পাহাড় ধ্বস ঃ নভেম্বরে প্রতিবেদন দেবে

॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ পাহাড় ধসের বিপর্যয় রোধে ‘কারণ ও করণীয় ’ বিষয়ে জাতীয় কমিটি সরকারের কাছে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তাদের সুপারিশ পেশ করতে পারবে বলে আশা করছে। চার মাস ধরে এ সংক্রান্ত কমিটি কাজ করে আসছে। কমিটি গঠনের পর এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার প্রাথমিক ঘোষণা এলেও চার মাস শেষে গত ২৯ অক্টোবর চূড়ান্ত সভা শেষ করেছে মাত্র।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) কমিটির প্রধান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা বলেন, রোববার কমিটির চূড়ান্ত সভা করেছি। এখন সুপারিশগুলো গুছিয়ে এনেই সপ্তাহ খানেকের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করব।
বিশেষজ্ঞ কমিটির এ সভায় অন্তত ১৭ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন জানালেও সুপারিশের বিষয়ে আগাম ধারণা দিতে চাননি এই কর্মকর্তা।
জুনে পাহাড় ধসের বিপর্যয়ের পর এই কমিটি গঠন করা হয়। তবে আগস্টে দেশের ৩২ জেলা বন্যা কবলিত হওয়ায় এ সময় কমিটির অনেক সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বন্যা কবলিত এলাকায় চলে যান।
এতে পাহাড় ধস সংক্রান্ত কমিটির কাজে ভাটা পড়ে বলে জানান কর্মকর্তারা।
চলতি বছর ১১ থেকে ১৩ জুনের ভারি বর্ষণে অন্তত ১৬০ জনের মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজার জেলায়। এর মধ্যে রাঙ্গামাটিতেই মৃত্যু হয় ১২০ জনের।
জুনের মধ্য ভাগে পাহাড় ধসের এই দুর্যোগের পর ওই মাসের শেষ দিকেই উচ্চ পর্যায়ের ২৭ সদস্যের ওই জাতীয় কমিটি গঠন করে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে কারণ চিহ্নিত ও করণীয় নির্ধারণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্ম-পরিকল্পনার সুপারিশ দেওয়ার কথা কমিটির।
রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনের কথা তুলে ধরে অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা বলেন, ২০০৭ সালের পরে এ সংক্রান্ত আগের দুটি প্রতিবেদনকেও আমলে নিয়ে কাজ করেছি। খসড়া সুপারিশে অন্তত ১৫টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তুাব রাখা হয়েছে।
বাস্তবায়নযোগ্য বিবেচনায় নিয়ে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নভেম্বরের মধ্যভাগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
এবার বিপর্যয়ের পর পাহাড় ধস বন্ধে বিভিন্ন সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন ইতোমধ্যে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে জমা দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পাহাড় ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে আগষ্টেই ওই প্রতিবেদন জমা পড়ে, যাতে ধ্বস বন্ধে পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা নির্মাণের জন্য অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতাসহ ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদনে অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস ও ভূমিক্ষয় রোধে বনায়ন, পাহাড় সংরক্ষণ, টেকসই কৃষি প্রবর্তন ও পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ম্যাপিং-জোনিংসহ পাহাড়ি এলাকার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা, পাহাড় সংরক্ষণ এবং পাহাড়ি এলাকার ব্যবহার সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
এর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে ২০০৭ সালের ভূমিধসে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর গঠিত একটি কমিটি পাহাড়ের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে আবাসিক প্রকল্প গড়ে না তোলা, পাহাড়ে জরুরি ভিত্তিতে বনায়ন, ঢালু পাহাড়ে গাইডওয়াল নির্মাণ, নিষ্কাশন ড্রেন ও মজবুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সুপারিশ করে।
এছাড়া পাহাড়ের পানি ও বালি অপসারণের ব্যবস্থা করা, যত্রতত্র পাহাড়ি বালি উত্তোলন নিষিদ্ধ করা, পাহাড়ি এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা নিষিদ্ধ করা, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন বন্ধ করা, পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারসহ তিন ডজন সুপারিশ ছিল ওই কমিটির প্রতিবেদনে।
স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র চায় রাঙ্গামাটিঃ
এবারের পাহাড় ধসে ১২০ জনের মৃত্যু হয় রাঙ্গামাটিতে। এসময় চার হাজারেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে হয়।
আগামীতে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি মোকাবেলার সক্ষমতার পাশাপাশি আগাম সতর্কতা নেওয়ার কথা বলছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান। তিনি বলেন, আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো যাবে। স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণও জরুরি। জাতীয় কমিটিতে না থাকলেও জেলা প্রশাসক সার্বিক বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা সংশ্লিষ্টদের কাছে অবহিত করেছেন বলে জানান তিনি।

॥রাঙ্গামাটিতে দৈনিক গিরিদপর্ণ সম্পাদক মরহুম এ কে এম মকছুদ আহমেদের স্মরণসভা ও ইফতার মাহফিল পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ প্রয়াত একেএম মকছুদ আহমেদকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভুষিত করার দাবি

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31