষিণ এশিয়া সম্মেলন’ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়- জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার যেহেতু বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পায়নি সেহেতু বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলো কি না? এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলেন। আমি সব সময় বলে থাকি তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া কিছু বললে তা কেউ বিশ্বাস করে না। জনগনও তাতে আস্থা রাখে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি আমাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছেন। আমাদেরকে কিছু প্রশ্ন আগেই দিয়েছিলেন। তার প্রশ্নের ৭৬ জন গুমসহ অন্যান্য বিষয় আমরা ভিডিও প্রেজেন্টেশন তাকে দেখিয়েছিলাম এবং কোনদিন কী হয়েছে বিস্তারিত বিষয় তার কাছে তুলে ধরেছি। এসব দেখে তিনি কোনো প্রশ্ন আমাদেরকে করেননি।
তাহলে বিএনপি যে বারবার অভিযোগ করে আসছিলো এবার তাদের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হলো কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বলে আসছি তারা (বিএনপি) একটা অবস্থার সৃষ্টির জন্য বিভিন্নভাবে রটনা করে যাচ্ছে। যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই এবং সত্যতা দেখাতে পারেনি। ভিত্তি না থাকার কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চট্টগ্রাম জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন (৩য় পর্যায়) ৫৮৭টি পরিবারকে জমিসহ ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মুজিবশতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর অধীনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১ম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারাদেশে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
আগামী ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) ২৬ হাজার ২২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ৫৮৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পটিয়া উপজেলায় ১০টি, বোয়ালখালী উপজেলায় ১৫টি, চন্দনাইশ উপজেলায় ১৫টি, সাতকানিয়া উপজেলায় ২০টি, লোহাগাড়া উপজেলায় ৫১টি, বাঁশখালী উপজেলায় ১৫টি, হাটহাজারী উপজেলায় ৬০টি, ফটিকছড়ি উপজেলায় ১০০টি, আনোয়ারা উপজেলায় ১০০টি, মীরসরাই উপজেলায় ১০৯টি, রাউজান উপজেলায় ৫৪টি এবং সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৩৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে।
এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার ৪টি উপজেলা যথাক্রমে পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২১ জুলাই ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
॥ মো সোহেল রানা, দীঘিনালা ॥ সেনা সদস্যদের মনোবল বাড়াতে ঈদুল আযহার উপলক্ষে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। রবিবার (১০ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের বাঘাইহাট জোন পরিদর্শন করেন এবং পরে দীঘিনালা জোনের পাংখোয়া পাড়া সেনাবাহিনী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি। জোন পরিদর্শনকালে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা ও সৈনিকদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আজ দুপুরে সেনাপ্রধান বাঘাইহাট জোনে আসলে তাকে অভ্যর্থনা জানান ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন ও খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম। পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান সকল সদস্যদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা এবং কুশলাদি বিনিময় করেন।
এ সময় সেনাপ্রধান বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। তারা পরিবার স্বজন ছেড়ে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় দেশের নিরাপত্তায় কাজ করছে। দেশের যেকোন সংকটে সেনাবাহিনীর তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে এবং করবে।
সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ উভয় ক্যাম্পেই গাছের চারা রোপণ করেন এবং দীঘিনালা জোনে সেনা সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশ নেন।
