টাঙ্গাইলে শ্রেণীকক্ষে ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় অপমৃত্যু মামলা!

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর একটি বিদ্যালয়ের নির্জন কক্ষে সুমী আক্তার (১৫) নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(৩০ মার্চ) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে উপজেলার মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় রাতেই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে থানা কর্তৃপক্ষ। তবে এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় আ. সামাদ মিয়ার বখাটে ছেলে রণি মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হওয়া নিয়ে মহেলা গ্রামসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। দেখা দিয়েছে রহস্যের বেড়াজাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, বিদ্যালয়ের নির্জন কক্ষে সুমী আক্তার (১৫) নামে ওই দরিদ্র অসহায় পরিবারের মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় থানায় কীভাবে অপমৃত্যু মামলা হয়? সুরতহাল রিপোর্টে মুখমন্ডল সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্মম আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া, ময়না তদন্তের জন্য মরদেহের সাথে পাঠানো প্রতিবেদনেও ধর্ষণ করা হয়েছে কি-না জানতে চাওয়া হয়েছে। অথচ পুলিশ ‘অপমৃত্যু’ মামলা নিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। তাদের ধারণা, হত্যার শিকার মেয়েটির পরিবার অসহায় ও দরিদ্র হওয়ার সুযোগ নিয়ে এই ধর্ষণ ও হত্যাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তৃতীয় পক্ষ মিমাংসার মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে।
মেয়েটির বাবা মো. রফিক মিয়া বলেন, মেয়েকে তো আর ফিরে পাবো না। এলাকার মাতব্বররা আছেন, তারা যেটা করবেন আমার পরিবারের ভালোর জন্যই করবেন।
স্থানীয় মাতব্বর ও মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জমির উদ্দিন আমেরি জানান, ওই ঘটনায় অহেতুক তার বিদ্যালয়কে জড়িয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। মরদেহের ময়না তদন্তেই প্রমাণ হবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আগেই মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে অতিরঞ্জিতভাবে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে- হচ্ছে, যা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মো. আখেরুজ্জামান জানান, প্রেম ঘটিত বিষয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ কারণেই থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ স্বত্তেও এটি ধর্ষণের পর হত্যা নাকি আত্মহত্যা এটি প্রমাণের জন্য ময়নাতদন্ত রিপোর্টের আপেক্ষা করা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্টে যদি ধর্ষণ বা হত্যার কোন আলামত পাওয়া যায় তাহলে পুলিশ বাদী হয়ে এ ঘটনায় অবশ্যই হত্যা মামলা দায়ের করবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী ও স্থানীয় মো. রফিক মিয়ার মেয়ে সুমী আক্তার (১৫)। বৃহস্পতিবার মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল কেবিনেট কাউন্সিল নির্বাচন চলছিল। ভোটের কারণে স্কুলের অধিকাংশ কক্ষ খালি ছিল। সুমী স্কুলে গিয়ে ওই নির্বাচনে ভোট দিয়ে ফেরার সময় স্থানীয় বখাটে রণি মিয়া (২৬) তাকে ডেকে নিয়ে মুখ বেঁধে বেদম মারপিট ও ধর্ষণ করে। মুমুর্ষূ অবস্থায় স্থানীয়রা সুমীকে ভ্যানে উঠিয়ে হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুমী মারা যায়। পরে তাকে বাড়িতে এনে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার চালানো হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

॥রাঙ্গামাটিতে দৈনিক গিরিদপর্ণ সম্পাদক মরহুম এ কে এম মকছুদ আহমেদের স্মরণসভা ও ইফতার মাহফিল পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ প্রয়াত একেএম মকছুদ আহমেদকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভুষিত করার দাবি

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31