
॥ লামা সংবাদদাতা ॥ লামায় খাল পারাপারের সময় পানিতে ডুবে থুইচিমং মার্মা (৫৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টায় উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের লামা খালের ছলুমঝিরি এলাকায় লাশটি পানিতে ভেসে আসলে জনৈক জামাল মাঝি দেখতে পেরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবহিত করেন। পরে রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা লাশের বিষয়টি লামা থানাকে অবহিত করে।
রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, পানিতে ডুবে নিহত থুইচিমং মার্মা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের পাদুখোলা এলাকার মৃত মংলুং মার্মার ছেলে। সে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কমপং ¤্রাে পাড়ার চিপরি ¤্রাে এর বাড়িতে থেকে কাজকর্ম করত। গত ২/৩ বছর যাবৎ সে এই এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজকর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করত। সে বিয়ে করেনি। থুইচিমং মার্মা মানসিক রোগী ছিল। গত সোমবার রাত ৯টায় ৭নং ওয়ার্ডের ছলুমঝিরি ¤্রাে পাড়া হতে গো উৎসবে অংশ নিয়ে কমপং ¤্রাে পাড়ায় ফেরার পথে লামা খাল পারাপারের সময় বড় কলারঝিরি বাকেঁ পানিতে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার সময় নৌকার মাঝি মোঃ ফারুক (২৩) ভাড়া নিয়ে ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। ফারুক ও স্থানীয়রা তাকে ডুবতে দেখে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পায়নি। অবশেষে ডুবে যাওয়ার দুইদিন পরে ঘটনাস্থল থেকে ২/৩ কিলোমিটার নিচে ছলুমঝিরিস্থ লামা খালে তার লাশ ভেসে আসতে দেখে নৌকার মাঝি মোঃ জামাল। কারো কোন অভিযোগ না থাকায়, নিহত থুইচিমং মার্মার একমাত্র স্বজন তার বড় ভাই মংব্রা মার্মার সম্মতিতে পুলিশের সুরতহাল শেষে লাশের শেষকার্য সম্পাদন করা হয়েছে।
নৌকার মাঝি মোঃ ফারুক বলেন, আমি সোমবার (২০ জুলাই) রাতে রুপসীপাড়া বাজার হতে ২জন যাত্রী রিজার্ভ ভাড়া নিয়ে হেডম্যান পাড়া যাচ্ছিলাম। রাত প্রায় ৯টায় লামা খালের বড় কলারঝিরিস্থ বাকেঁ পৌছালে দেখতে পাই একটি লোক পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। তার হাতে একটি টর্চলাইট ছিল। লাইটটি জ¦লছিল। আলো দেখে আমি খেয়াল করি ও চিৎকার দিই। তাড়াতাড়ি নৌকা খালের একপাড়ে ভিড়িয়ে আমরা ২/৩ জন মিলে পানিতে নেমে অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করি। খালে পানি বেশী থাকায় ও ¯্রােত বেশী হওয়ায় আমরা তাকে খুঁজে পাইনি। গত কয়েকদিন যাবৎ প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় খালে প্রচুর পানি ও ¯্রােত ছিল। বিষয়টি আমি সবাইকে জানাই।
রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার লংনা ¤্রাে বলেন, আমরা নৌকার মাঝি হতে খবর পেয়ে সোমবার থেকে আজ দুইদিন যাবৎ তাকে অনেক খুঁজেছি। ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ আব্দুল মন্নান বলেন, যে স্থানে লাশটি পাওয়া গেছে সেই ছলুমঝিরি আমার ওয়ার্ডের পড়েছে। লাশটি দুইদিন পানিতে থাকতে থাকতে কিছুটা ফুলে গেছে। তবে লাশের গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন নাই। হাতে একটি কালো ঘড়ি ছিল।
খালে লাশ ভেসে আসার সংবাদ পেয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স নিয়ে দুর্গম ছলুমঝিরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তিনি বলেন, সরজমিনে এসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান, মেম্বার, কারবারী, হেডম্যান), নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায় পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নিহতের গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। তাই উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিতপূর্বক লাশের সুরতহাল শেষে শেষকার্য সম্পাদনের জন্য বলা হয়েছে। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।