পরিদর্শনকালে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল খালেদ আল-মামুন, জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ছাড়াও সেনা সদরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর জাহিদ হাসানসহ অন্যান্য সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার পাশাপাশি সকলকে সঞ্চয় করার এবং দেশব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে যে কোন সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মহামারি করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা, বিদ্যুতের অভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শুরু থেকেই সর্তক থাকতে হবে। আমরা যদি সাবধানে এগিয়ে যাই, ইনশাআল্লাহ আমাদের কোন সমস্যা হবে না, এটা আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দপ্তরের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সরকার প্রধান বলেন, চলমান করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশগুলোসহ বিশ্বব্যাপী মূদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি কয়লা না পাওয়া এবং গ্যাস ও ডিজেলের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উপাদানের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানেও এখন বিদ্যুতের তীব্র সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে নিয়মিত জাহাজ চলাচল না করায় বিশ্ব বর্তমানে পরিবহন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, পরিবহন ব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট সময়ের লোডশেডিং করে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা কমানো যায় কি-না সে চিন্তাও করছেন তিনি। তবে সে ক্ষেত্রে আকস্মিক নয়, মানুষকে প্রস্তুত থাকার সময়টা দিয়েই তা করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুতের ব্যাপারে আমাদের শুধু সাশ্রয়ীই হলে চলবে না। আমি যেমন চিন্তাও করেছি কিছুটা সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন একটু কমিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপাদানগুলো সেগুলো যেন আমরা কম ব্যয় করতে পারি।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশবাসী প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং প্রত্যক্ষ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিশ^ পরিস্থিতির কারণে সংকট উত্তরণে এলাকা ভিত্তিক কিছুটা লোডশেডিং চলতে পারে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘এখন আমরা একটা সুনির্দিষ্ট সময় যদি ধরে দেই যে একেক এলাকাভিত্তিক কিছুক্ষণের জন্য সেখানে বিদ্যুতের কিছুটা লোডশেডিং হবে, হঠাৎ যাবে হঠাৎ আসবে না, মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারবে। সেভাবেই আমাদের কিছু কিছু পদক্ষেপ এখন থেকেই যদি আমরা নেই তাহলে আগামী দিনে যে আরো সমস্যাটা দেখা দিতে পারে সে পরিস্থিতি থেকে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো।’
‘অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি এবং জলাশয়কে কাজে লাগানোর মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে ক্ষেত্রে, আমরা যদি সাশ্রয়ী হয়ে উঠি এবং আমাদের সঞ্চয় বাড়াতে পারি তাহলে যে কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারবো।’
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে এবং দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর-বাড়ি করে দিচ্ছে।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া ও মোনাজাত করেছেন। সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে গ্রামের বাড়িতে এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর।
সোমবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজের পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া মোনাজাত করেন। এসময় তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ফাতেহা পাঠ করেন ও জাতির পিতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাযজ্ঞের অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেও দোয়া করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর, তিনি স্বাধীনতার মহান স্থপতির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে বিপথগামী কিছু সেনা সদস্যের হাতে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ নৃশংসভাবে খুন হন।
এর আগে, সকাল ৮টায় গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওয়ানা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহর সোমবার সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠে।
প্রধানমন্ত্রী মাওয়া টোল প্লাজায় ৬ নম্বর লেন দিয়ে প্রবেশ করেন। গাড়ি বহরের টোল পরিশোধ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। বহরে ছিল ২৯ গাড়ি। ২৪ হাজার ২০০ টাকা টোল পরিশোধ করেন।
স্বপ্নজয়ের সেতু উদ্বোধনের ১০ দিনের মাথায় সরকার প্রধানের পদ্মা সেতু অতিক্রম ঘিরে পদ্মার দুই পারের মানুষ ছিল উচ্ছ্বসিত। সেতু অতিক্রমকালে প্রধানমন্ত্রী সেতুর মাঝামাঝি স্থানে গাড়ি থেকে নামেন।
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ প্রায় ৫ মিনিট সেতু অবস্থান শেষে আবার গাড়িতে উঠে সেতু অতিক্রম করেন।
প্রধানমন্ত্রী জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনী চত্বরেও কিছু সময় অবস্থান করেন। পিতা ও কন্যার ম্যুরাল ও ইলিশের ভাস্কর্যসহ চত্বরটি ঘুরে দেখেন। পরে জাজিরা প্রান্তের ২ নম্বর সার্ভিস এরিয়ায় সকালের নাস্তা করে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন।
