নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা ও আশারতলি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরিত হয়ে আরো ২ রোহিঙ্গা নিহত

॥ নাইক্ষ্যংছড়ি সংবাদদাতা ॥ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের চাকঢালার বড়ছনখোলা ও আশারতলির ৪টি পয়েন্টে পৃথক সময়ে মাইন বিস্ফোরিত হয়ে ২ রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছে। এসময় ৩টি মহিষও আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, মায়নমারের টাইরঢেবা এলাকার রোহিঙ্গা কৃষক ছৈয়দ আহমদ (৫৫) এবং ফকিরা বাজার এলাকার বাসিন্দা মোক্তার আহমদ (৪৫)। মায়ানমার সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে এ সব ঘটনা ঘটে। সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে সন্ধ্যার পর থেকে একের পর এক মাইন বিস্ফোরণে স্থানীয় লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, সোমবার সকাল ১১টায় রোহিঙ্গাদের কয়েকজন নিজেদের ফেলে আসা ৩টি মহিষ নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের ৪৪নং পিলারের কাছাকাছি নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পৌছলে ৩টি স্থলমাইন বিস্ফোরিত হয়। এতে রোহিঙ্গা কৃষক ছৈয়দ আহমদ (৫৫) নিহত হন এবং পাশাপাশি পালিত ৩টি মহিষও আহত হয়।
এদিকে সোমবার রাত ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে সীমান্তের ৪৫, ৪৬ ও ৪৭নং পিলার এলাকার পৃথক ভাবে আরো ৩টি মাইন বিস্ফোরিত হয়। রাত ১১টায় ৪৫নং পিলারের কাছে মাইন বিস্ফোরিত হয়ে নিহত হন ফকিরাবাজার এলাকার বাসিন্দা মোক্তার আহমদ (৪৫)। পরিবারসহ বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে সীমান্তে মাইন বিস্ফোরিত হয়ে তার তার দুটি পা উড়ে যায়।
সোমবার রাত ১টায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা: সালমান করিম খান মোক্তার আহমদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, স্থল মাইন বিষ্ফোরণে ওই ব্যক্তির ডান পায়ের তালু উড়ে গেছে এবং বাম পা ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। আশংঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সাড়ে বারোটায় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ির দক্ষিন চাকঢালা চেরারমাঠ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন জানান, সোমবার সিমান্তের জিরো পয়ন্টের ১০০ গজ ভিতরে পরপর বিকট শব্দ করে দুইটি মাইন বিস্ফোরণ হয়। এতে তিন থেকে চারটি গরু ও মহিষ হতাহত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তিনি আরো জানান, আমার কর্মশালাটা দেশের সর্বদক্ষিণে বর্তমান নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের চেরারমাঠে যেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিশাল একটি ক্যাম্প। এই ক্যাম্পে আনুমানিক ১৬৫০ পরিবারের প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গার বসবাস। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটার বেহাল অবস্থা।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ৩১ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল আনোয়ারুল আজিম জানান, সীমান্তের ৪৪নং পিলারের মায়ানমারের অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে কয়েকটি মহিষ হতাহত হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। তবে যেহেতু ঘটনাটি মায়ানমারের অভ্যন্তরে, সুতরাং এ দেশের বিজিবির সেখানে গিয়ে কোন কিছু করার সুযোগ নেই।
তিনি আরো জানান, মায়ানমার সেনাবাহিনী সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডের কাছাকাছি অসংখ্য স্থল মাইন বসিয়েছে। এতে লোকজনের পাশাপাশি অগনিত বন্য প্রাণি হতাহত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগের কয়েকদিনে এ ধরনের মাইন বিস্ফোরণে নারী সহ ৪ রোহিঙ্গা নিহত এবং আরো আহত হয় ৪ জন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031