প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়া গেলেও রাজধানীতে ফেরার কথা রয়েছে হেলিকপ্টারে।
ঢাকা : পবিত্র ঈদুল আজহার আগে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল চালু না হওয়ার আভাস দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রোববার (৩ জুলাই) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ঈদের আগে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালু হচ্ছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা নিয়ে উনারা (কর্তৃপক্ষ) কাজ করছেন। পদ্মা সেতুতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ ক্যামেরা বসবে। স্পিডগানও বসানো হচ্ছে। এগুলো বসলে তারপর উনারা কম্পোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন, কী করা যায়।
এটা কী ঈদের আগে হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের আগে হওয়া খুব ডিফিকাল্ট। আমার মনে হচ্ছে, ঈদের আগে মনে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু উদ্বোধন করে। উদ্বোধনের পরদিন থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্ঘটনায় ওইদিন দুই মোটরসাইকেল আরোহী মারা যায়। পরে ২৭ জুন থেকে েপদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক :: প্রমত্তা পদ্মার বুকে দক্ষিণ জনপদের স্বপ্নের সেতু নির্মাণে যারা বাধা দিয়েছিল, তাদের ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শনিবার পদ্মাসেতু উদ্বোধন শেষে মাদারীপুরের শিবচরে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “তাদের একটা জবাব আমরা দিয়েছি। তাদেরকে একটা উপযুক্ত জবাব আমরা পদ্মাসেতুর মধ্য দিয়ে দিতে পারলাম যে, বাংলাদেশও পারে।” বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পর জনগণের ‘সাহস ও শক্তি নিয়েই’ সেতুর কাজ শুরু করেছিলেন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আজকে আলহামদুলিল্লাহ আমরা সেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আর আপনাদের কষ্ট করতে হবে না। এই খরস্রোতা পদ্মা নদী পার হতে গিয়ে আর কাউকে সন্তান হারাতে হবে না, বাবা-মাকে, ভাইবোনকে হারাতে হবে না। আজকে সেখানে আপনারা নির্বিঘ্নে চলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।“আমাদের প্রত্যেকটা এলাকা এত দুর্গম ছিল, আজকে সেখানে রাস্তাঘাট, পোল, ব্রিজ করেছি বলেই সব জায়গায় যোগাযোগ হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে। এই এলাকার লোক যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, সেজন্য পায়রা পর্যন্ত আমরা সেতু বানিয়ে দিয়েছি। এখন নিশ্চিন্তে মানুষ চলাফেরা করতে পারে।”
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মাওয়ায় পদ্মার তীরে উন্মোচিত হল ফলক, বাতাসে উড়ল রঙিন আবীর, বর্ণিল উৎসবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে এ ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দশক আগে তিনিই দক্ষিণ জনপদের ২১ জেলার মানুষের এ স্বপ্নের সেতুর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
সকালে হেলিকপ্টারে করে মাওয়ায় পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়ায় সুধী সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেখানে জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, “আসুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের এই ঐতিহাসিক দিনে যে যার অবস্থান থেকে দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার শপথ নিই, এ দেশের মানুষের ভাগ্য পবির্তন করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।”
সুধী সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট, স্মারক ব্যাংক নোট, স্যুভেনির শিট, সিলমোহর ও উদ্বোধন খামের মোড়ক উন্মোচন করেন।
তারপর প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল পরিশোধ করে গাড়ী নিয়ে সেতু এলাকায় প্রবেশ করেন সরকারপ্রধান। সেখানে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করে তিনি উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে তাকে সেলফিবন্দি হতেও দেখা যায়।
ঢাকা: ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২০ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
১৮ বছর থেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন নাগরিকরা। পেনশনাররা (১৮-৬০ বছর) আজীবন পেনশন পাবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় বয়স্ক লোকদের জন্য ৫০ বছরের অধিক কেউ থাকলে বিবেচনায় নেওয়া হবে। পেনশন পেতে কমপক্ষে ১০ বছর নিয়মিত চাঁদ দিতে হবে।
একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চারজন সদস্য নিয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এছাড়াও, ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে।